১০:১৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ মে ২০২৪

সুযোগ না থাকলেও পদে ফিরতে চান তারিক আমিন

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৬:১৪:১০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • / ৪১৯২ বার দেখা হয়েছে

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: সম্প্রতি পদত্যাগ করা ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তারিক আমিন ভূঁইয়া আবার পদে ফিরতে চান বলে জানিয়েছেন। তার অসমাপ্ত কাজগুলো শেষ করার লক্ষ্যে ‘এমডির যে ক্ষমতা সেটি যেন তিনি প্রয়োগ করতে পারেন’ এই শর্তে তিনি দায়িত্বে ফিরতে চান বলে জানিয়েছেন। কিন্তু তার ফিরার সুযোগ কতটুকু আছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ডিএসইর চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমান বলেন, এটার কি এখন আর স্কোপ আছে? নাই।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

তারিক আমিন সম্প্রতি পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা- বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম, কমিশনার শামসুদ্দিন আহমেদ ও ডিএসইর চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমানের কাছে চিঠি লিখেছেন।

ওই চিঠিতে তিনি বলেন, ডিএসইর কর্মকর্তাদের পদোন্নতি এবং পদত্যাগের বিষয়ে তার অবস্থান ব্যাখ্যা করার সুযোগ না দিয়েই পরিচালনা পর্ষদ পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছে। এমনকি তিনি ৯ সপ্তাহের নোটিসে পদত্যাগ করলেও পর্ষদ মাত্র ২ সপ্তাহের মধ্যে তা কার্যকরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

একে ‘অত্যন্ত দুঃখজনক’ উল্লেখ করে তারিক আমিন বলেন, “আমি ডিএসইর সঙ্গে কাজ করতে অত্যন্ত আগ্রহী। স্বল্প সময় দায়িত্ব পালনকালে স্টক এক্সচেঞ্জকে দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ‘ফিন্যান্সিয়াল হাব’ হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলাম। সেগুলো বাস্তবায়ন করতে চাই।”

বিএসইসিতে দেয়া চিঠিতে তিনি বলেন, ‘পদত্যাগের বিষয়ে আমার অবস্থান ব্যাখ্যা করার সুযোগ দেয়া হোক। দেশের পুঁজিবাজারের উন্নয়নে কাজ করতে পারলে আমি খুশি হব।’

চিঠিতে তিনি বলেন, ২৫ জুলাই দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি ডিএসইর কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করেছেন। শীর্ষস্থানীয়দের সঙ্গে একা ও সম্মিলিতভাবে বসেছেন। তিনি লক্ষ করেছেন যে কিছু ভালো এবং সক্ষম কর্মী থাকা সত্ত্বেও ডিএসই ডিমিউচুয়ালাইজেশন স্কিমে নির্ধারিত উদ্দেশ্য পূরণ বা বিকাশ সাধন হয়নি।

তিনি বলেন, ১০০ দিনের কর্মপরিকল্পনা হিসেবে আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী স্টক এক্সচেঞ্জের বিকাশের জন্য কিছু মডেল ডিজাইন করেন। ‘ফাইভ-পি’ভিত্তিক ডিএসইর ‘ডিজিটাল রূপান্তর’ শীর্ষক পরিকল্পনাটি ডিএসই বোর্ডে উপস্থাপন করেন। যা ৭ সেপ্টেম্বর বোর্ডের সভায় অনুমোদন করা হয়।

তিনি বলেন, তিনি লক্ষ্য করেছেন যে, ডিএসইতে খুব সম্ভাবনাময় কর্মী রয়েছেন যারা স্টক এক্সচেঞ্জের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব দিতে পারেন। তারপরেও তাদের পদোন্নতি, পারিশ্রমিক এবং কর্মচারীদের সুবিধার বিষয়গুলো দীর্ঘদিন ধরে উপেক্ষা করা হচ্ছিল।

তারিক লেখেন, সমস্যাটি বিবেচনা করে তিনি ডিএসইর (বোর্ড এবং প্রশাসন) রেগুলেশন, ২০১৩ বিশ্লেষণ করে দেখেন যে ডিমিউচুয়ালাইজড স্টক এক্সচেঞ্জের এমডি এবং একজন পরিচালক হিসেবে যেকোনো স্তরে অফিসারদের পদোন্নতি দেয়ার ক্ষমতা রয়েছে। সেই অনুযায়ী তিনি অতিরিক্ত দায়িত্ব বরাদ্দ শুরু করেন।

তারিক ডিএসই (বোর্ড এবং প্রশাসন) রেগুলেশন, ২০১৩-এর নানা বিধান তুলে ধরে বলেন, পদোন্নতি দেয়া তার এখতিয়ারে। এই পদোন্নতি ও পারিশ্রমিকসংক্রান্ত বিষয়গুলো ৩ বছরেরও বেশি সময় ধরে অমীমাংসিত ছিল। এটি ডিএসইর কর্মচারীদের জন্য অত্যন্ত বঞ্চনার বিষয়। এসব নিয়ে তারা তার সঙ্গে একক ও সম্মিলিতভাবে আলোচনা করেছে।

তারিক চিঠি দিলেও তার পদত্যাগপত্র ফিরিয়ে নেয়ার কোনো সুযোগ নেই বলে মনে করেন ডিএসইর চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমান। তিনি বলেন, ‘এটার কি এখন আর স্কোপ আছে? নাই। উনি নিজে নিজে পদত্যাগ করেছেন। বোর্ড সেটা অ্যাকসেপ্ট করেছে। এখন উনি চিঠি দিলেই কি হবে? আমাদের বোর্ড থেকে এটা আর বিবেচনা করার সুযোগ নাই। এখন কমিশন থেকে যদি কিছু করে সেটা তাদের মতো করে চিন্তা করবে।’

বিএসইসির একজন কমিশনার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘তাকে তো কেউ রিজাইন দিতে বলেনি। তিনি নিজেই রিজাইন দিয়েছেন। বোর্ড থেকে তাকে বের করে দেয়া হলে তখন ইন্টারফেয়ার করা যেত। কিংবা তিনি কোনো অন্যায় করলে বলা যেত যে আপনি এটা করেছেন, এটার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত আপনাকে যেতে দেয়া হবে না। কিন্তু তিনি তো একজন ভালো মানুষ। এটা বলার জায়গা তো নেই। তাহলে তাকে কীভাবে আটকে রাখি?’

আরো পড়ুন: দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হলেও পিছিয়ে ব্যাংক খাত!

ঢাকা/এসএ

শেয়ার করুন

x

সুযোগ না থাকলেও পদে ফিরতে চান তারিক আমিন

আপডেট: ০৬:১৪:১০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২২

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: সম্প্রতি পদত্যাগ করা ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তারিক আমিন ভূঁইয়া আবার পদে ফিরতে চান বলে জানিয়েছেন। তার অসমাপ্ত কাজগুলো শেষ করার লক্ষ্যে ‘এমডির যে ক্ষমতা সেটি যেন তিনি প্রয়োগ করতে পারেন’ এই শর্তে তিনি দায়িত্বে ফিরতে চান বলে জানিয়েছেন। কিন্তু তার ফিরার সুযোগ কতটুকু আছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ডিএসইর চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমান বলেন, এটার কি এখন আর স্কোপ আছে? নাই।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

তারিক আমিন সম্প্রতি পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা- বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম, কমিশনার শামসুদ্দিন আহমেদ ও ডিএসইর চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমানের কাছে চিঠি লিখেছেন।

ওই চিঠিতে তিনি বলেন, ডিএসইর কর্মকর্তাদের পদোন্নতি এবং পদত্যাগের বিষয়ে তার অবস্থান ব্যাখ্যা করার সুযোগ না দিয়েই পরিচালনা পর্ষদ পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছে। এমনকি তিনি ৯ সপ্তাহের নোটিসে পদত্যাগ করলেও পর্ষদ মাত্র ২ সপ্তাহের মধ্যে তা কার্যকরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

একে ‘অত্যন্ত দুঃখজনক’ উল্লেখ করে তারিক আমিন বলেন, “আমি ডিএসইর সঙ্গে কাজ করতে অত্যন্ত আগ্রহী। স্বল্প সময় দায়িত্ব পালনকালে স্টক এক্সচেঞ্জকে দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ‘ফিন্যান্সিয়াল হাব’ হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলাম। সেগুলো বাস্তবায়ন করতে চাই।”

বিএসইসিতে দেয়া চিঠিতে তিনি বলেন, ‘পদত্যাগের বিষয়ে আমার অবস্থান ব্যাখ্যা করার সুযোগ দেয়া হোক। দেশের পুঁজিবাজারের উন্নয়নে কাজ করতে পারলে আমি খুশি হব।’

চিঠিতে তিনি বলেন, ২৫ জুলাই দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি ডিএসইর কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করেছেন। শীর্ষস্থানীয়দের সঙ্গে একা ও সম্মিলিতভাবে বসেছেন। তিনি লক্ষ করেছেন যে কিছু ভালো এবং সক্ষম কর্মী থাকা সত্ত্বেও ডিএসই ডিমিউচুয়ালাইজেশন স্কিমে নির্ধারিত উদ্দেশ্য পূরণ বা বিকাশ সাধন হয়নি।

তিনি বলেন, ১০০ দিনের কর্মপরিকল্পনা হিসেবে আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী স্টক এক্সচেঞ্জের বিকাশের জন্য কিছু মডেল ডিজাইন করেন। ‘ফাইভ-পি’ভিত্তিক ডিএসইর ‘ডিজিটাল রূপান্তর’ শীর্ষক পরিকল্পনাটি ডিএসই বোর্ডে উপস্থাপন করেন। যা ৭ সেপ্টেম্বর বোর্ডের সভায় অনুমোদন করা হয়।

তিনি বলেন, তিনি লক্ষ্য করেছেন যে, ডিএসইতে খুব সম্ভাবনাময় কর্মী রয়েছেন যারা স্টক এক্সচেঞ্জের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব দিতে পারেন। তারপরেও তাদের পদোন্নতি, পারিশ্রমিক এবং কর্মচারীদের সুবিধার বিষয়গুলো দীর্ঘদিন ধরে উপেক্ষা করা হচ্ছিল।

তারিক লেখেন, সমস্যাটি বিবেচনা করে তিনি ডিএসইর (বোর্ড এবং প্রশাসন) রেগুলেশন, ২০১৩ বিশ্লেষণ করে দেখেন যে ডিমিউচুয়ালাইজড স্টক এক্সচেঞ্জের এমডি এবং একজন পরিচালক হিসেবে যেকোনো স্তরে অফিসারদের পদোন্নতি দেয়ার ক্ষমতা রয়েছে। সেই অনুযায়ী তিনি অতিরিক্ত দায়িত্ব বরাদ্দ শুরু করেন।

তারিক ডিএসই (বোর্ড এবং প্রশাসন) রেগুলেশন, ২০১৩-এর নানা বিধান তুলে ধরে বলেন, পদোন্নতি দেয়া তার এখতিয়ারে। এই পদোন্নতি ও পারিশ্রমিকসংক্রান্ত বিষয়গুলো ৩ বছরেরও বেশি সময় ধরে অমীমাংসিত ছিল। এটি ডিএসইর কর্মচারীদের জন্য অত্যন্ত বঞ্চনার বিষয়। এসব নিয়ে তারা তার সঙ্গে একক ও সম্মিলিতভাবে আলোচনা করেছে।

তারিক চিঠি দিলেও তার পদত্যাগপত্র ফিরিয়ে নেয়ার কোনো সুযোগ নেই বলে মনে করেন ডিএসইর চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমান। তিনি বলেন, ‘এটার কি এখন আর স্কোপ আছে? নাই। উনি নিজে নিজে পদত্যাগ করেছেন। বোর্ড সেটা অ্যাকসেপ্ট করেছে। এখন উনি চিঠি দিলেই কি হবে? আমাদের বোর্ড থেকে এটা আর বিবেচনা করার সুযোগ নাই। এখন কমিশন থেকে যদি কিছু করে সেটা তাদের মতো করে চিন্তা করবে।’

বিএসইসির একজন কমিশনার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘তাকে তো কেউ রিজাইন দিতে বলেনি। তিনি নিজেই রিজাইন দিয়েছেন। বোর্ড থেকে তাকে বের করে দেয়া হলে তখন ইন্টারফেয়ার করা যেত। কিংবা তিনি কোনো অন্যায় করলে বলা যেত যে আপনি এটা করেছেন, এটার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত আপনাকে যেতে দেয়া হবে না। কিন্তু তিনি তো একজন ভালো মানুষ। এটা বলার জায়গা তো নেই। তাহলে তাকে কীভাবে আটকে রাখি?’

আরো পড়ুন: দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হলেও পিছিয়ে ব্যাংক খাত!

ঢাকা/এসএ