০৩:৫৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪

ভ্যাট রিটার্ন দেননি পৌনে দুই লাখ ব্যবসায়ী

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৩:১৩:৩৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ এপ্রিল ২০২১
  • / ৪১১০ বার দেখা হয়েছে

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদকঃ ভ্যাট নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের এক লাখ ৪৫ হাজারের বেশি ব্যবসায়ী এপ্রিল মাসের ভ্যাট রিটার্ন জমা দেননি। দেশে ভ্যাট নিবন্ধন নেওয়া মোট প্রতিষ্ঠান ২ লাখ ৫১ হাজার ৮২৯টি। অর্থাৎ ৫৭ দশমিক ৭২ শতাংশ ব্যবসায়ী রিটার্ন জমা দিতে পারেননি।

করোনার প্রকোপ রোধে চলমান সরকারি বিধিনিষেধের মধ্যে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে নির্দিষ্ট সময়ে রিটার্ন জমা দিতে পারেননি বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে জানা যায়, ভ্যাট নিবন্ধিত ২ লাখ ৫১ হাজার ৮২৯টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এপ্রিল মাসে রিটার্ন জমা দিয়েছে ১ লাখ ৬ হাজার ৪৬১টি প্রতিষ্ঠান। বাকি ১ লাখ ৪৫ হাজার ৩৬৮টি প্রতিষ্ঠান এখনও রিটার্ন জমা দেয়নি। অর্থাৎ ৫৭.৭২ শতাংশ ব্যবসায়ী রিটার্ন জমা দিতে পারেননি। অথচ মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে রিটার্ন দেওয়া বাধ্যতামূলক ছিল।

ভ্যাট রিটার্নের এসব তথ্য এনবিআরের পরিচালক (জনসংযোগ) সৈয়দ এ মু’মেন নিশ্চিত করেছেন। তিনি আরও বলেন, করদাতাদের সুবিধার কথা বিবেচনায় নিয়ে করোনা মহামারির মধ্যেও দেশের সব কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট দফতর খোলা। তারপরও কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে রিটার্ন দাখিল হয়নি। ভবিষ্যৎ করণীয় সম্পর্কে কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবেন।

অন্যদিকে সরকারের কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় সুদ ও জরিমানা ছাড়া রিটার্ন জমার সুযোগ দাবি করেছেন বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন।

এনবিআর সূত্র জানায়, ১২টি কমিশনারেটের মধ্যে সবচেয়ে কম রিটার্ন জমা পড়েছে ঢাকা দক্ষিণ ভ্যাট কমিশনারেটে। সেখানে ৬২ হাজার ২০০টি নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এপ্রিল মাসে মাত্র ৮ হাজার ৯০৪টি প্রতিষ্ঠান ভ্যাট রিটার্ন দিয়েছে। আর ঢাকা শহর ও আশপাশের জেলার নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের পাঁচ ভাগের চার ভাগই রিটার্ন জমা দিতে পারেনি। ভ্যাট রিটার্ন থেকে প্রতি মাসে ১০-১২ হাজার কোটি টাকা আসে। চলতি এপ্রিল মাসে তা কমে ৭ হাজার কোটি টাকায় নেমে এসেছে।

তবে অনলাইনে ভ্যাট রিটার্নে সফলতা দেখিয়েছে কুমিল্লা ও যশোর ভ্যাট অফিস। এই দুটি কমিশনারেটে অনলাইনে ভ্যাট রিটার্ন জমার হার ৯৫ শতাংশের বেশি।

এ বিষয়ে কুমিল্লা কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাটের কমিশনার মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন চৌধুরী বলেন, লকডাউনের মধ্যেও স্বল্প সংখ্যক জনবল নিয়ে গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করা হয়েছে। এ নিয়ে টানা আটবার অনলাইন ভ্যাট রিটার্ন জমায় প্রথম হলো কুমিল্লা ভ্যাট। দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ কর্মকর্তাদের পরিশ্রম ও সাফল্যের পিপাসা কুমিল্লা কমিশনারেটকে রাজস্ব প্রবৃদ্ধি ও রিটার্ন দাখিলে সাফল্য এনে দিয়েছে।

এর আগে গত ৮ এপ্রিল নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ভ্যাট রিটার্ন দাখিল করার জন্য ব্যবসায়ীদের অনুরোধ জানায় এনবিআর। প্রতিষ্ঠানটি থেকে জারি করা আদেশে বলা হয়, মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন ও বিধিমালা অনুসারে করদাতাদের মাস শেষ হওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে ভ্যাটি রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। অন্যথায় সুদ ও জরিমানা আরোপের বিধান রয়েছে। এ কারণে ব্যবসায়ীদের মাসিক ভ্যাট দাখিলপত্র দাখিলে সহায়তা করা ও দাখিলপত্র গ্রহণের সুবিধার্থে সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধকালে দেশের সব কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট দফতরসমূহ খোলা রাখা হয়েছে। করদাতাগণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে সংশ্লিষ্ট ভ্যাট দফতরে দাখিলপত্র পেশ করতে পারবেন। উক্ত সময়ে কর্মচারী-কর্মকর্তারা করোনা সংক্রান্ত সতর্কতা ও নিরাপত্তামূলক সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণ করে দাখিলপত্র গ্রহণ ও রাজস্ব আদায় করবেন।

নতুন ভ্যাট আইনে প্রতি মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে ভ্যাট রিটার্ন জমা দেওয়ার বিধান আছে। তা না হলে ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং নির্ধারিত ভ্যাটের টাকার ওপর ২ শতাংশ হারে সুদ আরোপ হয়।

ঢাকা/এসএ

শেয়ার করুন

x
English Version

ভ্যাট রিটার্ন দেননি পৌনে দুই লাখ ব্যবসায়ী

আপডেট: ০৩:১৩:৩৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ এপ্রিল ২০২১

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদকঃ ভ্যাট নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের এক লাখ ৪৫ হাজারের বেশি ব্যবসায়ী এপ্রিল মাসের ভ্যাট রিটার্ন জমা দেননি। দেশে ভ্যাট নিবন্ধন নেওয়া মোট প্রতিষ্ঠান ২ লাখ ৫১ হাজার ৮২৯টি। অর্থাৎ ৫৭ দশমিক ৭২ শতাংশ ব্যবসায়ী রিটার্ন জমা দিতে পারেননি।

করোনার প্রকোপ রোধে চলমান সরকারি বিধিনিষেধের মধ্যে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে নির্দিষ্ট সময়ে রিটার্ন জমা দিতে পারেননি বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে জানা যায়, ভ্যাট নিবন্ধিত ২ লাখ ৫১ হাজার ৮২৯টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এপ্রিল মাসে রিটার্ন জমা দিয়েছে ১ লাখ ৬ হাজার ৪৬১টি প্রতিষ্ঠান। বাকি ১ লাখ ৪৫ হাজার ৩৬৮টি প্রতিষ্ঠান এখনও রিটার্ন জমা দেয়নি। অর্থাৎ ৫৭.৭২ শতাংশ ব্যবসায়ী রিটার্ন জমা দিতে পারেননি। অথচ মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে রিটার্ন দেওয়া বাধ্যতামূলক ছিল।

ভ্যাট রিটার্নের এসব তথ্য এনবিআরের পরিচালক (জনসংযোগ) সৈয়দ এ মু’মেন নিশ্চিত করেছেন। তিনি আরও বলেন, করদাতাদের সুবিধার কথা বিবেচনায় নিয়ে করোনা মহামারির মধ্যেও দেশের সব কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট দফতর খোলা। তারপরও কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে রিটার্ন দাখিল হয়নি। ভবিষ্যৎ করণীয় সম্পর্কে কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবেন।

অন্যদিকে সরকারের কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় সুদ ও জরিমানা ছাড়া রিটার্ন জমার সুযোগ দাবি করেছেন বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন।

এনবিআর সূত্র জানায়, ১২টি কমিশনারেটের মধ্যে সবচেয়ে কম রিটার্ন জমা পড়েছে ঢাকা দক্ষিণ ভ্যাট কমিশনারেটে। সেখানে ৬২ হাজার ২০০টি নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এপ্রিল মাসে মাত্র ৮ হাজার ৯০৪টি প্রতিষ্ঠান ভ্যাট রিটার্ন দিয়েছে। আর ঢাকা শহর ও আশপাশের জেলার নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের পাঁচ ভাগের চার ভাগই রিটার্ন জমা দিতে পারেনি। ভ্যাট রিটার্ন থেকে প্রতি মাসে ১০-১২ হাজার কোটি টাকা আসে। চলতি এপ্রিল মাসে তা কমে ৭ হাজার কোটি টাকায় নেমে এসেছে।

তবে অনলাইনে ভ্যাট রিটার্নে সফলতা দেখিয়েছে কুমিল্লা ও যশোর ভ্যাট অফিস। এই দুটি কমিশনারেটে অনলাইনে ভ্যাট রিটার্ন জমার হার ৯৫ শতাংশের বেশি।

এ বিষয়ে কুমিল্লা কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাটের কমিশনার মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন চৌধুরী বলেন, লকডাউনের মধ্যেও স্বল্প সংখ্যক জনবল নিয়ে গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করা হয়েছে। এ নিয়ে টানা আটবার অনলাইন ভ্যাট রিটার্ন জমায় প্রথম হলো কুমিল্লা ভ্যাট। দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ কর্মকর্তাদের পরিশ্রম ও সাফল্যের পিপাসা কুমিল্লা কমিশনারেটকে রাজস্ব প্রবৃদ্ধি ও রিটার্ন দাখিলে সাফল্য এনে দিয়েছে।

এর আগে গত ৮ এপ্রিল নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ভ্যাট রিটার্ন দাখিল করার জন্য ব্যবসায়ীদের অনুরোধ জানায় এনবিআর। প্রতিষ্ঠানটি থেকে জারি করা আদেশে বলা হয়, মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন ও বিধিমালা অনুসারে করদাতাদের মাস শেষ হওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে ভ্যাটি রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। অন্যথায় সুদ ও জরিমানা আরোপের বিধান রয়েছে। এ কারণে ব্যবসায়ীদের মাসিক ভ্যাট দাখিলপত্র দাখিলে সহায়তা করা ও দাখিলপত্র গ্রহণের সুবিধার্থে সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধকালে দেশের সব কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট দফতরসমূহ খোলা রাখা হয়েছে। করদাতাগণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে সংশ্লিষ্ট ভ্যাট দফতরে দাখিলপত্র পেশ করতে পারবেন। উক্ত সময়ে কর্মচারী-কর্মকর্তারা করোনা সংক্রান্ত সতর্কতা ও নিরাপত্তামূলক সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণ করে দাখিলপত্র গ্রহণ ও রাজস্ব আদায় করবেন।

নতুন ভ্যাট আইনে প্রতি মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে ভ্যাট রিটার্ন জমা দেওয়ার বিধান আছে। তা না হলে ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং নির্ধারিত ভ্যাটের টাকার ওপর ২ শতাংশ হারে সুদ আরোপ হয়।

ঢাকা/এসএ