বৃহস্পতির ‘যমজ’ গ্রহের সন্ধান
- আপডেট: ০৭:২৩:৪৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ এপ্রিল ২০২২
- / ৪১৫৩ বার দেখা হয়েছে
বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: বৃহস্পতি (৩১ মার্চ) আমাদের সৌরজগতের একটি অনন্য গ্রহ। শুধু উজ্জ্বল রঙের জন্যই নয়, এটি আকারেও বড়। সৌরমণ্ডলের সবথেকে বড় গ্রহ বলে পরিচিত বৃহস্পতি। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এখন জানতে পেরেছেন, বৃহস্পতি একা নয়, এর একটি যমজ গ্রহ রয়েছে। প্রায় একইরকম দেখতে গ্রহটি প্রায় একই দূরত্বে অবস্থান করছে সূর্য থেকে।
অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুক–টুইটার–লিংকডইন–ইন্সটাগ্রাম–ইউটিউব
বৃহস্পতির যমজ গ্রহের সন্ধানে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা নাসার কেপলার স্পেস টেলিস্কোপের দ্বারা ২০১৬ সালে প্রাপ্ত ডেটা ব্যবহার করে জ্যোতির্পদার্থবিদদের একটি আন্তর্জাতিক দল এই এক্সোপ্ল্যানেটটি শনাক্ত করেছে। টেলিস্কোপটি এখন পর্যন্ত মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সিতে প্রায় ২৭০০টি গ্রহ শনাক্ত করেছে। তবে এই বৃহস্পতির মতো গ্রহটি আগে শনাক্ত করা যে কোনও গ্রহের থেকে দ্বিগুণ দূরে অবস্থিত।
১৭ হাজার আলোক-বর্ষ দূরে নতুন পৃথিবী বিজ্ঞানীরা অ্যালবার্ট আইনস্টাইনের আপেক্ষিক তত্ত্ব এবং এই অনন্য বিশ্বকে চিহ্নিত করার জন্য মহাকর্ষীয় মাইক্রোলেন্সিং নামে পরিচিত একটি পদ্ধতি ব্যবহার করে পৃথিবী থেকে ১৭ হাজার আলোক-বর্ষ দূরে অবস্থিত বৃহস্পতির যমজ গ্রহটি আবিষ্কার করেছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। গবেষণাটি রয়্যাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির মাসিক নোটিস জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
কেপলার ডেটার মাধ্যমে অনুসন্ধান নতুন গ্রহের জোড্রেল ব্যাংক সেন্টার ফর অ্যাস্ট্রোফিজিক্স এবং ম্যাঞ্চেস্টার ইউনিভার্সিটির পিএইচডি ছাত্র ডেভিড স্পেচের নেতৃত্বে একটি দল ২০১৬-র এপ্রিল থেকে জুলাইয়ের মধ্যে সংগ্রহ করা কেপলার ডেটার মাধ্যমে অনুসন্ধান করা হয়েছিল। একটি কেপলার ডেটা গ্যালাক্সির কেন্দ্রের কাছাকাছি লক্ষ লক্ষ তারা নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করে।
কেপলারের মাত্র তিন মাস পর্যবেক্ষণে আবিষ্কার ফোরগ্রাউন্ড প্ল্যানেটারি সিস্টেম এবং একটি ব্যাকগ্রাউন্ড স্টারের মধ্যে প্রায় নিখুঁত সারিবদ্ধতা প্রয়োজন। একটি ব্যাকগ্রাউন্ড স্টারের একটি গ্রহ দশ থেকে কয়েক মিলিয়ন থাকে। কেপলার মাত্র তিন মাস বসে তা পর্যবেক্ষণ দেখেছিলেন। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি পরিষেবা কাউন্সিলের প্রধান তদন্তকারী ইমন কেরিনস একটি বিবৃতিতে তা জানান।
আইনস্টাইনের সূত্র ব্যবহার করে গ্রহ আবিষ্কার মহাকাশ ভিত্তিক টেলিস্কোপটি পৃথিবী থেকে প্রায় ১৩৫ মিলিয়ন কিলোমিটার দূরে অবস্থান করে। অনুকূল আবহাওয়া বা দিনের আলোতে নিরবচ্ছিন্নভাবে কেপলার টেলিস্কোপ এক্সোপ্ল্যানেটের ভর এবং নক্ষত্র থেকে তার কক্ষপথের দূরত্ব নির্ণয় করে। এটি মূলত বৃহস্পতির অভিন্ন যমজ। ফলে তার ভর এবং তার সূর্য থেকে অবস্থানের দিক নিশ্চিত হয়েই কেপলার টেলিস্কোপ আইনস্টাইনের সূত্র ব্যবহার করে এই প্রথম একটি গ্রহ আবিষ্কার করেছিল।
যে পদ্ধতি মেনে আবিষ্কার হয়েছিল যমজ বৃহস্পতি এই ইভেন্টটি প্রথম আবদ্ধ মাইক্রোলেন্সিং এক্সোপ্ল্যানেট যা মহাকাশ-ভিত্তিক ডেটা থেকে আবিষ্কৃত হয়েছে৷ যদিও একটি স্পেস টেলিস্কোপ মাইক্রোলেন্সিং অধ্যয়নের জন্য ডিজাইন করা হয়নি। এই ফলাফলটি এক্সোপ্ল্যানেট মাইক্রোলেন্সিং আবিষ্কারের সুবিধাগুলিকে তুলে ধরে। তা উচ্চ-ক্যাডেন্স টেম্পোরাল স্যাম্পলিং থেকে আসে৷
কেপলার টেলিস্কোপটি যে কারণে ডিজাইনড করা হয়েছিল কেপলার টেলিস্কোপটি মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির একটি অঞ্চল জরিপ করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছিল, যাতে বসবাসযোগ্য অঞ্চলে বা তার কাছাকাছি পৃথিবীর আকারের এবং ছোট গ্রহগুলি আবিষ্কার করা যায়। আমাদের ছায়াপথের শত শত বিলিয়ন নক্ষত্রের ভগ্নাংশ নির্ণয় করা যায়, যাতে এই ধরনের গ্রহ থাকতে পারে। নয় বছর মহাকাশে কাজ করে অবসর নেওয়ার আগে কেপলার সৌরজগতের বাইরে থেকে গ্রহ আবিষ্কার করেছিল।
ঢাকা/এসএ