ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণের পরিমাণ বাড়ছে
- আপডেট: ০৯:৩৮:৩৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৭ অক্টোবর ২০২২
- / ৪১৮৬ বার দেখা হয়েছে
বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: চলতি (২০২২-২৩) অর্থবছরের সেপ্টেম্বরে ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণের পরিমাণ বাড়ছে। যা চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসের উল্টো চিত্র। আগস্ট পর্যন্ত সরকার ব্যাংক খাত থেকে ঋণ না নিয়ে উল্টো পরিশোধ করেছে।সরকার হঠাৎ করে বেশি বেশি ঋণ নেওয়া শুরু করে। এক মাসে ব্যাংকিং খাত থেকে ১৫ হাজার কোটি টাকারও বেশি ঋণ নিতে হয়েছে সরকারকে।
অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুক–টুইটার–লিংকডইন–ইন্সটাগ্রাম–ইউটিউব
বাংলাদেশ ব্যাংকের সবশেষ তথ্য বলছে, ২৯ সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংক খাত থেকে নেওয়া সরকারের ঋণ স্থিতি দাঁড়ায় ২ লাখ ৮২ হাজার ৭১২ কোটি টাকায়। এক মাস আগে গত ৩০ আগস্ট এর পরিমাণ ছিল ২ লাখ ৬৭ হাজার ৫২ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক মাসে সরকার ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছে ১৫ হাজার ৬৫৯ কোটি টাকা।
হঠাৎ করে সরকারের ঋণ বাড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা অর্থনীতিবিদ এবি মির্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, সরকারের খরচ বেড়েছে। ব্যয়ের চেয়ে আয় কম হওয়ায় বাড়তি অর্থের চাহিদা মেটাতে এখন ব্যাংক থেকে ঋণ করছে। তবে সরকার তিন মাসে যে পরিমাণ ব্যাংক ঋণ নিয়েছে তা তাদের লক্ষ্যের চেয়ে বেশি নয়। তাই এ ঋণ নিয়ে তেমন শঙ্কার কারণ নেই।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, চলতি (২০২২-২৩) অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে ব্যাংক খাত থেকে ঋণ না নিয়ে উল্টো পরিশোধ করেছে সরকার। গত ৩০ আগস্ট পর্যন্ত দুই মাসে ব্যাংক থেকে সরকারের নিট ঋণ ৩ হাজার ১৩৪ কোটি টাকা কমে ২ লাখ ৬৭ হাজার ৫২ কোটি টাকায় নেমে আসে। গত অর্থবছরের শেষে স্থিতি ছিল ২ লাখ ৭০ হাজার ১৮৬ কোটি টাকা।
চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট ঘাটতি পূরণে ১ লাখ ৬ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকার ব্যাংক ঋণ নেবে বলে লক্ষ্য ঠিক করেছে সরকার। আগের অর্থবছরে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ঋণ নেয়ার লক্ষ্য ছিল ৭৬ হাজার ৪৫২ কোটি টাকা। অর্থাৎ এবার প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা বেশি ঋণ নেয়ার লক্ষ্য সরকারের।
এদিকে, চলতি অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র থেকেও ৩৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে সরকার।
জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ৭ হাজার ১৮ কোটি ৪৩ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে মূল টাকা ও মুনাফা পরিশোধ করা হয়েছে ৬ হাজার ৬২৫ কোটি ৩২ টাকা। সঞ্চয়পত্রের মূল টাকা ও মুনাফা পরিশোধের পর এ খাতে সরকারের নিট ঋণ দাঁড়িয়েছে ৩৯৩ কোটি ১১ লাখ টাকা।
খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্যয় সংকোচন নীতির কারণে অর্থবছরের শুরুর দিকে সরকারের অর্থের চাহিদা কম ছিল। এখন কিছু প্রকল্প চালু হয়েছে। এছাড়া রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্ব বাজারে খাদ্য ও জ্বালানির দাম বেড়েছে। ফলে সরকারের খাদ্য ও জ্বালানি আমদানিতে আগের চেয়ে বেশি অর্থ খরচ হচ্ছে। যে হারে খরচ বেড়েছে সেই হারে আয় না বাড়ায় ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে হচ্ছে।
আরও পড়ুন: দুই খাতে আইএমএফ থেকে ঋণ পাচ্ছে বাংলাদেশ