০৬:৩২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৫

বিবিসিসিআই-এর ডিজি নুরুজ্জামান বরখাস্ত

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১২:২০:৫১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ মে ২০২৩
  • / ১০৩৮২ বার দেখা হয়েছে

ব্রিটিশ বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (বিবিসিসিআই) ডাইরেক্টর জেনারেল (ডিজি) পদ থেকে এএইচএম নুরুজ্জামানকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বরখাস্ত করা হয়েছে।

গত ১৬ মে (মঙ্গলবার) অনুষ্ঠিত বোর্ড সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় দেওয়ান মাহাদিকে নতুন ডাইরেক্টর জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনি আগে ডেপুটি ডাইরেক্টর জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। বিবিসিসিআই সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

জানা গেছে, ডাইরেক্টর মুসলেহ আহমদ গত বছরের ২০ নভেম্বর বিবিসিসিআই’র প্রেসিডেন্টকে লেখা এক ই-মেইলে অভিযোগ করেন, বিবিসিসিআই’র অফিসিয়াল মেইল থেকে তার বিরুদ্ধে নানা কুৎসা রটানো হয়েছে। এর মাধ্যমে ডাইরেক্টরদের ব্যক্তিগত ই-মেইল ঠিকানাও উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। সংগঠনের অফিসিয়াল ই-মেইল ব্যবহার করে এমন কাজ কীভাবে ঘটলো এবং এর পেছনে কে জড়িত সেটি তদন্তের অনুরোধ জানান। প্রাথমিকভাবে ডাইরেক্টর জেনারেল যেহেতু বিবিসিসিআই’র কাজের জন্য দায়িত্বশীল, তাই ওই ঘটনায় ডিজি’র ভূমিকা তদন্তের অনুরোধ জানান তিনি। একই সঙ্গে ডিজি নুরুজ্জামান ডাইরেক্টর ফি যথাযথভাবে পরিশোধ করেছেন কি না, তার প্রমাণ বোর্ডে উপস্থাপন করতে বলেন।

তিনি আরও অভিযোগ করেন, বোর্ডে কোনও আলোচনা ছাড়াই ডিজি নুরুজ্জামান এক জন ডাইরেক্টর নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন, আবেদনকারীর ফি ৫ হাজার পাউন্ড, যা অফেরতযোগ্য। ডাইরেক্টরশিপের আবেদন ফি ‘অফেরতযোগ্য’ কথাটি বিবিসিসিআই’র সংবিধানের লঙ্ঘন। কী উদ্দেশে নুরুজ্জামান ডাইরেক্টর ফি ‘অফেরতযোগ্য’ উল্লেখ করলেন এবং বোর্ডের অনুমিত ছাড়া সার্কুলার প্রকাশ করে সংবিধান-বহির্ভূত কাজ করলেন, তা তদন্তের অনুরোধ জানান। এ ছাড়া, যে কোম্পানির ডাইরেক্টর দাবি করে নুরুজ্জামান বিবিসিসিআই-এ সদস্যপদ নিয়েছেন সেই ‘তাজ অ্যাকাউনটেন্টস লিমিটেড’ একটি ডরমেন্ট (অকার্যকর) কোম্পানি উল্লেখ করে তার সদস্যপদের বৈধতা যাচাইয়েরও আবেদন জানান মুসলেহ আহমদ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিবিসিসিআই’র কয়েকজন ডাইরেক্টর জানান, ১৬ মে বিবিসিসিআই কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বোর্ড সভার অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে একটি এজেন্ডা ছিলো ‘ডাইরেক্টরের বিরুদ্ধে অভিযোগ ও ভবিষ্যৎ করণীয়’। সভায় মোট ৩২ জন ডাইরেক্টরের মধ্যে ২৫ জন উপস্থিত ছিলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন বিবিসিসিআই’র প্রেসিডেন্ট সাইদুর রহমান রেনু। সভায় অন্যান্য এজেন্ডার আলোচনা ঠিকঠাক শেষ হয়। কিন্তু ১২ নম্বর এজেন্ডায় থাকা ‘ডাইরেক্টরের বিরুদ্ধে অভিযোগ ও ভবিষ্যৎ করণীয়’ সম্পর্কে আলোচনা উঠতেই সভা শেষ করার অনুরোধ জানান কয়েকজন। বোর্ড আলোচনা চালিয়ে যেতে চাইলে হইচই করে সভাস্থল ত্যাগ করেন এএইচএম নুরুজ্জামান, শাহগির বখত ফারুক, বশির আহমদ ও ওয়ালি তসর উদ্দিন।

আরও পড়ুন: মোটরযানের নতুন বীমা পলিসি তৈরির নির্দেশ

উপস্থিত বাকি সদস্যরা আলোচনা চালিয়ে যান। তারা একমত হন যে, অন্য ডাইরেক্টররা সভা ত্যাগ করতে পারলেও ডিজি’র দায়িত্বে থেকে বোর্ডের বা প্রেসিডেন্টের অনুমতি ছাড়া নুরুজ্জামান বোর্ড সভা ত্যাগ করতে পারেন না। এরা তার দায়িত্বের ‘চরম লঙ্ঘন’ (গ্রস মিসকন্ডাক্ট)। যে কারণে বোর্ডে ভোটাভুটির মাধ্যমে সর্বসম্মতিক্রমে নুরুজ্জামানকে তাৎক্ষণিকভাবে ডিজি’র পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়। এতে চার জন ডাইরেক্টর ভোট প্রদানে বিরত ছিলেন।

এদিকে, ডিজি এএইচএম নুরুজ্জামানের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলোর তদন্তে ডাইরেক্টর মহিব চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটিকে আগামী বোর্ড সভায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সেই তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে আগামী বোর্ড সভায় নুরুজ্জামানের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে বিবিসিসিআই।

ঢাকা/এসএ

শেয়ার করুন

error: Content is protected ! Please Don't Try!

বিবিসিসিআই-এর ডিজি নুরুজ্জামান বরখাস্ত

আপডেট: ১২:২০:৫১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ মে ২০২৩

ব্রিটিশ বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (বিবিসিসিআই) ডাইরেক্টর জেনারেল (ডিজি) পদ থেকে এএইচএম নুরুজ্জামানকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বরখাস্ত করা হয়েছে।

গত ১৬ মে (মঙ্গলবার) অনুষ্ঠিত বোর্ড সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় দেওয়ান মাহাদিকে নতুন ডাইরেক্টর জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনি আগে ডেপুটি ডাইরেক্টর জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। বিবিসিসিআই সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

জানা গেছে, ডাইরেক্টর মুসলেহ আহমদ গত বছরের ২০ নভেম্বর বিবিসিসিআই’র প্রেসিডেন্টকে লেখা এক ই-মেইলে অভিযোগ করেন, বিবিসিসিআই’র অফিসিয়াল মেইল থেকে তার বিরুদ্ধে নানা কুৎসা রটানো হয়েছে। এর মাধ্যমে ডাইরেক্টরদের ব্যক্তিগত ই-মেইল ঠিকানাও উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। সংগঠনের অফিসিয়াল ই-মেইল ব্যবহার করে এমন কাজ কীভাবে ঘটলো এবং এর পেছনে কে জড়িত সেটি তদন্তের অনুরোধ জানান। প্রাথমিকভাবে ডাইরেক্টর জেনারেল যেহেতু বিবিসিসিআই’র কাজের জন্য দায়িত্বশীল, তাই ওই ঘটনায় ডিজি’র ভূমিকা তদন্তের অনুরোধ জানান তিনি। একই সঙ্গে ডিজি নুরুজ্জামান ডাইরেক্টর ফি যথাযথভাবে পরিশোধ করেছেন কি না, তার প্রমাণ বোর্ডে উপস্থাপন করতে বলেন।

তিনি আরও অভিযোগ করেন, বোর্ডে কোনও আলোচনা ছাড়াই ডিজি নুরুজ্জামান এক জন ডাইরেক্টর নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন, আবেদনকারীর ফি ৫ হাজার পাউন্ড, যা অফেরতযোগ্য। ডাইরেক্টরশিপের আবেদন ফি ‘অফেরতযোগ্য’ কথাটি বিবিসিসিআই’র সংবিধানের লঙ্ঘন। কী উদ্দেশে নুরুজ্জামান ডাইরেক্টর ফি ‘অফেরতযোগ্য’ উল্লেখ করলেন এবং বোর্ডের অনুমিত ছাড়া সার্কুলার প্রকাশ করে সংবিধান-বহির্ভূত কাজ করলেন, তা তদন্তের অনুরোধ জানান। এ ছাড়া, যে কোম্পানির ডাইরেক্টর দাবি করে নুরুজ্জামান বিবিসিসিআই-এ সদস্যপদ নিয়েছেন সেই ‘তাজ অ্যাকাউনটেন্টস লিমিটেড’ একটি ডরমেন্ট (অকার্যকর) কোম্পানি উল্লেখ করে তার সদস্যপদের বৈধতা যাচাইয়েরও আবেদন জানান মুসলেহ আহমদ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিবিসিসিআই’র কয়েকজন ডাইরেক্টর জানান, ১৬ মে বিবিসিসিআই কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বোর্ড সভার অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে একটি এজেন্ডা ছিলো ‘ডাইরেক্টরের বিরুদ্ধে অভিযোগ ও ভবিষ্যৎ করণীয়’। সভায় মোট ৩২ জন ডাইরেক্টরের মধ্যে ২৫ জন উপস্থিত ছিলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন বিবিসিসিআই’র প্রেসিডেন্ট সাইদুর রহমান রেনু। সভায় অন্যান্য এজেন্ডার আলোচনা ঠিকঠাক শেষ হয়। কিন্তু ১২ নম্বর এজেন্ডায় থাকা ‘ডাইরেক্টরের বিরুদ্ধে অভিযোগ ও ভবিষ্যৎ করণীয়’ সম্পর্কে আলোচনা উঠতেই সভা শেষ করার অনুরোধ জানান কয়েকজন। বোর্ড আলোচনা চালিয়ে যেতে চাইলে হইচই করে সভাস্থল ত্যাগ করেন এএইচএম নুরুজ্জামান, শাহগির বখত ফারুক, বশির আহমদ ও ওয়ালি তসর উদ্দিন।

আরও পড়ুন: মোটরযানের নতুন বীমা পলিসি তৈরির নির্দেশ

উপস্থিত বাকি সদস্যরা আলোচনা চালিয়ে যান। তারা একমত হন যে, অন্য ডাইরেক্টররা সভা ত্যাগ করতে পারলেও ডিজি’র দায়িত্বে থেকে বোর্ডের বা প্রেসিডেন্টের অনুমতি ছাড়া নুরুজ্জামান বোর্ড সভা ত্যাগ করতে পারেন না। এরা তার দায়িত্বের ‘চরম লঙ্ঘন’ (গ্রস মিসকন্ডাক্ট)। যে কারণে বোর্ডে ভোটাভুটির মাধ্যমে সর্বসম্মতিক্রমে নুরুজ্জামানকে তাৎক্ষণিকভাবে ডিজি’র পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়। এতে চার জন ডাইরেক্টর ভোট প্রদানে বিরত ছিলেন।

এদিকে, ডিজি এএইচএম নুরুজ্জামানের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলোর তদন্তে ডাইরেক্টর মহিব চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটিকে আগামী বোর্ড সভায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সেই তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে আগামী বোর্ড সভায় নুরুজ্জামানের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে বিবিসিসিআই।

ঢাকা/এসএ