০৮:৫২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪

মুদ্রার বাজারভিত্তিক বিনিময় হার চালুর সম্ভাবনা নেই: গভর্নর

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৫:১৫:৪৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৩
  • / ৪১৭৯ বার দেখা হয়েছে

মুদ্রার ভাসমান বিনিময় হার চালুর সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর। যদিও অনেক অর্থনীতিবিদ দীর্ঘদিন ধরে দেশের চলমান অর্থনৈতিক সংকট কাটাতে মুদ্রার বাজারভিত্তিক দাম নির্ধারণের পরামর্শ দিচ্ছেন।

শনিবার (৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে তিন দিনের ‘বার্ষিক বিআইডিএস কনফারেন্স অন ডেভেলপমেন্ট’র শেষ দিনে ‘বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ অনিশ্চয়তার প্রেক্ষাপটে নীতিগত চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক অধিবেশনে তিনি এ কথা বলেন।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

‘মুদ্রার ভাসমান বিনিময় হার চালুর সম্ভাবনা নেই,’ উল্লেখ করে গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে কথা বলা অর্থনীতিবিদদের অধিকাংশই অবাধে মুদ্রার ভাসমান বিনিময় হার না করার পরামর্শ দিয়েছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘মুদ্রার বিনিময় হার আরও বাজারভিত্তিক হবে। একটি ব্যান্ডের মাধ্যমে মুদ্রার দাম কম-বেশি করার অনুমতি দেওয়া হবে, যাতে এর বিনিময় হার প্রকৃত বিনিময় হারের কাছাকাছি থাকে।’

গভর্নর জানান, খেলাপি ঋণ (এনপিএল) কমাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক রোডম্যাপ তৈরি করেছে। এটি শিগগির বাস্তবায়িত হবে।

গভর্নরের মতে, মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতি, মুদ্রার বিনিময় হারে অস্থিরতা ও উচ্চহারে খেলাপি ঋণ দেশের অর্থনীতির তিন প্রধান প্রতিবন্ধকতা।

আব্দুর রউফ তালুকদার আরও জানান, তিনি অনেক স্বনামধন্য অর্থনীতিবিদদের সঙ্গে দেশের চলমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন। এটি তাকে সমস্যাগুলো শনাক্ত করতে ও এসবের সমাধান খুঁজে পেতে সহায়তা করেছে।

এসব সমস্যা সমাধানে রাজনৈতিক অঙ্গীকার নিশ্চিত করতে অর্থনীতিবিদদের আহ্বানের জবাবে গভর্নর জানান যে, এ ক্ষেত্রে বর্তমান সরকার সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ও আইএমএফ’র সাবেক কর্মকর্তা আহসান এইচ মনসুর দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও নির্ধারিত বিনিময় ও সুদের হারকে স্বল্পমেয়াদি এবং কম রাজস্ব আদায়কে মাঝারি মেয়াদি সমস্যা হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।

তার মতে, ‘বাংলাদেশকে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করতে কর-জিডিপি অনুপাত যথেষ্ট নয়।’

‘পুঁজিবাজার, বন্ড ও বিমাসহ আর্থিক খাত নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে,’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সব সূচকই ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, আর্থিক খাত নিম্নমুখী।’

এই অর্থনীতিবিদ আরও বলেন, ‘নির্বাচনের পর রাজনৈতিক নেতাদের উচিত সংস্কার কর্মসূচি নিয়ে এগিয়ে যাওয়া। তারা যদি মনে করেন যে কোনকিছু না করেই অর্থনীতি ঠিক করা যাবে, তাহলে আগামী দুই-তিন বছরের মধ্যে তা ভেঙে পড়ার আশঙ্কা দেখা দেবে।’

বাংলাদেশ বর্তমানে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। আহসান এইচ মনসুর এই কর্মসূচিকে সময়োপযোগী বলে অভিহিত করেছেন।

তিনি মনে করেন, ‘দেশের টাকার প্রয়োজন নেই। বরং আইএমএফ যে নীতিগত সংস্কারের কথা বলেছে, তা প্রয়োজন। দেশের উচিত নিজের স্বার্থে অর্থনীতির সংস্কার করা।’

গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, ‘ক্রমবর্ধমান কৃষি উৎপাদন, পোশাক খাত ও রেমিট্যান্স প্রবাহ অর্থনীতিকে সচল রাখে এবং এগুলো সঠিক পথে আছে।’

তার মতে, দেশে কৃষি ও শিল্প উৎপাদনের প্রবৃদ্ধি ভালো এবং তৈরি পোশাক রপ্তানি ও রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ছে।

তিনি আরও বলেন, উচ্চহারের মূল্যস্ফীতির পেছনে অর্থনৈতিক ও অর্থনীতির বাইরের কিছু কারণ আছে।

‘কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইতোমধ্যে বিমার হার বাড়িয়েছে’ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন ৭০০ থেকে ৮০০ কোটি টাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে আসছে।’

‘মূল্যস্ফীতিতে এর প্রভাব পড়ায় মূল্যস্ফীতি কমতে শুরু করেছে,’ জানিয়ে গভর্নর আশা করেন, চলতি ডিসেম্বরে মূল্যস্ফীতি আট শতাংশে নেমে আসতে পারে।

তিনি আরও বলেন, ‘আশা করা যায়, আগামী জুনের শেষ নাগাদ পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতি ছয় শতাংশে নেমে আসবে।’

আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, ‘বাজেট ঘাটতি কম, জিডিপিতে ঋণের অনুপাত কম ও জিডিপিতে বৈদেশিক ঋণের অনুপাতও নির্ধারিত সীমার তুলনায় কম।’

আরও পড়ুন: টেকসই পুঁজিবাজার বিনির্মাণে নিরন্তরকাজ করে যাচ্ছে ডিএসই: এটিএম তারিকুজ্জামান

তিনি বলেন, ‘চলতি হিসাব ঘাটতি থেকে উদ্বৃত্তে পৌঁছেছে। তবে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ কমে যাওয়া ও বিদেশ থেকে স্বল্পমেয়াদি ঋণ নেওয়ার কারণে আর্থিক হিসাবের সমস্যা রয়ে গেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এগুলো সমাধানের চেষ্টা করছে।’

কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন আর্থিক খাতের সংস্কারে শক্তিশালী রাজনৈতিক অঙ্গীকার দেখছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘এর ফলে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত আইন সংশোধন এবং অভ্যাসগত খেলাপি ঋণ সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে যা খেলাপি ঋণ কমাতে সহায়তা করবে।’

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) চেয়ারম্যান জায়েদি সাত্তার বলেন, ‘দেশ থেকে তৈরি পোশাক ছাড়া এক হাজার ৬০৯টিরও বেশি পণ্য রপ্তানি হচ্ছে। সরকারের উচিত তাদের জন্য সহায়ক নীতিমালা প্রণয়ন করা।’

তিনি বলেন, ‘কোনো লক্ষ্য ছাড়াই বছরের পর বছর সুরক্ষা দেওয়া হলে স্থানীয় শিল্পগুলো প্রতিযোগিতামূলক হবে না এবং রপ্তানি বহুমুখীকরণ শুধু কাগজে-কলমেই থেকে যাবে।’

সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান বলেন, ‘খেলাপি ঋণ কমানোর জন্য কোনো আইনি উদ্যোগ দেখা যায়নি। এটি এই খাতকে ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। আমরা খেলাপি ঋণ কমাতে জোরালো রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও রোডম্যাপ দেখতে চাই।’

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, ‘দেশীয় শিল্পের প্রসারে সরকার সব পণ্য আমদানির অনুমতি দিতে পারে না।’

তিনি জানান, পণ্যের ঘাটতি দেখা দিলে মজুদদাররা কম সময়ে বেশি টাকা আয়ের চেষ্টা করেন।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর সাবেক অর্থনৈতিকবিষয়ক উপদেষ্টা মশিউর রহমান, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার অব ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চের ইমেরিটাস অধ্যাপক আইনুন নিশাত, ঢাকা ট্রিবিউনের সম্পাদক জাফর সোবহান, বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ হাবিবুর রহমান ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শরিফা খান বক্তব্য রাখেন।

ঢাকা/এসএ

শেয়ার করুন

x
English Version

মুদ্রার বাজারভিত্তিক বিনিময় হার চালুর সম্ভাবনা নেই: গভর্নর

আপডেট: ০৫:১৫:৪৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৩

মুদ্রার ভাসমান বিনিময় হার চালুর সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর। যদিও অনেক অর্থনীতিবিদ দীর্ঘদিন ধরে দেশের চলমান অর্থনৈতিক সংকট কাটাতে মুদ্রার বাজারভিত্তিক দাম নির্ধারণের পরামর্শ দিচ্ছেন।

শনিবার (৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে তিন দিনের ‘বার্ষিক বিআইডিএস কনফারেন্স অন ডেভেলপমেন্ট’র শেষ দিনে ‘বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ অনিশ্চয়তার প্রেক্ষাপটে নীতিগত চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক অধিবেশনে তিনি এ কথা বলেন।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

‘মুদ্রার ভাসমান বিনিময় হার চালুর সম্ভাবনা নেই,’ উল্লেখ করে গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে কথা বলা অর্থনীতিবিদদের অধিকাংশই অবাধে মুদ্রার ভাসমান বিনিময় হার না করার পরামর্শ দিয়েছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘মুদ্রার বিনিময় হার আরও বাজারভিত্তিক হবে। একটি ব্যান্ডের মাধ্যমে মুদ্রার দাম কম-বেশি করার অনুমতি দেওয়া হবে, যাতে এর বিনিময় হার প্রকৃত বিনিময় হারের কাছাকাছি থাকে।’

গভর্নর জানান, খেলাপি ঋণ (এনপিএল) কমাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক রোডম্যাপ তৈরি করেছে। এটি শিগগির বাস্তবায়িত হবে।

গভর্নরের মতে, মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতি, মুদ্রার বিনিময় হারে অস্থিরতা ও উচ্চহারে খেলাপি ঋণ দেশের অর্থনীতির তিন প্রধান প্রতিবন্ধকতা।

আব্দুর রউফ তালুকদার আরও জানান, তিনি অনেক স্বনামধন্য অর্থনীতিবিদদের সঙ্গে দেশের চলমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন। এটি তাকে সমস্যাগুলো শনাক্ত করতে ও এসবের সমাধান খুঁজে পেতে সহায়তা করেছে।

এসব সমস্যা সমাধানে রাজনৈতিক অঙ্গীকার নিশ্চিত করতে অর্থনীতিবিদদের আহ্বানের জবাবে গভর্নর জানান যে, এ ক্ষেত্রে বর্তমান সরকার সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ও আইএমএফ’র সাবেক কর্মকর্তা আহসান এইচ মনসুর দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও নির্ধারিত বিনিময় ও সুদের হারকে স্বল্পমেয়াদি এবং কম রাজস্ব আদায়কে মাঝারি মেয়াদি সমস্যা হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।

তার মতে, ‘বাংলাদেশকে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করতে কর-জিডিপি অনুপাত যথেষ্ট নয়।’

‘পুঁজিবাজার, বন্ড ও বিমাসহ আর্থিক খাত নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে,’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সব সূচকই ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, আর্থিক খাত নিম্নমুখী।’

এই অর্থনীতিবিদ আরও বলেন, ‘নির্বাচনের পর রাজনৈতিক নেতাদের উচিত সংস্কার কর্মসূচি নিয়ে এগিয়ে যাওয়া। তারা যদি মনে করেন যে কোনকিছু না করেই অর্থনীতি ঠিক করা যাবে, তাহলে আগামী দুই-তিন বছরের মধ্যে তা ভেঙে পড়ার আশঙ্কা দেখা দেবে।’

বাংলাদেশ বর্তমানে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। আহসান এইচ মনসুর এই কর্মসূচিকে সময়োপযোগী বলে অভিহিত করেছেন।

তিনি মনে করেন, ‘দেশের টাকার প্রয়োজন নেই। বরং আইএমএফ যে নীতিগত সংস্কারের কথা বলেছে, তা প্রয়োজন। দেশের উচিত নিজের স্বার্থে অর্থনীতির সংস্কার করা।’

গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, ‘ক্রমবর্ধমান কৃষি উৎপাদন, পোশাক খাত ও রেমিট্যান্স প্রবাহ অর্থনীতিকে সচল রাখে এবং এগুলো সঠিক পথে আছে।’

তার মতে, দেশে কৃষি ও শিল্প উৎপাদনের প্রবৃদ্ধি ভালো এবং তৈরি পোশাক রপ্তানি ও রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ছে।

তিনি আরও বলেন, উচ্চহারের মূল্যস্ফীতির পেছনে অর্থনৈতিক ও অর্থনীতির বাইরের কিছু কারণ আছে।

‘কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইতোমধ্যে বিমার হার বাড়িয়েছে’ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন ৭০০ থেকে ৮০০ কোটি টাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে আসছে।’

‘মূল্যস্ফীতিতে এর প্রভাব পড়ায় মূল্যস্ফীতি কমতে শুরু করেছে,’ জানিয়ে গভর্নর আশা করেন, চলতি ডিসেম্বরে মূল্যস্ফীতি আট শতাংশে নেমে আসতে পারে।

তিনি আরও বলেন, ‘আশা করা যায়, আগামী জুনের শেষ নাগাদ পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতি ছয় শতাংশে নেমে আসবে।’

আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, ‘বাজেট ঘাটতি কম, জিডিপিতে ঋণের অনুপাত কম ও জিডিপিতে বৈদেশিক ঋণের অনুপাতও নির্ধারিত সীমার তুলনায় কম।’

আরও পড়ুন: টেকসই পুঁজিবাজার বিনির্মাণে নিরন্তরকাজ করে যাচ্ছে ডিএসই: এটিএম তারিকুজ্জামান

তিনি বলেন, ‘চলতি হিসাব ঘাটতি থেকে উদ্বৃত্তে পৌঁছেছে। তবে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ কমে যাওয়া ও বিদেশ থেকে স্বল্পমেয়াদি ঋণ নেওয়ার কারণে আর্থিক হিসাবের সমস্যা রয়ে গেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এগুলো সমাধানের চেষ্টা করছে।’

কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন আর্থিক খাতের সংস্কারে শক্তিশালী রাজনৈতিক অঙ্গীকার দেখছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘এর ফলে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত আইন সংশোধন এবং অভ্যাসগত খেলাপি ঋণ সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে যা খেলাপি ঋণ কমাতে সহায়তা করবে।’

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) চেয়ারম্যান জায়েদি সাত্তার বলেন, ‘দেশ থেকে তৈরি পোশাক ছাড়া এক হাজার ৬০৯টিরও বেশি পণ্য রপ্তানি হচ্ছে। সরকারের উচিত তাদের জন্য সহায়ক নীতিমালা প্রণয়ন করা।’

তিনি বলেন, ‘কোনো লক্ষ্য ছাড়াই বছরের পর বছর সুরক্ষা দেওয়া হলে স্থানীয় শিল্পগুলো প্রতিযোগিতামূলক হবে না এবং রপ্তানি বহুমুখীকরণ শুধু কাগজে-কলমেই থেকে যাবে।’

সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান বলেন, ‘খেলাপি ঋণ কমানোর জন্য কোনো আইনি উদ্যোগ দেখা যায়নি। এটি এই খাতকে ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। আমরা খেলাপি ঋণ কমাতে জোরালো রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও রোডম্যাপ দেখতে চাই।’

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, ‘দেশীয় শিল্পের প্রসারে সরকার সব পণ্য আমদানির অনুমতি দিতে পারে না।’

তিনি জানান, পণ্যের ঘাটতি দেখা দিলে মজুদদাররা কম সময়ে বেশি টাকা আয়ের চেষ্টা করেন।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর সাবেক অর্থনৈতিকবিষয়ক উপদেষ্টা মশিউর রহমান, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার অব ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চের ইমেরিটাস অধ্যাপক আইনুন নিশাত, ঢাকা ট্রিবিউনের সম্পাদক জাফর সোবহান, বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ হাবিবুর রহমান ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শরিফা খান বক্তব্য রাখেন।

ঢাকা/এসএ