১০:২১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪

সব ধরনের অপচয় রোধ করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১০:৫০:১০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ অক্টোবর ২০২২
  • / ৪১৭৩ বার দেখা হয়েছে

ফাইল ফটো

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখার চেষ্টা করছে সরকার। নীতি সহায়তা এবং কৌশলগত সহায়তা হিসেবে আমদানি পণ্যের ওপর ভ্যাট এবং শুল্ক্ক কমিয়ে আনার বিষয়টি ভাবনায় রয়েছে সরকারের। বাজারে মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করার কথাও বলেছেন তিনি। খাদ্য সংকট মোকাবিলায় উৎপাদন বাড়ানোর তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আবাদযোগ্য কোনো জায়গা খালি রাখা যাবে না। সরকার এবং সরকারের বাইরে সব ধরনের অপচয় রোধ করতে হবে। বিদ্যুৎ, জ্বালানি, পানি, গ্যাস এগুলো সবকিছু ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্ক হওয়ার পাশাপাশি ব্যয় সাশ্রয়ের মাধ্যমে কিছুটা হলেও সঞ্চয়ের চেষ্টা করার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

গতকাল মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে সরকারের ভাবনা এবং দেশবাসীর প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। একনেক চেয়ারপারসন হিসেবে বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন তিনি। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলন কেন্দ্রে একনেকের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে সরাসরি তিনি সংযুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী।

বৈঠক শেষে এক ব্রিফিংয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশানা এবং বিস্তারিত তুলে ধরেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। ব্রিফিংয়ে গত আগস্ট এবং সেপ্টেম্বরের মূল্যস্ম্ফীতির তথ্য তুলে ধরেন পরিকল্পনামন্ত্রী। এতে দেখা যায়, গত আগস্ট এবং সেপ্টেম্বরে পণ্য এবং সেবার দর বৃদ্ধির হার (মূল্যস্ম্ফীতি) ৯ শতাংশের ঘর ছাড়িয়ে গেছে। আগস্টে মূল্যস্ম্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৫১ শতাংশ। সেপ্টেম্বরে দাঁড়ায় ৯ দশমিক ১ শতাংশে। আগস্টে মূল্যস্ম্ফীতির এই হার ১১ বছর ৩ মাস বা গত ১৩৫ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে ২০১১ সালের মে মাসে সর্বোচ্চ ১০ দশমিক ২০ শতাংশ মূল্যস্ম্ফীতির রেকর্ড ছিল।

একনেক বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, মূল্যস্ম্ফীতির তথ্য নিয়ে বিরক্ত প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এখন আমি একটা অনুরোধ করব সেটা হচ্ছে, প্রতিনিয়ত আমাদের মূল্যস্ম্ফীতি কত, এটা নিয়ে আলোচনা করার খুব একটা প্রয়োজন নাই। কারণ অনেক দেশ এটা নিয়ে আলোচনা করে না। আমি যত আন্তর্জাতিক মিডিয়া দেখি, বিশেষ করে আমেরিকা বা ইউরোপ বা এসব দেশ, যারা সব সময় এসব নিয়ে বেশি চর্চা করে, তারা কিন্তু এইগুলো নিয়ে খুব বেশি আলোচনা করে না বা এটার প্রভাব কী হয়েছে সেটা নিয়েও কথা বলে না। আমাদেরও বোধ হয় এটা নিয়ে খুব বেশি আলোচনার প্রয়োজন নাই।’

যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে তাঁর সাম্প্র্রতিক সফরের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, বিভিন্ন দেশের সরকার এবং রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে আলোচনায় তিনি দেখেছেন সবাই অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। তাঁরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, ২০২৩ সালে একটি গুরুতর দুর্ভিক্ষ হতে পারে যখন অর্থনৈতিক মন্দা আরও গভীর হবে এবং খাদ্য সংকট দেখা দিতে পারে। ওই সময়ে দুর্ভিক্ষ ও খাদ্য সংকট দেখা দিতে পারে। সেই কথাটা মাথায় রেখে এখন থেকেই খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি করা এবং খাদ্য সংরক্ষণের কী ব্যবস্থা করা যেতে পারে বা প্রক্রিয়াজাত করা যেতে পারে, সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে। আবাদযোগ্য কোনো জায়গা যাতে খালি পড়ে না থাকে।

এ প্রসঙ্গে ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সময় মতিঝিল হাই স্কুলের মাঠে ধান লাগানো হয়েছে। অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই এ রকম ধান লাগানো হয়। পণ্য উৎপাদনের স্বার্থে বীজ, সার, পরিবহন এবং বিপণনে সহায়তা দেওয়ার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। এ প্রসঙ্গে রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রতি ইঙ্গিত করে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, বাজারে শান্তি চাইলে সমাজে শান্তি থাকতে হবে। পণ্য পরিবহন, বাজারজাত এসব কিছু সার্বিকভাবে সচল রাখতে হবে। রাজনৈতিক কারণে যাতে তা বাধাগ্রস্ত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এসব বিঘ্নিত হলে সমাজে শান্তি থাকবে না।

সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রকল্প নির্বাচনে আরও সতর্ক হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। একনেক বৈঠকে তিনি বলেছেন, ‘অহেতুক একটা প্রকল্প নিয়ে অনেকগুলো টাকা পেলাম দেখে সেখানে ঝাঁপ দেওয়ার দরকার নেই। প্রকল্প বাছাইয়ের সময় খুব সতর্ক থাকতে হবে। এ প্রসঙ্গে ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, প্রকল্প যাচাই-বাছাইয়ের ক্ষেত্রে আগের চেয়ে আরও বেশি সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। খাতির বা নিজের লোক না দেখে প্রকল্পের ব্যয় কত, রিটার্ন কত, নিকট আগামীতে রিটার্ন আসবে সেসব প্রকল্পে মনোযোগ দিতে হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নেও গতি বাড়াতে হবে। কারণ, বাস্তবায়নে দেরির অর্থই হলো, ব্যয় বেড়ে যাওয়া।

আরও পড়ুন: নতুন করে বাড়ছে বিদ্যুতের দাম

ঢাকা/এসএ

শেয়ার করুন

x

সব ধরনের অপচয় রোধ করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

আপডেট: ১০:৫০:১০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ অক্টোবর ২০২২

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখার চেষ্টা করছে সরকার। নীতি সহায়তা এবং কৌশলগত সহায়তা হিসেবে আমদানি পণ্যের ওপর ভ্যাট এবং শুল্ক্ক কমিয়ে আনার বিষয়টি ভাবনায় রয়েছে সরকারের। বাজারে মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করার কথাও বলেছেন তিনি। খাদ্য সংকট মোকাবিলায় উৎপাদন বাড়ানোর তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আবাদযোগ্য কোনো জায়গা খালি রাখা যাবে না। সরকার এবং সরকারের বাইরে সব ধরনের অপচয় রোধ করতে হবে। বিদ্যুৎ, জ্বালানি, পানি, গ্যাস এগুলো সবকিছু ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্ক হওয়ার পাশাপাশি ব্যয় সাশ্রয়ের মাধ্যমে কিছুটা হলেও সঞ্চয়ের চেষ্টা করার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

গতকাল মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে সরকারের ভাবনা এবং দেশবাসীর প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। একনেক চেয়ারপারসন হিসেবে বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন তিনি। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলন কেন্দ্রে একনেকের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে সরাসরি তিনি সংযুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী।

বৈঠক শেষে এক ব্রিফিংয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশানা এবং বিস্তারিত তুলে ধরেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। ব্রিফিংয়ে গত আগস্ট এবং সেপ্টেম্বরের মূল্যস্ম্ফীতির তথ্য তুলে ধরেন পরিকল্পনামন্ত্রী। এতে দেখা যায়, গত আগস্ট এবং সেপ্টেম্বরে পণ্য এবং সেবার দর বৃদ্ধির হার (মূল্যস্ম্ফীতি) ৯ শতাংশের ঘর ছাড়িয়ে গেছে। আগস্টে মূল্যস্ম্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৫১ শতাংশ। সেপ্টেম্বরে দাঁড়ায় ৯ দশমিক ১ শতাংশে। আগস্টে মূল্যস্ম্ফীতির এই হার ১১ বছর ৩ মাস বা গত ১৩৫ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে ২০১১ সালের মে মাসে সর্বোচ্চ ১০ দশমিক ২০ শতাংশ মূল্যস্ম্ফীতির রেকর্ড ছিল।

একনেক বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, মূল্যস্ম্ফীতির তথ্য নিয়ে বিরক্ত প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এখন আমি একটা অনুরোধ করব সেটা হচ্ছে, প্রতিনিয়ত আমাদের মূল্যস্ম্ফীতি কত, এটা নিয়ে আলোচনা করার খুব একটা প্রয়োজন নাই। কারণ অনেক দেশ এটা নিয়ে আলোচনা করে না। আমি যত আন্তর্জাতিক মিডিয়া দেখি, বিশেষ করে আমেরিকা বা ইউরোপ বা এসব দেশ, যারা সব সময় এসব নিয়ে বেশি চর্চা করে, তারা কিন্তু এইগুলো নিয়ে খুব বেশি আলোচনা করে না বা এটার প্রভাব কী হয়েছে সেটা নিয়েও কথা বলে না। আমাদেরও বোধ হয় এটা নিয়ে খুব বেশি আলোচনার প্রয়োজন নাই।’

যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে তাঁর সাম্প্র্রতিক সফরের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, বিভিন্ন দেশের সরকার এবং রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে আলোচনায় তিনি দেখেছেন সবাই অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। তাঁরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, ২০২৩ সালে একটি গুরুতর দুর্ভিক্ষ হতে পারে যখন অর্থনৈতিক মন্দা আরও গভীর হবে এবং খাদ্য সংকট দেখা দিতে পারে। ওই সময়ে দুর্ভিক্ষ ও খাদ্য সংকট দেখা দিতে পারে। সেই কথাটা মাথায় রেখে এখন থেকেই খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি করা এবং খাদ্য সংরক্ষণের কী ব্যবস্থা করা যেতে পারে বা প্রক্রিয়াজাত করা যেতে পারে, সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে। আবাদযোগ্য কোনো জায়গা যাতে খালি পড়ে না থাকে।

এ প্রসঙ্গে ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সময় মতিঝিল হাই স্কুলের মাঠে ধান লাগানো হয়েছে। অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই এ রকম ধান লাগানো হয়। পণ্য উৎপাদনের স্বার্থে বীজ, সার, পরিবহন এবং বিপণনে সহায়তা দেওয়ার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। এ প্রসঙ্গে রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রতি ইঙ্গিত করে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, বাজারে শান্তি চাইলে সমাজে শান্তি থাকতে হবে। পণ্য পরিবহন, বাজারজাত এসব কিছু সার্বিকভাবে সচল রাখতে হবে। রাজনৈতিক কারণে যাতে তা বাধাগ্রস্ত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এসব বিঘ্নিত হলে সমাজে শান্তি থাকবে না।

সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রকল্প নির্বাচনে আরও সতর্ক হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। একনেক বৈঠকে তিনি বলেছেন, ‘অহেতুক একটা প্রকল্প নিয়ে অনেকগুলো টাকা পেলাম দেখে সেখানে ঝাঁপ দেওয়ার দরকার নেই। প্রকল্প বাছাইয়ের সময় খুব সতর্ক থাকতে হবে। এ প্রসঙ্গে ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, প্রকল্প যাচাই-বাছাইয়ের ক্ষেত্রে আগের চেয়ে আরও বেশি সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। খাতির বা নিজের লোক না দেখে প্রকল্পের ব্যয় কত, রিটার্ন কত, নিকট আগামীতে রিটার্ন আসবে সেসব প্রকল্পে মনোযোগ দিতে হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নেও গতি বাড়াতে হবে। কারণ, বাস্তবায়নে দেরির অর্থই হলো, ব্যয় বেড়ে যাওয়া।

আরও পড়ুন: নতুন করে বাড়ছে বিদ্যুতের দাম

ঢাকা/এসএ