১২:৩৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

মিয়ানমারে জান্তার বিমান হামলায় নিহত ২৭

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৬:২৩:৩৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫
  • / ১০৩২৫ বার দেখা হয়েছে

মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলীয় মান্দালয় প্রদেশের একটি গ্রামে জান্তা বাহিনীর বিমান হামলায় কমপক্ষে ২৭ জন নিহত হয়েছেন। এই হামলায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৩০ জন। প্রতিরোধ যোদ্ধাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা ওই গ্রামে শনিবার সামরিক বাহিনীর হামলায় হতাহতের এই ঘটনা ঘটেছে বলে দেশটির স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে জানানো হয়েছে।

অর্থনীতি  শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুনফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে লড়াইরত মান্দালয় পিপলস ডিফেন্স ফোর্সের একজন মুখপাত্র বলেছেন, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রদেশ মান্দালয় থেকে প্রায় ৬৫ কিলোমিটার দূরের সিঙ্গু শহরের লেত প্যান হ্ল্যা গ্রামে শুক্রবার রাত ৩টার দিকে বিমান হামলা চালিয়েছে সামরিক জান্তা।

তবে এই হামলার বিষয়ে শনিবার মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর মন্তব্য জানা যায়নি বলে জানিয়েছে মার্কিন বার্তা সংস্থা এসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)। মিয়ানমারে ২০২১ সালে সেনাবাহিনীর অভ্যুত্থানে দেশটির গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চি নেতৃত্বাধীন বেসামরিক সরকারের পতন ঘটে। এরপর থেকে দেশজুড়ে জান্তা-বিরোধী ব্যাপক সশস্ত্র বিদ্রোহের শুরু হয়।

২০২৩ সালের অক্টোবরের শেষ দিক থেকে মিয়ানমারের বিভিন্ন প্রদেশে সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে সমন্বিত আক্রমণ শুরু করে মিয়ানমারের জান্তাবিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর জোট পিপলস ডেমোক্রেটিক ফোর্স (পিডিএফ)। পিডিএমভুক্ত তিন গোষ্ঠী ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি (এমএনডিএ), আরাকান আর্মি (এএ) এবং তা’আং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মির (টিএনএলএ) এই সংঘাতে নেতৃত্ব দিচ্ছে। এই তিন গোষ্ঠী একত্রে থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স নামেও পরিচিত।

আরও পড়ুন: হিজাববিহীন নারীদের ধরতে ইরানে ড্রোন ব্যবহার

এপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কয়েক দশক ধরে বৃহত্তর স্বায়ত্তশাসনের জন্য লড়াই করে আসা মিয়ানমারের সশস্ত্র গণতন্ত্রপন্থী পিপলস ডিফেন্স ফোর্স ও জাতিগত সংখ্যালঘু গেরিলা গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে বিমান হামলা বৃদ্ধি করেছে দেশটির সামরিক সরকার। এই দুই গোষ্ঠী বিভিন্ন সময়ে জান্তা সৈন্যদের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযান পরিচালনা করেছে। যদিও সামরিক বাহিনীর বিমান হামলা মোকাবিলা করার মতো কোনও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নেই প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোর।

গত বছরের জুলাইয়ে মিয়ানমারের জান্তাবিরোধী প্রধান গোষ্ঠীগুলোর সমর্থক মান্দালয় পিপলস ডিফেন্স ফোর্স (এমডিওয়াই-পিডিএফ) সিঙ্গু শহরটির দখল নেয়। শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে নিজেদের চ্যানেলে দেওয়া বিবৃতিতে গোষ্ঠীটি বলেছে, সিঙ্গু শহরের লেত প্যান হ্ল্যা গ্রামের জনাকীর্ণ একটি বাজারে হামলা জান্তার বিমান হামলায় ২৭ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ছয়জন শিশুও রয়েছে।

এমডিওয়াই-পিডিএফের মুখপাত্র ওসমন্ড এপিকে বলেছেন, বিমান থেকে ছোড়া বোমার আঘাতে বাজারের পার্শ্ববর্তী অন্তত ১০টি বাড়ি ধ্বংস হয়েছে। তিনি বলেছেন, এই বিমান হামলা কোনও সামরিক স্থাপনা নয়, বরং বাজারের বেসামরিক লোকজনকে লক্ষ্য করে চালানো হয়েছে।

গত মাসে মিয়ানমারের স্থানীয় গবেষণা সংস্থা ন্যান লিন থিট অ্যানালিটিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মিয়ানমারে ২০২১ সালে ক্ষমতা নেওয়ার পর থেকে সেনাবাহিনীর হামলায় এখন পর্যন্ত ২ হাজার ২২৪ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। এই সময়ে চার হাজার ১৫৭ বার বিমান হামলা চালিয়েছে জান্তা বাহিনী। এতে আহত হয়েছেন আরও ৩ হাজার ৪৬৬ জন।

সূত্র: এপি, মিয়ানমার নাউ।

ঢাকা/এসএইচ

শেয়ার করুন

error: Content is protected ! Please Don't Try!

মিয়ানমারে জান্তার বিমান হামলায় নিহত ২৭

আপডেট: ০৬:২৩:৩৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫

মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলীয় মান্দালয় প্রদেশের একটি গ্রামে জান্তা বাহিনীর বিমান হামলায় কমপক্ষে ২৭ জন নিহত হয়েছেন। এই হামলায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৩০ জন। প্রতিরোধ যোদ্ধাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা ওই গ্রামে শনিবার সামরিক বাহিনীর হামলায় হতাহতের এই ঘটনা ঘটেছে বলে দেশটির স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে জানানো হয়েছে।

অর্থনীতি  শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুনফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে লড়াইরত মান্দালয় পিপলস ডিফেন্স ফোর্সের একজন মুখপাত্র বলেছেন, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রদেশ মান্দালয় থেকে প্রায় ৬৫ কিলোমিটার দূরের সিঙ্গু শহরের লেত প্যান হ্ল্যা গ্রামে শুক্রবার রাত ৩টার দিকে বিমান হামলা চালিয়েছে সামরিক জান্তা।

তবে এই হামলার বিষয়ে শনিবার মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর মন্তব্য জানা যায়নি বলে জানিয়েছে মার্কিন বার্তা সংস্থা এসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)। মিয়ানমারে ২০২১ সালে সেনাবাহিনীর অভ্যুত্থানে দেশটির গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চি নেতৃত্বাধীন বেসামরিক সরকারের পতন ঘটে। এরপর থেকে দেশজুড়ে জান্তা-বিরোধী ব্যাপক সশস্ত্র বিদ্রোহের শুরু হয়।

২০২৩ সালের অক্টোবরের শেষ দিক থেকে মিয়ানমারের বিভিন্ন প্রদেশে সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে সমন্বিত আক্রমণ শুরু করে মিয়ানমারের জান্তাবিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর জোট পিপলস ডেমোক্রেটিক ফোর্স (পিডিএফ)। পিডিএমভুক্ত তিন গোষ্ঠী ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি (এমএনডিএ), আরাকান আর্মি (এএ) এবং তা’আং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মির (টিএনএলএ) এই সংঘাতে নেতৃত্ব দিচ্ছে। এই তিন গোষ্ঠী একত্রে থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স নামেও পরিচিত।

আরও পড়ুন: হিজাববিহীন নারীদের ধরতে ইরানে ড্রোন ব্যবহার

এপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কয়েক দশক ধরে বৃহত্তর স্বায়ত্তশাসনের জন্য লড়াই করে আসা মিয়ানমারের সশস্ত্র গণতন্ত্রপন্থী পিপলস ডিফেন্স ফোর্স ও জাতিগত সংখ্যালঘু গেরিলা গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে বিমান হামলা বৃদ্ধি করেছে দেশটির সামরিক সরকার। এই দুই গোষ্ঠী বিভিন্ন সময়ে জান্তা সৈন্যদের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযান পরিচালনা করেছে। যদিও সামরিক বাহিনীর বিমান হামলা মোকাবিলা করার মতো কোনও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নেই প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোর।

গত বছরের জুলাইয়ে মিয়ানমারের জান্তাবিরোধী প্রধান গোষ্ঠীগুলোর সমর্থক মান্দালয় পিপলস ডিফেন্স ফোর্স (এমডিওয়াই-পিডিএফ) সিঙ্গু শহরটির দখল নেয়। শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে নিজেদের চ্যানেলে দেওয়া বিবৃতিতে গোষ্ঠীটি বলেছে, সিঙ্গু শহরের লেত প্যান হ্ল্যা গ্রামের জনাকীর্ণ একটি বাজারে হামলা জান্তার বিমান হামলায় ২৭ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ছয়জন শিশুও রয়েছে।

এমডিওয়াই-পিডিএফের মুখপাত্র ওসমন্ড এপিকে বলেছেন, বিমান থেকে ছোড়া বোমার আঘাতে বাজারের পার্শ্ববর্তী অন্তত ১০টি বাড়ি ধ্বংস হয়েছে। তিনি বলেছেন, এই বিমান হামলা কোনও সামরিক স্থাপনা নয়, বরং বাজারের বেসামরিক লোকজনকে লক্ষ্য করে চালানো হয়েছে।

গত মাসে মিয়ানমারের স্থানীয় গবেষণা সংস্থা ন্যান লিন থিট অ্যানালিটিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মিয়ানমারে ২০২১ সালে ক্ষমতা নেওয়ার পর থেকে সেনাবাহিনীর হামলায় এখন পর্যন্ত ২ হাজার ২২৪ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। এই সময়ে চার হাজার ১৫৭ বার বিমান হামলা চালিয়েছে জান্তা বাহিনী। এতে আহত হয়েছেন আরও ৩ হাজার ৪৬৬ জন।

সূত্র: এপি, মিয়ানমার নাউ।

ঢাকা/এসএইচ