০৭:০৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ মে ২০২৪

ফারইস্ট ইসলামীর সিইও ওএসডি করেছে বিএসইসি

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৫:০৫:২১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ অক্টোবর ২০২১
  • / ৪১৭৮ বার দেখা হয়েছে

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ হেমায়েত উল্লাহকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নানা আর্থিক অনিয়মের কারণে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে শেয়ারবাজারের এ নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এক সভায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে বিএসইসি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন:ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

এর আগে ১৫ সেপ্টেম্বর বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) একই কারণে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের এমডি ও সিইওকে অপসারণের নির্দেশ দেয়। আইডিআরএ’র এমন সিদ্ধান্তের আলোকে বিএসইসিও অভিযুক্তকে ওএসডি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

উক্ত বিএসইসি’র সিদ্ধান্তে উল্লেখ করা হয়, ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের এমডি ও সিইওকে ওএসডি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তিনি ওএসডি হিসেবে বহাল থাকবেন। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

এদিকে, আইডিআরএ’র নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়, বিমা আইন ২০১০ এর ৫০ ধারা মোতাবেক বিমা পলিসি গ্রাহকের স্বার্থ নিশ্চিত করতে ফারইস্ট লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ হেমায়েত উল্লাহকে ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে কোম্পানির সিইও পদ থেকে অপসারণ করা হলো। তবে তাকে কোম্পানির আর্থিক অনিয়ম ও অন্যান্য অনিয়মের দায় থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে না। আর বিমা আইন, ২০১০ এবং মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগ ও অপসারণ প্রবিধানমালা, ২০১২ অনুসারে আগামী ৩ মাসের মধ্যে একজন যোগ্য সিইও নিয়োগের যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করে অনুমোদনের জন্য নির্দেশ দিয়েছে আইডিআরএ।

নির্দেশনায় আরও উল্লেখ রয়েছে, অনেক দিন ধরে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির সিইও হেমায়েতউল্লাহ কোম্পানি পরিচালনার ক্ষেত্রে বিভিন্ন অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা, আর্থিক অনিয়ম, বিমা পলিসি গ্রাহক ও বিমাকারীর স্বার্থে ক্ষতিকর ও পরিপন্থী কর্মকাণ্ডের তথ্য বিভিন্ন মাধ্যমে আইডিআরএ’র দৃষ্টিতে এসেছে। বিমা গ্রাহকদের অভিযোগ অনিয়মের তথ্য প্রমাণাদিও আইডিআরএ’র কাছে রয়েছে। এছাড়া, সিইও বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করে তা নিজ ভোগদখল করায় এবং মিথ্যা তথ্য সম্বলিত তথ্য বিবরণী দাখিলের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদুক) মামলা দাখিল করেছে। একই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

এদিকে বিনিয়োগকারী, পলিসি হোল্ডার এবং সামগ্রিক শেয়ারবাজারের সুরক্ষার জন্য গত ১ সেপ্টেম্বর ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের বর্তমান পরিচালনা পর্ষদকে অপসারণ করে নতুন ১০ জন স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দিয়েছে কমিশন। কোম্পানিটির নতুন পর্ষদের চেয়ারম্যান মনোনীত করা হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডিন ড. মুহাম্মদ রহমতউল্লাহকে। এছাড়া, পর্ষদের অন্যান্য নয় সদস্য হলেন- মোহাম্মদ সানাউল্লাহ অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটের সিইও মোহাম্মদ সানউল্লাহ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং ও বিমা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম, অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব মো. মোফাজ্জল হোসেন, অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল গাজি মো. খালিদ হোসেন, স্নেহাশীষ অ্যান্ড কোম্পানির পার্টনার স্নেহাশীষ বড়ুয়া, একাত্তর মিডিয়ার প্রধান সম্পাদক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মোজাম্মেল হক, জি সেভেন সিকিউরিটিজের চেয়ারম্যান সাজেদুর রহমান, জনতা ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জিকরুল হক, নর্দান জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের সাবেক চেয়াম্যান জহিরুল ইসলাম চৌধুরী।

এদিকে, ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের বিরুদ্ধে নানা আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতি খতিয়ে দেখতে যৌথ তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিএসইসি। চারটি সংস্থার প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে এ যৌথ তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ বিধিমালা, ২০১৯ এর বিধি ৫৪ অনুযায়ী যৌথ অনুসন্ধান ও তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিএসইসি’র নেতৃত্বে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের বিরুদ্ধে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অন্যান্য সংস্থার মধ্যে রয়েছে দুদক, বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। এ যৌথ তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক রিপন কুমার দেবনাথকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, তদন্ত কমিটিতে বিএসইসির আরও দু’জন প্রতিনিধি রাখা হয়েছে। তারা হলেন-বিএসইসির পরিচালক আবু রায়হান মোহাম্মদ মুতাসীম বিল্লাহ ও উপ-পরিচালক মো. শাহনেওয়াজ।

ঢাকা/এমটি 

শেয়ার করুন

x

ফারইস্ট ইসলামীর সিইও ওএসডি করেছে বিএসইসি

আপডেট: ০৫:০৫:২১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ অক্টোবর ২০২১

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ হেমায়েত উল্লাহকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নানা আর্থিক অনিয়মের কারণে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে শেয়ারবাজারের এ নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এক সভায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে বিএসইসি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন:ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

এর আগে ১৫ সেপ্টেম্বর বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) একই কারণে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের এমডি ও সিইওকে অপসারণের নির্দেশ দেয়। আইডিআরএ’র এমন সিদ্ধান্তের আলোকে বিএসইসিও অভিযুক্তকে ওএসডি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

উক্ত বিএসইসি’র সিদ্ধান্তে উল্লেখ করা হয়, ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের এমডি ও সিইওকে ওএসডি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তিনি ওএসডি হিসেবে বহাল থাকবেন। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

এদিকে, আইডিআরএ’র নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়, বিমা আইন ২০১০ এর ৫০ ধারা মোতাবেক বিমা পলিসি গ্রাহকের স্বার্থ নিশ্চিত করতে ফারইস্ট লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ হেমায়েত উল্লাহকে ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে কোম্পানির সিইও পদ থেকে অপসারণ করা হলো। তবে তাকে কোম্পানির আর্থিক অনিয়ম ও অন্যান্য অনিয়মের দায় থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে না। আর বিমা আইন, ২০১০ এবং মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগ ও অপসারণ প্রবিধানমালা, ২০১২ অনুসারে আগামী ৩ মাসের মধ্যে একজন যোগ্য সিইও নিয়োগের যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করে অনুমোদনের জন্য নির্দেশ দিয়েছে আইডিআরএ।

নির্দেশনায় আরও উল্লেখ রয়েছে, অনেক দিন ধরে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির সিইও হেমায়েতউল্লাহ কোম্পানি পরিচালনার ক্ষেত্রে বিভিন্ন অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা, আর্থিক অনিয়ম, বিমা পলিসি গ্রাহক ও বিমাকারীর স্বার্থে ক্ষতিকর ও পরিপন্থী কর্মকাণ্ডের তথ্য বিভিন্ন মাধ্যমে আইডিআরএ’র দৃষ্টিতে এসেছে। বিমা গ্রাহকদের অভিযোগ অনিয়মের তথ্য প্রমাণাদিও আইডিআরএ’র কাছে রয়েছে। এছাড়া, সিইও বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করে তা নিজ ভোগদখল করায় এবং মিথ্যা তথ্য সম্বলিত তথ্য বিবরণী দাখিলের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদুক) মামলা দাখিল করেছে। একই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

এদিকে বিনিয়োগকারী, পলিসি হোল্ডার এবং সামগ্রিক শেয়ারবাজারের সুরক্ষার জন্য গত ১ সেপ্টেম্বর ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের বর্তমান পরিচালনা পর্ষদকে অপসারণ করে নতুন ১০ জন স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দিয়েছে কমিশন। কোম্পানিটির নতুন পর্ষদের চেয়ারম্যান মনোনীত করা হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডিন ড. মুহাম্মদ রহমতউল্লাহকে। এছাড়া, পর্ষদের অন্যান্য নয় সদস্য হলেন- মোহাম্মদ সানাউল্লাহ অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটের সিইও মোহাম্মদ সানউল্লাহ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং ও বিমা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম, অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব মো. মোফাজ্জল হোসেন, অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল গাজি মো. খালিদ হোসেন, স্নেহাশীষ অ্যান্ড কোম্পানির পার্টনার স্নেহাশীষ বড়ুয়া, একাত্তর মিডিয়ার প্রধান সম্পাদক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মোজাম্মেল হক, জি সেভেন সিকিউরিটিজের চেয়ারম্যান সাজেদুর রহমান, জনতা ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জিকরুল হক, নর্দান জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের সাবেক চেয়াম্যান জহিরুল ইসলাম চৌধুরী।

এদিকে, ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের বিরুদ্ধে নানা আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতি খতিয়ে দেখতে যৌথ তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিএসইসি। চারটি সংস্থার প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে এ যৌথ তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ বিধিমালা, ২০১৯ এর বিধি ৫৪ অনুযায়ী যৌথ অনুসন্ধান ও তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিএসইসি’র নেতৃত্বে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের বিরুদ্ধে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অন্যান্য সংস্থার মধ্যে রয়েছে দুদক, বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। এ যৌথ তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক রিপন কুমার দেবনাথকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, তদন্ত কমিটিতে বিএসইসির আরও দু’জন প্রতিনিধি রাখা হয়েছে। তারা হলেন-বিএসইসির পরিচালক আবু রায়হান মোহাম্মদ মুতাসীম বিল্লাহ ও উপ-পরিচালক মো. শাহনেওয়াজ।

ঢাকা/এমটি