০১:৩০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪

সাগরে বড় ট্যাংকার থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে তেল খালাস শুরু

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১২:৫০:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ জুলাই ২০২৩
  • / ৪২২২ বার দেখা হয়েছে

সাগরে বড় ট্যাংকার থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে পরীক্ষামূলকভাবে জ্বালানি তেল খালাস শুরু হয়েছে।আজ সোমবার সকাল ১০টা ১২ মিনিটে কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার পশ্চিম দিকে সাগরে ‘এমটি হোরে’ নামের ট্যাংকার থেকে পাইপলাইনে তেল খালাস শুরু হয়।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুনফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

পাইপলাইনটির সিংহভাগই সাগরের তলদেশে স্থাপন করা, যার দৈর্ঘ্য ১১০ কিলোমিটার। চট্টগ্রাম বন্দরের সহায়তায় পাইপলাইনের মাধ্যমে তেল খালাসের এই প্রক্রিয়া গতকাল রোববার বেলা তিনটার দিকেই শুরু করা হয়েছিল।

প্রায় এক ঘণ্টার মাথায় গতকাল বিকেল চারটার দিকে আমদানি তেলবাহী ট্যাংকারটি প্রথমে গভীর সাগরে মুরিং পয়েন্টে (বিশেষায়িত বয়া) রশি দিয়ে বাঁধা হয়। পরে সেখানকার পাইপলাইনের সঙ্গে ট্যাংকারটির পাইপের সংযোগ স্থাপনের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়। কিন্তু হোসপাইপের সমস্যার কারণে গতকাল তেল খালাস শুরু করা যায়নি। কারিগরি ত্রুটি সমাধানের পর আজ সকাল থেকে প্রথম তেল খালাস শুরু করা হয়।

সরকারি তেল শোধনাগার প্রতিষ্ঠান ইস্টার্ন রিফাইনারির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. লোকমান প্রথম আলোকে বলেন, আজ সকাল সোয়া ১০টার দিকে ট্যাংকার থেকে তেল খালাস শুরু হয়েছে। এই তেল সাগরের তলদেশের পাইপলাইনের মাধ্যমে মহেশখালীর কালারমারছড়ায় পাম্প স্টেশন ও ট্যাংক ফার্মে নেওয়া হচ্ছে। সেখানে দুই লাখ টন তেল ধারণক্ষমতার ছয়টি ট্যাংক রয়েছে।

মহেশখালীর ট্যাংক ফার্মে তেল জমা হওয়ার পর সেখান থেকে পাম্প করে তা চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার সমুদ্র উপকূল হয়ে বন্দরনগরীর পতেঙ্গায় অবস্থিত ইস্টার্ন রিফাইনারিতে নেওয়া হবে বলে জানান মো. লোকমান।

আরও পড়ুন: বৃষ্টির পানিতে চুলের যেসব ক্ষতি হয়

বঙ্গোপসাগরে বড় জাহাজ থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে তেল খালাসের এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) অধীন প্রতিষ্ঠান ইস্টার্ন রিফাইনারি।

প্রকল্পের আওতায় সাগরে মুরিং বা বিশেষায়িত বয়ার মতো স্থাপনা বসানো হয়েছে। প্রকল্পের পরীক্ষামূলক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সৌদি আরব থেকে আমদানি করা ৮২ হাজার টন অপরিশোধিত তেল ‘এমটি হোরে’ নামের ট্যাংকার থেকে পাইপলাইনে খালাসের এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, চট্টগ্রাম বন্দরের সীমাবদ্ধতার জন্য কর্ণফুলী নদীতে তেল খালাসের বিশেষায়িত জেটিতে বড় ট্যাংকার ভিড়তে পারে না। এ কারণে জ্বালানি তেল নিয়ে আসা বড় ট্যাংকারগুলো প্রথমে সাগরে নোঙর করে রাখা হচ্ছিল।

পরে ছোট ট্যাংকারের মাধ্যমে তেল স্থানান্তর করে জেটিতে এনে পাইপের মাধ্যমে তা খালাস করা হচ্ছিল। এতে এক লাখ টন তেলবাহী একটি ট্যাংকার থেকে তেল খালাসে ১০ থেকে ১১ দিন সময় লাগত।

সনাতন পদ্ধতিতে তেল খালাসে খরচ ও সময় বেশি লাগার প্রেক্ষাপটে ২০১৫ সালে ‘সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং’ বা ভাসমান জেটি নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। তিন দফা প্রকল্পটির মেয়াদ বাড়ানো হয়। এতে প্রকল্পের ব্যয় ৭ হাজার ১২৫ কোটি টাকায় উন্নীত হয়। তবে ডলারের দাম ও আনুষঙ্গিক খরচ বাড়ায় এখন প্রকল্পের ব্যয় ৮ হাজার ৩৪২ কোটি টাকায় উন্নীত হচ্ছে বলে ইস্টার্ন রিফাইনারি সূত্রে জানা গেছে।

বাংলাদেশ ও চীন সরকারের মধ্যে (জিটুজি) চুক্তির ভিত্তিতে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। প্রকল্পের আওতায় পাইপলাইনের মাধ্যমে মাত্র দুই দিনে প্রায় এক লাখ টন জ্বালানি তেল খালাস সম্ভব হবে।

ঢাকা/এসএম

শেয়ার করুন

x

সাগরে বড় ট্যাংকার থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে তেল খালাস শুরু

আপডেট: ১২:৫০:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ জুলাই ২০২৩

সাগরে বড় ট্যাংকার থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে পরীক্ষামূলকভাবে জ্বালানি তেল খালাস শুরু হয়েছে।আজ সোমবার সকাল ১০টা ১২ মিনিটে কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার পশ্চিম দিকে সাগরে ‘এমটি হোরে’ নামের ট্যাংকার থেকে পাইপলাইনে তেল খালাস শুরু হয়।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুনফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

পাইপলাইনটির সিংহভাগই সাগরের তলদেশে স্থাপন করা, যার দৈর্ঘ্য ১১০ কিলোমিটার। চট্টগ্রাম বন্দরের সহায়তায় পাইপলাইনের মাধ্যমে তেল খালাসের এই প্রক্রিয়া গতকাল রোববার বেলা তিনটার দিকেই শুরু করা হয়েছিল।

প্রায় এক ঘণ্টার মাথায় গতকাল বিকেল চারটার দিকে আমদানি তেলবাহী ট্যাংকারটি প্রথমে গভীর সাগরে মুরিং পয়েন্টে (বিশেষায়িত বয়া) রশি দিয়ে বাঁধা হয়। পরে সেখানকার পাইপলাইনের সঙ্গে ট্যাংকারটির পাইপের সংযোগ স্থাপনের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়। কিন্তু হোসপাইপের সমস্যার কারণে গতকাল তেল খালাস শুরু করা যায়নি। কারিগরি ত্রুটি সমাধানের পর আজ সকাল থেকে প্রথম তেল খালাস শুরু করা হয়।

সরকারি তেল শোধনাগার প্রতিষ্ঠান ইস্টার্ন রিফাইনারির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. লোকমান প্রথম আলোকে বলেন, আজ সকাল সোয়া ১০টার দিকে ট্যাংকার থেকে তেল খালাস শুরু হয়েছে। এই তেল সাগরের তলদেশের পাইপলাইনের মাধ্যমে মহেশখালীর কালারমারছড়ায় পাম্প স্টেশন ও ট্যাংক ফার্মে নেওয়া হচ্ছে। সেখানে দুই লাখ টন তেল ধারণক্ষমতার ছয়টি ট্যাংক রয়েছে।

মহেশখালীর ট্যাংক ফার্মে তেল জমা হওয়ার পর সেখান থেকে পাম্প করে তা চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার সমুদ্র উপকূল হয়ে বন্দরনগরীর পতেঙ্গায় অবস্থিত ইস্টার্ন রিফাইনারিতে নেওয়া হবে বলে জানান মো. লোকমান।

আরও পড়ুন: বৃষ্টির পানিতে চুলের যেসব ক্ষতি হয়

বঙ্গোপসাগরে বড় জাহাজ থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে তেল খালাসের এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) অধীন প্রতিষ্ঠান ইস্টার্ন রিফাইনারি।

প্রকল্পের আওতায় সাগরে মুরিং বা বিশেষায়িত বয়ার মতো স্থাপনা বসানো হয়েছে। প্রকল্পের পরীক্ষামূলক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সৌদি আরব থেকে আমদানি করা ৮২ হাজার টন অপরিশোধিত তেল ‘এমটি হোরে’ নামের ট্যাংকার থেকে পাইপলাইনে খালাসের এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, চট্টগ্রাম বন্দরের সীমাবদ্ধতার জন্য কর্ণফুলী নদীতে তেল খালাসের বিশেষায়িত জেটিতে বড় ট্যাংকার ভিড়তে পারে না। এ কারণে জ্বালানি তেল নিয়ে আসা বড় ট্যাংকারগুলো প্রথমে সাগরে নোঙর করে রাখা হচ্ছিল।

পরে ছোট ট্যাংকারের মাধ্যমে তেল স্থানান্তর করে জেটিতে এনে পাইপের মাধ্যমে তা খালাস করা হচ্ছিল। এতে এক লাখ টন তেলবাহী একটি ট্যাংকার থেকে তেল খালাসে ১০ থেকে ১১ দিন সময় লাগত।

সনাতন পদ্ধতিতে তেল খালাসে খরচ ও সময় বেশি লাগার প্রেক্ষাপটে ২০১৫ সালে ‘সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং’ বা ভাসমান জেটি নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। তিন দফা প্রকল্পটির মেয়াদ বাড়ানো হয়। এতে প্রকল্পের ব্যয় ৭ হাজার ১২৫ কোটি টাকায় উন্নীত হয়। তবে ডলারের দাম ও আনুষঙ্গিক খরচ বাড়ায় এখন প্রকল্পের ব্যয় ৮ হাজার ৩৪২ কোটি টাকায় উন্নীত হচ্ছে বলে ইস্টার্ন রিফাইনারি সূত্রে জানা গেছে।

বাংলাদেশ ও চীন সরকারের মধ্যে (জিটুজি) চুক্তির ভিত্তিতে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। প্রকল্পের আওতায় পাইপলাইনের মাধ্যমে মাত্র দুই দিনে প্রায় এক লাখ টন জ্বালানি তেল খালাস সম্ভব হবে।

ঢাকা/এসএম