০৪:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ০১ অক্টোবর ২০২৫

বিএসইসি’র ১৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১১:১৮:৪৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৮ মার্চ ২০২৫
  • / ১০৪১৪ বার দেখা হয়েছে

ফাইল ফটো

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ১৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (০৬ মার্চ) বিএসইসি চেয়ারম্যানের গানম্যান মো. আশিকুর রহমান বাদি হয়ে শেরে বাংলা নগর থানায় মামলাটি দায়ের করেন। শেরে বাংলা নগর থানার একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

মামলায় আসামী করা হয়েছে বিএসইসির সাবেক নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমান (৫৮), নির্বাহী পরিচালক মাহবুবুল আলম (৫৭) নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম (৫৪), পরিচালক আবু রায়হান মো. মোহতাছিন বিল্লা (৫১), অতিরিক্ত পরিচালক নজরুল ইসলাম (৫০), যুগ্মপরিচালক রাশেদুল ইসলাম (৪৮), উপপরিচালক বনী ইয়ামিন (৪৫), উপপরিচালক আল ইসলাম (৩৮), উপপরিচালক শহিদুল ইসলাম (৪২), উপপরিচালক তৌহিদুল ইসলাম (৩২), সহকারী পরিচালক জনি হোসেন (৩১), সহকারী পরিচালক রায়হান কবীর (৩০), সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ হোসেন (৩০), সহকারী পরিচালক আব্দুল বাতেন (৩২), লাইব্রেরিয়ান মো. সেলিম রেজা বাপ্পী(৩১) এবং ব্যক্তিগত কর্মকর্তা আবু ইউসুফকে (২৯)।

মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়েছে, বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে এবং কমিশনার মো. মহসিন চৌধুরী, মো. আলী আকবর ও ফারজানা লালারুখের উপস্থিতিতে কমিশনের নির্ধারিত সভাকক্ষে সভা চলাকালে অভিযুক্তরা ও অন্যান্য কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী কমিশনের সভাকক্ষে জোরপূর্বক ও অনধিকার প্রবেশ করে চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের অবরুদ্ধ করে। এর পর পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী, আসামীরা কমিশনের মূল ফটকে তালা লাগিয়ে সিসি ক্যামেরা, ওয়াই-ফাই, লিফট বন্ধ করে এবং বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে মারাত্মক অরাজকতা সৃষ্টি করে এবং গুরুতর জখমের প্রচেষ্টা চালায়।

এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, আসামীরা অকথ্য ভাষা ব্যবহার করে এবং এসির রিমোট চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের দিকে ছুড়ে মারে। এছাড়া তারা পেশি শক্তি প্রয়োগ করে ভয় ও হুমকি প্রদর্শন করে। একই সঙ্গে তারা কমিশনের সাবেক নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমানের বাধ্যতামূলক অবসর আদেশ প্রত্যাহার এবং কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দাবিতে সরকারি অফিস ভাংচুর করে এবং সরকারি কাজে বাঁধা সৃষ্টি করে। ফলে প্রজাতন্ত্রের সম্পত্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

এজাহারে আরও বলা হয়েছে, বিএসইসি গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে শেয়ারবাজারের অনিয়ম অনুসন্ধান করতে। তদন্ত কমিটির রিপোর্টে অনিয়মের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়। যার ভিত্তিতে কমিশন কয়েকজন কর্মকর্তাকে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেয়। সাবেক নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমানকে দুর্নীতির অভিযোগে চাকরি থেকে অবসর দেওয়া হয়।

এছাড়া, মামলার এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, অভিযুক্তদের মধ্যে কয়েকজনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে তদন্ত চলমান রয়েছে। সাবেক নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমান, নির্বাহী পরিচালক মাহবুবুল আলম, নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম, পরিচালক শেখ মাহবুব-উর-রহমান, অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ মাহমুদুল হক, অতিরিক্ত পরিচালক এস কে মো. লুৎফুল কবির ও যুগ্ম পরিচালক মো. রশীদুল আলমের বিরুদ্ধে শেয়ার কেলেঙ্কারি এবং শেয়ারবাজারে অবৈধ লুটপাটের অভিযোগ রয়েছে। তাদের পাসপোর্ট বাতিল করা হয়েছে এবং ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: সাপ্তাহিক লুজারের শীর্ষে এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিল

এ পরিস্থিতিতে কমিশনের চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের অবরুদ্ধ করে ভয়াবহ অশান্তি সৃষ্টি করা হয়, যা প্রায় ৪ ঘণ্টা ধরে চলতে থাকে। অবশেষে পুলিশ ও সেনাবাহিনী বিএসইসিতে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে কমিশন শেয়ারবাজারে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।

ঢাকা/টিএ

শেয়ার করুন

error: Content is protected ! Please Don't Try!

বিএসইসি’র ১৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা

আপডেট: ১১:১৮:৪৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৮ মার্চ ২০২৫

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ১৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (০৬ মার্চ) বিএসইসি চেয়ারম্যানের গানম্যান মো. আশিকুর রহমান বাদি হয়ে শেরে বাংলা নগর থানায় মামলাটি দায়ের করেন। শেরে বাংলা নগর থানার একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

মামলায় আসামী করা হয়েছে বিএসইসির সাবেক নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমান (৫৮), নির্বাহী পরিচালক মাহবুবুল আলম (৫৭) নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম (৫৪), পরিচালক আবু রায়হান মো. মোহতাছিন বিল্লা (৫১), অতিরিক্ত পরিচালক নজরুল ইসলাম (৫০), যুগ্মপরিচালক রাশেদুল ইসলাম (৪৮), উপপরিচালক বনী ইয়ামিন (৪৫), উপপরিচালক আল ইসলাম (৩৮), উপপরিচালক শহিদুল ইসলাম (৪২), উপপরিচালক তৌহিদুল ইসলাম (৩২), সহকারী পরিচালক জনি হোসেন (৩১), সহকারী পরিচালক রায়হান কবীর (৩০), সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ হোসেন (৩০), সহকারী পরিচালক আব্দুল বাতেন (৩২), লাইব্রেরিয়ান মো. সেলিম রেজা বাপ্পী(৩১) এবং ব্যক্তিগত কর্মকর্তা আবু ইউসুফকে (২৯)।

মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়েছে, বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে এবং কমিশনার মো. মহসিন চৌধুরী, মো. আলী আকবর ও ফারজানা লালারুখের উপস্থিতিতে কমিশনের নির্ধারিত সভাকক্ষে সভা চলাকালে অভিযুক্তরা ও অন্যান্য কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী কমিশনের সভাকক্ষে জোরপূর্বক ও অনধিকার প্রবেশ করে চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের অবরুদ্ধ করে। এর পর পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী, আসামীরা কমিশনের মূল ফটকে তালা লাগিয়ে সিসি ক্যামেরা, ওয়াই-ফাই, লিফট বন্ধ করে এবং বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে মারাত্মক অরাজকতা সৃষ্টি করে এবং গুরুতর জখমের প্রচেষ্টা চালায়।

এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, আসামীরা অকথ্য ভাষা ব্যবহার করে এবং এসির রিমোট চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের দিকে ছুড়ে মারে। এছাড়া তারা পেশি শক্তি প্রয়োগ করে ভয় ও হুমকি প্রদর্শন করে। একই সঙ্গে তারা কমিশনের সাবেক নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমানের বাধ্যতামূলক অবসর আদেশ প্রত্যাহার এবং কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দাবিতে সরকারি অফিস ভাংচুর করে এবং সরকারি কাজে বাঁধা সৃষ্টি করে। ফলে প্রজাতন্ত্রের সম্পত্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

এজাহারে আরও বলা হয়েছে, বিএসইসি গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে শেয়ারবাজারের অনিয়ম অনুসন্ধান করতে। তদন্ত কমিটির রিপোর্টে অনিয়মের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়। যার ভিত্তিতে কমিশন কয়েকজন কর্মকর্তাকে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেয়। সাবেক নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমানকে দুর্নীতির অভিযোগে চাকরি থেকে অবসর দেওয়া হয়।

এছাড়া, মামলার এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, অভিযুক্তদের মধ্যে কয়েকজনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে তদন্ত চলমান রয়েছে। সাবেক নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমান, নির্বাহী পরিচালক মাহবুবুল আলম, নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম, পরিচালক শেখ মাহবুব-উর-রহমান, অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ মাহমুদুল হক, অতিরিক্ত পরিচালক এস কে মো. লুৎফুল কবির ও যুগ্ম পরিচালক মো. রশীদুল আলমের বিরুদ্ধে শেয়ার কেলেঙ্কারি এবং শেয়ারবাজারে অবৈধ লুটপাটের অভিযোগ রয়েছে। তাদের পাসপোর্ট বাতিল করা হয়েছে এবং ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: সাপ্তাহিক লুজারের শীর্ষে এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিল

এ পরিস্থিতিতে কমিশনের চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের অবরুদ্ধ করে ভয়াবহ অশান্তি সৃষ্টি করা হয়, যা প্রায় ৪ ঘণ্টা ধরে চলতে থাকে। অবশেষে পুলিশ ও সেনাবাহিনী বিএসইসিতে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে কমিশন শেয়ারবাজারে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।

ঢাকা/টিএ