০৭:৩০ অপরাহ্ন, বুধবার, ০১ অক্টোবর ২০২৫

সিকিউরিটিজ হাউজের মার্জিন ঋণ ও বিনিয়োগের তথ্য জমা দেওয়ার নির্দেশ

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১১:৩০:১৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৭ জুলাই ২০২৩
  • / ১০৫৩৬ বার দেখা হয়েছে

দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) বিনিয়োগকারীদের পুঁজি নিরাপত্তা, অর্থ আত্মসাৎ, অনিয়ম ও জালিয়াতি থেকে রক্ষার নিমিত্তে সদস্যভুক্ত ট্রেকহোল্ডার বা ব্রোকারেজ হাউজগুলোর স্টক-ব্রোকারদের মার্জিন ঋণ এবং স্টক-ডিলারের বিনিয়োগের তথ্য জুলাই মাসের মধ্যে নির্দিষ্ট নিয়ম বা ফরম্যাটে রেগুলেটরি রিপোর্টিং সফটওয়্যার ব্যবহার করে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।

সম্প্রতি সকল ট্রেকহোল্ডার বা ব্রোকারেজ হাউজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার (সিইও) কাছে এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

ব্রোকারেজ হাউজগুলোকে ২০১৯ সালের ১৮ এপ্রিল বিএসইসি ও ২১ এপ্রিল ডিএসইর দেওয়া চিঠির বিষয়ে অবহিত করে স্টক-ব্রোকারদের মার্জিন ঋণ এবং স্টক-ডিলারদের বিনিয়োগ সংক্রান্ত তথ্য জমা দেওয়ার কথা উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়েছে, এ বিষয়ে ব্রোকারেজ এবং ডিলারকে জুন মাসের মার্জিন ঋণ ও বিনিয়োগের তথ্য জুলাই মাসের মধ্যে ‘ট্রেক হোল্ডারদের জন্য তৈরি রেগুলেটরি রিপোর্টিং সফটওয়্যার’ এর মাধ্যমে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো। সেই সঙ্গে আরও জানানো হয়েছে যে এ সংক্রান্ত তথ্য প্রেরণের ক্ষেত্রে কোনও হার্ড কপির প্রয়োজন নেই।

উল্লেখ্য, গত কয়েক বছরে তামহা সিকিউরিটিজ, ক্রেস্ট সিকিউরিটিজ ও বানকো সিকিউরিটিজসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগকারীদের অর্থ আত্মসাৎ, অনিয়ম এবং জালিয়াতি ঘটে। এর পর ডিএসই ও সিএসই‘র সব ব্রোকারেজ হাউজ পরিদর্শন ও তদন্তের নির্দেশনা দেয় বিএসইসি। এরই ধারাবাহিকতায় তদন্তসাপেক্ষে ১০৮টি প্রতিষ্ঠানের সমন্বিত গ্রাহক হিসাবে বড় অঙ্কের ঘাটতি পাওয়া যায়। এর পরিমাণ দাঁড়ায় ৫৮৫ কোটি ২১ লাখ ৭০ হাজার টাকা। পরবর্তীতে ব্রোকারেজ হাউজগুলোকে এ বিষয়ে চিঠি দিয়ে দ্রুত ঘাটতি সমন্বয় করতে বলা হয়। এর পর থেকে ১০২টি প্রতিষ্ঠান ৫৩৫ কোটি ৯৩ লাখ ৫৪ হাজার টাকা সমন্বয় করেছে। বাকি ৬টি ব্রোকারেজ হাউজ ৪৯ কোটি ২৮ লাখ ১৫ হাজার টাকা ঘাটতি এখনো সমন্বয় করেনি।

এর মধ্যে সিনহা সিকিউরিটিজের ঘাটতি আছে ৯ কোটি ৮২ লাখ ২৪ হাজার টাকা, ফারইস্ট স্টকস অ্যান্ড বন্ডের ঘাটতি আছে ১ কোটি ২৪ লাখ ১৮ হাজার টাকা, ৩৩ কোটি ৪ লাখ ৬৫ হাজার টাকা ঘাটতি আছে পিএফআই সিকিউরিটিজের, এশিয়া সিকিউরিটিজের ৬২ লাখ ৪৭ হাজার টাকা ঘাটতি রয়েছে। এছাড়া, লতিফ সিকিউরিটিজের ৩২ লাখ ৫৩ হাজার টাকা এবং মডার্ন সিকিউরিটিজের ৫ কোটি ২৭ লাখ ২৯ হাজার টাকা ঘাটতি আছে বলে জানা গেছে।

চলতি বছরের ৩০ জুন শেষ হওয়া ত্রৈমাসিক ব্রোকারেজ হাউজগুলোর ধারণকৃত শেয়ারের তথ্য জমা দেওয়ার বিষয়ে জানিয়ে ডিএসইর চিঠিতে বলা হয়েছে, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ রুলস অনুযায়ী, প্রত্যেক স্টক ব্রোকার সময়ে সময়ে এক্সচেঞ্জের নির্ধারিত একটি ফর্মে তার ব্যাকঅফিসে ধারণ করা সিকিউরিটিজের সবশেষ অবস্থা এবং ডিপোজিটরিতে থাকা সিকিউরিটিজ ধারণের তথ্যসহ এ সম্পর্কিত প্রয়োজনীয় নথি স্টক এক্সচেঞ্জে জমা দিতে হবে। সেক্ষেত্রে ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে প্রতি প্রান্তিক শেষ হওয়ার ১০ কার্যদিবসের মধ্যে এ তথ্য জমা দিতে হবে।

তাই এ বিষয়ে ব্রোকারেজ হাউজ ও ডিপজেটরির ধারণকৃত শেয়ারের তথ্য একটি প্রতিবেদন আকারে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলো। সেক্ষেত্রে চলতি বছরের ৩০ জুন শেষ হওয়া প্রান্তিকে ব্যাকঅফিসে থাকা সিকিউরিটিজের সঙ্গে ডিপোজিটরিতে থাকা সিকিউরিটিজের বর্তমান অবস্থার তথ্য স্টক এক্সচেঞ্জের দেওয়া নির্ধারিত ফরম্যাটে ই-মেইলের মাধ্যমে ১৩ জুলাইয়ের মধ্যে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো। সেই সঙ্গে পরবর্তী প্রতি ত্রৈমাসিক শেষ হওয়ার পর একইভাবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তথ্য জমা দিতে বলা হয়েছে।

আরও পড়ুন: সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের আয় বেড়েছে ৩০ শতাংশ

সকল ব্রোকারেজ হাউজকে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অব ট্রেডিং রাইট এনটাইটেলম সার্টিফিকেট) রুলস, ২০২০ এর প্রবিধান ৮(৭) অবহিত করে ব্যাকঅফিস সফটওয়্যারের তথ্য জমা দেওয়ার বিষয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, সকল ট্রেকহোল্ডার কোম্পানিকে ২০২২ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত ব্যাকঅফিস সফ্টওয়্যার ব্যবহার সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য জমা দিতে নির্দেশ প্রদান করা হলো। এই বিষয়ে ব্রোকারেজ হাউজকে আগামী মঙ্গলবারের (১১ জুলাই) মধ্যে গুগল ফর্ম পূরণ করতে হবে। ওই প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে ফর্মটি পূরণ করে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো।

অপরদিকে, ডিএসই মাসিক পর্যালোচনা অর্ধবার্ষিকীর বিশেষ সংস্করণ কেনার বিষয়ে চিঠিতে জানানো হয়েছে, ইনডেক্স ম্যানেজমেন্ট, ডেটা সার্ভিসেস নিয়ে ডিএসইর প্রকাশনা বিভাগ মাসিক পর্যালোচনা অর্ধবার্ষিকীর বিশেষ সংস্করণ জুন ইস্যু প্রকাশ করতে যাচ্ছে। ইস্যুতে পুঁজিবাজারের অর্ধবার্ষিক তথ্য পর্যালোচনা করা হবে। যদি ব্রোকারেজ হাউজের অর্ধবার্ষিক বিশেষ সংস্করণের অতিরিক্ত কপি কেনার ইচ্ছা থাকে, তাহলে চিঠিতে উল্লেখিত নিয়ম বা ফরম্যাটে তথ্য জমা দিতে বলা হয়েছে।

এছাড়াও সমন্বিত গ্রাহকদের ব্যাংক হিসাবের তথ্য চাওয়া চিঠিতে বলা হয়েছে, বিএসইসির ২০২২ সালের ২ অক্টোবর জারি করা চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, সকল ব্রোকারেজ হাউজকে চলতি বছরের ১০ জুলাইয়ের মধ্যে নির্দিষ্ট নিয়মে বা ফরম্যাটে ৩০ জুন পর্যন্ত শেষ হওয়া ত্রৈমাসিকে সমন্বিত গ্রাহক ব্যাংক হিসাবের তথ্য জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলো। সেক্ষেত্রে আপনার প্রতিষ্ঠানের উল্লিখিত তথ্য এমএস এক্সেল এবং পিডিএফ উভয় ফরম্যাটে ই-মেইলের মাধ্যমে সফট কপি পাঠানোর জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো। সেই সঙ্গে প্রত্যেক ব্রোকারেজ হাউজকে পরবর্তী প্রতি ত্রৈমাসিক শেষে উক্ত তথ্য দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হলো।

আরও পড়ুন: সি অ্যান্ড এ টেক্সটাইলের বোর্ড সভার তারিখ পরিবর্তন

এদিকে, ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত ট্রেকহোল্ডার কোম্পানিগুলোর সমন্বিত গ্রাহক হিসাবের মাসিক পর্যবেক্ষণ সংক্রান্ত চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ রুলস, ২০২০ এর বিধি ৬(১) ও ৬(৫) এবং বিএসইসির ২০২১ সালের ২০ জুন জারি করা নির্দেশনা দেখার জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায়, আপনাদেরকে ২০২৩ সালের ১৮ জুন পর্যন্ত সময়ের ওপর ভিত্তি করে সমন্বিত গ্রাহক হিসাবের প্রয়োজনীয় সহায়ক নথিসহ গ্রাহকদের প্রদেয় স্থিতি সম্পর্কিত তথ্য বা নথি প্রদান করার জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে। আগামী ১০ জুলাইয়ের মধ্যে সিসিএ মডিউল ব্যবহার করে মেকার ও চেকার আইডি ব্যবহার করে এসব তথ্য প্রদান করার জন্য অনুরোধ করা হলো।

প্রসঙ্গত, বিএসইসি গত বছর ২২ মার্চ সমন্বিত গ্রাহক হিসাবে ঘাটতি থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর বিষয়ে কয়েকটি নির্দেশনা দিয়েছে। এই নির্দেশনাগুলোর মধ্যে আছে—স্টক এক্সচেঞ্জকে লিমিটি সুবিধা স্থগিত করা হবে, যোগ্য বিনিয়োগকারী হিসাবে আইপিও কোটা সুবিধা বাতিল হবে, স্টক এক্সচেঞ্জের মালিকানার বিপরীতে পাওয়া লভ্যাংশ স্থগিত থাকবে এবং ডিপোজিটরি অংশগ্রহণকারীর নিবন্ধন এবং নতুন শাখা ও বুথ খোলা বন্ধ রাখা হবে। তার আগে ২১ মার্চ বিনিয়োগকারীদের আমানত অর্থাৎ শেয়ার ও অর্থ সরিয়ে নেওয়া তামহা সিকিউরিটিজ, ক্রেস্ট সিকিউরিটিজ ও বানকো সিকিউরিটিজসহ ২৫টি ব্রোকারেজ হাউজের নিবন্ধন সনদ নবায়ন বন্ধসহ নানা সুযোগ-সুবিধা স্থগিত করা হয়।

ঢাকা/এসএ

শেয়ার করুন

error: Content is protected ! Please Don't Try!

সিকিউরিটিজ হাউজের মার্জিন ঋণ ও বিনিয়োগের তথ্য জমা দেওয়ার নির্দেশ

আপডেট: ১১:৩০:১৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৭ জুলাই ২০২৩

দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) বিনিয়োগকারীদের পুঁজি নিরাপত্তা, অর্থ আত্মসাৎ, অনিয়ম ও জালিয়াতি থেকে রক্ষার নিমিত্তে সদস্যভুক্ত ট্রেকহোল্ডার বা ব্রোকারেজ হাউজগুলোর স্টক-ব্রোকারদের মার্জিন ঋণ এবং স্টক-ডিলারের বিনিয়োগের তথ্য জুলাই মাসের মধ্যে নির্দিষ্ট নিয়ম বা ফরম্যাটে রেগুলেটরি রিপোর্টিং সফটওয়্যার ব্যবহার করে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।

সম্প্রতি সকল ট্রেকহোল্ডার বা ব্রোকারেজ হাউজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার (সিইও) কাছে এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

ব্রোকারেজ হাউজগুলোকে ২০১৯ সালের ১৮ এপ্রিল বিএসইসি ও ২১ এপ্রিল ডিএসইর দেওয়া চিঠির বিষয়ে অবহিত করে স্টক-ব্রোকারদের মার্জিন ঋণ এবং স্টক-ডিলারদের বিনিয়োগ সংক্রান্ত তথ্য জমা দেওয়ার কথা উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়েছে, এ বিষয়ে ব্রোকারেজ এবং ডিলারকে জুন মাসের মার্জিন ঋণ ও বিনিয়োগের তথ্য জুলাই মাসের মধ্যে ‘ট্রেক হোল্ডারদের জন্য তৈরি রেগুলেটরি রিপোর্টিং সফটওয়্যার’ এর মাধ্যমে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো। সেই সঙ্গে আরও জানানো হয়েছে যে এ সংক্রান্ত তথ্য প্রেরণের ক্ষেত্রে কোনও হার্ড কপির প্রয়োজন নেই।

উল্লেখ্য, গত কয়েক বছরে তামহা সিকিউরিটিজ, ক্রেস্ট সিকিউরিটিজ ও বানকো সিকিউরিটিজসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগকারীদের অর্থ আত্মসাৎ, অনিয়ম এবং জালিয়াতি ঘটে। এর পর ডিএসই ও সিএসই‘র সব ব্রোকারেজ হাউজ পরিদর্শন ও তদন্তের নির্দেশনা দেয় বিএসইসি। এরই ধারাবাহিকতায় তদন্তসাপেক্ষে ১০৮টি প্রতিষ্ঠানের সমন্বিত গ্রাহক হিসাবে বড় অঙ্কের ঘাটতি পাওয়া যায়। এর পরিমাণ দাঁড়ায় ৫৮৫ কোটি ২১ লাখ ৭০ হাজার টাকা। পরবর্তীতে ব্রোকারেজ হাউজগুলোকে এ বিষয়ে চিঠি দিয়ে দ্রুত ঘাটতি সমন্বয় করতে বলা হয়। এর পর থেকে ১০২টি প্রতিষ্ঠান ৫৩৫ কোটি ৯৩ লাখ ৫৪ হাজার টাকা সমন্বয় করেছে। বাকি ৬টি ব্রোকারেজ হাউজ ৪৯ কোটি ২৮ লাখ ১৫ হাজার টাকা ঘাটতি এখনো সমন্বয় করেনি।

এর মধ্যে সিনহা সিকিউরিটিজের ঘাটতি আছে ৯ কোটি ৮২ লাখ ২৪ হাজার টাকা, ফারইস্ট স্টকস অ্যান্ড বন্ডের ঘাটতি আছে ১ কোটি ২৪ লাখ ১৮ হাজার টাকা, ৩৩ কোটি ৪ লাখ ৬৫ হাজার টাকা ঘাটতি আছে পিএফআই সিকিউরিটিজের, এশিয়া সিকিউরিটিজের ৬২ লাখ ৪৭ হাজার টাকা ঘাটতি রয়েছে। এছাড়া, লতিফ সিকিউরিটিজের ৩২ লাখ ৫৩ হাজার টাকা এবং মডার্ন সিকিউরিটিজের ৫ কোটি ২৭ লাখ ২৯ হাজার টাকা ঘাটতি আছে বলে জানা গেছে।

চলতি বছরের ৩০ জুন শেষ হওয়া ত্রৈমাসিক ব্রোকারেজ হাউজগুলোর ধারণকৃত শেয়ারের তথ্য জমা দেওয়ার বিষয়ে জানিয়ে ডিএসইর চিঠিতে বলা হয়েছে, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ রুলস অনুযায়ী, প্রত্যেক স্টক ব্রোকার সময়ে সময়ে এক্সচেঞ্জের নির্ধারিত একটি ফর্মে তার ব্যাকঅফিসে ধারণ করা সিকিউরিটিজের সবশেষ অবস্থা এবং ডিপোজিটরিতে থাকা সিকিউরিটিজ ধারণের তথ্যসহ এ সম্পর্কিত প্রয়োজনীয় নথি স্টক এক্সচেঞ্জে জমা দিতে হবে। সেক্ষেত্রে ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে প্রতি প্রান্তিক শেষ হওয়ার ১০ কার্যদিবসের মধ্যে এ তথ্য জমা দিতে হবে।

তাই এ বিষয়ে ব্রোকারেজ হাউজ ও ডিপজেটরির ধারণকৃত শেয়ারের তথ্য একটি প্রতিবেদন আকারে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলো। সেক্ষেত্রে চলতি বছরের ৩০ জুন শেষ হওয়া প্রান্তিকে ব্যাকঅফিসে থাকা সিকিউরিটিজের সঙ্গে ডিপোজিটরিতে থাকা সিকিউরিটিজের বর্তমান অবস্থার তথ্য স্টক এক্সচেঞ্জের দেওয়া নির্ধারিত ফরম্যাটে ই-মেইলের মাধ্যমে ১৩ জুলাইয়ের মধ্যে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো। সেই সঙ্গে পরবর্তী প্রতি ত্রৈমাসিক শেষ হওয়ার পর একইভাবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তথ্য জমা দিতে বলা হয়েছে।

আরও পড়ুন: সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের আয় বেড়েছে ৩০ শতাংশ

সকল ব্রোকারেজ হাউজকে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অব ট্রেডিং রাইট এনটাইটেলম সার্টিফিকেট) রুলস, ২০২০ এর প্রবিধান ৮(৭) অবহিত করে ব্যাকঅফিস সফটওয়্যারের তথ্য জমা দেওয়ার বিষয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, সকল ট্রেকহোল্ডার কোম্পানিকে ২০২২ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত ব্যাকঅফিস সফ্টওয়্যার ব্যবহার সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য জমা দিতে নির্দেশ প্রদান করা হলো। এই বিষয়ে ব্রোকারেজ হাউজকে আগামী মঙ্গলবারের (১১ জুলাই) মধ্যে গুগল ফর্ম পূরণ করতে হবে। ওই প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে ফর্মটি পূরণ করে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো।

অপরদিকে, ডিএসই মাসিক পর্যালোচনা অর্ধবার্ষিকীর বিশেষ সংস্করণ কেনার বিষয়ে চিঠিতে জানানো হয়েছে, ইনডেক্স ম্যানেজমেন্ট, ডেটা সার্ভিসেস নিয়ে ডিএসইর প্রকাশনা বিভাগ মাসিক পর্যালোচনা অর্ধবার্ষিকীর বিশেষ সংস্করণ জুন ইস্যু প্রকাশ করতে যাচ্ছে। ইস্যুতে পুঁজিবাজারের অর্ধবার্ষিক তথ্য পর্যালোচনা করা হবে। যদি ব্রোকারেজ হাউজের অর্ধবার্ষিক বিশেষ সংস্করণের অতিরিক্ত কপি কেনার ইচ্ছা থাকে, তাহলে চিঠিতে উল্লেখিত নিয়ম বা ফরম্যাটে তথ্য জমা দিতে বলা হয়েছে।

এছাড়াও সমন্বিত গ্রাহকদের ব্যাংক হিসাবের তথ্য চাওয়া চিঠিতে বলা হয়েছে, বিএসইসির ২০২২ সালের ২ অক্টোবর জারি করা চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, সকল ব্রোকারেজ হাউজকে চলতি বছরের ১০ জুলাইয়ের মধ্যে নির্দিষ্ট নিয়মে বা ফরম্যাটে ৩০ জুন পর্যন্ত শেষ হওয়া ত্রৈমাসিকে সমন্বিত গ্রাহক ব্যাংক হিসাবের তথ্য জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলো। সেক্ষেত্রে আপনার প্রতিষ্ঠানের উল্লিখিত তথ্য এমএস এক্সেল এবং পিডিএফ উভয় ফরম্যাটে ই-মেইলের মাধ্যমে সফট কপি পাঠানোর জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো। সেই সঙ্গে প্রত্যেক ব্রোকারেজ হাউজকে পরবর্তী প্রতি ত্রৈমাসিক শেষে উক্ত তথ্য দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হলো।

আরও পড়ুন: সি অ্যান্ড এ টেক্সটাইলের বোর্ড সভার তারিখ পরিবর্তন

এদিকে, ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত ট্রেকহোল্ডার কোম্পানিগুলোর সমন্বিত গ্রাহক হিসাবের মাসিক পর্যবেক্ষণ সংক্রান্ত চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ রুলস, ২০২০ এর বিধি ৬(১) ও ৬(৫) এবং বিএসইসির ২০২১ সালের ২০ জুন জারি করা নির্দেশনা দেখার জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায়, আপনাদেরকে ২০২৩ সালের ১৮ জুন পর্যন্ত সময়ের ওপর ভিত্তি করে সমন্বিত গ্রাহক হিসাবের প্রয়োজনীয় সহায়ক নথিসহ গ্রাহকদের প্রদেয় স্থিতি সম্পর্কিত তথ্য বা নথি প্রদান করার জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে। আগামী ১০ জুলাইয়ের মধ্যে সিসিএ মডিউল ব্যবহার করে মেকার ও চেকার আইডি ব্যবহার করে এসব তথ্য প্রদান করার জন্য অনুরোধ করা হলো।

প্রসঙ্গত, বিএসইসি গত বছর ২২ মার্চ সমন্বিত গ্রাহক হিসাবে ঘাটতি থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর বিষয়ে কয়েকটি নির্দেশনা দিয়েছে। এই নির্দেশনাগুলোর মধ্যে আছে—স্টক এক্সচেঞ্জকে লিমিটি সুবিধা স্থগিত করা হবে, যোগ্য বিনিয়োগকারী হিসাবে আইপিও কোটা সুবিধা বাতিল হবে, স্টক এক্সচেঞ্জের মালিকানার বিপরীতে পাওয়া লভ্যাংশ স্থগিত থাকবে এবং ডিপোজিটরি অংশগ্রহণকারীর নিবন্ধন এবং নতুন শাখা ও বুথ খোলা বন্ধ রাখা হবে। তার আগে ২১ মার্চ বিনিয়োগকারীদের আমানত অর্থাৎ শেয়ার ও অর্থ সরিয়ে নেওয়া তামহা সিকিউরিটিজ, ক্রেস্ট সিকিউরিটিজ ও বানকো সিকিউরিটিজসহ ২৫টি ব্রোকারেজ হাউজের নিবন্ধন সনদ নবায়ন বন্ধসহ নানা সুযোগ-সুবিধা স্থগিত করা হয়।

ঢাকা/এসএ