১২:০৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সাংবাদিক তুহিনকে নৃশংস হত্যার বিচার দ্রুত নিশ্চিতের দাবি

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১১:৫৭:৪৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৫
  • / ১০৩৮৪ বার দেখা হয়েছে

দৈনিক প্রতিদিনের কাগজের গাজীপুর প্রতিনিধি আসাদুজ্জামান কে তুহিন প্রকাশ্যে নৃশংশ হত্যাকান্ডের প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে কদমতলী থানা সাংবাদিক ক্লাব ও সচেতন নাগরিক সমাজ।

এই বর্বর হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে কদমতলী থানা সাংবাদিক ক্লাবের উদ্যোগে শনিবার (৯ আগষ্ট) বেলা ১২টায় রাজধানীর রায়েরবাগ বাসস্ট্যান্ডে এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে উপস্থিত ছিলেন রাজধানী ও আশপাশের বিভিন্ন গণমাধ্যমের এক ঝাঁক প্রতিনিধিরা।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

এটিএন বাংলার বিশেষ প্রতিনিধি আলী আজগর ইমন বলেন, ‘এই দেশে একমাত্র সাংবাদিককে হয়রানি মারধর এমনকি হত্যা করাই সহজ কাজ। কারণ কোন সাংবাদিক এই নির্মম পরিনতির শিকার হলে তার সহকর্মীরাই দৃঢ় প্রতিবাদ বা আন্দোলনে নামেন না। মিডিয়াগুলো ফলাও করে প্রকাশ করে না ঘটনার আদ্যপান্ত। পেশার জায়গায় দেশের সকল সাংবাদিকরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে বারবার তাদের এই করুণ পরিনতি ভোগ করতে হতো না।’

সংগঠনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও বিজনেস জার্নাল -এর প্রকাশক ও সম্পাদক হাসান কবির জনি বলেন, ‘গাজীপুরের মাটি রক্তে রঞ্জিত, আমাদের সহকর্মী, সত্যনিষ্ঠ সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন-কে প্রকাশ্যে, দিনের আলোয়, নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। এ আমরা কোন দেশে বাস করছি যেখানে শত শত মানুষের সামনেই একটা মানুষকে কুপিয়ে মেরে ফেলা হয়?’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ভুলে যাইনি সাগর-রুনী হত্যার কথা। বছর পেরিয়ে গেছে, সরকার বদলেছে, কিন্তু সেই নৃশংস হত্যার বিচার আজও হয়নি। আমরা ভুলে যাইনি সেই সব সহকর্মীর কথা, যারা গুম হয়েছেন, খুন হয়েছেন, অথবা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন—শুধু কলমকে ধারালো রাখার অপরাধে।’

হাসান কবির জনি বলেন, আজ আমরা পরিষ্কার ভাষায় জানিয়ে দিচ্ছি-

আমরা ভীত নই! আমরা চুপ করে থাকব না! আমরা হত্যাকারীদের নাম প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত, সকল হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত, বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমাদের প্রতিবাদ থামবে না! আজ আমরা দাবি জানাচ্ছি- আসাদুজ্জামান তুহিন হত্যার দ্রুত, স্বচ্ছ ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে, দ্রুত সময়ের মধ্যে সাগর-রুনী সহ সব সাংবাদিক হত্যার বিচার সম্পন্ন করতে হবে, সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য কার্যকর আইন ও বাস্তব পদক্ষেপ নিতে হবে এবং গুম, খুন, হামলা ও হয়রানির সঙ্গে জড়িত সব দুর্বৃত্তের বিচার ও শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

এশিয়ান টিভির সিনিয়র রিপোর্টার এম এইচ রনি বলেন, আজ আমরা কি দেখতে পাচ্ছি? আজ আমরা দেখলাম গাজীপুরে আমাদের সহকর্মী আনোয়ার ভাইয়ের পা যখন পাথর দিয়ে থেতলে দিচ্ছে তখন পাশেই পুলিশ দাঁড়িয়ে ছিলো। পুলিশ তখন কোন অ্যাকশনে না গিয়ে তাদেরকে দূরে নিয়ে মারতে বললো- এটা কোন পুলিশ? তাই আগে আমি প্রথম এইসব পুলিশের বিচার চাই। পাশাপাশি সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে যতো ধরনের পদক্ষেপ আছে তা নেওয়ার জন্য সরকারকে আহ্বান জানাই।

সভাপতির বক্তব্যে সংগঠনের সভাপতি ও নতুন সময়ের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক কাঞ্চন চৌধুরীর সুমন বলেন, সাংবাদিকদের ওপর গুম খুন নির্যাতন মেনে নেয়া যায় না। তাই আমি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বলতে চাই আপনারা দ্রুত এইসব হত্যাকাণ্ডের বিচার করুন এবং সাংবাদিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করুন। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, আপনারা যদি আমাদের স্বার্থ রক্ষা করতে না পারেন, তাহলে আমাদের স্বার্থ রক্ষার দায়িত্ব আমাদেরকেই নিতে হবে।

আরও পড়ুন: সাংবাদিক হত্যাকাণ্ডে সরাসরি ৮ জন সম্পৃক্ত: জিএমপি কমিশনার

ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক মানবকণ্ঠ-এর সাংবাদিক সোলাইমানের সঞ্চালনায় সভার সভাপতিত্ব করেন দৈনিক নতুন সময়-এর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক সুমন চৌধুরী। মানববন্ধনে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এটিএন বাংলার বিশেষ প্রতিনিধি আলী আসগর ইমন।

সাংবাদিক নেতৃবৃন্দদের প্রতিবাদের আলোচনায় উঠে আসে, সময়ের সাহসী কলম যোদ্ধার জীবনাবসান রক্তস্রোতে ভেসে আজ রাস্তায়। গত ৭ আগষ্ট বৃহস্পতিবার রাত ৮ টার সময় গাজীপুর চান্দিনা চৌরাস্তায় মসজিদ মার্কেট সামনে দৈনিক প্রতিদিন এর সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন কে অস্ত্রধারী চাঁদাবাজ সন্ত্রাসী খুনিরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা নিশ্চিত করে রাস্তায় ফেলে রেখে বীরদর্পে শতশত মানুষের সামনে দিয়ে চলে যায়।

একই দিন গাজীপুর সদর থানার সামনে পুলিশ ও শতশত মানুষের সামনে আরেকজন সহকর্মী সাংবাদিক ভাই আনোয়ারকে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী চাঁদাবাজরা মেরে বুকের উপরে লাফিয়ে নির্মমভাবে নির্যাতন করে রক্তাক্ত জখম ও দুই পা ইট দিয়ে থেতলে মৃতপ্রায় অবস্থায় রাস্তায় ফেলে রেখে চলে যায়।

কি নৃশংস হত্যাকাণ্ড! কত নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে কলম যোদ্ধা সৈনিক কে! রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভের দুইজন কলম যোদ্ধা সৈনিক কালো পিচের রাজপথে রক্তে রঞ্জিত হয়ে আছে। উপস্থিত সাংবাদিক সমাজ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, যদি দ্রুত হত্যাকারীদের বিচার নিশ্চিত না হয়, তবে তারা কঠোর আন্দোলনে যাবে। এই নির্মম হত্যাকাণ্ডে পেশাদার সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। এই ধরনের অপরাধের দৃষ্টান্তমূলক বিচার না হলে স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিবেশ আরো সংকটপূণ্য হয়ে উঠবে।

এছাড়াও মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নিউজ টুয়েন্টি ফোর-এর সিনিয়র রিপোর্টার জাহিদুল ইসলাম সুজন, আজকের টাইমস-এর নিউজরুম এডিটর রাকিব হোসেন মিলন, কালের কণ্ঠ-এর মোস্তাফিজুর রহমান মিলন, সকালের সময়-এর মাহমুদুল হাসান, নিউজ টুয়েন্টি ওয়ান-এর রনি মজুমদার, দৈনিক কালবেলা ত্বকী, স্বাধীন সংবাদ-এর সম্পাদক আনোয়ার আকাশ এবং জাতীয়তাবাদী সাংবাদিক ফোরামের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক জাকির মাঝি। প্রতিদিন খবরের- সম্পাদক ও জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহকারী মহাসচিব সরকার জামাল।

এছাড়াও কদমতলী থানা সাংবাদিক ক্লাবের পক্ষ থেকে প্রেজেন্ট টাইমস-এর মোল্লা নাসিরউদ্দিন, স্বাধীন সংবাদ-এর বাবলু শেখ, আলোর জগত-এর অর্ণব, রুদ্রসহ আরও অনেকে উপস্থিত থেকে কর্মসূচিকে সফল করে তোলেন। এই মানববন্ধনে গণমাধ্যমকর্মীদের ব্যাপক অংশগ্রহণ ছিল।

ঢাকা ৪ ও ৫ আসনের সাংবাদিক বৃন্দ এবং কদমতলী থানা সাংবাদিক ক্লাব ও কদমতলী থানা প্রেসক্লাব যৌথ বিবৃতিতে দুইটি নৃশংস ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ মানববন্ধনের মাধ্যমে জানানো হয়। সেই সাথে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী চাঁদাবাজ খুনিদের সহ এর পিছনে ইন্ধন দাতাদের অতি দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে উপযুক্ত শাস্তি দাবি করা হয়।

আরও পড়ুন: সাংবাদিক তুহিনকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে স্বাধীন: র‌্যাব

গাজীপুর মহানগরীর চন্দনা চৌরাস্তা এলাকায় সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে (৩৮) কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে এখন পর্যন্ত আটজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মো. মিজান ওরফে কেটু মিজান, তার স্ত্রী গোলাপি, আল আমিন, মো. স্বাধীন, শাহজালাল, ফয়সাল হাসান, মো. সুমন ও শহিদুল । গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) উপকমিশনার রবিউল হাসান।

তিনি বলেন, রাতে পুলিশের যৌথ তিনটি ইউনিট পৃথক পৃথক জায়গায় অভিযান চালিয়ে ওই আটজনকে গ্রেফতার করে। আসামিগণ স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দী দিয়েছেন তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে দুই দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। পুলিশ কমিশনার বলেছেন, কোন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়নি, আসামিদের অপরাধ তারা অপরাধী।

ঢাকা/এসএ

শেয়ার করুন

সাংবাদিক তুহিনকে নৃশংস হত্যার বিচার দ্রুত নিশ্চিতের দাবি

আপডেট: ১১:৫৭:৪৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৫

দৈনিক প্রতিদিনের কাগজের গাজীপুর প্রতিনিধি আসাদুজ্জামান কে তুহিন প্রকাশ্যে নৃশংশ হত্যাকান্ডের প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে কদমতলী থানা সাংবাদিক ক্লাব ও সচেতন নাগরিক সমাজ।

এই বর্বর হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে কদমতলী থানা সাংবাদিক ক্লাবের উদ্যোগে শনিবার (৯ আগষ্ট) বেলা ১২টায় রাজধানীর রায়েরবাগ বাসস্ট্যান্ডে এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে উপস্থিত ছিলেন রাজধানী ও আশপাশের বিভিন্ন গণমাধ্যমের এক ঝাঁক প্রতিনিধিরা।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

এটিএন বাংলার বিশেষ প্রতিনিধি আলী আজগর ইমন বলেন, ‘এই দেশে একমাত্র সাংবাদিককে হয়রানি মারধর এমনকি হত্যা করাই সহজ কাজ। কারণ কোন সাংবাদিক এই নির্মম পরিনতির শিকার হলে তার সহকর্মীরাই দৃঢ় প্রতিবাদ বা আন্দোলনে নামেন না। মিডিয়াগুলো ফলাও করে প্রকাশ করে না ঘটনার আদ্যপান্ত। পেশার জায়গায় দেশের সকল সাংবাদিকরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে বারবার তাদের এই করুণ পরিনতি ভোগ করতে হতো না।’

সংগঠনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও বিজনেস জার্নাল -এর প্রকাশক ও সম্পাদক হাসান কবির জনি বলেন, ‘গাজীপুরের মাটি রক্তে রঞ্জিত, আমাদের সহকর্মী, সত্যনিষ্ঠ সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন-কে প্রকাশ্যে, দিনের আলোয়, নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। এ আমরা কোন দেশে বাস করছি যেখানে শত শত মানুষের সামনেই একটা মানুষকে কুপিয়ে মেরে ফেলা হয়?’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ভুলে যাইনি সাগর-রুনী হত্যার কথা। বছর পেরিয়ে গেছে, সরকার বদলেছে, কিন্তু সেই নৃশংস হত্যার বিচার আজও হয়নি। আমরা ভুলে যাইনি সেই সব সহকর্মীর কথা, যারা গুম হয়েছেন, খুন হয়েছেন, অথবা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন—শুধু কলমকে ধারালো রাখার অপরাধে।’

হাসান কবির জনি বলেন, আজ আমরা পরিষ্কার ভাষায় জানিয়ে দিচ্ছি-

আমরা ভীত নই! আমরা চুপ করে থাকব না! আমরা হত্যাকারীদের নাম প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত, সকল হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত, বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমাদের প্রতিবাদ থামবে না! আজ আমরা দাবি জানাচ্ছি- আসাদুজ্জামান তুহিন হত্যার দ্রুত, স্বচ্ছ ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে, দ্রুত সময়ের মধ্যে সাগর-রুনী সহ সব সাংবাদিক হত্যার বিচার সম্পন্ন করতে হবে, সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য কার্যকর আইন ও বাস্তব পদক্ষেপ নিতে হবে এবং গুম, খুন, হামলা ও হয়রানির সঙ্গে জড়িত সব দুর্বৃত্তের বিচার ও শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

এশিয়ান টিভির সিনিয়র রিপোর্টার এম এইচ রনি বলেন, আজ আমরা কি দেখতে পাচ্ছি? আজ আমরা দেখলাম গাজীপুরে আমাদের সহকর্মী আনোয়ার ভাইয়ের পা যখন পাথর দিয়ে থেতলে দিচ্ছে তখন পাশেই পুলিশ দাঁড়িয়ে ছিলো। পুলিশ তখন কোন অ্যাকশনে না গিয়ে তাদেরকে দূরে নিয়ে মারতে বললো- এটা কোন পুলিশ? তাই আগে আমি প্রথম এইসব পুলিশের বিচার চাই। পাশাপাশি সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে যতো ধরনের পদক্ষেপ আছে তা নেওয়ার জন্য সরকারকে আহ্বান জানাই।

সভাপতির বক্তব্যে সংগঠনের সভাপতি ও নতুন সময়ের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক কাঞ্চন চৌধুরীর সুমন বলেন, সাংবাদিকদের ওপর গুম খুন নির্যাতন মেনে নেয়া যায় না। তাই আমি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বলতে চাই আপনারা দ্রুত এইসব হত্যাকাণ্ডের বিচার করুন এবং সাংবাদিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করুন। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, আপনারা যদি আমাদের স্বার্থ রক্ষা করতে না পারেন, তাহলে আমাদের স্বার্থ রক্ষার দায়িত্ব আমাদেরকেই নিতে হবে।

আরও পড়ুন: সাংবাদিক হত্যাকাণ্ডে সরাসরি ৮ জন সম্পৃক্ত: জিএমপি কমিশনার

ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক মানবকণ্ঠ-এর সাংবাদিক সোলাইমানের সঞ্চালনায় সভার সভাপতিত্ব করেন দৈনিক নতুন সময়-এর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক সুমন চৌধুরী। মানববন্ধনে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এটিএন বাংলার বিশেষ প্রতিনিধি আলী আসগর ইমন।

সাংবাদিক নেতৃবৃন্দদের প্রতিবাদের আলোচনায় উঠে আসে, সময়ের সাহসী কলম যোদ্ধার জীবনাবসান রক্তস্রোতে ভেসে আজ রাস্তায়। গত ৭ আগষ্ট বৃহস্পতিবার রাত ৮ টার সময় গাজীপুর চান্দিনা চৌরাস্তায় মসজিদ মার্কেট সামনে দৈনিক প্রতিদিন এর সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন কে অস্ত্রধারী চাঁদাবাজ সন্ত্রাসী খুনিরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা নিশ্চিত করে রাস্তায় ফেলে রেখে বীরদর্পে শতশত মানুষের সামনে দিয়ে চলে যায়।

একই দিন গাজীপুর সদর থানার সামনে পুলিশ ও শতশত মানুষের সামনে আরেকজন সহকর্মী সাংবাদিক ভাই আনোয়ারকে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী চাঁদাবাজরা মেরে বুকের উপরে লাফিয়ে নির্মমভাবে নির্যাতন করে রক্তাক্ত জখম ও দুই পা ইট দিয়ে থেতলে মৃতপ্রায় অবস্থায় রাস্তায় ফেলে রেখে চলে যায়।

কি নৃশংস হত্যাকাণ্ড! কত নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে কলম যোদ্ধা সৈনিক কে! রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভের দুইজন কলম যোদ্ধা সৈনিক কালো পিচের রাজপথে রক্তে রঞ্জিত হয়ে আছে। উপস্থিত সাংবাদিক সমাজ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, যদি দ্রুত হত্যাকারীদের বিচার নিশ্চিত না হয়, তবে তারা কঠোর আন্দোলনে যাবে। এই নির্মম হত্যাকাণ্ডে পেশাদার সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। এই ধরনের অপরাধের দৃষ্টান্তমূলক বিচার না হলে স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিবেশ আরো সংকটপূণ্য হয়ে উঠবে।

এছাড়াও মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নিউজ টুয়েন্টি ফোর-এর সিনিয়র রিপোর্টার জাহিদুল ইসলাম সুজন, আজকের টাইমস-এর নিউজরুম এডিটর রাকিব হোসেন মিলন, কালের কণ্ঠ-এর মোস্তাফিজুর রহমান মিলন, সকালের সময়-এর মাহমুদুল হাসান, নিউজ টুয়েন্টি ওয়ান-এর রনি মজুমদার, দৈনিক কালবেলা ত্বকী, স্বাধীন সংবাদ-এর সম্পাদক আনোয়ার আকাশ এবং জাতীয়তাবাদী সাংবাদিক ফোরামের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক জাকির মাঝি। প্রতিদিন খবরের- সম্পাদক ও জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহকারী মহাসচিব সরকার জামাল।

এছাড়াও কদমতলী থানা সাংবাদিক ক্লাবের পক্ষ থেকে প্রেজেন্ট টাইমস-এর মোল্লা নাসিরউদ্দিন, স্বাধীন সংবাদ-এর বাবলু শেখ, আলোর জগত-এর অর্ণব, রুদ্রসহ আরও অনেকে উপস্থিত থেকে কর্মসূচিকে সফল করে তোলেন। এই মানববন্ধনে গণমাধ্যমকর্মীদের ব্যাপক অংশগ্রহণ ছিল।

ঢাকা ৪ ও ৫ আসনের সাংবাদিক বৃন্দ এবং কদমতলী থানা সাংবাদিক ক্লাব ও কদমতলী থানা প্রেসক্লাব যৌথ বিবৃতিতে দুইটি নৃশংস ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ মানববন্ধনের মাধ্যমে জানানো হয়। সেই সাথে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী চাঁদাবাজ খুনিদের সহ এর পিছনে ইন্ধন দাতাদের অতি দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে উপযুক্ত শাস্তি দাবি করা হয়।

আরও পড়ুন: সাংবাদিক তুহিনকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে স্বাধীন: র‌্যাব

গাজীপুর মহানগরীর চন্দনা চৌরাস্তা এলাকায় সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে (৩৮) কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে এখন পর্যন্ত আটজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মো. মিজান ওরফে কেটু মিজান, তার স্ত্রী গোলাপি, আল আমিন, মো. স্বাধীন, শাহজালাল, ফয়সাল হাসান, মো. সুমন ও শহিদুল । গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) উপকমিশনার রবিউল হাসান।

তিনি বলেন, রাতে পুলিশের যৌথ তিনটি ইউনিট পৃথক পৃথক জায়গায় অভিযান চালিয়ে ওই আটজনকে গ্রেফতার করে। আসামিগণ স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দী দিয়েছেন তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে দুই দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। পুলিশ কমিশনার বলেছেন, কোন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়নি, আসামিদের অপরাধ তারা অপরাধী।

ঢাকা/এসএ