০৪:৩০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
১০টা ব্যাংক দেউলিয়া হওয়ার মতো খারাপ অবস্থায় রয়েছে: গভর্নর

ব্যাংক খাতে হ-য-ব-র-ল: ১০ ব্যাংকের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৮:২৮:২৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / ১৯০৪০ বার দেখা হয়েছে

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, আমরা আশা করি না কোনো ব্যাংক দেউলিয়া হোক, তবে কমপক্ষে ১০টা ব্যাংক দেউলিয়া হওয়ার মতো খারাপ অবস্থায় চলে গেছে। সরকার তাদের বাঁচানোর চেষ্টা করছে।

রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন গভর্নর।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

গভর্নর ১০ ব্যাংকের কথা বললেও সেগুলোর নাম উল্লেখ করেননি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে কোনো প্রতিষ্ঠানের হিসাব জব্দ করা হয়নি। সেটা এস আলমের হোক বা সালমান এফ রহমানের হোক। কোন প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়নি| আমানত বীমার পরিমাণ এক লাখ থেকে ২ লাখ টাকায় উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে প্রায় ৯৫ শতাংশ আমানতকারীর আমানত সম্পূর্ণরূপে নিরাপদ করা হয়েছে।

পৃথিবীর কোনো দেশেই ১০০ শতাংশ আমানতকারীর টাকার গ্যারান্টি দিতে পারে না। আমরাও পারব না। কোনো ব্যাংক দেউলিয়া হলে ছোট ছোট আমানতকারীরা সঙ্গে সঙ্গে টাকা ফেরত পাবেন। আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এরইধ্যে ব্যাংক খাতে সংস্কার শুরু হয়েছে। কিছু হলেও কাজ হচ্ছে। এই মুহূর্তে আমাদের প্রধান লক্ষ্য আমানতকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনা। তাই আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন গভর্নর।

ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দের বিষয়ে গভর্নর বলেন, এখন পর্যন্ত আমরা কোনো প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্ট জব্দ করিনি। সেটা এস আলমের হোক বা সালমান এফ রহমানের হোক। কোনো প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়নি। যাদের অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়েছে সবগুলো ব্যক্তি অ্যাকাউন্ট। আমরা কোনো ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে হাত দিতে চাই না। কর্মসংস্থান নষ্ট এবং উৎপাদন ব্যাহত হোক আমরা সেটা চাই না।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেন, আমরা আশা করি না কোনো ব্যাংক দেউলিয়া হোক, তবে কমপক্ষে ১০টা ব্যাংক দেউলিয়া হওয়ার মতো খারাপ অবস্থায় চলে গেছে। সরকার তাদের বাঁচানোর চেষ্টা করছে।

আরও পড়ুন: খেলাপি ঋণের ভারে ন্যুজ্ব তালিকাভুক্ত ৫ ব্যাংক

তিনি বলেন, এসএমই লোনের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে টাকা আছে। কিন্তু ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের দিতে পারছি না। শুধু তাই নয়, বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য বিনিয়োগ করতে যায়। কিন্তু কোনো একটা সমস্যার কারণে ব্যাংকের মাধ্যমে এ ঋণগুলো বিতরণ হচ্ছে না। আমরা ব্যাংকগুলোকে লিখিতভাবে এই সমস্যার কারণ এবং সমাধান জানাতে বলেছি। খুব শিগগিরই ক্ষুদ্রঋণের প্রবাহ ব্যাপকভাবে বাড়বে বলে আশাবাদী তিনি।

আগামী দশ দিনের মধ্যে টাস্কফোর্স তাদের কাজ শুরু করবে বলে নিশ্চিত করেছেন গভর্নর। তিনি বলেন টাস্কফোর্সের মাধ্যমে ব্যাংক খাতের সমস্যা নিরূপণ এবং আগের নীতিমালাগুলো রিভিউ করা হবে। যদি দেখা যায় যে, কোনো নীতিমালা শুধু গুটিকয়েক ব্যবসায়ের জন্য করা হয়েছে তাহলে সেটা বাতিল করা হবে। আর যদি প্রয়োজন হয় তাহলে সেটা থাকবে। ব্যাংক খাতের পরিবারতন্ত্র ভাঙা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

গভর্নর বলেন, এসএমই খাতে ঋণ দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন স্কিমে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা পড়ে আছে। ব্যাংকগুলো এসব অর্থ বিতরণ করতে পারছে না। আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে এসব অর্থ বিতরণের ব্যবস্থা করব। যাতে দেশে এসএমই খাত শক্তিশালী হয়।

আরও পড়ুন: সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘনে ৯ প্রতিষ্ঠানকে সতর্ক করেছে বিএসইসি

এস আলমের সম্পদ কিনতে হলে নিজ দায়িত্বে কিনতে হবে জানিয়ে গভর্নর বলেন, যারা ব্যাংক থেকে অর্থ আত্মসাৎ করেছে নামে-বেনামে ঋণ নিয়েছে আমরা তাদের দায় নির্ধারণ করছি। তাদের সম্পদ বিক্রি করে এই দায় মেটানো হবে। এখন কেউ যদি ওই সব সম্পদ ক্রয় করে তাহলে দায় তাদের।

ঢাকা/এসআর

 

শেয়ার করুন

১০টা ব্যাংক দেউলিয়া হওয়ার মতো খারাপ অবস্থায় রয়েছে: গভর্নর

ব্যাংক খাতে হ-য-ব-র-ল: ১০ ব্যাংকের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা

আপডেট: ০৮:২৮:২৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, আমরা আশা করি না কোনো ব্যাংক দেউলিয়া হোক, তবে কমপক্ষে ১০টা ব্যাংক দেউলিয়া হওয়ার মতো খারাপ অবস্থায় চলে গেছে। সরকার তাদের বাঁচানোর চেষ্টা করছে।

রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন গভর্নর।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

গভর্নর ১০ ব্যাংকের কথা বললেও সেগুলোর নাম উল্লেখ করেননি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে কোনো প্রতিষ্ঠানের হিসাব জব্দ করা হয়নি। সেটা এস আলমের হোক বা সালমান এফ রহমানের হোক। কোন প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়নি| আমানত বীমার পরিমাণ এক লাখ থেকে ২ লাখ টাকায় উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে প্রায় ৯৫ শতাংশ আমানতকারীর আমানত সম্পূর্ণরূপে নিরাপদ করা হয়েছে।

পৃথিবীর কোনো দেশেই ১০০ শতাংশ আমানতকারীর টাকার গ্যারান্টি দিতে পারে না। আমরাও পারব না। কোনো ব্যাংক দেউলিয়া হলে ছোট ছোট আমানতকারীরা সঙ্গে সঙ্গে টাকা ফেরত পাবেন। আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এরইধ্যে ব্যাংক খাতে সংস্কার শুরু হয়েছে। কিছু হলেও কাজ হচ্ছে। এই মুহূর্তে আমাদের প্রধান লক্ষ্য আমানতকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনা। তাই আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন গভর্নর।

ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দের বিষয়ে গভর্নর বলেন, এখন পর্যন্ত আমরা কোনো প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্ট জব্দ করিনি। সেটা এস আলমের হোক বা সালমান এফ রহমানের হোক। কোনো প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়নি। যাদের অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়েছে সবগুলো ব্যক্তি অ্যাকাউন্ট। আমরা কোনো ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে হাত দিতে চাই না। কর্মসংস্থান নষ্ট এবং উৎপাদন ব্যাহত হোক আমরা সেটা চাই না।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেন, আমরা আশা করি না কোনো ব্যাংক দেউলিয়া হোক, তবে কমপক্ষে ১০টা ব্যাংক দেউলিয়া হওয়ার মতো খারাপ অবস্থায় চলে গেছে। সরকার তাদের বাঁচানোর চেষ্টা করছে।

আরও পড়ুন: খেলাপি ঋণের ভারে ন্যুজ্ব তালিকাভুক্ত ৫ ব্যাংক

তিনি বলেন, এসএমই লোনের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে টাকা আছে। কিন্তু ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের দিতে পারছি না। শুধু তাই নয়, বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য বিনিয়োগ করতে যায়। কিন্তু কোনো একটা সমস্যার কারণে ব্যাংকের মাধ্যমে এ ঋণগুলো বিতরণ হচ্ছে না। আমরা ব্যাংকগুলোকে লিখিতভাবে এই সমস্যার কারণ এবং সমাধান জানাতে বলেছি। খুব শিগগিরই ক্ষুদ্রঋণের প্রবাহ ব্যাপকভাবে বাড়বে বলে আশাবাদী তিনি।

আগামী দশ দিনের মধ্যে টাস্কফোর্স তাদের কাজ শুরু করবে বলে নিশ্চিত করেছেন গভর্নর। তিনি বলেন টাস্কফোর্সের মাধ্যমে ব্যাংক খাতের সমস্যা নিরূপণ এবং আগের নীতিমালাগুলো রিভিউ করা হবে। যদি দেখা যায় যে, কোনো নীতিমালা শুধু গুটিকয়েক ব্যবসায়ের জন্য করা হয়েছে তাহলে সেটা বাতিল করা হবে। আর যদি প্রয়োজন হয় তাহলে সেটা থাকবে। ব্যাংক খাতের পরিবারতন্ত্র ভাঙা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

গভর্নর বলেন, এসএমই খাতে ঋণ দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন স্কিমে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা পড়ে আছে। ব্যাংকগুলো এসব অর্থ বিতরণ করতে পারছে না। আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে এসব অর্থ বিতরণের ব্যবস্থা করব। যাতে দেশে এসএমই খাত শক্তিশালী হয়।

আরও পড়ুন: সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘনে ৯ প্রতিষ্ঠানকে সতর্ক করেছে বিএসইসি

এস আলমের সম্পদ কিনতে হলে নিজ দায়িত্বে কিনতে হবে জানিয়ে গভর্নর বলেন, যারা ব্যাংক থেকে অর্থ আত্মসাৎ করেছে নামে-বেনামে ঋণ নিয়েছে আমরা তাদের দায় নির্ধারণ করছি। তাদের সম্পদ বিক্রি করে এই দায় মেটানো হবে। এখন কেউ যদি ওই সব সম্পদ ক্রয় করে তাহলে দায় তাদের।

ঢাকা/এসআর