০২:০১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

বানকো সিকিউরিটিজের ৪৫ কোটি টাকা সমন্বয়ের রুপরেখা ডিএসইতে

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১১:৩৬:৩৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ জুলাই ২০২১
  • / ৪৭৮৫ বার দেখা হয়েছে

বিশেষ প্রতিবেদক: কনসোলিডেটড অ্যাকাউন্টে ঘাটতি থাকা অর্থ সমন্বয় ও গ্রাহকদের সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে সৃষ্ট জটিলতা নিরসনের মাধ্যমে লেনদেন চালুর আপ্রান চেষ্টা করে যাচ্ছে বানকো সিকিউরিটিজ লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ। এরই প্রেক্ষিতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পর্ষদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেছে প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টরা। ডিএসই ছাড়াও হাউজ কর্তৃপক্ষ ক্লায়েন্ট টু ক্লায়েন্ট ভিত্তিতে সমঝোতার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এরই মধ্যে অধিকাংশ গ্রাহকই তাদের বিনিয়োগকৃত অর্থ বানকো সিকিউরিটিজকে ঋণ হিসেবে প্রদানের সম্মতিপত্র প্রদান করেছে। আজ ১২ জুলাই সোমবার এক চিঠির মাধ্যমে ডিএসইকে গ্রাহকদের ৪৫ কোটি টাকা সমন্বয়ের কর্মপরিকল্পনা বা রুপরেখা জানিয়েছে বানকো সিকিউরিটিজ। নির্ভরযোগ্য সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

বানকো’র পরিচালক শফিউল আজম স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, গত ৬ জুলাইয়ের বৈঠকে বানকো সিকিউরিটিজের পক্ষ থেকে ডিএসইকে দেয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী প্রদেয় ৫ কোটি টাকার মধ্যে দুইটি পে-অর্ডার ও একটি চেকের মাধ্যমে এক কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। এছাড়াও বাদ বাকি ৪ কোটি টাকার বিপরীতে আরও একটি চেক ডিএসইকে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে।

এদিকে, বানকো সিকিউরিটিজের কনসোলিডেটেড অ্যাকাউন্টে ৬৬ কোটি ৫৪ লাখ ৯১ হাজার ৯৯৮ টাকার কথা বলা হলেও এরমধ্যে ৪৮ কোটি টাকা বিভিন্ন গ্রাহক থেকে ঋণ হিসেবে নেয়া হয়েছে বলে দাবি করছে হাউজ কর্তৃপক্ষ। এরমধ্যে ২৬ কোটি ৫০ লাখ টাকার বিপরীতে বিভিন্ন গ্রাহক ঋণ হিসেবে অনাপত্তি বা এনওসি প্রদান করেছে। তবে চলমান মহামারির কারণে সরকার ঘোষিত লকডাউন এবং হাউজের কার্যক্রম বন্ধ থাকার কারণে ২১ কোটি ৫০ লাখ টাকার বিপরীতে গ্রাহকদের এনওসি নেয়া সম্ভব হয়নি।

বানকো সিউিরিটিজের একাধিক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, লকডাউন পরিস্থিতির উন্নয়ন এবং কার্যক্রম শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই এনওসি দিয়ে দিবেন বলে ওইসব গ্রাহকের মৌখিকভাবে আশ্বাস দিয়েছেন।
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, ইতিমধ্যে বিভিন্ন গ্রাহককে ২ কোটি ৬০ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। এছাড়াও ৪ কোটি ৫৫ লাখ টাকার বিপরীতে বিভিন্ন গ্রাহক হাউজের কার্যক্রম শুরু হওয়া সাপেক্ষে অর্থ পরিশোধে অনাপত্তি দিয়েছেন। আর ৬ কোটি ৪০ লাখ টাকার বিপরীতে লেনদেন চালু হওয়ার স্বল্প সময়ের মধ্যে হাউজ কর্তৃপক্ষের গ্যারান্টি বা নিশ্চয়তা পত্র প্রদান করা হয়েছে।

এসব বিষয়ে আলাপকালে বানকো সিকিউরিটিজের পরিচালক শফিউল আজম বিজনেস জার্নালকে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার যে অভিযোগ উঠেছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। বানকো সিকিউরিটিজ কখনোই আমার একক সিদ্ধান্তে পরিচালিত হয়নি। আমি প্রতিষ্ঠানের সামান্য অংশের শেয়ারহোল্ডার পরিচালক।’ তিনি বলেন, ‘ডিজিটাল প্রযুক্তির এই যুগে মুহুর্তেই বিশ্বের যেকোন প্রান্তে যোগাযোগ করা যায়। প্রতিষ্ঠানের ছোট-বড় সকল সিদ্ধান্ত সকল পরিচালদের সমন্বয়েই প্রদান করা হতো, আর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিতেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান আবদুল মুহিত।’

বানকো সিকিউরিটিজের গ্রাহকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘যেভাবেই হোক একটি সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক হিসেবে আমিও এর দায় এড়াতে পারি না। বানকো সিকিউরিটিজ বিশেষ করে আমি ব্যক্তিগতভাবে আপনাদের বিনিয়োগকৃত অর্থ ফেরতে আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছি। আপনারা একটু ধৈর্য্য ধরেন, আমি বিশ্বাস করি পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এবং ডিএসই’র অনুমোদন সাপেক্ষে লেনদেন কার্যক্রম শুরুর স্বল্পতম সময়ে আপনাদের অর্থ ফিরিয়ে দিতে পারবো।’

এ সময় প্রতিষ্ঠানটির অস্তিত্ব রক্ষা ও সাড়ে ১১ হাজার বিনিয়োকারীর স্বার্থে দ্রুত সময়ের মধ্যে লেনদেন কার্যক্রম শুরুর অনুমতি প্রদানে বিএসইসির চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম ও ডিএসই’র কর্তা ব্যক্তিদের বিশেষ অনুরোধ জানান।

বিজনেসজার্নাল/ঢাকা/এইচকে

ট্যাগঃ

শেয়ার করুন

x
English Version

বানকো সিকিউরিটিজের ৪৫ কোটি টাকা সমন্বয়ের রুপরেখা ডিএসইতে

আপডেট: ১১:৩৬:৩৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ জুলাই ২০২১

বিশেষ প্রতিবেদক: কনসোলিডেটড অ্যাকাউন্টে ঘাটতি থাকা অর্থ সমন্বয় ও গ্রাহকদের সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে সৃষ্ট জটিলতা নিরসনের মাধ্যমে লেনদেন চালুর আপ্রান চেষ্টা করে যাচ্ছে বানকো সিকিউরিটিজ লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ। এরই প্রেক্ষিতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পর্ষদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেছে প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টরা। ডিএসই ছাড়াও হাউজ কর্তৃপক্ষ ক্লায়েন্ট টু ক্লায়েন্ট ভিত্তিতে সমঝোতার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এরই মধ্যে অধিকাংশ গ্রাহকই তাদের বিনিয়োগকৃত অর্থ বানকো সিকিউরিটিজকে ঋণ হিসেবে প্রদানের সম্মতিপত্র প্রদান করেছে। আজ ১২ জুলাই সোমবার এক চিঠির মাধ্যমে ডিএসইকে গ্রাহকদের ৪৫ কোটি টাকা সমন্বয়ের কর্মপরিকল্পনা বা রুপরেখা জানিয়েছে বানকো সিকিউরিটিজ। নির্ভরযোগ্য সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

বানকো’র পরিচালক শফিউল আজম স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, গত ৬ জুলাইয়ের বৈঠকে বানকো সিকিউরিটিজের পক্ষ থেকে ডিএসইকে দেয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী প্রদেয় ৫ কোটি টাকার মধ্যে দুইটি পে-অর্ডার ও একটি চেকের মাধ্যমে এক কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। এছাড়াও বাদ বাকি ৪ কোটি টাকার বিপরীতে আরও একটি চেক ডিএসইকে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে।

এদিকে, বানকো সিকিউরিটিজের কনসোলিডেটেড অ্যাকাউন্টে ৬৬ কোটি ৫৪ লাখ ৯১ হাজার ৯৯৮ টাকার কথা বলা হলেও এরমধ্যে ৪৮ কোটি টাকা বিভিন্ন গ্রাহক থেকে ঋণ হিসেবে নেয়া হয়েছে বলে দাবি করছে হাউজ কর্তৃপক্ষ। এরমধ্যে ২৬ কোটি ৫০ লাখ টাকার বিপরীতে বিভিন্ন গ্রাহক ঋণ হিসেবে অনাপত্তি বা এনওসি প্রদান করেছে। তবে চলমান মহামারির কারণে সরকার ঘোষিত লকডাউন এবং হাউজের কার্যক্রম বন্ধ থাকার কারণে ২১ কোটি ৫০ লাখ টাকার বিপরীতে গ্রাহকদের এনওসি নেয়া সম্ভব হয়নি।

বানকো সিউিরিটিজের একাধিক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, লকডাউন পরিস্থিতির উন্নয়ন এবং কার্যক্রম শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই এনওসি দিয়ে দিবেন বলে ওইসব গ্রাহকের মৌখিকভাবে আশ্বাস দিয়েছেন।
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, ইতিমধ্যে বিভিন্ন গ্রাহককে ২ কোটি ৬০ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। এছাড়াও ৪ কোটি ৫৫ লাখ টাকার বিপরীতে বিভিন্ন গ্রাহক হাউজের কার্যক্রম শুরু হওয়া সাপেক্ষে অর্থ পরিশোধে অনাপত্তি দিয়েছেন। আর ৬ কোটি ৪০ লাখ টাকার বিপরীতে লেনদেন চালু হওয়ার স্বল্প সময়ের মধ্যে হাউজ কর্তৃপক্ষের গ্যারান্টি বা নিশ্চয়তা পত্র প্রদান করা হয়েছে।

এসব বিষয়ে আলাপকালে বানকো সিকিউরিটিজের পরিচালক শফিউল আজম বিজনেস জার্নালকে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার যে অভিযোগ উঠেছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। বানকো সিকিউরিটিজ কখনোই আমার একক সিদ্ধান্তে পরিচালিত হয়নি। আমি প্রতিষ্ঠানের সামান্য অংশের শেয়ারহোল্ডার পরিচালক।’ তিনি বলেন, ‘ডিজিটাল প্রযুক্তির এই যুগে মুহুর্তেই বিশ্বের যেকোন প্রান্তে যোগাযোগ করা যায়। প্রতিষ্ঠানের ছোট-বড় সকল সিদ্ধান্ত সকল পরিচালদের সমন্বয়েই প্রদান করা হতো, আর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিতেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান আবদুল মুহিত।’

বানকো সিকিউরিটিজের গ্রাহকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘যেভাবেই হোক একটি সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক হিসেবে আমিও এর দায় এড়াতে পারি না। বানকো সিকিউরিটিজ বিশেষ করে আমি ব্যক্তিগতভাবে আপনাদের বিনিয়োগকৃত অর্থ ফেরতে আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছি। আপনারা একটু ধৈর্য্য ধরেন, আমি বিশ্বাস করি পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এবং ডিএসই’র অনুমোদন সাপেক্ষে লেনদেন কার্যক্রম শুরুর স্বল্পতম সময়ে আপনাদের অর্থ ফিরিয়ে দিতে পারবো।’

এ সময় প্রতিষ্ঠানটির অস্তিত্ব রক্ষা ও সাড়ে ১১ হাজার বিনিয়োকারীর স্বার্থে দ্রুত সময়ের মধ্যে লেনদেন কার্যক্রম শুরুর অনুমতি প্রদানে বিএসইসির চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম ও ডিএসই’র কর্তা ব্যক্তিদের বিশেষ অনুরোধ জানান।

বিজনেসজার্নাল/ঢাকা/এইচকে