বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ধরে রাখার পরামর্শ আইএমএফের

- আপডেট: ১১:০১:১৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ জুলাই ২০২২
- / ১০৩৪৭ বার দেখা হয়েছে
বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ধরে রাখার পরামর্শ দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সফররত একটি প্রতিনিধি দল। এ ছাড়া ব্যাংকের আমানত ও ঋণের সুদহারের ওপর যে সীমা রয়েছে, তা তুলে দেওয়ার সুপারিশ করেছে।
আইএমএফের এশিয়া অ্যান্ড প্যাসিফিক বিভাগের প্রধান রুহুল আনন্দের নেতৃত্বে সফররত আইএমএফ মিশন রোববার অর্থ মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের সঙ্গে পৃথক বৈঠকে এমন মতামত দিয়েছে বলে জানা গেছে। রোববার থেকে আইএমএফ মিশনের সঙ্গে সরকারের বৈঠক শুরু হয়েছে। বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্য পরিস্থিতির উন্নতির জন্য আইএমএফের কাছে বাংলাদেশ সম্প্রতি ৪৫০ কোটি ডলারের ঋণ চেয়েছে। এরপর আইএমএফের এ মিশন ঢাকায় এসেছে।
অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুক–টুইটার–লিংকডইন–ইন্সটাগ্রাম–ইউটিউব
জানা গেছে, বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হারে অস্থিরতা এবং যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে মন্দা পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় কমে যাওয়ার আশঙ্কা করেছে আইএমএফ মিশন। সে ক্ষেত্রে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সন্তোষজনক পর্যায়ে রাখতে বাংলাদেশ কোন ধরনের কৌশল অবলম্বন করছে, তা জানতে চান তারা। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, প্রবাসে কর্মীদের অভিবাসন সাম্প্রতিক সময়ে বেড়েছে। এর ফলে রেমিট্যান্স বাড়বে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। বৈঠকে আইএমএফ কর্মকর্তারা খেলাপি ঋণ কমানো ও ব্যাংক খাতের দুর্বলতা দূর করতে সংস্কারের কিছু সুপারিশ করেছে বলে জানা গেছে।
বৈঠকের বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়া এবং বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হারের অস্থিরতাকে অন্যতম চ্যালেঞ্জ মনে করছেন আইএমএফ কর্মকর্তারা। তাদের জানানো হয়েছে, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ধরে রাখতে অনেক পণ্যের আমদানি নিরুৎসাহিত করতে বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ধরে রাখতে বিদ্যুৎ উৎপাদনে এলএনজির ব্যবহার কমানো হয়েছে। কম দামের কয়লার ওপর নির্ভরতা বাড়ানো হয়েছে। আগামী এক মাস আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে সেপ্টেম্বরে লোডশেডিং রেশনিং বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আইএমএফ কর্মকর্তারা জানান, রাশিয়া থেকে চাহিদা অনুযায়ী গ্যাস না পাওয়ায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন বিদ্যুৎ উৎপাদনে কয়লার ওপর নির্ভরতা বাড়াচ্ছে। ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে কয়লার দামও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষের সঙ্গে বৈঠকে চলতি অর্থবছর বাংলাদেশের রপ্তানি আয় কমতে থাকলে সরকার কী পদক্ষেপ নেবে, সে বিষয়ে জানতে চেয়েছে মিশন। জবাবে বাণিজ্য সচিব বলেন, ২০০৭-২০০৮ সময়ে বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার সময় বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি কমেনি। কারণ, বাংলাদেশ কম দামের পোশাক রপ্তানি করে। ২০২৬ সালে এলডিসি থেকে উত্তরণের পর বাংলাদেশের রপ্তানির ওপর সম্ভাব্য নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলায় সরকারের করণীয় সম্পর্কেও জানতে চেয়েছে আইএমএফ। জবাবে বিভিন্ন দেশ এবং অঞ্চলের সঙ্গে মুক্তবাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের উদ্যোগ নেওয়ার তথ্য তুলে ধরেন কর্মকর্তারা।
মিশনের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুষ্ঠিত বৈঠকে গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। মূল্যস্টম্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও রিজার্ভ স্থিতিশীল রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক কী পদক্ষেপ নিয়েছে, সে সম্পর্কে তথ্য নিয়েছে আইএমএফ।
ঢাকা/টিএ