০২:৫২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৬ মে ২০২৪

পেপার প্রসেসিং ও মনোস্পুল পেপারের হিসাবে নিরীক্ষকের আপত্তি

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৭:৩১:০৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২২
  • / ৪২৬০ বার দেখা হয়েছে

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: পুঁজিবাজারে পেপার প্রসেসিং খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি পেপার প্রসেসিং অ্যান্ড প্যাকেজিং ও মনোস্পুল পেপার ম্যানুফ্যাকচারিংয়ে নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে বিভিন্ন অসঙ্গতি পাওয়া গেছে। কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন নিরীক্ষায় অসঙ্গতি খুজেঁ পেয়েছেন সংশ্লিষ্ট নিরীক্ষক।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

কোম্পানি দুইটির পক্ষ থেকে ব্যাংকিং চ্যানেলের বাইরে অসংখ্য নগদে লেনদেন করা হয়েছে। যেখানে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার সম্ভাবনা আছে। এছাড়া কোম্পানি দুটির জন্য সুদে ঋণ নিয়ে সংশ্লিষ্ট গ্রুপের বিভিন্ন কোম্পানিতে বিনাসুদে ঋণ সরবরাহ করা হয়েছে। এসব বিষয় চাইলে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) বিশেষ নিরীক্ষার মাধ্যমে বের করে আনতে পারে বলে মনে করেন নিরীক্ষক।

কোম্পানি দুটির ২০২২ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক হিসাব নিয়ে এমন আপত্তি জানিয়েছেন নিরীক্ষক।

মনোস্পুল পেপার: ২০২২ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরে কোম্পানির জমি ও জমি উন্নয়নবাবদ ৬ কোটি ৩৫ লাখ টাকা ও ক্যাপিটাল ওয়ার্ক-ইন-প্রসেস বাবদ ৪৫ লাখ টাকা ব্যবহার করা হয়েছে। যার পুরোটাই নগদ টাকায় করা হয়েছে। এক্ষেত্রে অনিয়মের সুযোগ রয়েছে। তাই সত্যতা যাচাই করা দরকার। এছাড়া ওয়ার্কার্স প্রফিট পার্টিসিপেশন ফান্ডের (ডাব্লিউপিপিএফ) ৬৩ লাখ টাকা নগদে পরিশোধ করা হয়েছে। এমনকি জমি কেনার জন্য অগ্রিম হিসেবে ৫ কোটি ৫৩ লাখ টাকা নগদে দেওয়া হয়েছে। এই কোম্পানির ৪৯ কোটি ৮১ লাখ টাকার স্থায়ী সম্পদ রয়েছে বলে আর্থিক হিসাবে দেখানো হয়েছে। কিন্তু এর কোনো সঠিক তথ্য রেজিস্টার বুকে নেই।

পেপার প্রসেসিং: কোম্পানির কর্তৃপক্ষ শ্রম আইন সঠিকভাবে পরিপালন করেনি। তারা আইন অমান্য করে ওয়ার্কার্স প্রফিট পার্টিসিপেশন ফান্ডের সব টাকা কর্মচারীদের মধ্যে বিতরণ করে দিয়েছে। এই কোম্পানি কর্তৃপক্ষ আর্থিক হিসাবে ৩৭ কোটি ৪৫ লাখ টাকার স্থায়ী সম্পদ দেখিয়েছে। কিন্তু নিরীক্ষক সব তথ্য যাচাইয়ে ওসব সম্পদ ক্রয়ের তারিখ খুঁজে পাননি। এর মাধ্যমেও কোম্পানি কর্তৃপক্ষ ব্যয় কমিয়ে মুনাফা অতিরঞ্জিত করে দেখাতে পারে। তারা সম্পদ আগে কিনলেও তা পরে দেখিয়ে অবচয় কম চার্জ করতে পারে। যে কারণে রেজিস্টার বুক আপডেট করা দরকার।

এদিকে, কোম্পানি কর্তৃপক্ষ আর্থিক হিসাবে ১৪ কোটি ১৮ লাখ টাকার মজুত পণ্য দেখালেও, নিরীক্ষক তার পুরোটার সত্যতা পায়নি। নিরীক্ষক জানিয়েছেন, তারা সরেজমিনে মজুত পণ্যের সত্যতা যাচাই করতে গিয়ে কিছু আইটেমের বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারেননি। আর মনোস্পুলের ন্যায় পেপার প্রসেসিং কর্তৃপক্ষও জমি ও জমি উন্নয়ন ও অবকাঠামো নির্মাণে নগদে লেনদেন করেছে।

বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, নগদে লেনদেন করার মাধ্যমে ব্যয় অতিরিক্ত দেখিয়ে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়। যে কারণে আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪ এর ধারা ৩০(এম) অনুযায়ী, কোনো কোম্পানি লেনদেনের ক্ষেত্রে ৫০ হাজার টাকার উপরে গেলে, ব্যাংকিং চ্যানেলে পেমেন্ট করা বাধ্যতামূলক।

আরও পড়ুন: শরীয়াহভিত্তিক সিকিউরিটিজ ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা ফেরাতে বিধিমালা প্রণয়ন

ঢাকা/টিএ

শেয়ার করুন

x

পেপার প্রসেসিং ও মনোস্পুল পেপারের হিসাবে নিরীক্ষকের আপত্তি

আপডেট: ০৭:৩১:০৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২২

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: পুঁজিবাজারে পেপার প্রসেসিং খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি পেপার প্রসেসিং অ্যান্ড প্যাকেজিং ও মনোস্পুল পেপার ম্যানুফ্যাকচারিংয়ে নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে বিভিন্ন অসঙ্গতি পাওয়া গেছে। কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন নিরীক্ষায় অসঙ্গতি খুজেঁ পেয়েছেন সংশ্লিষ্ট নিরীক্ষক।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

কোম্পানি দুইটির পক্ষ থেকে ব্যাংকিং চ্যানেলের বাইরে অসংখ্য নগদে লেনদেন করা হয়েছে। যেখানে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার সম্ভাবনা আছে। এছাড়া কোম্পানি দুটির জন্য সুদে ঋণ নিয়ে সংশ্লিষ্ট গ্রুপের বিভিন্ন কোম্পানিতে বিনাসুদে ঋণ সরবরাহ করা হয়েছে। এসব বিষয় চাইলে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) বিশেষ নিরীক্ষার মাধ্যমে বের করে আনতে পারে বলে মনে করেন নিরীক্ষক।

কোম্পানি দুটির ২০২২ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক হিসাব নিয়ে এমন আপত্তি জানিয়েছেন নিরীক্ষক।

মনোস্পুল পেপার: ২০২২ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরে কোম্পানির জমি ও জমি উন্নয়নবাবদ ৬ কোটি ৩৫ লাখ টাকা ও ক্যাপিটাল ওয়ার্ক-ইন-প্রসেস বাবদ ৪৫ লাখ টাকা ব্যবহার করা হয়েছে। যার পুরোটাই নগদ টাকায় করা হয়েছে। এক্ষেত্রে অনিয়মের সুযোগ রয়েছে। তাই সত্যতা যাচাই করা দরকার। এছাড়া ওয়ার্কার্স প্রফিট পার্টিসিপেশন ফান্ডের (ডাব্লিউপিপিএফ) ৬৩ লাখ টাকা নগদে পরিশোধ করা হয়েছে। এমনকি জমি কেনার জন্য অগ্রিম হিসেবে ৫ কোটি ৫৩ লাখ টাকা নগদে দেওয়া হয়েছে। এই কোম্পানির ৪৯ কোটি ৮১ লাখ টাকার স্থায়ী সম্পদ রয়েছে বলে আর্থিক হিসাবে দেখানো হয়েছে। কিন্তু এর কোনো সঠিক তথ্য রেজিস্টার বুকে নেই।

পেপার প্রসেসিং: কোম্পানির কর্তৃপক্ষ শ্রম আইন সঠিকভাবে পরিপালন করেনি। তারা আইন অমান্য করে ওয়ার্কার্স প্রফিট পার্টিসিপেশন ফান্ডের সব টাকা কর্মচারীদের মধ্যে বিতরণ করে দিয়েছে। এই কোম্পানি কর্তৃপক্ষ আর্থিক হিসাবে ৩৭ কোটি ৪৫ লাখ টাকার স্থায়ী সম্পদ দেখিয়েছে। কিন্তু নিরীক্ষক সব তথ্য যাচাইয়ে ওসব সম্পদ ক্রয়ের তারিখ খুঁজে পাননি। এর মাধ্যমেও কোম্পানি কর্তৃপক্ষ ব্যয় কমিয়ে মুনাফা অতিরঞ্জিত করে দেখাতে পারে। তারা সম্পদ আগে কিনলেও তা পরে দেখিয়ে অবচয় কম চার্জ করতে পারে। যে কারণে রেজিস্টার বুক আপডেট করা দরকার।

এদিকে, কোম্পানি কর্তৃপক্ষ আর্থিক হিসাবে ১৪ কোটি ১৮ লাখ টাকার মজুত পণ্য দেখালেও, নিরীক্ষক তার পুরোটার সত্যতা পায়নি। নিরীক্ষক জানিয়েছেন, তারা সরেজমিনে মজুত পণ্যের সত্যতা যাচাই করতে গিয়ে কিছু আইটেমের বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারেননি। আর মনোস্পুলের ন্যায় পেপার প্রসেসিং কর্তৃপক্ষও জমি ও জমি উন্নয়ন ও অবকাঠামো নির্মাণে নগদে লেনদেন করেছে।

বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, নগদে লেনদেন করার মাধ্যমে ব্যয় অতিরিক্ত দেখিয়ে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়। যে কারণে আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪ এর ধারা ৩০(এম) অনুযায়ী, কোনো কোম্পানি লেনদেনের ক্ষেত্রে ৫০ হাজার টাকার উপরে গেলে, ব্যাংকিং চ্যানেলে পেমেন্ট করা বাধ্যতামূলক।

আরও পড়ুন: শরীয়াহভিত্তিক সিকিউরিটিজ ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা ফেরাতে বিধিমালা প্রণয়ন

ঢাকা/টিএ