৩৩ ঘণ্টা ধরে গাড়ি চালানোয় ক্লান্ত ছিলেন চালক

- আপডেট: ০১:১৩:২৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ মার্চ ২০২৩
- / ১০৫৭৯ বার দেখা হয়েছে
মাদারীপুরের শিবচরের কুতুবপুর এলাকায় ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাসের ১৯ যাত্রী নিহতের ঘটনায় চালকের ক্লান্তি এবং অতিরিক্ত ঘুম দায়ী বলে জানিয়েছেন হাইওয়ে পুলিশ। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ৩৩ ঘণ্টারও বেশি সময় বাস চালিয়ে ক্লান্ত ছিলেন গাড়িচালক জাহিদ হাসান (৪৫)।
শিবচর হাইওয়ে পুলিশের ওসি আবু নাঈম মো. মোফাজ্জেল হক বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে জেনেছি ইমাদ পরিবহনের বাসটির চালক কোনও বিশ্রাম না নিয়েই বাসটি চালাচ্ছিলেন। দীর্ঘ ৩৩ ঘণ্টা ধরে গাড়ি চালানোয় তিনি ক্লান্ত ছিলেন। সকালে ঘুম চোখে বাস চালানোয় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন তিনি।’
অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুক–টুইটার–লিংকডইন–ইন্সটাগ্রাম–ইউটিউব
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বাদী হয়ে ইমাদ পরিবহন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করেছি। চালক বেঁচে থাকলে চালক ও কোম্পানি উভয়ের বিরুদ্ধেই মামলা হতো।’
ফরিদপুর জোনের হাইওয়ে পুলিশ সুপার মাহাবুবুল হাসান বলেন, ‘বাসটির ফিটনেসে ও যান্ত্রিক ত্রুটি রয়েছে। আমরা তদন্ত কমিটি করেছি। তদন্ত শেষে বাসটির মালিকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
খুলনা থেকে ছেড়ে আসা ইমাদ পরিবহনের বাসটি রবিবার (১৯ মার্চ) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে শিবচরের পাঁচ্চর পার হয়ে কুতুবপুর সংলগ্ন এক্সপ্রেসওয়েতে এসে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এক্সপ্রেসওয়ের আন্ডারপাসের পাশে সংযোগ সড়কে আছড়ে পড়ে। এ সময় বাসটির একটি অংশ আন্ডারপাসের উপর এবং অন্য অংশ এক্সপ্রেসওয়ের ঢালুতে ঝুলে ছিল। ঘটনাস্থলেই নিহত হন ১৪ জন। শিবচর হাসপাতালে তিন জন এবং ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আরও দুই জনের মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন: উদ্ধারে বিশেষ অবদানের জন্য পদক পাচ্ছে র্যাবের কুকুর
এদিন বিকালে চালক জাহিদের ছেলে রাতুল হাসান বাবার লাশ শনাক্ত করার জন্য শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘মাসে দুই দিন বাড়ি আসতে পারতেন বাবা। গাড়ি চালিয়ে তিনি সব সময় ক্লান্ত থাকেন। গত পরশু ঢাকা, পিরোজপুর, খুলনা রুটে পাঁচটি ট্রিপে গাড়ি চালিয়েছেন। বাবা শনিবার রাতে ফোনে জানিয়েছিলেন তিনি অনেক ক্লান্ত। রবিবার ঢাকা থেকে এসে বাসায় এক দিন বিশ্রাম নেবেন বলেছিলেন। কিন্তু বাবা আমাদের চিরতরে ফাঁকি দিয়ে চলে গেলেন।’
শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজিবুল ইসলাম জানান, ‘শিবচরে ১৭ জনের মরদেহ ছিল। রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত শনাক্তকৃতদের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। পাশাপাশি নিহতদের প্রত্যেক পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা এবং আহতদের ৫ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে।’
ঢাকা/এসএ