০৭:১১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে পুরো দেশ বদলে গেছে: তথ্যমন্ত্রী

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৫:১৩:১৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • / ১০৩৬৮ বার দেখা হয়েছে

ফাইল ফটো

আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে পুরো দেশ আজ বদলে গেছে। ঢাকা শহর তো বটেই।

আজ রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

দেশের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের একাংশের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মাধ্যমে রাজধানী ঢাকার যোগাযোগব্যবস্থায় এক বৈপ্লবিক পরিবর্তনের সূচনা হয়েছে। এ বিষয়ে বিএনপি নেতাদের মন্তব্য শোনার অপেক্ষায় আছেন বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও তাদের নেতাদেরও এই প্রশ্ন করতে পারেন। এই উন্নয়নের মাইলফলক নিয়ে তারা কী বলেন, তা শোনার অপেক্ষায় আছি। তারা চোখ থাকলেও দেখে না, কান থাকতেও শোনোর না।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে পুরো দেশ আজ বদলে গেছে। ঢাকা শহর তো বটেই। ১৪ বছর আগে ঢাকা শহর থেকে চলে যাওয়া কেউ যদি ফের আসেন, তাহলে এই শহরকে চিনতে পারছেন না। একই চিত্র বাংলাদেশের অন্য শহর ও গ্রামের। দেশ আজ সত্যিকার অর্থে এগিয়ে গেছে। ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় একটি অবিস্মরণীয় অধ্যায়।’

আরও পড়ুন: চার ঘণ্টা পর ঢাকার সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে করা এক প্রশ্নের উত্তরে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দ্রব্যমূল্য সারা পৃথিবীতে বেড়েছে। তুরস্কে মূল্যস্ফীতি ৮২ শতাংশে উঠেছিল। পাকিস্তানে ৩২ শতাংশের ওপরে গিয়েছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১০ শতাংশ, ইউরোপীয় ইউনিয়নে ১০ থেকে ২০ শতাংশ, রাষ্ট্র ভেদে কোনো দেশে ১০ শতাংশ, কোনো দেশে ২০ শতাংশ, জ্বালানির ক্ষেত্রে আরও বেশি। আমাদের দেশে মূল্যস্ফীতি ৮ থেকে ৯ শতাংশ। অন্য দেশের তুলনায় অনেক কম আছে। তবে এতে জনগণের যে অসুবিধা হচ্ছে, সে ব্যাপারে আমরা ওয়াকিবহাল।’

তিনি বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি যাতে জনগণের অসুবিধা না হয়। সেজন্য নানা ধরনের কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। টিসিবির মাধ্যমে স্বল্পমূল্যে পণ্য বিতরণ করা হচ্ছে। এক কোটি ফ্যামিলি কার্ড দেওয়া হয়েছে। আরও ৫০ লাখ মানুষকে খাদ্য সামগ্রী দেওয়া হচ্ছে ২০ টাকা দামে। এভাবে এবং বিনামূল্যেও চাল দেওয়া হচ্ছে।’

মন্ত্রী আরও বলেন, ‘কিছু কিছু অসাধু ব্যবসায়ী আছেন বাংলাদেশেঅ তারা একটা অজুহাত পেলেই দাম বাড়ানোর চেষ্টা করেন। এদের বিরুদ্ধে আসলে আমাদের একটা সামাজিক প্রতিরোধ দরকার।’

এখন ওয়ান-ইলেভেনের কুশীলবরা আবার সক্রিয় হয়েছে মন্তব্য করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘যারা ষড়যন্ত্র করে তারা বসে থাকতে পারে না। এখন ওয়ান-ইলেভেনের কুশীলবরা আবার সক্রিয় হয়েছে। সুতরাং তারা আবার ষড়যন্ত্র করে কিছু করতে পারে কি না চেষ্টা করছে। তারা তো বারবার ব্যর্থ হয়েছে, এখনও ব্যর্থ হবে।

আপনাদের সরকারের নীতি হচ্ছে সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়। সংসদ নির্বাচন নিয়ে এখন যে অবস্থা তাতে এই বন্ধুত্বের সম্পর্ক ধরে রাখা সম্ভব কি? সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নের উত্তরে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচনের সঙ্গে পররাষ্ট্রনীতির কোনো সম্পর্ক নেই। নির্বাচন হয় দেশে, ভোট দেয় দেশের জনগণ। এর সঙ্গে পররাষ্ট্রনীতি বা কার কোন দেশের সঙ্গে কী সম্পর্ক আছে বা সম্পর্ক নেই সেটার কোনো প্রভাব থাকা উচিত না, প্রভাব থাকে না।’

‘তবে সব দেশের সঙ্গেই আমাদের ভালো সম্পর্ক এবং সব দেশের সঙ্গেই ভালো সম্পর্ক রেখে দেশের অগ্রগতি অর্জিত হচ্ছে। দেশকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে সব দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে’, বলেন তথ্যমন্ত্রী।

আর এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘যারা ষড়যন্ত্র করে, তারা ষড়যন্ত্র না করে থাকতে পারে না। ষড়যন্ত্র সব সময় থাকবে। এ ষড়যন্ত্রের বেড়াজাল ছিন্ন করেই তো আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। সাড়ে চোদ্দ বছরে ষড়যন্ত্র কি কম হয়েছে? বিডিআর বিদ্রোহ থেকে শুরু করে এখনো পর্যন্ত ষড়যন্ত্র বহু হয়েছে।’

‘সব ষড়যন্ত্রকে পদদলিত করে, ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে দেশ এগিয়ে গেছে। শেখ হাসিনা পরপর তিনবার দেশ পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে। ভবিষ্যতে ষড়যন্ত্র থাকবে, সেগুলো ছিন্ন করে আমরা এগিয়ে যাবো।’

তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘ফেসবুকে আমি দেখলাম যে ড. ইউনূস তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হচ্ছেন, আবার ফেসবুকে এটাও দেখেছি বিএনপি হিরো আলমকে পছন্দ করেছে। আসলে এগুলো ফেসবুকের প্রচার, অপপ্রচার যাই বলেন এগুলো নিয়ে আমি মন্তব্য করতে চাই না।’

তিনি বলেন, ‘কেউ নোবেল পুরস্কার পেলে কিংবা রাষ্ট্রপ্রধান হলে বা প্রধানমন্ত্রী হলে তিনি তো আইনের ঊর্ধ্বে নয়। এ দেশে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিচার হয়েছে এবং সাজা ভোগ করছেন। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে নোবেল বিজয়ীদের বিচার হয়েছে এবং তারা জেলও খেটেছেন। এমন উদাহরণ আছে। আমাদের বিচার প্রক্রিয়া অত্যন্ত স্বচ্ছ।’

তিনি আরও বলেন, ‘ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি যথাযথ শ্রদ্ধা রেখে বলছি সত্যটা হচ্ছে এই, শ্রমিকদের ৫ শতাংশ হারে লভ্যাংশ দেওয়ার কথা ছিল, যেটির মূল্য হচ্ছে এক হাজার ২০০ কোটি টাকা। সেটি তিনি জালিয়াতের মাধ্যমে এবং ঘুস প্রদান করে ৪০০ কোটি টাকায় নামিয়েছিলেন। সেটিও তিনি দেননি। সেজন্য বিচার হচ্ছে। আরও অনেক মামলা আছে।’

‘কেউ তো আইনের বা বিচারের ঊর্ধে নয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিচার হচ্ছে। আমাদের দেশের বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে বিবৃতি দেওয়া এটি তো আমাদের দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বের ওপর হস্তক্ষেপের শামিল। সে জন্য বাংলাদেশের সচেতন নাগরিক সমাজ এবং সাংবাদিকরা এর বিরুদ্ধে বিবৃতি দিয়েছেন’, যোগ করেন তথ্যমন্ত্রী।

সংবাদমাধ্যমে দেখলাম সিঙ্গাপুরে মির্জা আব্বাস ও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে কয়েকজন বিজেপি নেতা ও ভারতীয় মন্ত্রীর বৈঠক হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘কোন ট্যাবলয়েড পত্রিকায় এসব লিখেছে, তা আমি জানি না। তবে আপনি ওই পত্রিকাকে জিজ্ঞাসা করতে পারেন। কোনো পত্রিকায় একটা নিউজ এলে তার জবাব দেওয়ার প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না। বৈঠক করতে ভারতীয় মন্ত্রীদের ওখানে যেতে হবে (কেন), যে পত্রিকায় তা লিখেছে, তাদের জিজ্ঞাসা করুন।’

সিঙ্গাপুরে বিএনপি মহাসচিব ও জাতীয় পার্টির মহাসচিবের মধ্যে বৈঠক হয়েছে বলে চাউর হচ্ছে। তবে বিমানবন্দরে নেমে বিএনপি মহাসচিব বলেছেন, সরকার প্রোপাগান্ডা ছাড়াচ্ছে। এই প্রোপাগান্ডার সঙ্গে সরকার জড়িত কি না, জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এটা সামাজিকমাধ্যমে আমি দেখেছি। বিদেশে বসেও দেখেছি। কিন্তু মির্জা ফখরুল বলেছেন এটা অসত্য। তার বক্তব্যকেই আমরা সত্য ধরে নিচ্ছি।’

নির্বাচন কমিশন থেকে বলা হয়েছে- আগামী বছরের জানুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে। সে পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেছেন যে যেদিন তফসিল ঘোষণা করা হবে। সেদিন থেকে সরকারের অন্তিমযাত্রা শুরু হবে। এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সংবিধান অনুসারে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন কমিশন স্বাধীন। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার এখতিয়ার তাদের। সে অনুসারে নির্বাচনের প্রস্তুতি আমাদের চলছে।’

তিনি বলেন, ‘বিএনপির উদ্দেশ্য হচ্ছে সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা ধূলিসাৎ করা। এটিই তাদের উদ্দেশ্য। ২০১৪ সালেও তারা এমনটা করেছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনে গিয়েও তারা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করছে। সেই ধরনের চেষ্টা তাদের পক্ষে করা আর সম্ভবপর না। যদি এমন অপচেষ্টা চালায়, তাহলে জনগণ প্রতিহত করবে। নির্বাচন বর্জন কিংবা অংশগ্রহণ করার এখতিয়ার যে কোনো রাজনৈতিক দলের আছে। আমি মনে করি, বিএনপি দায়িত্বশীল দল হলে অবশ্যই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। কারণ গণতন্ত্রকে সংহত করা কেবল সরকারি দলেরই দায়িত্ব না, সব রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব।’

ঢাকা/টিএ

শেয়ার করুন

error: Content is protected ! Please Don't Try!

প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে পুরো দেশ বদলে গেছে: তথ্যমন্ত্রী

আপডেট: ০৫:১৩:১৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩

আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে পুরো দেশ আজ বদলে গেছে। ঢাকা শহর তো বটেই।

আজ রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

দেশের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের একাংশের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মাধ্যমে রাজধানী ঢাকার যোগাযোগব্যবস্থায় এক বৈপ্লবিক পরিবর্তনের সূচনা হয়েছে। এ বিষয়ে বিএনপি নেতাদের মন্তব্য শোনার অপেক্ষায় আছেন বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও তাদের নেতাদেরও এই প্রশ্ন করতে পারেন। এই উন্নয়নের মাইলফলক নিয়ে তারা কী বলেন, তা শোনার অপেক্ষায় আছি। তারা চোখ থাকলেও দেখে না, কান থাকতেও শোনোর না।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে পুরো দেশ আজ বদলে গেছে। ঢাকা শহর তো বটেই। ১৪ বছর আগে ঢাকা শহর থেকে চলে যাওয়া কেউ যদি ফের আসেন, তাহলে এই শহরকে চিনতে পারছেন না। একই চিত্র বাংলাদেশের অন্য শহর ও গ্রামের। দেশ আজ সত্যিকার অর্থে এগিয়ে গেছে। ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় একটি অবিস্মরণীয় অধ্যায়।’

আরও পড়ুন: চার ঘণ্টা পর ঢাকার সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে করা এক প্রশ্নের উত্তরে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দ্রব্যমূল্য সারা পৃথিবীতে বেড়েছে। তুরস্কে মূল্যস্ফীতি ৮২ শতাংশে উঠেছিল। পাকিস্তানে ৩২ শতাংশের ওপরে গিয়েছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১০ শতাংশ, ইউরোপীয় ইউনিয়নে ১০ থেকে ২০ শতাংশ, রাষ্ট্র ভেদে কোনো দেশে ১০ শতাংশ, কোনো দেশে ২০ শতাংশ, জ্বালানির ক্ষেত্রে আরও বেশি। আমাদের দেশে মূল্যস্ফীতি ৮ থেকে ৯ শতাংশ। অন্য দেশের তুলনায় অনেক কম আছে। তবে এতে জনগণের যে অসুবিধা হচ্ছে, সে ব্যাপারে আমরা ওয়াকিবহাল।’

তিনি বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি যাতে জনগণের অসুবিধা না হয়। সেজন্য নানা ধরনের কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। টিসিবির মাধ্যমে স্বল্পমূল্যে পণ্য বিতরণ করা হচ্ছে। এক কোটি ফ্যামিলি কার্ড দেওয়া হয়েছে। আরও ৫০ লাখ মানুষকে খাদ্য সামগ্রী দেওয়া হচ্ছে ২০ টাকা দামে। এভাবে এবং বিনামূল্যেও চাল দেওয়া হচ্ছে।’

মন্ত্রী আরও বলেন, ‘কিছু কিছু অসাধু ব্যবসায়ী আছেন বাংলাদেশেঅ তারা একটা অজুহাত পেলেই দাম বাড়ানোর চেষ্টা করেন। এদের বিরুদ্ধে আসলে আমাদের একটা সামাজিক প্রতিরোধ দরকার।’

এখন ওয়ান-ইলেভেনের কুশীলবরা আবার সক্রিয় হয়েছে মন্তব্য করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘যারা ষড়যন্ত্র করে তারা বসে থাকতে পারে না। এখন ওয়ান-ইলেভেনের কুশীলবরা আবার সক্রিয় হয়েছে। সুতরাং তারা আবার ষড়যন্ত্র করে কিছু করতে পারে কি না চেষ্টা করছে। তারা তো বারবার ব্যর্থ হয়েছে, এখনও ব্যর্থ হবে।

আপনাদের সরকারের নীতি হচ্ছে সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়। সংসদ নির্বাচন নিয়ে এখন যে অবস্থা তাতে এই বন্ধুত্বের সম্পর্ক ধরে রাখা সম্ভব কি? সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নের উত্তরে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচনের সঙ্গে পররাষ্ট্রনীতির কোনো সম্পর্ক নেই। নির্বাচন হয় দেশে, ভোট দেয় দেশের জনগণ। এর সঙ্গে পররাষ্ট্রনীতি বা কার কোন দেশের সঙ্গে কী সম্পর্ক আছে বা সম্পর্ক নেই সেটার কোনো প্রভাব থাকা উচিত না, প্রভাব থাকে না।’

‘তবে সব দেশের সঙ্গেই আমাদের ভালো সম্পর্ক এবং সব দেশের সঙ্গেই ভালো সম্পর্ক রেখে দেশের অগ্রগতি অর্জিত হচ্ছে। দেশকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে সব দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে’, বলেন তথ্যমন্ত্রী।

আর এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘যারা ষড়যন্ত্র করে, তারা ষড়যন্ত্র না করে থাকতে পারে না। ষড়যন্ত্র সব সময় থাকবে। এ ষড়যন্ত্রের বেড়াজাল ছিন্ন করেই তো আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। সাড়ে চোদ্দ বছরে ষড়যন্ত্র কি কম হয়েছে? বিডিআর বিদ্রোহ থেকে শুরু করে এখনো পর্যন্ত ষড়যন্ত্র বহু হয়েছে।’

‘সব ষড়যন্ত্রকে পদদলিত করে, ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে দেশ এগিয়ে গেছে। শেখ হাসিনা পরপর তিনবার দেশ পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে। ভবিষ্যতে ষড়যন্ত্র থাকবে, সেগুলো ছিন্ন করে আমরা এগিয়ে যাবো।’

তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘ফেসবুকে আমি দেখলাম যে ড. ইউনূস তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হচ্ছেন, আবার ফেসবুকে এটাও দেখেছি বিএনপি হিরো আলমকে পছন্দ করেছে। আসলে এগুলো ফেসবুকের প্রচার, অপপ্রচার যাই বলেন এগুলো নিয়ে আমি মন্তব্য করতে চাই না।’

তিনি বলেন, ‘কেউ নোবেল পুরস্কার পেলে কিংবা রাষ্ট্রপ্রধান হলে বা প্রধানমন্ত্রী হলে তিনি তো আইনের ঊর্ধ্বে নয়। এ দেশে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিচার হয়েছে এবং সাজা ভোগ করছেন। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে নোবেল বিজয়ীদের বিচার হয়েছে এবং তারা জেলও খেটেছেন। এমন উদাহরণ আছে। আমাদের বিচার প্রক্রিয়া অত্যন্ত স্বচ্ছ।’

তিনি আরও বলেন, ‘ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি যথাযথ শ্রদ্ধা রেখে বলছি সত্যটা হচ্ছে এই, শ্রমিকদের ৫ শতাংশ হারে লভ্যাংশ দেওয়ার কথা ছিল, যেটির মূল্য হচ্ছে এক হাজার ২০০ কোটি টাকা। সেটি তিনি জালিয়াতের মাধ্যমে এবং ঘুস প্রদান করে ৪০০ কোটি টাকায় নামিয়েছিলেন। সেটিও তিনি দেননি। সেজন্য বিচার হচ্ছে। আরও অনেক মামলা আছে।’

‘কেউ তো আইনের বা বিচারের ঊর্ধে নয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিচার হচ্ছে। আমাদের দেশের বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে বিবৃতি দেওয়া এটি তো আমাদের দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বের ওপর হস্তক্ষেপের শামিল। সে জন্য বাংলাদেশের সচেতন নাগরিক সমাজ এবং সাংবাদিকরা এর বিরুদ্ধে বিবৃতি দিয়েছেন’, যোগ করেন তথ্যমন্ত্রী।

সংবাদমাধ্যমে দেখলাম সিঙ্গাপুরে মির্জা আব্বাস ও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে কয়েকজন বিজেপি নেতা ও ভারতীয় মন্ত্রীর বৈঠক হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘কোন ট্যাবলয়েড পত্রিকায় এসব লিখেছে, তা আমি জানি না। তবে আপনি ওই পত্রিকাকে জিজ্ঞাসা করতে পারেন। কোনো পত্রিকায় একটা নিউজ এলে তার জবাব দেওয়ার প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না। বৈঠক করতে ভারতীয় মন্ত্রীদের ওখানে যেতে হবে (কেন), যে পত্রিকায় তা লিখেছে, তাদের জিজ্ঞাসা করুন।’

সিঙ্গাপুরে বিএনপি মহাসচিব ও জাতীয় পার্টির মহাসচিবের মধ্যে বৈঠক হয়েছে বলে চাউর হচ্ছে। তবে বিমানবন্দরে নেমে বিএনপি মহাসচিব বলেছেন, সরকার প্রোপাগান্ডা ছাড়াচ্ছে। এই প্রোপাগান্ডার সঙ্গে সরকার জড়িত কি না, জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এটা সামাজিকমাধ্যমে আমি দেখেছি। বিদেশে বসেও দেখেছি। কিন্তু মির্জা ফখরুল বলেছেন এটা অসত্য। তার বক্তব্যকেই আমরা সত্য ধরে নিচ্ছি।’

নির্বাচন কমিশন থেকে বলা হয়েছে- আগামী বছরের জানুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে। সে পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেছেন যে যেদিন তফসিল ঘোষণা করা হবে। সেদিন থেকে সরকারের অন্তিমযাত্রা শুরু হবে। এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সংবিধান অনুসারে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন কমিশন স্বাধীন। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার এখতিয়ার তাদের। সে অনুসারে নির্বাচনের প্রস্তুতি আমাদের চলছে।’

তিনি বলেন, ‘বিএনপির উদ্দেশ্য হচ্ছে সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা ধূলিসাৎ করা। এটিই তাদের উদ্দেশ্য। ২০১৪ সালেও তারা এমনটা করেছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনে গিয়েও তারা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করছে। সেই ধরনের চেষ্টা তাদের পক্ষে করা আর সম্ভবপর না। যদি এমন অপচেষ্টা চালায়, তাহলে জনগণ প্রতিহত করবে। নির্বাচন বর্জন কিংবা অংশগ্রহণ করার এখতিয়ার যে কোনো রাজনৈতিক দলের আছে। আমি মনে করি, বিএনপি দায়িত্বশীল দল হলে অবশ্যই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। কারণ গণতন্ত্রকে সংহত করা কেবল সরকারি দলেরই দায়িত্ব না, সব রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব।’

ঢাকা/টিএ