১০:১৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের মধ্যে অসন্তোষ বাড়ছে

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০১:০৫:০৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ মে ২০২৪
  • / ১৯০৮৫ বার দেখা হয়েছে

ফাইল ফটো

ক্ষোভ ও অসন্তোষ নিয়ে জরুরী বৈঠক ডেকেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সংগঠন ‘বাংলাদেশ ব্যাংক অফিসার্স ওয়েলফেয়ার কাউন্সিল’। নানামুখী চাপ ও সুযোগ-সুবিধা কমানোসহ কর্মপরিবেশ বিঘ্নিত হওয়ার প্রেক্ষাটে করণীয় নির্ধারণে বৈঠক ডেকেছে সংগঠনটি। সোমবার (২৭ মে) বিকেল ৪টায় বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান ভবনস্থ জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স হলে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হবে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

জানা গেছে, বিশ্বের বেশিরভাগ দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের জন্য অন্য সব সরকারি প্রতিষ্ঠানের তুলনায় উচ্চতর বেতন কাঠামো থাকলেও উল্টো সুযোগ-সুবিধা কমানো হচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংকে। আব্দুর রউফ তালুকদার গভর্নর হিসেবে যোগদানের পর ‘বাংলাদেশ ব্যাংকে এপেক্স রেগুলেটরি বডি’ করার ঘোষণার সঙ্গে যা অসামঞ্জস্যপূর্ণ। এ নিয়ে কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা দেখা দিয়েছে।

সভায় আলোচনার বিষয় উল্লেখ করে অফিসার্স কাউন্সিলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পক্ষ থেকে সব সদস্যের কাছে এক পৃষ্ঠার একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে। সেখানে সরকারি বিভিন্ন বিভাগ, প্রতিষ্ঠান বা বাহিনীর পদোন্নতিসহ সুযোগ-সুবিধা বাড়ালেও কেন্দ্রীয় ব্যাংকে কমানোর সুনির্দষ্ট তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, বর্তমান গভর্নর বাংলাদেশ ব্যাংকে এপেক্স রেগুলটরি বডি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা তার অন্যতম ভিষণ হিসেবে ঘোষণা করেন।

সাম্প্রতিক সময়ে ইতিপূর্বে পেয়ে আসা শ্রান্তিবিনোদন ভাতা কর্তন করা হয়েছে। ফাউন্ডেশন ট্রেনিংয়ের রেজাল্টের ভিত্তিতে অতিরিক্ত যে ইনক্রিমেন্ট দেওয়া হতো, ট্রেনিং একাডেমির কর্মকর্তাদের ফ্যাকাল্টি মেম্বার হিসেবে দেওয়া ভাতা বাতিল করা হয়েছে। এছাড়া প্রশিক্ষণ শেষে ফাউন্ডেশন ট্রেনিংয়ের কর্মকর্তাদের বিদেশে বিশেষ প্রশিক্ষণ, প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তা নিয়োগের সময় একাডেমিক রেজাল্টের ভিত্তিতে যে অতিরিক্ত ইনক্রিমেন্ট দেওয়া হতো তা বাতিল করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: বাজেটে মূল্যস্ফীতি, রিজার্ভ ও রাজস্ব আদায় নিয়ে চ্যালেঞ্জ আছে

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, যেকোনো সুবিধা কর্তন করলে নিশ্চিতভাবেই কর্মকর্তাদের সন্তুষ্টি ও কর্মস্পৃহাকে অবদমিত করে। উল্লেখিত বিষয়গুলো গভর্নর ঘোষিত এপেক্স বডি করার ভিশনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। প্রশাসন ক্যাডারে উপসচিব পদে তিনবছর চাকরি পূর্ণ হলে, সশস্ত্র বাহিনীর মেজর ও সমমান কর্মকর্তা, এমআরএ, তিতাস গ্যাস, পিএকেএসএফসহ বাংলাদেশ ব্যাংকের সমমানের সরকারের অন্যান্য সব প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণ ভাতা বা সার্বক্ষণিক গাড়ি সুবিধা পেয়ে থাকেন।

অথচ বাংলাদেশ ব্যাংকের ৫ম গ্রেডের কর্মকর্তারা এ সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। আবার অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে সবার গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণ ভাড়া একই হলেও বাংলাদেশ ব্যাংকের অতিরিক্ত পরিচালক, পরিচালক ও নির্বাহী পরিচালকদের আলাদা–আলাদা ভাতা দেওয়া হয়। বর্তমান কাউন্সিল নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে এসব সমাধানের জন্য গভর্নরকে আনুষ্ঠানিক বা অনানুষ্ঠানিক বিভিন্ন আলোচনায় দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। তিনি বারবার আশ্বাস দিলেও সমস্যার সমাধান হয়নি বলেও জানান তারা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একাধিক কর্মকর্তা জানান, চাকরির আয় দিয়ে তাদের জীবনযাপন করতে হয়। বর্তমান মূল্যস্ফীতির এ সময়ে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা দেবে কি উল্টো বাতিল করছে। এতে করে কর্মকর্তাদের মধ্যে এক ধরণের হতাশা কাজ করছে। সুবিধা কমে যাওয়ায় অনেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চাকরি ছেড়ে চলে যাচ্ছেন।

এছাড়া সম্প্রতি সময় বিসিএসের জন্য চাকরি ছেড়েছেন ৫৭ জন কর্মকর্তা। আগে অন্য চাকরি ছেড়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে চাকরি নিত এখন চেড়ে যাচ্ছে। আবার ন্যায্য দাবির কথা বলতে গেলে ভয়ভিতি ও চাকরিচ্যুতির হুমকি দেয়া হচ্ছে যা কোনো ভাবে কাম্য নয়।

ঢাকা/এসএইচ

শেয়ার করুন

error: Content is protected ! Please Don't Try!

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের মধ্যে অসন্তোষ বাড়ছে

আপডেট: ০১:০৫:০৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ মে ২০২৪

ক্ষোভ ও অসন্তোষ নিয়ে জরুরী বৈঠক ডেকেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সংগঠন ‘বাংলাদেশ ব্যাংক অফিসার্স ওয়েলফেয়ার কাউন্সিল’। নানামুখী চাপ ও সুযোগ-সুবিধা কমানোসহ কর্মপরিবেশ বিঘ্নিত হওয়ার প্রেক্ষাটে করণীয় নির্ধারণে বৈঠক ডেকেছে সংগঠনটি। সোমবার (২৭ মে) বিকেল ৪টায় বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান ভবনস্থ জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স হলে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হবে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

জানা গেছে, বিশ্বের বেশিরভাগ দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের জন্য অন্য সব সরকারি প্রতিষ্ঠানের তুলনায় উচ্চতর বেতন কাঠামো থাকলেও উল্টো সুযোগ-সুবিধা কমানো হচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংকে। আব্দুর রউফ তালুকদার গভর্নর হিসেবে যোগদানের পর ‘বাংলাদেশ ব্যাংকে এপেক্স রেগুলেটরি বডি’ করার ঘোষণার সঙ্গে যা অসামঞ্জস্যপূর্ণ। এ নিয়ে কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা দেখা দিয়েছে।

সভায় আলোচনার বিষয় উল্লেখ করে অফিসার্স কাউন্সিলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পক্ষ থেকে সব সদস্যের কাছে এক পৃষ্ঠার একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে। সেখানে সরকারি বিভিন্ন বিভাগ, প্রতিষ্ঠান বা বাহিনীর পদোন্নতিসহ সুযোগ-সুবিধা বাড়ালেও কেন্দ্রীয় ব্যাংকে কমানোর সুনির্দষ্ট তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, বর্তমান গভর্নর বাংলাদেশ ব্যাংকে এপেক্স রেগুলটরি বডি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা তার অন্যতম ভিষণ হিসেবে ঘোষণা করেন।

সাম্প্রতিক সময়ে ইতিপূর্বে পেয়ে আসা শ্রান্তিবিনোদন ভাতা কর্তন করা হয়েছে। ফাউন্ডেশন ট্রেনিংয়ের রেজাল্টের ভিত্তিতে অতিরিক্ত যে ইনক্রিমেন্ট দেওয়া হতো, ট্রেনিং একাডেমির কর্মকর্তাদের ফ্যাকাল্টি মেম্বার হিসেবে দেওয়া ভাতা বাতিল করা হয়েছে। এছাড়া প্রশিক্ষণ শেষে ফাউন্ডেশন ট্রেনিংয়ের কর্মকর্তাদের বিদেশে বিশেষ প্রশিক্ষণ, প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তা নিয়োগের সময় একাডেমিক রেজাল্টের ভিত্তিতে যে অতিরিক্ত ইনক্রিমেন্ট দেওয়া হতো তা বাতিল করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: বাজেটে মূল্যস্ফীতি, রিজার্ভ ও রাজস্ব আদায় নিয়ে চ্যালেঞ্জ আছে

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, যেকোনো সুবিধা কর্তন করলে নিশ্চিতভাবেই কর্মকর্তাদের সন্তুষ্টি ও কর্মস্পৃহাকে অবদমিত করে। উল্লেখিত বিষয়গুলো গভর্নর ঘোষিত এপেক্স বডি করার ভিশনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। প্রশাসন ক্যাডারে উপসচিব পদে তিনবছর চাকরি পূর্ণ হলে, সশস্ত্র বাহিনীর মেজর ও সমমান কর্মকর্তা, এমআরএ, তিতাস গ্যাস, পিএকেএসএফসহ বাংলাদেশ ব্যাংকের সমমানের সরকারের অন্যান্য সব প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণ ভাতা বা সার্বক্ষণিক গাড়ি সুবিধা পেয়ে থাকেন।

অথচ বাংলাদেশ ব্যাংকের ৫ম গ্রেডের কর্মকর্তারা এ সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। আবার অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে সবার গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণ ভাড়া একই হলেও বাংলাদেশ ব্যাংকের অতিরিক্ত পরিচালক, পরিচালক ও নির্বাহী পরিচালকদের আলাদা–আলাদা ভাতা দেওয়া হয়। বর্তমান কাউন্সিল নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে এসব সমাধানের জন্য গভর্নরকে আনুষ্ঠানিক বা অনানুষ্ঠানিক বিভিন্ন আলোচনায় দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। তিনি বারবার আশ্বাস দিলেও সমস্যার সমাধান হয়নি বলেও জানান তারা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একাধিক কর্মকর্তা জানান, চাকরির আয় দিয়ে তাদের জীবনযাপন করতে হয়। বর্তমান মূল্যস্ফীতির এ সময়ে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা দেবে কি উল্টো বাতিল করছে। এতে করে কর্মকর্তাদের মধ্যে এক ধরণের হতাশা কাজ করছে। সুবিধা কমে যাওয়ায় অনেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চাকরি ছেড়ে চলে যাচ্ছেন।

এছাড়া সম্প্রতি সময় বিসিএসের জন্য চাকরি ছেড়েছেন ৫৭ জন কর্মকর্তা। আগে অন্য চাকরি ছেড়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে চাকরি নিত এখন চেড়ে যাচ্ছে। আবার ন্যায্য দাবির কথা বলতে গেলে ভয়ভিতি ও চাকরিচ্যুতির হুমকি দেয়া হচ্ছে যা কোনো ভাবে কাম্য নয়।

ঢাকা/এসএইচ