০৭:২৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৫

ফিলিপাইনে ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ৬৯, বিদ্যুৎ–পানির সংকটে লাখো মানুষ

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৪:০৯:৩৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ অক্টোবর ২০২৫
  • / ১০২১৬ বার দেখা হয়েছে

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ফিলিপাইনে শক্তিশালী ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৯ জনে। ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধারে তৎপরতা চললেও অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ ও পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।

মঙ্গলবার স্থানীয় সময় রাত প্রায় ১০টার দিকে সেবু প্রদেশের উপকূলে ৬ দশমিক ৯ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। ভূকম্পন কেন্দ্রের কাছাকাছি বোগো শহরের হাসপাতাল এখন রোগীতে উপচে পড়েছে। আহত হয়েছেন দেড় শতাধিক মানুষ। সিভিল ডিফেন্স দপ্তরের আঞ্চলিক তথ্য কর্মকর্তা জেন আবাপো জানান, নিহতের সংখ্যা প্রাথমিকভাবে ৬৯ হলেও তা যাচাই-বাছাই চলছে।

প্রেসিডেন্ট ফার্ডিনান্ড মার্কোস জুনিয়র ক্ষতিগ্রস্তদের দ্রুত সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি জানান, মন্ত্রিসভার সদস্যরা সরাসরি ত্রাণ কার্যক্রম তদারকি করছেন। নিহতদের পরিবারের প্রতিও শোক জানিয়েছেন তিনি।

রয়টার্স জানায়, ফিলিপাইনের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র সেবুতে প্রায় ৩৪ লাখ মানুষ বসবাস করেন। ক্ষয়ক্ষতির মধ্যেও দেশের দ্বিতীয় ব্যস্ততম ম্যাকতান–সেবু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সচল রয়েছে। তবে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সান রেমিজিও শহর, যেখানে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। শহরের সহকারী মেয়র আলফি রেইনেস বলেন, টানা বৃষ্টির কারণে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে, বিদ্যুৎ নেই, আর পানির সরবরাহ লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় মানুষ তীব্র সংকটে পড়েছে। তিনি খাদ্য, পানি ও ভারী যন্ত্রপাতি দিয়ে জরুরি সহায়তার আহ্বান জানিয়েছেন।

স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রচারিত ভিডিওতে দেখা গেছে, ভূমিকম্পের সময় মানুষ ঘর থেকে দৌড়ে বেরিয়ে আসছে, ভবন ধসে পড়ছে। এমনকি শতবর্ষী একটি গির্জাও ভেঙে পড়েছে। রেইনেস জানান, নিহতদের মধ্যে কয়েকজন সান রেমিজিওর একটি ক্রীড়া কমপ্লেক্সে বাস্কেটবল খেলছিলেন। ভূমিকম্পে ওই ভবনটি আংশিক ধসে পড়ে।

অন্যদিকে পিলার শহরের বাসিন্দা আর্চেল কোরাজা বলেন, ভূমিকম্প আঘাত হানার সময় তার পরিবারের সবাই ঘুমাচ্ছিলেন। হঠাৎ প্রচণ্ড কাঁপুনি শুরু হলে তিনি পরিবারকে নিয়ে দ্রুত রাস্তায় বেরিয়ে আসেন। এরপর দেখেন, সাগরের পানি তীর থেকে সরে যাচ্ছে।

ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ সংস্থাগুলো জানিয়েছে, এই কম্পনের গভীরতা ছিল প্রায় ১০ কিলোমিটার। এরপর একাধিক আফটারশক রেকর্ড করা হয়েছে, এর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালীটির মাত্রা ছিল ৬। তবে সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়নি।

প্রসঙ্গত, প্রশান্ত মহাসাগরের ‘রিং অব ফায়ার’-এ অবস্থিত হওয়ায় ফিলিপাইনে প্রায়ই ভূমিকম্প ও আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত ঘটে। চলতি বছরের জানুয়ারিতেই দেশটিতে দুটি বড় ভূমিকম্প হয়েছিল, যদিও তাতে কেউ নিহত হয়নি। এর আগে ২০২৩ সালে ৬ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে দেশটিতে অন্তত আটজনের মৃত্যু হয়।

ঢাকা/এসএইচ

শেয়ার করুন

error: Content is protected ! Please Don't Try!

ফিলিপাইনে ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ৬৯, বিদ্যুৎ–পানির সংকটে লাখো মানুষ

আপডেট: ০৪:০৯:৩৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ অক্টোবর ২০২৫

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ফিলিপাইনে শক্তিশালী ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৯ জনে। ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধারে তৎপরতা চললেও অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ ও পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।

মঙ্গলবার স্থানীয় সময় রাত প্রায় ১০টার দিকে সেবু প্রদেশের উপকূলে ৬ দশমিক ৯ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। ভূকম্পন কেন্দ্রের কাছাকাছি বোগো শহরের হাসপাতাল এখন রোগীতে উপচে পড়েছে। আহত হয়েছেন দেড় শতাধিক মানুষ। সিভিল ডিফেন্স দপ্তরের আঞ্চলিক তথ্য কর্মকর্তা জেন আবাপো জানান, নিহতের সংখ্যা প্রাথমিকভাবে ৬৯ হলেও তা যাচাই-বাছাই চলছে।

প্রেসিডেন্ট ফার্ডিনান্ড মার্কোস জুনিয়র ক্ষতিগ্রস্তদের দ্রুত সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি জানান, মন্ত্রিসভার সদস্যরা সরাসরি ত্রাণ কার্যক্রম তদারকি করছেন। নিহতদের পরিবারের প্রতিও শোক জানিয়েছেন তিনি।

রয়টার্স জানায়, ফিলিপাইনের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র সেবুতে প্রায় ৩৪ লাখ মানুষ বসবাস করেন। ক্ষয়ক্ষতির মধ্যেও দেশের দ্বিতীয় ব্যস্ততম ম্যাকতান–সেবু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সচল রয়েছে। তবে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সান রেমিজিও শহর, যেখানে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। শহরের সহকারী মেয়র আলফি রেইনেস বলেন, টানা বৃষ্টির কারণে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে, বিদ্যুৎ নেই, আর পানির সরবরাহ লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় মানুষ তীব্র সংকটে পড়েছে। তিনি খাদ্য, পানি ও ভারী যন্ত্রপাতি দিয়ে জরুরি সহায়তার আহ্বান জানিয়েছেন।

স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রচারিত ভিডিওতে দেখা গেছে, ভূমিকম্পের সময় মানুষ ঘর থেকে দৌড়ে বেরিয়ে আসছে, ভবন ধসে পড়ছে। এমনকি শতবর্ষী একটি গির্জাও ভেঙে পড়েছে। রেইনেস জানান, নিহতদের মধ্যে কয়েকজন সান রেমিজিওর একটি ক্রীড়া কমপ্লেক্সে বাস্কেটবল খেলছিলেন। ভূমিকম্পে ওই ভবনটি আংশিক ধসে পড়ে।

অন্যদিকে পিলার শহরের বাসিন্দা আর্চেল কোরাজা বলেন, ভূমিকম্প আঘাত হানার সময় তার পরিবারের সবাই ঘুমাচ্ছিলেন। হঠাৎ প্রচণ্ড কাঁপুনি শুরু হলে তিনি পরিবারকে নিয়ে দ্রুত রাস্তায় বেরিয়ে আসেন। এরপর দেখেন, সাগরের পানি তীর থেকে সরে যাচ্ছে।

ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ সংস্থাগুলো জানিয়েছে, এই কম্পনের গভীরতা ছিল প্রায় ১০ কিলোমিটার। এরপর একাধিক আফটারশক রেকর্ড করা হয়েছে, এর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালীটির মাত্রা ছিল ৬। তবে সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়নি।

প্রসঙ্গত, প্রশান্ত মহাসাগরের ‘রিং অব ফায়ার’-এ অবস্থিত হওয়ায় ফিলিপাইনে প্রায়ই ভূমিকম্প ও আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত ঘটে। চলতি বছরের জানুয়ারিতেই দেশটিতে দুটি বড় ভূমিকম্প হয়েছিল, যদিও তাতে কেউ নিহত হয়নি। এর আগে ২০২৩ সালে ৬ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে দেশটিতে অন্তত আটজনের মৃত্যু হয়।

ঢাকা/এসএইচ