বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটেও রাজস্ব আয় বেড়েছে ১৩ শতাংশ

- আপডেট: ১০:১৬:১৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ অক্টোবর ২০২২
- / ১০৩৫৯ বার দেখা হয়েছে
বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে স্থানীয় ব্যবসা-বাণিজ্যের ওপর। বৈশ্বিক আর্থিক সংকটে পর্যটকদের আনাগোনাও কমছে। মূল্যস্ফীতির কারণে কমেছে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা। এ ধরনের নানাবিধ সংকটের মুখে ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে রাজস্ব আয় কমেছে ৫৫১৯ কোটি টাকা। তবে এ সময় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১২ দশমিক ৬৩ শতাংশ। সংশ্লিষ্ট সূত্রে পাওয়া গেছে এ তথ্য।
অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুক–টুইটার–লিংকডইন–ইন্সটাগ্রাম–ইউটিউব
অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বরে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭১ হাজার ২৫৬ কোটি টাকা ।এর বিপরীতে আদায় হয়েছে ৬৫ হাজার ৭৩৭ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের (২০২১-২২) একই সময়ে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে রাজস্ব আসে ৫৮ হাজার ৩৬৮ কোটি টাকা।
মূলত তিনটি খাত থেকে রাজস্ব আহরণ করা হয়। এর মধ্যে আছে আমদানি ও রপ্তানি খাত, স্থানীয় পর্যায়ে মূসক বা ভ্যাট থেকে আয় এবং ভ্রমণ কর। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাময়িক তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরে উল্লিখিত তিনটি খাতে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় প্রকৃত আয় কমেছে।
আমদানি ও রপ্তানি খাত: চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে আমদানি ও রপ্তানি খাতে ২৫ হাজার ১২১ কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। এর বিপরীতে আয় হয় প্রায় ২২ হাজার ৪৩৪ কোটি টাকা। এ সময় রাজস্ব আহরণ কমছে ২৬৮৭ কোটি টাকা। তবে এ খাতে প্রবৃদ্ধি ১৬ দশমিক ৪৪ শতাংশ। সংশ্লিষ্টদের মতে, ডলার সংকট ও রিজার্ভের ওপর চাপ কমাতে পণ্য আমদানি নিরুসাহিত, এলসিতে মার্জিন আরোপ, অপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি হ্রাস করা হয়। এছাড়া নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে চাল ও ভোজ্যতেল আমদানি শুঙ্ক কমানো হয়। চাল আমদানি শুল্ক ও করভার ৬২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশে আনা হয়। ১৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার করা হয় ভোজ্যতেলের ওপর থেকে। এসব উদ্যোগের ফলে আমদানি থেকে রাজস্ব আহরণ কমছে। যদিও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবে জুলাই-আগস দুই মাসে আমদানি ব্যয় হয়েছে ১৩৩৫ কোটি মার্কিন ডলার। একই সময়ে রপ্তানি আয় হয়েছে ৮৫৮ কোটি ডলার।
স্থানীয় পর্যায়ে ভ্যাট আদায়ে ঘাটতি: করোনা-পরবর্তী অর্থনীতি কিছুটা ঘুরে দাঁড়ানোর পর ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে বড় ধরনের সংকটের মধ্যে পড়েছে দেশের অর্থনীতি। এছাড়া বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশেও মূল্যস্ফীতির হার ঊর্ধ্বমুখী। যে কারণে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতাও কমছে। এর প্রভাব পড়েছে অভ্যন্তরীণ ব্যবসা-বাণিজ্যের ওপর। যে কারণে অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে স্থানীয় পর্যায়ে ভ্যাট খাতে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ২৪ হাজার ৬৪২ কোটি টাকার বিপরীতে আদায় হয়েছে ২৩ হাজার ২১৬ কোটি টাকা। ওই হিসাবে আদায় কমছে ১ হাজার ৪২৬ কোটি টাকা। তবে আদায় কমলেও প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১০ দশমিক ০৬ শতাংশ।
আয়কর ও ভ্রমণ করে বিরূপ প্রভাব: চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে এ খাতে প্রবৃদ্ধি ১১ দশমিক ৫৫ শতাংশ হলেও লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় আয় কমেছে ১৪০৫ কোটি টাকা। ডলারের মূল্য অস্বাভাবিক বৃদ্ধিসহ বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটে পর্যটন খাতে বিরূপ প্রভাব পড়েছে। এছাড়া সরকারি চাকরিজীবীদের সব ধরনের বিদেশ ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া আছে। ফলে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রত্যাশা করা হয়েছিল আয়কর ও ভ্রমণ কর থেকে ২১ হাজার ৪৯৩ কোটি টাকা আদায় করা যাবে। কিন্তু আদায় হয়েছে ২০ হাজার ৮৭ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন: আগস্ট-সেপ্টেম্বরে মূল্যস্ম্ফীতি ছাড়িয়েছে ৯ শতাংশের ঘর
ঢাকা/এসএ