০৯:৩৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

বাজেটে আমদানি পর্যায়ে আগাম কর প্রত্যাহার

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৮:২১:৩৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ জুন ২০২২
  • / ১০৩১৭ বার দেখা হয়েছে

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: আসন্ন ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে অর্থবছরের বাজেটে ম্যানুফ্যাকচারিং বা উৎপাদনশীল কয়েকটি খাতে আমদানি পর্যায়ে আগাম কর দেওয়ার বিধান প্রত্যাহার করার পরিকল্পনা নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। পরিশোধিত আগাম কর সমন্বয়ের জটিলতা দূর করতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এনবিআর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

সংশ্নিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আগাম করের অর্থ রিফান্ড বা ফেরত দিতে হচ্ছে। সেজন্য আমদানি-নির্ভর কাঁচামাল ব্যবহারকারী ম্যানুফ্যাকচারিং প্রতিষ্ঠানের আগাম করের বিধান প্রত্যাহার করার কথা ভাবা হচ্ছে। বিশেষত সিমেন্ট, সিরামিক, বেভারেজ, ভোজ্যতেল, গ্যাস, পেট্রোলিয়াম খাতসহ বিভিন্ন খাতের জন্য এ সুবিধা দেওয়া হতে পারে।

যেসব নিবন্ধিত উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বাল্ক আকারে কাঁচামাল আমদানি করে তাদের আমদানি পর্যায়ে ৩ থেকে ৫ শতাংশ পর্যন্ত আগাম কর দিতে হয়। যাদের মূল্য সংযোজনের হার ৩৫ শতাংশের নিচে হয়, তারা সাধারণত ভ্যাট সমন্বয়ের পর রিফান্ড পায়। এতে সরকারের কাছে প্রতিষ্ঠানগুলোর শত শত কোটি টাকা আটকে থাকছে। এ জন্য ব্যবসায়ীরা দীর্ঘদিন ধরে আগাম কর পরিশোধ ব্যবস্থা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছেন। এ বছরের প্রাক-বাজেট আলোচনাগুলোতে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই, ঢাকা চেম্বার, এমসিসিআইসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের পক্ষ থেকে এ দাবি করা হয়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, আগাম কর পরিশোধের কারণে প্রতিষ্ঠানগুলোর নগদ টাকার সংকট হচ্ছে। অন্যদিকে প্রাপ্য রিফান্ড সময়মতো পাচ্ছে না। তাদের নানা ধরনের জটিলতায় পড়তে হচ্ছে। এনবিআরের এ উদ্যোগের ফলে ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হতে যাচ্ছে।

বর্তমানে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো আমদানি পর্যায়ে আমদানি মূল্যের ওপর আগাম কর পরিশোধ করে থাকে। পণ্য উৎপাদনের পর ভ্যাট পরিশোধের সময় তা সমন্বয় করে নেয়। যেসব কোম্পানির মূল্য সংযোজনের হার কম তাদের ভ্যাট সমন্বয়ের পরও বাড়তি টাকা থেকে যায়। এ রিফান্ড পেতে অনেকদিন লেগে যায়। এর হিসাবও জটিল। সূত্র জানায়, আমদানি পর্যায়ে উৎপাদনশীল প্রতিষ্ঠান ৩ থেকে ৪ শতাংশ আগাম কর এবং ১৫ শতাংশ ভ্যাট পরিশোধ করলে তারা ভ্যাটের রিটার্ন দাখিল করার সময় আগে দেওয়া করে ১৯ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত সমন্বয় করে। এর সঙ্গে প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য রেয়াতও সমন্বয় করে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, অনেক প্রতিষ্ঠানের চূড়ান্ত পণ্যে (ফিনিশড গুড) মূল্য সংযোজন ৩৫ শতাংশের কম হয়। এতে আমদানির সময় যে ভ্যাট পরিশোধ করা হয় চূড়ান্ত পণ্যে সেই পরিমাণ ভ্যাট আরোপিত হয় না। ফলে ভ্যাট, আগাম কর ও অন্যান্য রেয়াত বাবদ সরকারের কাছে এসব প্রতিষ্ঠানের পাওনা থেকে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সভাপতি আবুল কাশেম খান সমকালকে বলেন, আগাম কর প্রত্যাহার ব্যবসায়ীদের অনেক দিনের দাবি। এই করের কারণে ব্যবসায় নগদ অর্থের সরবরাহ কমে যায়। কিন্তু ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে বিভিন্ন পর্যায়েই বিনিয়োগ লাগে। ফলে আগাম কর প্রত্যাহার করা হলে বিনিয়োগকারীদের কাছে ইতিবাচক বার্তা যাবে। ব্যবসা সম্প্রসারণ হবে। পণ্যমূল্যেও এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।

জানা গেছে, দেশের ১২টি ভ্যাট কমিশনারেট অফিসে কয়েকশ রিফান্ড আবেদন রয়েছে। এসব আবেদনে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার দাবি করেছেন ব্যবসায়ীরা। কিছু আবেদনের নিষ্পত্তির সময় পার হয়ে গেছে। যারা আগাম কর পরিশোধ করেন তারা সংশ্নিষ্ট কর মেয়াদ বা তার পরে চারটি কর মেয়াদে ভ্যাট রিটার্ন দাখিলের মাধ্যমে পরিশোধিত কর সমন্বয় করতে পারে।

ঢাকা/টিএ

শেয়ার করুন

বাজেটে আমদানি পর্যায়ে আগাম কর প্রত্যাহার

আপডেট: ০৮:২১:৩৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ জুন ২০২২

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: আসন্ন ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে অর্থবছরের বাজেটে ম্যানুফ্যাকচারিং বা উৎপাদনশীল কয়েকটি খাতে আমদানি পর্যায়ে আগাম কর দেওয়ার বিধান প্রত্যাহার করার পরিকল্পনা নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। পরিশোধিত আগাম কর সমন্বয়ের জটিলতা দূর করতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এনবিআর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

সংশ্নিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আগাম করের অর্থ রিফান্ড বা ফেরত দিতে হচ্ছে। সেজন্য আমদানি-নির্ভর কাঁচামাল ব্যবহারকারী ম্যানুফ্যাকচারিং প্রতিষ্ঠানের আগাম করের বিধান প্রত্যাহার করার কথা ভাবা হচ্ছে। বিশেষত সিমেন্ট, সিরামিক, বেভারেজ, ভোজ্যতেল, গ্যাস, পেট্রোলিয়াম খাতসহ বিভিন্ন খাতের জন্য এ সুবিধা দেওয়া হতে পারে।

যেসব নিবন্ধিত উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বাল্ক আকারে কাঁচামাল আমদানি করে তাদের আমদানি পর্যায়ে ৩ থেকে ৫ শতাংশ পর্যন্ত আগাম কর দিতে হয়। যাদের মূল্য সংযোজনের হার ৩৫ শতাংশের নিচে হয়, তারা সাধারণত ভ্যাট সমন্বয়ের পর রিফান্ড পায়। এতে সরকারের কাছে প্রতিষ্ঠানগুলোর শত শত কোটি টাকা আটকে থাকছে। এ জন্য ব্যবসায়ীরা দীর্ঘদিন ধরে আগাম কর পরিশোধ ব্যবস্থা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছেন। এ বছরের প্রাক-বাজেট আলোচনাগুলোতে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই, ঢাকা চেম্বার, এমসিসিআইসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের পক্ষ থেকে এ দাবি করা হয়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, আগাম কর পরিশোধের কারণে প্রতিষ্ঠানগুলোর নগদ টাকার সংকট হচ্ছে। অন্যদিকে প্রাপ্য রিফান্ড সময়মতো পাচ্ছে না। তাদের নানা ধরনের জটিলতায় পড়তে হচ্ছে। এনবিআরের এ উদ্যোগের ফলে ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হতে যাচ্ছে।

বর্তমানে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো আমদানি পর্যায়ে আমদানি মূল্যের ওপর আগাম কর পরিশোধ করে থাকে। পণ্য উৎপাদনের পর ভ্যাট পরিশোধের সময় তা সমন্বয় করে নেয়। যেসব কোম্পানির মূল্য সংযোজনের হার কম তাদের ভ্যাট সমন্বয়ের পরও বাড়তি টাকা থেকে যায়। এ রিফান্ড পেতে অনেকদিন লেগে যায়। এর হিসাবও জটিল। সূত্র জানায়, আমদানি পর্যায়ে উৎপাদনশীল প্রতিষ্ঠান ৩ থেকে ৪ শতাংশ আগাম কর এবং ১৫ শতাংশ ভ্যাট পরিশোধ করলে তারা ভ্যাটের রিটার্ন দাখিল করার সময় আগে দেওয়া করে ১৯ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত সমন্বয় করে। এর সঙ্গে প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য রেয়াতও সমন্বয় করে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, অনেক প্রতিষ্ঠানের চূড়ান্ত পণ্যে (ফিনিশড গুড) মূল্য সংযোজন ৩৫ শতাংশের কম হয়। এতে আমদানির সময় যে ভ্যাট পরিশোধ করা হয় চূড়ান্ত পণ্যে সেই পরিমাণ ভ্যাট আরোপিত হয় না। ফলে ভ্যাট, আগাম কর ও অন্যান্য রেয়াত বাবদ সরকারের কাছে এসব প্রতিষ্ঠানের পাওনা থেকে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সভাপতি আবুল কাশেম খান সমকালকে বলেন, আগাম কর প্রত্যাহার ব্যবসায়ীদের অনেক দিনের দাবি। এই করের কারণে ব্যবসায় নগদ অর্থের সরবরাহ কমে যায়। কিন্তু ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে বিভিন্ন পর্যায়েই বিনিয়োগ লাগে। ফলে আগাম কর প্রত্যাহার করা হলে বিনিয়োগকারীদের কাছে ইতিবাচক বার্তা যাবে। ব্যবসা সম্প্রসারণ হবে। পণ্যমূল্যেও এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।

জানা গেছে, দেশের ১২টি ভ্যাট কমিশনারেট অফিসে কয়েকশ রিফান্ড আবেদন রয়েছে। এসব আবেদনে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার দাবি করেছেন ব্যবসায়ীরা। কিছু আবেদনের নিষ্পত্তির সময় পার হয়ে গেছে। যারা আগাম কর পরিশোধ করেন তারা সংশ্নিষ্ট কর মেয়াদ বা তার পরে চারটি কর মেয়াদে ভ্যাট রিটার্ন দাখিলের মাধ্যমে পরিশোধিত কর সমন্বয় করতে পারে।

ঢাকা/টিএ