আগে সিএমএসএমই খাতের জন্য যেসব পুনঃ অর্থায়ন তহবিল করা হয়েছিল, তার বেশির ভাগই ছিল চলতি মূলধন সহায়তা ও স্বল্পমেয়াদি ঋণসুবিধার। ওই সব তহবিলে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সুদ আয় ছিল সর্বোচ্চ ৪ শতাংশ। কিন্তু নতুন তহবিলে সুদ আয় ১ শতাংশ বেশি হওয়ায় ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো এ তহবিল থেকে টাকা নিতে বেশি আগ্রহী। ফলে আগের তহবিলগুলোর ভবিষ্যৎ নিয়ে কিছুটা শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, যে ঋণ বা তহবিল থেকে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আয় বেশি হবে, প্রতিষ্ঠানগুলো সেটির প্রতিই বেশি আগ্রহী হবে, এটাই স্বাভাবিক। এ জন্য নতুন তহবিল থেকে অর্থ নিতে সবার আগ্রহ বেশি। এ ছাড়া চলতি মূলধনের চেয়ে মেয়াদি ঋণে ব্যাংকের ব্যবসা ভালো হয়। এটিও নতুন তহবিলের প্রতি আগ্রহ তৈরির আরেক কারণ।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের সুবিধার কথা বিবেচনা করেই নতুন এ তহবিল গঠন করা হয়েছে।
জানা যায়, সিএমএসএমই খাতে ঋণ বাড়াতে ২৫ হাজার কোটি টাকার নতুন পুনঃ অর্থায়ন তহবিল গঠন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ তহবিল থেকে ঋণ দিতে উচ্চ অগ্রাধিকার ও অগ্রাধিকার খাতের পাশাপাশি নারী উদ্যোক্তা, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন উদ্যোক্তা, দুর্যোগে আক্রান্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত উদ্যোক্তাদের প্রাধান্য দিতে বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, করোনার প্রকোপ শুরু হলে ২০২০ সালের এপ্রিলে সিএমএসএমই খাতের জন্য ২০ হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠন করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। ওই তহবিল থেকে চলতি মূলধন সরবরাহ করা হতো উদ্যোক্তাদের। ঋণের সুদহার ৯ শতাংশ। তবে গ্রাহকদের দিতে হচ্ছে ৪ শতাংশ, বাকি ৫ শতাংশ সুদ সরকার ভর্তুকি হিসেবে দিচ্ছে। এ তহবিল থেকে প্রথম ও দ্বিতীয় দফায় বিতরণ হয় ২৮ হাজার কোটি টাকা।
করোনাকালে গঠিত তহবিলের ঋণ বিতরণের চলমান কার্যক্রমের মধ্যে গত জুলাইয়ে নতুন তহবিল গঠন করা হয়। এ তহবিলে ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানের সুদ আয় বেশি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারাই বলছেন, ব্যাংকগুলো ইতিমধ্যে আগের তহবিলের গুরুত্ব কমিয়ে দিয়েছে। সুদ আয় বেশি হওয়ায় সবাই নতুন তহবিল থেকে ঋণ দিতে তোড়জোড় শুরু করেছে। ফলে পুরোনো তহবিলগুলো বন্ধ হওয়ার উপক্রম।
আরও পড়ুন: বিদেশি ঋণের সুদহার বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক
ঢাকা/এসএ