০১:১৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪

পুঁজিবাজারে বিভিন্ন ধরনের ক্রিপ্টো অ্যাসেট আনতে যাচ্ছে বিএসইসি: শেখ শামসুদ্দিন

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৫:০২:৪৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৩
  • / ১০৩৮৫ বার দেখা হয়েছে

ফাইল ফটো

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেছেন, পুঁজিবাজারে বিভিন্ন ধরনের ক্রিপ্টো অ্যাসেট আনতে যাচ্ছে বিএসইসি। তার জন্য প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রনয়নের কাজ চলছে।

আজ বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ উপলক্ষ্যে চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

বিএসইসি কমিশনার বলেন, রিয়েল এস্টেট ইনভেস্টমেন্টস ট্রাস্ট (Real Estate Investment Trust-REIT) নামে যে নতুন প্রোডাক্ট আনতে যাচ্ছে, তা হবে অনেকটাই ক্রিপ্টো অ্যাসেটের মতো। চলতি বছরের মধ্যেই রিট এর জন্য বিধিমালা প্রণয়নের কাজ শেষ হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

ড. শামসুদ্দিন অবশ্য বর্তমানে অতি প্রচলিত ভার্চুয়াল মুদ্রা বিটকয়েন ও ইথেরিয়াম জাতীয় প্রোডাক্টে বিনিয়োগের বিষয়ে বিনিয়োগকারীদেরকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, বিটকয়েক জাতীয় ক্রিপ্টো প্রোডাক্টের বিপরীতে কোনো অ্যাসেট-ব্যাকআপ থাকে না। এর কোনো নিয়ন্ত্রক সংস্থা বা মনিটরিং কাঠামো নেই। ব্লকচেইন জাতীয় প্রযুক্তির মাধ্যমে এর সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করা হয়। তাই এ ধরনের প্রোডাক্টে বিনিয়োগের পর কেউ ওই বিনিয়োগ নিয়ে পালিয়ে গেলে কিছুই করার থাকবে না।

অনুষ্ঠানে শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, বিশ্ব ডিজিটালের দিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের দেশের সবখানে এখন ফোর-জি ইন্টারনেট সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে। সবার কাছে এখন মোবাইল ফোন রয়েছে। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে খুব শিগগির ক্রিপ্টো অ্যাসেট আনা হবে। যেসব জিনিসের লাইসেন্স থাকবে না সেরকম কোন কিছু বাংলাদেশে আমরা চালু হতে দেবো না। এক্ষেত্রে দেশের সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক ইতিমধ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।

তবে বর্তমানে বিদ্যমান ব্রোকারেজ হাউজ দিয়ে ক্রিপ্টো অ্যাসেট লেনদেন পরিচালনা করা সম্ভব হবেনা। এজন্য দরকার ডিজিটাল ব্রোকারেজ হাউজ। বিশ্বের অনেক দেশে ক্রিপ্টো অ্যাসেট লেনদেন করার মতো হাউজ রয়েছে। এমনকি আমাদের পার্শবর্তী দেশ ভারতেও এরকম ব্রোকারেজ হাউজ রয়েছে বলেও জানান বিএসইসির এই কমিশনার।

তিনি বলেন, ক্রিপ্টো কারেন্সি বিশ্বের প্রায় সব দেশে অবৈধ। একই ভাবে আমাদের দেশেও এর বৈধতা নেই। কারণ কয়েকদিন আগেও এমটিএফই নামের একটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণের অর্থ নিয়ে চলে গেছে। এভাবে ক্রিপ্টো যারা সরবরাহ করে বা এর ব্লকচেইন সম্পর্কে অজানা। তাই এরকম কোন কারেন্সি বাংলাদেশে আমরা কখনোই বৈধতা দিবো না।

কমিশনার বলেন, আমাদের অর্থনীতি এখন সাড়ে ৪০০ বিলিয়ন ডলারের। অনেক ইউরিপের দেশের অর্থনীতিও আমাদের মতো এত বড় না। বিশ্বের মোট কার্বন নির্গমনের মাত্র দশমিক ৭ শতাংশ বাংলাদেশ থেকে হয়। এরপরেও আমরা সাসটেইনএবল ফাইন্যান্স করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। দেশের পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি বিভিন্ন পরিবেশবান্ধব বন্ড ইস্যু করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

এছাড়াও তিনি বলেন, ক্রিপ্টো কারেন্সি আমাদের দেশে বৈধ না। তবে এটি নিয়ে আলোচনা হওয়া দরকার। ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অফ সিকিউরিটিজ কমিশনসের (আইওএসকো) সঙ্গে সিএসই আজকেও ক্রিপ্টো অ্যাসেট নিয়ে আলোচনা করবে। ক্রিপ্টো কারেন্সিকে আইওএসকো একটি প্রোডাক্ট হিসেবে দেখছে। সংস্থাটি এটিকে কখনো মানি হিসেবে দেখছে না। তাই দেশের মানুষের সম্পদ ঝুঁকিমুক্ত রাখার চেষ্টা করতে হবে।

ব্যাংক থেকে আমনতকারীর টাকা কেউ নিলে সেটি ফেরত আনা সম্ভব। তবে অবৈধ ক্রিপ্টোর টাকা হারিয়ে গেলে আর ফেরত পাওয়া সম্ভব না। এজন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিশ্বের ডিজিটালের সঙ্গে তালমিলিয়ে নিজস্ব পণ্য আনতে চেষ্টা করছে। এছাড়া আমরা ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশনে বিশ্বাস করি।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিএসইর পরিচালক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন এফসিএমএ। স্টক এক্সচেঞ্জটির একাধিক পরিচালক আলোচনায় অংশ নেন।

ঢাকা/এসএ

শেয়ার করুন

x

পুঁজিবাজারে বিভিন্ন ধরনের ক্রিপ্টো অ্যাসেট আনতে যাচ্ছে বিএসইসি: শেখ শামসুদ্দিন

আপডেট: ০৫:০২:৪৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৩

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেছেন, পুঁজিবাজারে বিভিন্ন ধরনের ক্রিপ্টো অ্যাসেট আনতে যাচ্ছে বিএসইসি। তার জন্য প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রনয়নের কাজ চলছে।

আজ বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ উপলক্ষ্যে চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

বিএসইসি কমিশনার বলেন, রিয়েল এস্টেট ইনভেস্টমেন্টস ট্রাস্ট (Real Estate Investment Trust-REIT) নামে যে নতুন প্রোডাক্ট আনতে যাচ্ছে, তা হবে অনেকটাই ক্রিপ্টো অ্যাসেটের মতো। চলতি বছরের মধ্যেই রিট এর জন্য বিধিমালা প্রণয়নের কাজ শেষ হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

ড. শামসুদ্দিন অবশ্য বর্তমানে অতি প্রচলিত ভার্চুয়াল মুদ্রা বিটকয়েন ও ইথেরিয়াম জাতীয় প্রোডাক্টে বিনিয়োগের বিষয়ে বিনিয়োগকারীদেরকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, বিটকয়েক জাতীয় ক্রিপ্টো প্রোডাক্টের বিপরীতে কোনো অ্যাসেট-ব্যাকআপ থাকে না। এর কোনো নিয়ন্ত্রক সংস্থা বা মনিটরিং কাঠামো নেই। ব্লকচেইন জাতীয় প্রযুক্তির মাধ্যমে এর সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করা হয়। তাই এ ধরনের প্রোডাক্টে বিনিয়োগের পর কেউ ওই বিনিয়োগ নিয়ে পালিয়ে গেলে কিছুই করার থাকবে না।

অনুষ্ঠানে শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, বিশ্ব ডিজিটালের দিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের দেশের সবখানে এখন ফোর-জি ইন্টারনেট সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে। সবার কাছে এখন মোবাইল ফোন রয়েছে। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে খুব শিগগির ক্রিপ্টো অ্যাসেট আনা হবে। যেসব জিনিসের লাইসেন্স থাকবে না সেরকম কোন কিছু বাংলাদেশে আমরা চালু হতে দেবো না। এক্ষেত্রে দেশের সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক ইতিমধ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।

তবে বর্তমানে বিদ্যমান ব্রোকারেজ হাউজ দিয়ে ক্রিপ্টো অ্যাসেট লেনদেন পরিচালনা করা সম্ভব হবেনা। এজন্য দরকার ডিজিটাল ব্রোকারেজ হাউজ। বিশ্বের অনেক দেশে ক্রিপ্টো অ্যাসেট লেনদেন করার মতো হাউজ রয়েছে। এমনকি আমাদের পার্শবর্তী দেশ ভারতেও এরকম ব্রোকারেজ হাউজ রয়েছে বলেও জানান বিএসইসির এই কমিশনার।

তিনি বলেন, ক্রিপ্টো কারেন্সি বিশ্বের প্রায় সব দেশে অবৈধ। একই ভাবে আমাদের দেশেও এর বৈধতা নেই। কারণ কয়েকদিন আগেও এমটিএফই নামের একটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণের অর্থ নিয়ে চলে গেছে। এভাবে ক্রিপ্টো যারা সরবরাহ করে বা এর ব্লকচেইন সম্পর্কে অজানা। তাই এরকম কোন কারেন্সি বাংলাদেশে আমরা কখনোই বৈধতা দিবো না।

কমিশনার বলেন, আমাদের অর্থনীতি এখন সাড়ে ৪০০ বিলিয়ন ডলারের। অনেক ইউরিপের দেশের অর্থনীতিও আমাদের মতো এত বড় না। বিশ্বের মোট কার্বন নির্গমনের মাত্র দশমিক ৭ শতাংশ বাংলাদেশ থেকে হয়। এরপরেও আমরা সাসটেইনএবল ফাইন্যান্স করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। দেশের পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি বিভিন্ন পরিবেশবান্ধব বন্ড ইস্যু করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

এছাড়াও তিনি বলেন, ক্রিপ্টো কারেন্সি আমাদের দেশে বৈধ না। তবে এটি নিয়ে আলোচনা হওয়া দরকার। ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অফ সিকিউরিটিজ কমিশনসের (আইওএসকো) সঙ্গে সিএসই আজকেও ক্রিপ্টো অ্যাসেট নিয়ে আলোচনা করবে। ক্রিপ্টো কারেন্সিকে আইওএসকো একটি প্রোডাক্ট হিসেবে দেখছে। সংস্থাটি এটিকে কখনো মানি হিসেবে দেখছে না। তাই দেশের মানুষের সম্পদ ঝুঁকিমুক্ত রাখার চেষ্টা করতে হবে।

ব্যাংক থেকে আমনতকারীর টাকা কেউ নিলে সেটি ফেরত আনা সম্ভব। তবে অবৈধ ক্রিপ্টোর টাকা হারিয়ে গেলে আর ফেরত পাওয়া সম্ভব না। এজন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিশ্বের ডিজিটালের সঙ্গে তালমিলিয়ে নিজস্ব পণ্য আনতে চেষ্টা করছে। এছাড়া আমরা ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশনে বিশ্বাস করি।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিএসইর পরিচালক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন এফসিএমএ। স্টক এক্সচেঞ্জটির একাধিক পরিচালক আলোচনায় অংশ নেন।

ঢাকা/এসএ