০৩:৩৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ জুন ২০২৪

বাজেটে মূল্যস্ফীতি কমানোর সঠিক কোনো কর্মপরিকল্পনা নেই: সানেম

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১২:৩৪:০৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ জুন ২০২৪
  • / ১০২৪২ বার দেখা হয়েছে

গত এক বছর ধরে মূল্যস্ফীতি বেড়েই চলেছে, যা বর্তমানে ৯ থেকে ১০ শতাংশের মধ্যে ওঠানামা করছে। আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে মূল্যস্ফীতি ৬.৫ শতাংশ প্রাক্কলন করা হয়েছে। তবে মূল্যস্ফীতি কমানোর সঠিক কোনো কর্মপরিকল্পনা বাজেটে নেই বলে জানিয়েছেন সানেমের গবেষণা পরিচালক ড. সায়েমা হক বিদিশা।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

আর্থিক খাত নিয়ে তিনি বলেন, খেলাপি ঋন কমানোর জন্যও কোনো কর্মপরিকল্পনা বাজেটে নেই। প্রতিবছর ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ বেড়েই চলেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া উচিত না। এতে মূল্যস্ফীতি আরও বেড়ে যেতে পারে।

শনিবার (৮ জুন) সকালে সানেমের ‘বাজেট ২০২৪-২৫’ পর্যালোচনা নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, খোলাবাজারের সঙ্গে অফিশিয়ালি ডলারের দাম যতদিন পার্থক্য থাকবে ততদিন হুন্ডি চলতে থাকবে। এজন্য এই দুই যায়গায় ডলারের দর কাছাকাছি করা উচিত। এটি রোধ করতে হুন্ডি ও কালো টাকার দিকে কঠোর নজর দেওয়া দরকার।

আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ধরা হয়েছে সাত লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। এবার বাজেটে ঘাটতির পরিমাণ কমছে। চলতি অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের তুলনায় আগামী অর্থবছরের বাজেটে ঘাটতি কম ধরা হয়েছে পাঁচ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। অনুদান ছাড়া বাজেট ঘাটতি ধরা হয়েছে দুই লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা। তবে, অনুদানসহ সামগ্রিক ঘাটতি দাঁড়াবে দুই লাখ ৫১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। অর্থাৎ আগামী অর্থবছর চার হাজার ৪০০ কোটি টাকা অনুদান পাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

আরও পড়ুন: পোশাক শিল্পের উৎসে কর বাতিল চায় সিএমসিসিআই

ঘাটতি মেটাতে বৈদেশিক ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে এক লাখ ২৭ হাজার ২০০ কোটি টাকা। বৈদেশি ঋণ পরিশোধ করা হবে ৩৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এতে নিট বৈদেশিক ঋণ দাঁড়াবে ৯০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। এ ছাড়া অভ্যন্তরীণ খাত থেকে ঋণ নেওয়া হবে এক লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে নেওয়া হবে এক লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। যার ৭২ হাজার ৬৮২ কোটি টাকা দীর্ঘমেয়াদি ঋণ এবং ৬৪ হাজার ৮১৮ কোটি টাকা স্বল্পমেয়াদি। ব্যাংকবহির্ভূত ঋণ নেওয়া হবে ২৩ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। সঞ্চয়পত্র বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা।

২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে ঋণের সুদ পরিশোধের ব্যয় ধরা হয়েছে এক লাখ ১৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ ৯৩ হাজার কোটি টাকা। আর বৈদেশিক ঋণের সুদ ২০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।

বাজেটে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে পাঁচ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) লক্ষ্যমাত্রা চার লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। এনবিআর বহির্ভূত কর ধরা হয়েছে ১৫ হাজার কোটি টাকা। করব্যতীত প্রাপ্তির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪৬ হাজার কোটি টাকা।

এ ছাড়া বাজেটের আয়-ব্যয়ের বিশাল ঘাটতি পূরণে প্রধান ভরসাস্থল হিসেবে ব্যাংক খাত বেছে নিয়েছে সরকার। ঘাটতি পূরণে এক লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকার ব্যাংক ঋণ নেবে বলে লক্ষ্য ঠিক করেছে সরকার। এই অংক চলতি অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে পাঁচ হাজার ১০৫ কোটি টাকার বেশি। চলতি অর্থবছরের বাজেটে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে এক লাখ ৩২ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছিল সরকার। তবে সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রায় এটি বাড়িয়ে এক লাখ ৫৫ হাজার ৯৩৫ কোটি টাকা ঠিক করা হয়েছে।

আগামী ৩০ জুন প্রস্তাবিত বাজেট পাশ হবে। দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় বাংলাদেশের ৫৩তম বাজেট এটি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের টানা চতুর্থ মেয়াদের শেষ বাজেট এটি। অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর এটি প্রথম বাজেট।

ঢাকা/এসএইচ

শেয়ার করুন

x

বাজেটে মূল্যস্ফীতি কমানোর সঠিক কোনো কর্মপরিকল্পনা নেই: সানেম

আপডেট: ১২:৩৪:০৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ জুন ২০২৪

গত এক বছর ধরে মূল্যস্ফীতি বেড়েই চলেছে, যা বর্তমানে ৯ থেকে ১০ শতাংশের মধ্যে ওঠানামা করছে। আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে মূল্যস্ফীতি ৬.৫ শতাংশ প্রাক্কলন করা হয়েছে। তবে মূল্যস্ফীতি কমানোর সঠিক কোনো কর্মপরিকল্পনা বাজেটে নেই বলে জানিয়েছেন সানেমের গবেষণা পরিচালক ড. সায়েমা হক বিদিশা।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

আর্থিক খাত নিয়ে তিনি বলেন, খেলাপি ঋন কমানোর জন্যও কোনো কর্মপরিকল্পনা বাজেটে নেই। প্রতিবছর ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ বেড়েই চলেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া উচিত না। এতে মূল্যস্ফীতি আরও বেড়ে যেতে পারে।

শনিবার (৮ জুন) সকালে সানেমের ‘বাজেট ২০২৪-২৫’ পর্যালোচনা নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, খোলাবাজারের সঙ্গে অফিশিয়ালি ডলারের দাম যতদিন পার্থক্য থাকবে ততদিন হুন্ডি চলতে থাকবে। এজন্য এই দুই যায়গায় ডলারের দর কাছাকাছি করা উচিত। এটি রোধ করতে হুন্ডি ও কালো টাকার দিকে কঠোর নজর দেওয়া দরকার।

আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ধরা হয়েছে সাত লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। এবার বাজেটে ঘাটতির পরিমাণ কমছে। চলতি অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের তুলনায় আগামী অর্থবছরের বাজেটে ঘাটতি কম ধরা হয়েছে পাঁচ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। অনুদান ছাড়া বাজেট ঘাটতি ধরা হয়েছে দুই লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা। তবে, অনুদানসহ সামগ্রিক ঘাটতি দাঁড়াবে দুই লাখ ৫১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। অর্থাৎ আগামী অর্থবছর চার হাজার ৪০০ কোটি টাকা অনুদান পাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

আরও পড়ুন: পোশাক শিল্পের উৎসে কর বাতিল চায় সিএমসিসিআই

ঘাটতি মেটাতে বৈদেশিক ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে এক লাখ ২৭ হাজার ২০০ কোটি টাকা। বৈদেশি ঋণ পরিশোধ করা হবে ৩৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এতে নিট বৈদেশিক ঋণ দাঁড়াবে ৯০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। এ ছাড়া অভ্যন্তরীণ খাত থেকে ঋণ নেওয়া হবে এক লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে নেওয়া হবে এক লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। যার ৭২ হাজার ৬৮২ কোটি টাকা দীর্ঘমেয়াদি ঋণ এবং ৬৪ হাজার ৮১৮ কোটি টাকা স্বল্পমেয়াদি। ব্যাংকবহির্ভূত ঋণ নেওয়া হবে ২৩ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। সঞ্চয়পত্র বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা।

২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে ঋণের সুদ পরিশোধের ব্যয় ধরা হয়েছে এক লাখ ১৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ ৯৩ হাজার কোটি টাকা। আর বৈদেশিক ঋণের সুদ ২০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।

বাজেটে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে পাঁচ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) লক্ষ্যমাত্রা চার লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। এনবিআর বহির্ভূত কর ধরা হয়েছে ১৫ হাজার কোটি টাকা। করব্যতীত প্রাপ্তির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪৬ হাজার কোটি টাকা।

এ ছাড়া বাজেটের আয়-ব্যয়ের বিশাল ঘাটতি পূরণে প্রধান ভরসাস্থল হিসেবে ব্যাংক খাত বেছে নিয়েছে সরকার। ঘাটতি পূরণে এক লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকার ব্যাংক ঋণ নেবে বলে লক্ষ্য ঠিক করেছে সরকার। এই অংক চলতি অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে পাঁচ হাজার ১০৫ কোটি টাকার বেশি। চলতি অর্থবছরের বাজেটে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে এক লাখ ৩২ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছিল সরকার। তবে সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রায় এটি বাড়িয়ে এক লাখ ৫৫ হাজার ৯৩৫ কোটি টাকা ঠিক করা হয়েছে।

আগামী ৩০ জুন প্রস্তাবিত বাজেট পাশ হবে। দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় বাংলাদেশের ৫৩তম বাজেট এটি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের টানা চতুর্থ মেয়াদের শেষ বাজেট এটি। অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর এটি প্রথম বাজেট।

ঢাকা/এসএইচ