চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে ভর্তুকি ও প্রণোদনা বাবদ বরাদ্দ ছিল ৪৯ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে কৃষি ভর্তুকি ছিল ৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। আন্তর্জাতিক বাজারে সারের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় চলতি অর্থবছরে তো বেড়েছেই, আগামী অর্থবছরেও ভর্তুকি বাড়বে। সারের কারণেই চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে ভর্তুকি বাড়িয়ে ৬৬ হাজার ৮২৫ কোটি টাকা ধরা হয়েছে। মূল বরাদ্দকে বিবেচনায় নিলে আগামী অর্থবছরে ভর্তুকি বাড়ছে ২৪ হাজার কোটি টাকা।
কৃষি ফার্ম শ্রমিক ফেডারেশনের এক সম্মেলনে গত ১৪ মে কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক তাঁর বক্তব্যে জানান, ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ এবং করোনা মহামারির কারণে পটাশিয়াম সারের দাম প্রতি টন ৩০০ ডলার থেকে বেড়ে ১ হাজার ২০০ ডলার হয়েছে। তাতে সাড়ে ৭ থেকে ৮ হাজার কোটি টাকার ভর্তুকি বেড়ে এখন ৩০ হাজার কোটি টাকা হবে।
ভর্তুকিতে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে বিদ্যুৎ খাত। আগামী অর্থবছরে এ খাতে ভর্তুকি বরাদ্দ থাকছে ১৮ হাজার কোটি টাকা। বেসরকারি খাত থেকে বেশি দামে বিদ্যুৎ কিনে কম দামে বিক্রি করার জন্য পিডিবিকে ঋণও দেয় সরকার। এ ঋণও ভর্তুকি। কারণ, সরকার তা ফেরত পায় না।
ভর্তুকির টাকা সরাসরি জনগণের দেওয়া করের টাকা। তাই ভর্তুকি নিয়ে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের পাশাপাশি একশ্রেণির অর্থনীতিবিদেরও সমালোচনা রয়েছে। তবে প্রতিযোগী দেশগুলো ভর্তুকি দিলে, বাংলাদেশ যদি না দেয় তাহলে ক্ষতির শিকার হবে দেশের জনগণ—সরকারের পক্ষ থেকে এমন যুক্তি দেওয়া হয়।
এদিকে এলএনজি আমদানি মূল্য পরিশোধ ও প্রণোদনা প্যাকেজে সুদ ভর্তুকিসহ অন্যান্য ভর্তুকি খাতে রাখা হচ্ছে ১৭ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। প্রকৃত দামের চেয়ে কম দামে এলএনজি বিক্রি করতে হবে বলে এ ভর্তুকি লাগবে। অর্থ বিভাগ হিসাব করে দেখেছে, যে দামে এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে, সেই দামে ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের কাছে বিক্রি করলে তাঁদের পণ্য উৎপাদন খরচ বেশি পড়বে। তাই এ খাতে ভর্তুকি রাখা হচ্ছে।
আগামী অর্থবছরে খাদ্যে ভর্তুকি রাখা হচ্ছে ৬ হাজার ৭৪৫ কোটি টাকা। ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রি, খোলাবাজারে চাল বিক্রি ইত্যাদি কারণে এ ভর্তুকি রাখা হচ্ছে। ভর্তুকি একটু কমাতে ১০ টাকার চাল ১৫ টাকা করার উদ্যোগ নিয়েছে অর্থ বিভাগ। এ ছাড়া রপ্তানি খাতে প্রণোদনা, প্রবাসী আয় দেশে আনায় প্রণোদনা এবং পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানিতে বরাবরের মতো আগামী অর্থবছরেও বড় আকারের ভর্তুকি থাকছে।
ঢাকা/এসআর