০১:০০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

অর্থবছরের শুরুতে পণ্য আমদানি কমেছে

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১০:৫৪:০৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / ১০৩৬৯ বার দেখা হয়েছে

ফাইল ফটো

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের শুরুতে পণ্য আমদানি কমতে শুরু করেছে। অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় পণ্য আমদানির পরিমাণ কমে গেছে। আবার জুলাই মাসের তুলনায় আগস্টে আমদানি কম হয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আমদানির পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

পণ্য আমদানির ঋণপত্র খোলার পর পণ্য আনতে দেশভেদে ১৫ দিন থেকে দুই মাসের মতো সময় লাগে। এর মধ্যে ভারতসহ প্রতিবেশী দেশ থেকে পণ্য আমদানিতে সময় লাগে কম। স্থলবন্দর দিয়ে আমদানির ক্ষেত্রে ঋণপত্র খোলার এক-দুই সপ্তাহের পণ্য হাতে পান ব্যবসায়ীরা। তবে ভারতের বাইরে অন্য দেশ থেকে পণ্য আমদানির ঋণপত্র খোলার পর পণ্য হাতে পেতে দেশভেদে ৩০-৬০ দিন সময় লাগে।

চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরু হয়। একপর্যায়ে তা সরকার পতনের আন্দোলনে রূপ নেয়। গত ৫ আগস্ট দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর অনেক আওয়ামী লীগ সমর্থক ব্যবসায়ী গা ঢাকা দেন। এই পটপরিবর্তনের পর ঋণপত্র খোলা হয়েছে কম, যার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে আগস্টে।

এনবিআরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৩ সালের জুলাই-আগস্টে অর্থাৎ গত অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে পণ্য আমদানি হয়েছিল ২ কোটি ১১ লাখ টন। সেখানে চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে আমদানি গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে সোয়া ৬ শতাংশ কমে দাঁড়ায় ১ কোটি ৯৮ লাখ টনে।

পরিমাণের দিক থেকে আমদানি কমলেও আমদানি খরচ বেড়েছে। ২০২৩ সালের জুলাই-আগস্টে যেসব পণ্য আমদানি হয়েছিল, তাতে ব্যয় হয়েছিল ১ হাজার ১৯৯ কোটি মার্কিন ডলার। চলতি অর্থবছরের একই সময়ে এই খরচ বেড়ে দাঁড়ায় ১ হাজার ২২৮ কোটি ডলার। সেই হিসাবে আমদানিতে ব্যয় বেড়েছে ২ দশমিক ৪৫ শতাংশ। এই হিসাবে প্রচ্ছন্ন আমদানিও রয়েছে।

আরও পড়ুন: রিজার্ভের পরিমাণ জানালো বাংলাদেশ ব্যাংক

পণ্য আমদানি ও আমদানি ব্যয় সবচেয়ে বেশি কমেছে গত আগস্টে। ২০২৩ সালের আগস্টে ৬২০ কোটি ডলারের সমমূল্যের ১ কোটি ১৪ লাখ টন পণ্য আমদানি হয়েছিল। এ বছর একই সময়ে ৬১২ কোটি ডলারের সমমূল্যের প্রায় ৯৩ লাখ টন পণ্য আমদানি হয়। সেই হিসাবে আগস্টে আমদানি পরিমাণে কমেছে ১৮ শতাংশ।

অনিশ্চয়তার সময়ে ব্যবসায়ীরা ধীরে চলো নীতি গ্রহণ করেন। বিশেষ করে দেশে বিক্রি হয়, এমন পণ্যের চাহিদা কমে যায়। এতে আমদানি প্রতিস্থাপক কারখানার কাঁচামাল ও বাণিজ্যিক পণ্যের আমদানিও কমে।

তবে রপ্তানিমুখী শিল্পের কাঁচামালের আমদানি বেড়েছে। গত বছরের জুলাই-আগস্টে রপ্তানিমুখী শিল্পের কাঁচামাল আমদানি হয় সাড়ে ৮ লাখ টন। চলতি অর্থবছরের জুলাই-আগস্টে তা বেড়ে দাঁড়ায় সাড়ে ৯ লাখ টন।

পণ্য আমদানি বাড়লে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাড়ে। বিশেষ করে কাঁচামাল আমদানি বেড়ে যাওয়ার অর্থ হলো দেশে শিল্প খাতে উৎপাদন বৃদ্ধি পাওয়া। যন্ত্রপাতি আমদানি বাড়লে বিনিয়োগ বাড়ে। এমনকি বাণিজ্যিক পণ্য আমদানি বাড়লেও দেশে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাড়ছে বলে ধরে নেওয়া হয়। আর আমদানি কমলে উৎপাদনসহ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড কমে যাওয়ার শঙ্কা থাকে।

ঢাকা/এসএইচ

ট্যাগঃ

শেয়ার করুন

error: Content is protected ! Please Don't Try!

অর্থবছরের শুরুতে পণ্য আমদানি কমেছে

আপডেট: ১০:৫৪:০৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের শুরুতে পণ্য আমদানি কমতে শুরু করেছে। অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় পণ্য আমদানির পরিমাণ কমে গেছে। আবার জুলাই মাসের তুলনায় আগস্টে আমদানি কম হয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আমদানির পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

পণ্য আমদানির ঋণপত্র খোলার পর পণ্য আনতে দেশভেদে ১৫ দিন থেকে দুই মাসের মতো সময় লাগে। এর মধ্যে ভারতসহ প্রতিবেশী দেশ থেকে পণ্য আমদানিতে সময় লাগে কম। স্থলবন্দর দিয়ে আমদানির ক্ষেত্রে ঋণপত্র খোলার এক-দুই সপ্তাহের পণ্য হাতে পান ব্যবসায়ীরা। তবে ভারতের বাইরে অন্য দেশ থেকে পণ্য আমদানির ঋণপত্র খোলার পর পণ্য হাতে পেতে দেশভেদে ৩০-৬০ দিন সময় লাগে।

চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরু হয়। একপর্যায়ে তা সরকার পতনের আন্দোলনে রূপ নেয়। গত ৫ আগস্ট দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর অনেক আওয়ামী লীগ সমর্থক ব্যবসায়ী গা ঢাকা দেন। এই পটপরিবর্তনের পর ঋণপত্র খোলা হয়েছে কম, যার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে আগস্টে।

এনবিআরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৩ সালের জুলাই-আগস্টে অর্থাৎ গত অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে পণ্য আমদানি হয়েছিল ২ কোটি ১১ লাখ টন। সেখানে চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে আমদানি গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে সোয়া ৬ শতাংশ কমে দাঁড়ায় ১ কোটি ৯৮ লাখ টনে।

পরিমাণের দিক থেকে আমদানি কমলেও আমদানি খরচ বেড়েছে। ২০২৩ সালের জুলাই-আগস্টে যেসব পণ্য আমদানি হয়েছিল, তাতে ব্যয় হয়েছিল ১ হাজার ১৯৯ কোটি মার্কিন ডলার। চলতি অর্থবছরের একই সময়ে এই খরচ বেড়ে দাঁড়ায় ১ হাজার ২২৮ কোটি ডলার। সেই হিসাবে আমদানিতে ব্যয় বেড়েছে ২ দশমিক ৪৫ শতাংশ। এই হিসাবে প্রচ্ছন্ন আমদানিও রয়েছে।

আরও পড়ুন: রিজার্ভের পরিমাণ জানালো বাংলাদেশ ব্যাংক

পণ্য আমদানি ও আমদানি ব্যয় সবচেয়ে বেশি কমেছে গত আগস্টে। ২০২৩ সালের আগস্টে ৬২০ কোটি ডলারের সমমূল্যের ১ কোটি ১৪ লাখ টন পণ্য আমদানি হয়েছিল। এ বছর একই সময়ে ৬১২ কোটি ডলারের সমমূল্যের প্রায় ৯৩ লাখ টন পণ্য আমদানি হয়। সেই হিসাবে আগস্টে আমদানি পরিমাণে কমেছে ১৮ শতাংশ।

অনিশ্চয়তার সময়ে ব্যবসায়ীরা ধীরে চলো নীতি গ্রহণ করেন। বিশেষ করে দেশে বিক্রি হয়, এমন পণ্যের চাহিদা কমে যায়। এতে আমদানি প্রতিস্থাপক কারখানার কাঁচামাল ও বাণিজ্যিক পণ্যের আমদানিও কমে।

তবে রপ্তানিমুখী শিল্পের কাঁচামালের আমদানি বেড়েছে। গত বছরের জুলাই-আগস্টে রপ্তানিমুখী শিল্পের কাঁচামাল আমদানি হয় সাড়ে ৮ লাখ টন। চলতি অর্থবছরের জুলাই-আগস্টে তা বেড়ে দাঁড়ায় সাড়ে ৯ লাখ টন।

পণ্য আমদানি বাড়লে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাড়ে। বিশেষ করে কাঁচামাল আমদানি বেড়ে যাওয়ার অর্থ হলো দেশে শিল্প খাতে উৎপাদন বৃদ্ধি পাওয়া। যন্ত্রপাতি আমদানি বাড়লে বিনিয়োগ বাড়ে। এমনকি বাণিজ্যিক পণ্য আমদানি বাড়লেও দেশে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাড়ছে বলে ধরে নেওয়া হয়। আর আমদানি কমলে উৎপাদনসহ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড কমে যাওয়ার শঙ্কা থাকে।

ঢাকা/এসএইচ