০৭:৩৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪

বন্ড জালিয়াতি: সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইলকে ২ কোটি টাকা জরিমানা

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৮:৪৩:২৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৪ জুলাই ২০২১
  • / ৪৫৩৬ বার দেখা হয়েছে

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বস্ত্র খাতের কোম্পানি সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইল লিমিটেডকে বন্ড জালিয়াতির মামলায় দুই কোটি টাকা জরিমানা করেছে চট্টগ্রাম বন্ড কমিশনারেট। এই অর্থদণ্ডসহ বন্ডেডের মোট তিন কোটি ৮৪ লাখ ২৬ হাজার টাকা সরকারি রাজস্ব আদায়ের অপেক্ষায় রয়েছে চট্টগ্রাম বন্ড কমিশনারেট।

এর আগে ২০২০ সালের ২৯ জুলাই নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) কোম্পানিটির সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইলের পরিচালকদের (স্বতন্ত্র পরিচালক ব্যতীত) স্টক এক্সচেঞ্জের বিধিমালা লঙ্ঘন করায় এক কোটি টাকা জরিমানা করেছিল। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকরা বিএসইসির ডাকা শুনানিতে উপস্থিত না হওয়া এবং কারখানা বন্ধ থাকার দায়ে এই জরিমানা করেছিল। যদিও পরবর্তীকালে ডিএসইর একটি প্রতিনিধিদল কোম্পানিটির কারখানা পরিদর্শনে গিয়েছিল, কিন্তু কারখানা বন্ধ থাকায় কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি বিএসইসি।

চট্টগ্রাম বন্ড কমিশনারেট সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি কোম্পানিটির বিরুদ্ধে তিন কোটি ৩১ লাখ ১৬ হাজার টাকার বন্ডেড পণ্য অবৈধ অপসারণের দায়ে দুই কোটি টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছে চট্টগ্রাম বন্ড কমিশনারেট। কোম্পানিটি ৪৫টি চালানের বিপরীতে এসব পণ্য অবৈধ অপসারণ করে এক কোটি ৮৪ লাখ ২৬ হাজার টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছে।

জানা যায়, চট্টগ্রাম কালুরঘাট বিসিক শিল্প এলাকার মেসার্স সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইলস লিমিটেড ২০০৩ সালে চট্টগ্রাম বন্ড কমিশনারেট থেকে বন্ডেড প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিবন্ধন নেয়। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি বন্ড সুবিধায় আমদানিকৃত কাঁচামাল নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ইউপি গ্রহণপূর্বক রপ্তানি করতে ব্যর্থ হয়। তাছাড়া প্রতিষ্ঠানটি মেয়াদোত্তীর্ণ কাঁচামালের বন্ডিং মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য চট্টগ্রাম বন্ড কমিশনারেট বরাবর কোনো আবেদনও করেনি।

এতে প্রমাণিত হয় আমদানিকৃত উপকরণগুলো প্রতিষ্ঠানটি অবৈধভাবে অপসারণ করেছে, যা সুস্পষ্টভাবে কাস্টমস আইন লঙ্ঘন ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। প্রতিষ্ঠানটি ৪৫টি চালানের মাধ্যমে তিন কোটি ৩১ লাখ ১৬ হাজার টাকা পণ্য অবৈধভাবে অপসারণ করেছে, যা চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সুদসহ রাজস্ব জড়িত রয়েছে এক কোটি ৮১ লাখ ২৬ হাজার ৪৩৬ টাকা।

গত ২৪ মার্চ, ২০২১ তারিখে চট্টগ্রাম বন্ড কমিশনারেট প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে দাবিনামা-সংবলিত কারণ দর্শানোর নোটিস জারি করে। তবে প্রতিষ্ঠানটির বন্ধ থাকায় প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকের স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানায় দাবিনামা-সংবলিত কারণ দর্শানোর নোটিসের কপি পাঠানো হয়। কিন্তু মালিকপক্ষ পলাতক থাকায় লিখিত জবাব, অর্থাৎ কোনো উত্তর পায়নি চট্টগ্রাম বন্ড কমিশনারেট।

এরপর চট্টগ্রাম বন্ড কমিশনারেট নিয়ম অনুযায়ী ন্যায় বিচারের স্বার্থে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের ব্যক্তিগত শুনানি গ্রহণের জন্য চলতি বছরের ২৮ এপ্রিল নির্ধারণ করে, যা একই মাসের ২০ তারিখে প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকের স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানায় চিঠি পাঠিয়ে জানানো হয়েছিল। যেহেতু মালিকপক্ষ পলাতক তাই শুনানিতে উপস্থিত ও লিখিত জবাব কোনোটি দাখিল করেনি সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইলস লিমিটেড, ফলে চলতি বছরের ২৪ মে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে একতরফা আদেশ জারি করে চট্টগ্রাম বন্ড কমিশনারেট।

প্রতিষ্ঠানটি ২০১২ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। বর্তমানে কোম্পানিটির মোট শেয়ারের সংখ্যা ২৩ কোটি ৯৩ লক্ষ ১৬ হাজার। ২০১৭ সালে সর্বশেষ দেয়া বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকদের কাছে শেয়ার রয়েছে ২২ দশমিক ১৮ শতাংশ, আর প্রতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ রয়েছে ১৫ দশমিক ৬৭ শতাংশ এবং পাবলিক শেয়ার রয়েছে ৬২ দশমিক ১৯ শতাংশ।

ঢাকা/এসআর

শেয়ার করুন

x
English Version

বন্ড জালিয়াতি: সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইলকে ২ কোটি টাকা জরিমানা

আপডেট: ০৮:৪৩:২৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৪ জুলাই ২০২১

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বস্ত্র খাতের কোম্পানি সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইল লিমিটেডকে বন্ড জালিয়াতির মামলায় দুই কোটি টাকা জরিমানা করেছে চট্টগ্রাম বন্ড কমিশনারেট। এই অর্থদণ্ডসহ বন্ডেডের মোট তিন কোটি ৮৪ লাখ ২৬ হাজার টাকা সরকারি রাজস্ব আদায়ের অপেক্ষায় রয়েছে চট্টগ্রাম বন্ড কমিশনারেট।

এর আগে ২০২০ সালের ২৯ জুলাই নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) কোম্পানিটির সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইলের পরিচালকদের (স্বতন্ত্র পরিচালক ব্যতীত) স্টক এক্সচেঞ্জের বিধিমালা লঙ্ঘন করায় এক কোটি টাকা জরিমানা করেছিল। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকরা বিএসইসির ডাকা শুনানিতে উপস্থিত না হওয়া এবং কারখানা বন্ধ থাকার দায়ে এই জরিমানা করেছিল। যদিও পরবর্তীকালে ডিএসইর একটি প্রতিনিধিদল কোম্পানিটির কারখানা পরিদর্শনে গিয়েছিল, কিন্তু কারখানা বন্ধ থাকায় কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি বিএসইসি।

চট্টগ্রাম বন্ড কমিশনারেট সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি কোম্পানিটির বিরুদ্ধে তিন কোটি ৩১ লাখ ১৬ হাজার টাকার বন্ডেড পণ্য অবৈধ অপসারণের দায়ে দুই কোটি টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছে চট্টগ্রাম বন্ড কমিশনারেট। কোম্পানিটি ৪৫টি চালানের বিপরীতে এসব পণ্য অবৈধ অপসারণ করে এক কোটি ৮৪ লাখ ২৬ হাজার টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছে।

জানা যায়, চট্টগ্রাম কালুরঘাট বিসিক শিল্প এলাকার মেসার্স সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইলস লিমিটেড ২০০৩ সালে চট্টগ্রাম বন্ড কমিশনারেট থেকে বন্ডেড প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিবন্ধন নেয়। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি বন্ড সুবিধায় আমদানিকৃত কাঁচামাল নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ইউপি গ্রহণপূর্বক রপ্তানি করতে ব্যর্থ হয়। তাছাড়া প্রতিষ্ঠানটি মেয়াদোত্তীর্ণ কাঁচামালের বন্ডিং মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য চট্টগ্রাম বন্ড কমিশনারেট বরাবর কোনো আবেদনও করেনি।

এতে প্রমাণিত হয় আমদানিকৃত উপকরণগুলো প্রতিষ্ঠানটি অবৈধভাবে অপসারণ করেছে, যা সুস্পষ্টভাবে কাস্টমস আইন লঙ্ঘন ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। প্রতিষ্ঠানটি ৪৫টি চালানের মাধ্যমে তিন কোটি ৩১ লাখ ১৬ হাজার টাকা পণ্য অবৈধভাবে অপসারণ করেছে, যা চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সুদসহ রাজস্ব জড়িত রয়েছে এক কোটি ৮১ লাখ ২৬ হাজার ৪৩৬ টাকা।

গত ২৪ মার্চ, ২০২১ তারিখে চট্টগ্রাম বন্ড কমিশনারেট প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে দাবিনামা-সংবলিত কারণ দর্শানোর নোটিস জারি করে। তবে প্রতিষ্ঠানটির বন্ধ থাকায় প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকের স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানায় দাবিনামা-সংবলিত কারণ দর্শানোর নোটিসের কপি পাঠানো হয়। কিন্তু মালিকপক্ষ পলাতক থাকায় লিখিত জবাব, অর্থাৎ কোনো উত্তর পায়নি চট্টগ্রাম বন্ড কমিশনারেট।

এরপর চট্টগ্রাম বন্ড কমিশনারেট নিয়ম অনুযায়ী ন্যায় বিচারের স্বার্থে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের ব্যক্তিগত শুনানি গ্রহণের জন্য চলতি বছরের ২৮ এপ্রিল নির্ধারণ করে, যা একই মাসের ২০ তারিখে প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকের স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানায় চিঠি পাঠিয়ে জানানো হয়েছিল। যেহেতু মালিকপক্ষ পলাতক তাই শুনানিতে উপস্থিত ও লিখিত জবাব কোনোটি দাখিল করেনি সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইলস লিমিটেড, ফলে চলতি বছরের ২৪ মে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে একতরফা আদেশ জারি করে চট্টগ্রাম বন্ড কমিশনারেট।

প্রতিষ্ঠানটি ২০১২ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। বর্তমানে কোম্পানিটির মোট শেয়ারের সংখ্যা ২৩ কোটি ৯৩ লক্ষ ১৬ হাজার। ২০১৭ সালে সর্বশেষ দেয়া বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকদের কাছে শেয়ার রয়েছে ২২ দশমিক ১৮ শতাংশ, আর প্রতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ রয়েছে ১৫ দশমিক ৬৭ শতাংশ এবং পাবলিক শেয়ার রয়েছে ৬২ দশমিক ১৯ শতাংশ।

ঢাকা/এসআর