০৩:২৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

রবির আইপিও বিজয়ীদের পিছু টান!

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৪:৪৮:১১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২০
  • / ৪৬৮৫ বার দেখা হয়েছে

আগের দুই কার্যদিবসের মতো সোমবারও (২৮ ডিসেম্বর) পুঁজিবাজারে সদ্য লেনদেনে আসা বহুজাতিক কোম্পানি রবি দর বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করেছে। কিন্তু তৃতীয় দিন দর বৃদ্ধির সর্বোচ্চ সীমায় উঠার পরও দ্বিতীয় দিনের তুলনায় কোম্পানিটির লেনদেন কমেছে। ঢাকা স্টক এক্সচে্জে (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে অর্থ উত্তোলন করা রবির শেয়ার গত বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) থেকে পুঁজিবাজারে লেনদেন শুরু হয়। প্রথমদিন লেনদেনের শুরুতে ১৪ টাকা দরে কোম্পানিটির ২ লাখ ৬১ হাজার ১৭০টি শেয়ার কেনার প্রস্তাব আসে। তবে কেউ এ দরে বিক্রি করতে রাজি হননি। এরপর কয়েক দফা দর বেড়ে সর্বশেষ ১৫ টাকা করে ১৭ কোটি ৫২ লাখ ১৬ হাজার ৬৬২টি শেয়ার কেনার প্রস্তাব আসে। এতেই দর বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করে। তবে এরপরও কোনো বিনিয়োগকারী তাদের কাছে থাকা কোম্পানিটির শেয়ার বিক্রি করতে রাজি হননি। ফলে ক্রেতা থাকলেও শেয়ারের বিক্রি শূন্য হয়ে পড়ে।

দ্বিতীয় কার্যদিবস রোববার লেনদেনের শুরুতে ২১.৬০ টাকা করে ১০ হাজার শেয়ার কেনার প্রস্তাব আসে। তবে এ দরে বিনিয়োগকারীরা কোম্পানিটির শেয়ার বিক্রি করতে চায়নি। এরপর কয়েক দফা দর বেড়ে ২২.৫০ টাকা করে ৬ কোটি ৪৩ লাখ ৯৩ হাজার ২৪৩টি শেয়ার কেনার প্রস্তাব আসে। এর মধ্যে দর বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করে কোম্পানিটি। দ্বিতীয় দিন কোম্পানিটির সার্কিট ব্রেকারের সর্বোচ্চ সীমায় লেনদেন হয় ৪৯ লাখ ৩৭ হাজার ৮৫১টি শেয়ার।

নিয়ন্ত্রক সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী, আইপিও শেয়ার প্রথম দুই কার্যদিবসে সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ হারে বাড়তে পারবে। ২২.৫০ টাকা ওঠার মাধ্যমে রোববার রবির শেয়ার দর দ্বিতীয় দফায় ৫০ শতাংশ বেড়ে যায়। আর সোমবার লেনদেনের শুরুতে ২৩.১০ টাকা করে ৭ হাজার শেয়ার কেনার প্রস্তাব আসে। তবে এ দরে বিনিয়োগকারীরা কোম্পানিটির শেয়ার বিক্রি করতে রাজি হননি। এরপর কয়েক দফা দর বেড়ে ২৪.৭০ টাকা করে ৭ কোটি ১১ লাখ ৬ হাজার ৮২১টি শেয়ার কেনার প্রস্তাব আসে। এর মধ্যে দর বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করে কোম্পানিটি। সর্বোচ্চ সীমায় আজ কোম্পানিটির ২০ লাখ ৪২ হাজার ১৪৭টি শেয়ার লেনদেন হয়। আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর প্রায় ৯.৭৮ শতাংশ বাড়ার পরও আগের দিনের তুলনায় এর লেনদেন কমে গেছে ২৮ লাখ ৯৫ হাজার ৭০৪টি বা ৫৮.৬৪ শতাংশ।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দ্বিতীয় দিন ৫০ শতাংশ দর বৃদ্ধি পাওয়ার পর কোম্পানিটির শেয়ারে ভালো সেল প্রেসার ছিল। কিন্তু আজ ৯.৭৮ শতাংশ দর বৃদ্ধির পরও সেল প্রেসার কমে গেছে। তিনদিনে কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ১৪.৭০ টাকা বা ১৪৭ শতাংশ। তারপরও আইপিও বিজয়ীরা শেয়ারটি বিক্রি করতে চাচ্ছেন না। হঠাৎ করে তারা শেয়ারটি বিক্রিতে পিছু টান দিয়েছেন। শেয়ারটি থেকে তারা আরও মুনাফা তুলতে চান বলেই এর লেনদেনে ভাটা পড়েছে।

কোম্পানিটি নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ এবং আইপিও খরচের জন্য অভিহিত মূল্যে শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে ৫২৩ কোটি ৭৯ লাখ ৩৩ হাজার ৩৪০ টাকা সংগ্রহের অনুমোদন দেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা। বিএসইসি থেকে অনুমোদন নিয়ে রবি আজিয়াটার আইপিওতে আবেদন গ্রহণ শুরু হয় ১৭ নভেম্বর। যা চলে ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত। এ টাকা তোলার জন্য কোম্পানিটি ৫২ কোটি ৩৭ লাখ ৯৩ হাজার ৩৩৪টি সাধারণ শেয়ার আইপিওতে ইস্যু করে। এর মধ্যে ১৩ কোটি ৬০ লাখ ৫০ হাজার ৯৩৪টি শেয়ার কোম্পানির কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে ইস্যু করা হয়েছে।

কোম্পানি সূত্রে জানা গেছে, যোগ্য ও সাধারণ বিনিয়োগকারীরা মিলে রবি আইপিওতে ২২২৭ কোটি টাকার আবেদন জমা দেয়। এর মধ্যে যোগ্য বিনিয়োগকারী প্রায় ১৫৮৭ কোটি টাকার ও সাধারণ বিনিয়োগকারীর ৬৪০ কোটি টাকার আবেদন করেন।

এর মধ্যে ১২ লাখ ৮০ হাজার সাধারণ বিনিয়োগকারী রবি আজিয়াটা লিমিটেডের আইপিওতে শেয়ারের জন্য ২৩ কোটি ২০ লাখ শেয়ার বা ২৩২ কোটি টাকার বিপরীতে ৬৪০ কোটি টাকার আবেদন করেন।

অপরদিকে যোগ্য বিনিয়োগকারীরা তাদের জন্য বরাদ্দ রাখা ১৫৮ কোটি ৬৪ লাখ টাকার শেয়ারের বিপরীতে ১৫৮৬ কোটি ৮৬ লাখ টাকার আবেদন করেন।

শেয়ার করুন

x
English Version

রবির আইপিও বিজয়ীদের পিছু টান!

আপডেট: ০৪:৪৮:১১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২০

আগের দুই কার্যদিবসের মতো সোমবারও (২৮ ডিসেম্বর) পুঁজিবাজারে সদ্য লেনদেনে আসা বহুজাতিক কোম্পানি রবি দর বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করেছে। কিন্তু তৃতীয় দিন দর বৃদ্ধির সর্বোচ্চ সীমায় উঠার পরও দ্বিতীয় দিনের তুলনায় কোম্পানিটির লেনদেন কমেছে। ঢাকা স্টক এক্সচে্জে (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে অর্থ উত্তোলন করা রবির শেয়ার গত বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) থেকে পুঁজিবাজারে লেনদেন শুরু হয়। প্রথমদিন লেনদেনের শুরুতে ১৪ টাকা দরে কোম্পানিটির ২ লাখ ৬১ হাজার ১৭০টি শেয়ার কেনার প্রস্তাব আসে। তবে কেউ এ দরে বিক্রি করতে রাজি হননি। এরপর কয়েক দফা দর বেড়ে সর্বশেষ ১৫ টাকা করে ১৭ কোটি ৫২ লাখ ১৬ হাজার ৬৬২টি শেয়ার কেনার প্রস্তাব আসে। এতেই দর বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করে। তবে এরপরও কোনো বিনিয়োগকারী তাদের কাছে থাকা কোম্পানিটির শেয়ার বিক্রি করতে রাজি হননি। ফলে ক্রেতা থাকলেও শেয়ারের বিক্রি শূন্য হয়ে পড়ে।

দ্বিতীয় কার্যদিবস রোববার লেনদেনের শুরুতে ২১.৬০ টাকা করে ১০ হাজার শেয়ার কেনার প্রস্তাব আসে। তবে এ দরে বিনিয়োগকারীরা কোম্পানিটির শেয়ার বিক্রি করতে চায়নি। এরপর কয়েক দফা দর বেড়ে ২২.৫০ টাকা করে ৬ কোটি ৪৩ লাখ ৯৩ হাজার ২৪৩টি শেয়ার কেনার প্রস্তাব আসে। এর মধ্যে দর বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করে কোম্পানিটি। দ্বিতীয় দিন কোম্পানিটির সার্কিট ব্রেকারের সর্বোচ্চ সীমায় লেনদেন হয় ৪৯ লাখ ৩৭ হাজার ৮৫১টি শেয়ার।

নিয়ন্ত্রক সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী, আইপিও শেয়ার প্রথম দুই কার্যদিবসে সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ হারে বাড়তে পারবে। ২২.৫০ টাকা ওঠার মাধ্যমে রোববার রবির শেয়ার দর দ্বিতীয় দফায় ৫০ শতাংশ বেড়ে যায়। আর সোমবার লেনদেনের শুরুতে ২৩.১০ টাকা করে ৭ হাজার শেয়ার কেনার প্রস্তাব আসে। তবে এ দরে বিনিয়োগকারীরা কোম্পানিটির শেয়ার বিক্রি করতে রাজি হননি। এরপর কয়েক দফা দর বেড়ে ২৪.৭০ টাকা করে ৭ কোটি ১১ লাখ ৬ হাজার ৮২১টি শেয়ার কেনার প্রস্তাব আসে। এর মধ্যে দর বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করে কোম্পানিটি। সর্বোচ্চ সীমায় আজ কোম্পানিটির ২০ লাখ ৪২ হাজার ১৪৭টি শেয়ার লেনদেন হয়। আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর প্রায় ৯.৭৮ শতাংশ বাড়ার পরও আগের দিনের তুলনায় এর লেনদেন কমে গেছে ২৮ লাখ ৯৫ হাজার ৭০৪টি বা ৫৮.৬৪ শতাংশ।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দ্বিতীয় দিন ৫০ শতাংশ দর বৃদ্ধি পাওয়ার পর কোম্পানিটির শেয়ারে ভালো সেল প্রেসার ছিল। কিন্তু আজ ৯.৭৮ শতাংশ দর বৃদ্ধির পরও সেল প্রেসার কমে গেছে। তিনদিনে কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ১৪.৭০ টাকা বা ১৪৭ শতাংশ। তারপরও আইপিও বিজয়ীরা শেয়ারটি বিক্রি করতে চাচ্ছেন না। হঠাৎ করে তারা শেয়ারটি বিক্রিতে পিছু টান দিয়েছেন। শেয়ারটি থেকে তারা আরও মুনাফা তুলতে চান বলেই এর লেনদেনে ভাটা পড়েছে।

কোম্পানিটি নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ এবং আইপিও খরচের জন্য অভিহিত মূল্যে শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে ৫২৩ কোটি ৭৯ লাখ ৩৩ হাজার ৩৪০ টাকা সংগ্রহের অনুমোদন দেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা। বিএসইসি থেকে অনুমোদন নিয়ে রবি আজিয়াটার আইপিওতে আবেদন গ্রহণ শুরু হয় ১৭ নভেম্বর। যা চলে ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত। এ টাকা তোলার জন্য কোম্পানিটি ৫২ কোটি ৩৭ লাখ ৯৩ হাজার ৩৩৪টি সাধারণ শেয়ার আইপিওতে ইস্যু করে। এর মধ্যে ১৩ কোটি ৬০ লাখ ৫০ হাজার ৯৩৪টি শেয়ার কোম্পানির কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে ইস্যু করা হয়েছে।

কোম্পানি সূত্রে জানা গেছে, যোগ্য ও সাধারণ বিনিয়োগকারীরা মিলে রবি আইপিওতে ২২২৭ কোটি টাকার আবেদন জমা দেয়। এর মধ্যে যোগ্য বিনিয়োগকারী প্রায় ১৫৮৭ কোটি টাকার ও সাধারণ বিনিয়োগকারীর ৬৪০ কোটি টাকার আবেদন করেন।

এর মধ্যে ১২ লাখ ৮০ হাজার সাধারণ বিনিয়োগকারী রবি আজিয়াটা লিমিটেডের আইপিওতে শেয়ারের জন্য ২৩ কোটি ২০ লাখ শেয়ার বা ২৩২ কোটি টাকার বিপরীতে ৬৪০ কোটি টাকার আবেদন করেন।

অপরদিকে যোগ্য বিনিয়োগকারীরা তাদের জন্য বরাদ্দ রাখা ১৫৮ কোটি ৬৪ লাখ টাকার শেয়ারের বিপরীতে ১৫৮৬ কোটি ৮৬ লাখ টাকার আবেদন করেন।