শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পথে মার্ক্সবাদী দিশানায়েক

- আপডেট: ০২:৩২:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
- / ১০৩৬৮ বার দেখা হয়েছে
শ্রীলঙ্কায় গণ-বিক্ষোভ পরবর্তী প্রথম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট গণনায় প্রাথমিকভাবে এগিয়ে আছেন মার্ক্সবাদী নেতা হিসেবে পরিচিত অনুড়া কুমারা দিশানায়েকে। শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাতে দেশটির নির্বাচন কমিশন জানিছে রবিবার (২২ সেপ্টেম্বর) প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ করা হবে।
অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুক–টুইটার–লিংকডইন–ইন্সটাগ্রাম–ইউটিউব
শ্রীলঙ্কার এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী ছিলেন ৩৯ জন। তবে ভোট গ্রহণ শেষে তিনজনের নাম আলোচনায় শোনা যাচ্ছে। তাঁদের একজন বর্তমান প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে। একজন বিরোধী দল সঙ্গী জন বালাওয়াগার (এসজেবি) নেতা ও গুপ্তহত্যার শিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট রানাসিংহে প্রেমাদাসার ছেলে সাজিথ প্রেমাদাসা। অন্যজন ন্যাশনাল পিপলস পাওয়ার (এনপিপি) জোটের অনুড়া কুমারা দিশানায়েকে।
রোববার সকাল পর্যন্ত গণনা শেষ হওয়া দশ লাখ ভোটের মধ্যে দিসানায়েকে প্রায় ৫৩ শতাংশ ভোট পেয়েছেন বলে শ্রীলঙ্কার নির্বাচন কমিশন জানিছেন। প্রাথমিক ফলাফলে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন শ্রীলঙ্কার বর্তমান বিরোধী দলের নেতা সজিথ প্রেমাদাসা। দশ লাখ ভোটের মধ্যে তিনি পেয়েছেন প্রায় ২২ শতাংশ। আর এর পরেই রয়েছেন স্বতন্ত্রপ্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা বর্তমান প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে।
গতকাল রাতে শ্রীলঙ্কার নির্বাচন কমিশন জানায়, দেশব্যাপী ভোট গণনা শুরু হয়েছে। এদিন রাতের মধ্যেই ভোটের ফলাফল চলে আসতে পারে বলে জানিয়েছিলেন কমিশনের কর্মকর্তারা। তবে রোববার সরকারিভাবে চূড়ান্ত ফলাফল জানা যেতে পারে। দেশটির এক কোটি ৭০ লাখ ভোটারের মধ্যে প্রায় ৭৫ শতাংশ এবারের নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানিয়েছে নির্বাচন কর্মকর্তারা।
নির্বাচনে এই তিন প্রার্থীর মধ্যে যে–ই জয়ী হোন তাঁকে ঋণে জর্জরিত শ্রীলঙ্কার ভেঙে পড়া অর্থনীতিকে ঘুরে দাঁড় করানোর চ্যালেঞ্জ নিতে হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। গণনায় প্রথমিকভাবে এগিয়ে থাকা কুমারা দিশানায়েকের জোট এনপিপির মধ্যে রয়েছে তাঁর দল মার্ক্সপন্থী জনতা বিমুক্তি পেরেমুনা (জেভিপি)। দলটি অনেক আগে থেকেই অধিকতর জোরালো রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপ, কর হ্রাস ও সংরক্ষণবাদী বাজার অর্থনৈতিক নীতিকে সমর্থন করে আসছে।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে ঘাঁটিতে হামলা, ৮ সেনা নিহত
যদিও বর্তমানে পার্লামেন্টে জেভিপির মাত্র তিনটি আসন রয়েছে, তবুও ৫৫ বছর বয়সী দিশানায়েকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ এবং আরও দরিদ্রবান্ধব নীতি গ্রহণ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নিজের পক্ষে জনসমর্থন অনেকটাই বাড়িয়েছেন। নিজেকে একজন সংস্কারপন্থী প্রার্থী হিসেবে উপস্থাপন করেছেন দিশানায়েকে। প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তিনি ক্ষমতায় আসার ৪৫ দিনের মধ্যে পার্লামেন্ট ভেঙে দেবেন। এর মধ্য দিয়ে সাধারণ নির্বাচনে নিজ নীতির পক্ষে নতুন ম্যান্ডেট পেতে চান তিনি।
ইতিমধ্যে বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলী সাবরি এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক বার্তায় বলেছেন, ‘দীর্ঘ ও ক্লান্তিকর এক প্রচার শেষে নির্বাচনের ফলাফল এখন পরিষ্কার। যদিও আমি প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহের পক্ষে ব্যাপকভাবে প্রচার চালিয়েছি, তবে শ্রীলঙ্কার জনগণ তাঁদের মতামত জানিয়ে দিয়েছেন। অনুড়া কুমারা দিশানায়েকের পক্ষে তাঁদের সমর্থনকে আমি পুরোপুরি শ্রদ্ধা জানাই।’
২০২২ সালের ১৩ জুলাই গণ-বিক্ষোভের মুখে শ্রীলঙ্কায় রাজাপাকসা সরকারের পতন হয়। দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসা। ওই ঘটনার এক সপ্তাহ পর বর্তমান প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করে।
গণ-বিক্ষোভের ২ বছর পর অনুষ্ঠিত এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে নানাদিক থেকেই গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। বিশেষ করে নতুন নির্বাচিত প্রেসিডেন্টকে দুর্নীতিতে জর্জরিত শ্রীলঙ্কার ভেঙে পড়া অর্থনীতিকে ঘুরে দাঁড় করানোর চ্যালেঞ্জ নিতে হবে।
ঢাকা/এসএইচ