নিত্যপণ্যের আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদনে জোর দিতে বলা হয়েছে বৈঠকে। পেঁয়াজের আমদানি অনুমতিপত্র (আইপি) বজায় রাখার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে, যাতে ভারতসহ পেঁয়াজ রপ্তানিকারক দেশগুলো রপ্তানি বন্ধ করে দিলে বাংলাদেশের কোনো সমস্যা না হয়। ভোজ্যতেলের ক্ষেত্রেও শুধু সয়াবিন ও পাম তেলের ওপর নির্ভর না করে সূর্যমুখী, সরিষা ও রাইসব্র্যান তেল উৎপাদনের তাগিদ দেওয়া হয়। বৈঠকে দ্বিতীয় সভার সিদ্ধান্ত কতটুকু বাস্তবায়িত হয়েছে, তা নিয়েও আলোচনা হয়।
বাণিজ্যসচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে বাড়লে দেশীয় বাজারে বাড়ে, কিন্তু কমলে আর কমে না, এমন ধারণা আমরা ভেঙে দিয়েছি ভোজ্যতেল দিয়ে। আগামী মাসে এ ভোজ্যতেলের দাম সমন্বয় নিয়ে আবার বৈঠক হবে। খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি বন্ধের বিষয়ে এফবিসিসিআই সহযোগিতা করবে বলে আশ্বাস দিয়েছে।’
বৈঠকে জানানো হয়, আজ বুধবার থেকে হ্রাসকৃত মূল্যে (১৮৫ টাকা লিটার) সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে কি না, সেটি তদারকি করবে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
নতুন দামের সয়াবিন তেল বাজারে পাওয়া যাচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে এবার অভিযানে নামছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। বুধবার থেকে সারা দেশে ওই অভিযান পরিচালনার ঘোষণা দিয়েছে সরকারি সংস্থাটি। আজ মঙ্গলবার এক বার্তায় সংস্থাটির মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।
সফিকুজ্জামান বলেন, ‘আগামীকাল সকাল ১০টায় সারা দেশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আমি অনলাইনে সভা করব। এরপর ১২টায় সারা দেশে একযোগে ভোজ্যতেলের নতুন মূল্য কার্যকর বিষয়ে অভিযান চলবে।’
বিশ্ববাজারে দাম কমার পর দেশেও সয়াবিনের দাম কমিয়েছে উৎপাদক ও বাজারজাতকারী কোম্পানিগুলো। প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ১৪ টাকা কমিয়ে করা হয়েছে ১৮৫ টাকা, আগে এ দাম ছিল ১৯৯ টাকা। এ ছাড়া ২ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ৩৯৮ টাকা থেকে কমিয়ে করা হয়েছে ৩৭০ টাকা। আর ৫ লিটারের বোতলজাত সয়াবিনের দাম ৯৮০ টাকা থেকে কমিয়ে করা হয়েছে ৯১০ টাকা।
বৈঠকে ২০২০-২১ এবং ২০২১-২২ অর্থবছরে চিনি, সয়াবিন ও পাম তেলের ঋণপত্র (এলসি) খোলা ও নিষ্পত্তির চিত্র তুলে ধরা হয়। ২০২০-২১ অর্থবছরে ১৯ লাখ ৫৯ হাজার ৯৪০ টন অপরিশোধিত চিনি আমদানির এলসি খোলা হয়। পরের অর্থবছরে খোলা হয় ২২ লাখ ৫১ হাজার টনের এলসি। এক বছরের ব্যবধানে ২ লাখ ৯১ হাজার ৬১ টন চিনি আমদানির এলসি বেশি খোলা হয়। পরিশোধিত চিনিও ৩৫ হাজার ৭৭৩ টনের জায়গায় হয় ১ লাখ ২৭ হাজার ৩৬৭ টন।
ঢাকা/টিএ