০২:০৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ মে ২০২৪

পুঁজিবাজারের বিনিয়োগ তুলে স্বর্ণ কিনছেন যে তরুণী

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৩:০৪:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ মে ২০২৪
  • / ৪৩৭৪ বার দেখা হয়েছে

চীনের ২৫ বছর বয়সী তরুণী লিন। এই নারী পুঁজিবাজার থেকে বিনিয়োগ তুলে নিয়ে ছোট দানা আকারের সোনা কিনছেন। বৈশ্বিক সোনার বাজারে বরাবরই চীনের বড় প্রভাব আছে। এবার যে সোনা কেনার প্রতি মানুষের আকর্ষণ তৈরি হয়েছে, তাতে চীনের প্রভাব আরও বেশি করে দেখা যাচ্ছে। সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

এতে বলা হয়, ২৫ বছর বয়সী এই নারী শেয়ারবাজার থেকে বিনিয়োগ তুলে নিয়ে ছোট দানা আকারের সোনা কিনছেন। সোনার গয়না, বার বা কয়েন কেনার সামর্থ্য নেই তাঁর; অগত্যা সোনার দানা কিনেই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে তাঁকে। সোনার প্রতি মানুষের যে আকর্ষণ তৈরি হয়েছে, সেই দৌড়ে তিনিও সামর্থ্য অনুযায়ী শামিল হয়েছেন। নিউইয়র্ক টাইমসকে লিন বলেন, আমি আরও সঞ্চয় করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছি।

দেশটির শেয়ারের সূচক নিম্নমুখী। এ বাস্তবতায় চীনে যেসব বিনিয়োগ আসছে, তার মধ্যে অনেক বিনিয়োগই হচ্ছে স্বর্ণভিত্তিক তহবিলে। এ ছাড়া দেশটির তরুণেরা সামর্থ্য অনুসারে সোনার দানা কিনছেন।

বেইজিংভিত্তিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান বিওসি ইন্টারন্যাশনালের বৈশ্বিক প্রধান অর্থনীতিবিদ গুয়ান তাও নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেন, আগে চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক দেশের বাজার থেকে রেনমিনবির বিনিময়ে সোনা কিনত; কিন্তু এবার তারা বিদেশি মুদ্রার বিনিময়ে সোনা কিনছে। এর মধ্য দিয়ে তারা মার্কিন ডলারসহ অন্যান্য বিদেশি মুদ্রা ব্যয় করছে।

এদিকে চীনের আবাসন খাতের অবস্থা ভালো নয়; ঋণের ভারে জর্জরিত দেশটির আর্থিক খাত। এই বাস্তবতায় চীনের মানুষেরা সোনার দিকে ঝুঁকেছেন। চীনাদের এই সোনা কেনার হিড়িকের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সোনার রিজার্ভ বৃদ্ধি।

আরও পড়ুন: এবার আর জরিমানা নয়, জেল হতে পারে ট্রাম্পের

বৈশ্বিক ও জাতীয় অনিশ্চয়তার মধ্যে সবচেয়ে নিরাপদ বিনিয়োগের মাধ্যম হচ্ছে সোনা। ২০২২ সালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও গত বছরের শেষ দিকে ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর বিশ্ববাজারে সোনার দাম বেড়েছে। এমনকি সোনার দাম আউন্সপ্রতি ২ হাজার ৪০০ ডলার ছাড়িয়ে যায়; দাম এই পর্যায়ে বেশ কিছুদিনের জন্য থিতু হয়েছিল। এবার মূলত চীনের মানুষের সোনা কেনার হিড়িক পড়ে যাওয়ায় বিশ্ববাজারে এই ধাতুর দাম এভাবে বাড়ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক যে পর্যায়ে গেছে, তাতে মার্কিন বন্ড কেনা কমিয়ে দিয়েছে দেশটি; এমনকি আগের কেনা বন্ডও ছেড়ে দিচ্ছে তারা। আগুনে ঘি ঢেলে দেওয়ার মতো বিষয় হলো চীনের ফাটকাবাজদের তৎপরতা। তাঁরা বাজি ধরছেন, সোনার দাম আরও বৃদ্ধির সুযোগ আছে।

গত এপ্রিল মাসের শেষ দিকে ফেডারেল রিজার্ভ ইঙ্গিত দিয়েছে যে নীতি সুদহার এখন কমছে না। সেই সঙ্গে চলতি বছর ডলারের বিপরীতে বিশ্বের ১৫০টি মুদ্রার দরপতন হয়েছে; তা সত্ত্বেও বিশ্ববাজারে সোনার দাম বাড়ছে।

সোনার দাম ২ হাজার ৪০০ ডলারে ওঠার পর আবার তা ২ হাজার ৩০০ ডলারের ঘরে নেমে এসেছে ঠিকই; কিন্তু বাজারে এমন মনোভাব ছড়িয়ে পড়েছে যে সোনার দাম এখন আর অর্থনৈতিক শর্তের ওপর অতটা নির্ভর করে না, যতটা নির্ভর করে চীনের ভোক্তাদের ইচ্ছা-অনিচ্ছার ওপর।

ঢাকা/এসএইচ

শেয়ার করুন

x

পুঁজিবাজারের বিনিয়োগ তুলে স্বর্ণ কিনছেন যে তরুণী

আপডেট: ০৩:০৪:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ মে ২০২৪

চীনের ২৫ বছর বয়সী তরুণী লিন। এই নারী পুঁজিবাজার থেকে বিনিয়োগ তুলে নিয়ে ছোট দানা আকারের সোনা কিনছেন। বৈশ্বিক সোনার বাজারে বরাবরই চীনের বড় প্রভাব আছে। এবার যে সোনা কেনার প্রতি মানুষের আকর্ষণ তৈরি হয়েছে, তাতে চীনের প্রভাব আরও বেশি করে দেখা যাচ্ছে। সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

এতে বলা হয়, ২৫ বছর বয়সী এই নারী শেয়ারবাজার থেকে বিনিয়োগ তুলে নিয়ে ছোট দানা আকারের সোনা কিনছেন। সোনার গয়না, বার বা কয়েন কেনার সামর্থ্য নেই তাঁর; অগত্যা সোনার দানা কিনেই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে তাঁকে। সোনার প্রতি মানুষের যে আকর্ষণ তৈরি হয়েছে, সেই দৌড়ে তিনিও সামর্থ্য অনুযায়ী শামিল হয়েছেন। নিউইয়র্ক টাইমসকে লিন বলেন, আমি আরও সঞ্চয় করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছি।

দেশটির শেয়ারের সূচক নিম্নমুখী। এ বাস্তবতায় চীনে যেসব বিনিয়োগ আসছে, তার মধ্যে অনেক বিনিয়োগই হচ্ছে স্বর্ণভিত্তিক তহবিলে। এ ছাড়া দেশটির তরুণেরা সামর্থ্য অনুসারে সোনার দানা কিনছেন।

বেইজিংভিত্তিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান বিওসি ইন্টারন্যাশনালের বৈশ্বিক প্রধান অর্থনীতিবিদ গুয়ান তাও নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেন, আগে চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক দেশের বাজার থেকে রেনমিনবির বিনিময়ে সোনা কিনত; কিন্তু এবার তারা বিদেশি মুদ্রার বিনিময়ে সোনা কিনছে। এর মধ্য দিয়ে তারা মার্কিন ডলারসহ অন্যান্য বিদেশি মুদ্রা ব্যয় করছে।

এদিকে চীনের আবাসন খাতের অবস্থা ভালো নয়; ঋণের ভারে জর্জরিত দেশটির আর্থিক খাত। এই বাস্তবতায় চীনের মানুষেরা সোনার দিকে ঝুঁকেছেন। চীনাদের এই সোনা কেনার হিড়িকের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সোনার রিজার্ভ বৃদ্ধি।

আরও পড়ুন: এবার আর জরিমানা নয়, জেল হতে পারে ট্রাম্পের

বৈশ্বিক ও জাতীয় অনিশ্চয়তার মধ্যে সবচেয়ে নিরাপদ বিনিয়োগের মাধ্যম হচ্ছে সোনা। ২০২২ সালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও গত বছরের শেষ দিকে ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর বিশ্ববাজারে সোনার দাম বেড়েছে। এমনকি সোনার দাম আউন্সপ্রতি ২ হাজার ৪০০ ডলার ছাড়িয়ে যায়; দাম এই পর্যায়ে বেশ কিছুদিনের জন্য থিতু হয়েছিল। এবার মূলত চীনের মানুষের সোনা কেনার হিড়িক পড়ে যাওয়ায় বিশ্ববাজারে এই ধাতুর দাম এভাবে বাড়ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক যে পর্যায়ে গেছে, তাতে মার্কিন বন্ড কেনা কমিয়ে দিয়েছে দেশটি; এমনকি আগের কেনা বন্ডও ছেড়ে দিচ্ছে তারা। আগুনে ঘি ঢেলে দেওয়ার মতো বিষয় হলো চীনের ফাটকাবাজদের তৎপরতা। তাঁরা বাজি ধরছেন, সোনার দাম আরও বৃদ্ধির সুযোগ আছে।

গত এপ্রিল মাসের শেষ দিকে ফেডারেল রিজার্ভ ইঙ্গিত দিয়েছে যে নীতি সুদহার এখন কমছে না। সেই সঙ্গে চলতি বছর ডলারের বিপরীতে বিশ্বের ১৫০টি মুদ্রার দরপতন হয়েছে; তা সত্ত্বেও বিশ্ববাজারে সোনার দাম বাড়ছে।

সোনার দাম ২ হাজার ৪০০ ডলারে ওঠার পর আবার তা ২ হাজার ৩০০ ডলারের ঘরে নেমে এসেছে ঠিকই; কিন্তু বাজারে এমন মনোভাব ছড়িয়ে পড়েছে যে সোনার দাম এখন আর অর্থনৈতিক শর্তের ওপর অতটা নির্ভর করে না, যতটা নির্ভর করে চীনের ভোক্তাদের ইচ্ছা-অনিচ্ছার ওপর।

ঢাকা/এসএইচ