০১:১৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৮ মে ২০২৪

ব্যাংকে নারী কর্মী বাড়লো ৩.২২ শতাংশ

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০২:০৬:৫৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • / ৪১৭৯ বার দেখা হয়েছে

বছরের ব্যবধানে দেশের ব্যাংকিং খাতে নারী কর্মীর সংখ্যা বেড়েছে ৩ দশমিক ২২ শতাংশ বা এক হাজার ১৯ জন। দেশের ব্যাংকিং খাতে লৈঙ্গিক সমতার প্রতিবেদন প্রকাশ করে সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, প্রবেশ পর্যায়ে নারী কর্মীর অংশগ্রহণ বাড়ছে। তবে মধ্যম ও শীর্ষ পর্যায়ে সেই অনুপাতের ধারা বজায় রাখতে পারছে না।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশের ৬১টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের গত জুন শেষে ব্যাংকে জনবল রয়েছে ১ লাখ ৯৯ হাজার ৫০৬ জন। এর মধ্যে নারী কর্মীর সংখ্যা ৩২ হাজার ৫৬৭ জন। ২০২২ সালের একই সময় নারী কর্মীর সংখ্যা ছিল ৩১ হাজার ৫৪৮। ২০২১ সালের জুনে ছিল ২৯ হাজার ৭৭১ জন।

এক বছরের ব্যবধানে ব্যাংকিং খাতে মোট জনবল বেড়েছে ৫ হাজার ৭৬৪ জন বা ২ দশমিক ৯৭ শতাংশ। গত বছরের জুন শেষে ব্যাংকিং খাতে মোট জনবল ছিল এক লাখ ৯৩ হাজার ৭৪২ জন।

বর্তমানে ব্যাংকে নারী কর্মকর্তার হার ১৬ দশমিক ৩২ শতাংশ, ২০২২ সালের জুনে ছিল ১৬ দশমিক ২৮ শতাংশ, ২০২১ সালে ছিল ১৫ দশমিক ৮০ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, মোট নারী কর্মীর ৬৭ শতাংশই বেসরকারি খাতের ৪৩ ব্যাংকে। নীতি নির্ধারনী সিদ্ধান্ত ও ব্যাংক পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে পরিচালক পর্ষদ। সেখানে নারীর উপস্থিতি ১৪ দশমিক ০৫ শতাংশ।

অবশ্য এখানেও বিদেশি ব্যাংকের অবস্থান জোড়ালো। বেসরকারি ব্যাংকে পরিচালক পর্ষদে নারী উপস্থিতি ১৪ দশমিক ৭০ শতাংশ হলেও রাষ্ট্রীয় ব্যাংকে এখনো ৯ দশমিক ৪৩ শতাংশের ঘরে রয়েছে। সেখানে বিদেশি ব্যাংকে নারীর অনুপাত হার হচ্ছে ১৫ দশমিক ৮৭ শতাংশ।

আরও পড়ুন: দেশে কোটিপতির সংখ্যা এক লাখ ১৩ হাজার ছাড়িয়েছে

দেশের ব্যাংকিং খাতে প্রবেশ পর্যায়ে নারী কর্মীর যে সংখ্যা ও অনুপাত দেখা যায় সময়ের আলোকে পদোন্নতির পরবর্তী পর্যায়ে সেই হার কমতে শুরু করে। প্রবেশ পর্যায়ের পরবর্তী ধাপ মধ্যম পর্যায়ে তা কমতে শুরু করে। গত কয়েক বছরের পরিসংখ্যান তাই বলছে।

বর্তমানে বেসরকারি ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন হুমায়রা আজম। তিনি বর্তমানে একমাত্র নারী এমডি। মিডল্যান্ড ব্যাংকের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে রয়েছেন নিলুফার জাফরুল্লাহ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত জুন শেষে ব্যাংকগুলোতে ৩০ বছরের কম বয়সী যেসব কর্মী রয়েছেন তাদের মধ্যে ২১ দশমিক ৩৩ শতাংশ নারী। ৩০ থেকে ৫০ বছর বয়সী কর্মীদের মধ্যে নারীর হার ১৬ দশমিক ৩১ শতাংশ। আর ৫০ বছরের বেশি বয়সীদের মধ্যে এ হার ৯ দশমিক ২২ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ব্যাংকে যারা ক্যারিয়ার শুরু করছেন, তাদের মধ্যে ১৬ দশমিক ৯৯ শতাংশ নারী। ব্যবস্থাপনার মধ্যম স্তরে নারীদের অংশগ্রহণ ১৫ দশমিক ৭৭ শতাংশ। আর ব্যাংকের উচ্চপর্যায়ে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তাদের মধ্যে নারী রয়েছেন ৯ দশমিক ২৮ শতাংশ।

তথ্য বলছে, মোট নারীর কর্মীদের রাষ্ট্রীয় ব্যাংকে ২৪ দশমিক, বিশেষায়িত বাণিজ্যিক ব্যাংকে ৬ শতাংশ আর বিদেশি ব্যাংকে ৩ শতাংশ ।

আর ব্যাংক ভিত্তিক তথ্য অনুযায়ী, রাষ্ট্রীয় ব্যাংকে মোট জনবলের মধ্যে নারী কর্মী হচ্ছে ১৬ দশমিক ১৯ শতাংশ, বিশেষায়িত ব্যাংকে ১৪ দশমিক ৭৯ শতাংশ, বেসরকারি ব্যাংকে ১৬ দশমিক ২৭ শতাংশ ও বিদেশি ব্যাংকে ১৬ দশমিক ৩২ শতাংশ।

জাতিসংঘ কর্তৃক গ্রহীত টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা বা এসডিজি বাস্তবায়নের ১৭টি অভিষ্টের মধ্যে পঞ্চম হচ্ছে লৈঙ্গিক সমতা।

এই সমতার সূচকে ওয়ার্ল্ড ইকোনিক ফোরাম এর ২০২২ সালে দি গ্লোবাল জেন্ডার গ্যাপ রিপোর্ট অনুযায়ী বিশ্বের ১৪৬টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৭১তম।

রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, ক্ষেত্রে নেতৃত্ব ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন নিশ্চিতে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে লৈঙ্গিহ সমতা আবশ্যিক মনে করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

ব্যাংকিং খাতে নারীদের অন্তর্ভুক্তি বাড়াতে লৈঙ্গিক সমতা প্রতিষ্ঠায় ২০১১ সাল থেকে সার্কুলার জারি করে বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়ে আসছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এরমধ্যে রয়েছে কর্মক্ষেত্রে শিশু দিবা যত্নকেন্দ্র স্থাপন, মাতৃত্বকালীনকালীন ছয় মাসের ছুটি, ট্রান্স-জেন্ডারদের জন্য ব্যাংকের সিএসআর তহবিল থেকে ব্যয়।

ঢাকা/এসএ

শেয়ার করুন

x

ব্যাংকে নারী কর্মী বাড়লো ৩.২২ শতাংশ

আপডেট: ০২:০৬:৫৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩

বছরের ব্যবধানে দেশের ব্যাংকিং খাতে নারী কর্মীর সংখ্যা বেড়েছে ৩ দশমিক ২২ শতাংশ বা এক হাজার ১৯ জন। দেশের ব্যাংকিং খাতে লৈঙ্গিক সমতার প্রতিবেদন প্রকাশ করে সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, প্রবেশ পর্যায়ে নারী কর্মীর অংশগ্রহণ বাড়ছে। তবে মধ্যম ও শীর্ষ পর্যায়ে সেই অনুপাতের ধারা বজায় রাখতে পারছে না।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশের ৬১টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের গত জুন শেষে ব্যাংকে জনবল রয়েছে ১ লাখ ৯৯ হাজার ৫০৬ জন। এর মধ্যে নারী কর্মীর সংখ্যা ৩২ হাজার ৫৬৭ জন। ২০২২ সালের একই সময় নারী কর্মীর সংখ্যা ছিল ৩১ হাজার ৫৪৮। ২০২১ সালের জুনে ছিল ২৯ হাজার ৭৭১ জন।

এক বছরের ব্যবধানে ব্যাংকিং খাতে মোট জনবল বেড়েছে ৫ হাজার ৭৬৪ জন বা ২ দশমিক ৯৭ শতাংশ। গত বছরের জুন শেষে ব্যাংকিং খাতে মোট জনবল ছিল এক লাখ ৯৩ হাজার ৭৪২ জন।

বর্তমানে ব্যাংকে নারী কর্মকর্তার হার ১৬ দশমিক ৩২ শতাংশ, ২০২২ সালের জুনে ছিল ১৬ দশমিক ২৮ শতাংশ, ২০২১ সালে ছিল ১৫ দশমিক ৮০ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, মোট নারী কর্মীর ৬৭ শতাংশই বেসরকারি খাতের ৪৩ ব্যাংকে। নীতি নির্ধারনী সিদ্ধান্ত ও ব্যাংক পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে পরিচালক পর্ষদ। সেখানে নারীর উপস্থিতি ১৪ দশমিক ০৫ শতাংশ।

অবশ্য এখানেও বিদেশি ব্যাংকের অবস্থান জোড়ালো। বেসরকারি ব্যাংকে পরিচালক পর্ষদে নারী উপস্থিতি ১৪ দশমিক ৭০ শতাংশ হলেও রাষ্ট্রীয় ব্যাংকে এখনো ৯ দশমিক ৪৩ শতাংশের ঘরে রয়েছে। সেখানে বিদেশি ব্যাংকে নারীর অনুপাত হার হচ্ছে ১৫ দশমিক ৮৭ শতাংশ।

আরও পড়ুন: দেশে কোটিপতির সংখ্যা এক লাখ ১৩ হাজার ছাড়িয়েছে

দেশের ব্যাংকিং খাতে প্রবেশ পর্যায়ে নারী কর্মীর যে সংখ্যা ও অনুপাত দেখা যায় সময়ের আলোকে পদোন্নতির পরবর্তী পর্যায়ে সেই হার কমতে শুরু করে। প্রবেশ পর্যায়ের পরবর্তী ধাপ মধ্যম পর্যায়ে তা কমতে শুরু করে। গত কয়েক বছরের পরিসংখ্যান তাই বলছে।

বর্তমানে বেসরকারি ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন হুমায়রা আজম। তিনি বর্তমানে একমাত্র নারী এমডি। মিডল্যান্ড ব্যাংকের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে রয়েছেন নিলুফার জাফরুল্লাহ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত জুন শেষে ব্যাংকগুলোতে ৩০ বছরের কম বয়সী যেসব কর্মী রয়েছেন তাদের মধ্যে ২১ দশমিক ৩৩ শতাংশ নারী। ৩০ থেকে ৫০ বছর বয়সী কর্মীদের মধ্যে নারীর হার ১৬ দশমিক ৩১ শতাংশ। আর ৫০ বছরের বেশি বয়সীদের মধ্যে এ হার ৯ দশমিক ২২ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ব্যাংকে যারা ক্যারিয়ার শুরু করছেন, তাদের মধ্যে ১৬ দশমিক ৯৯ শতাংশ নারী। ব্যবস্থাপনার মধ্যম স্তরে নারীদের অংশগ্রহণ ১৫ দশমিক ৭৭ শতাংশ। আর ব্যাংকের উচ্চপর্যায়ে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তাদের মধ্যে নারী রয়েছেন ৯ দশমিক ২৮ শতাংশ।

তথ্য বলছে, মোট নারীর কর্মীদের রাষ্ট্রীয় ব্যাংকে ২৪ দশমিক, বিশেষায়িত বাণিজ্যিক ব্যাংকে ৬ শতাংশ আর বিদেশি ব্যাংকে ৩ শতাংশ ।

আর ব্যাংক ভিত্তিক তথ্য অনুযায়ী, রাষ্ট্রীয় ব্যাংকে মোট জনবলের মধ্যে নারী কর্মী হচ্ছে ১৬ দশমিক ১৯ শতাংশ, বিশেষায়িত ব্যাংকে ১৪ দশমিক ৭৯ শতাংশ, বেসরকারি ব্যাংকে ১৬ দশমিক ২৭ শতাংশ ও বিদেশি ব্যাংকে ১৬ দশমিক ৩২ শতাংশ।

জাতিসংঘ কর্তৃক গ্রহীত টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা বা এসডিজি বাস্তবায়নের ১৭টি অভিষ্টের মধ্যে পঞ্চম হচ্ছে লৈঙ্গিক সমতা।

এই সমতার সূচকে ওয়ার্ল্ড ইকোনিক ফোরাম এর ২০২২ সালে দি গ্লোবাল জেন্ডার গ্যাপ রিপোর্ট অনুযায়ী বিশ্বের ১৪৬টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৭১তম।

রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, ক্ষেত্রে নেতৃত্ব ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন নিশ্চিতে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে লৈঙ্গিহ সমতা আবশ্যিক মনে করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

ব্যাংকিং খাতে নারীদের অন্তর্ভুক্তি বাড়াতে লৈঙ্গিক সমতা প্রতিষ্ঠায় ২০১১ সাল থেকে সার্কুলার জারি করে বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়ে আসছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এরমধ্যে রয়েছে কর্মক্ষেত্রে শিশু দিবা যত্নকেন্দ্র স্থাপন, মাতৃত্বকালীনকালীন ছয় মাসের ছুটি, ট্রান্স-জেন্ডারদের জন্য ব্যাংকের সিএসআর তহবিল থেকে ব্যয়।

ঢাকা/এসএ