০৮:৪২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

এলআর গ্লোবালের অর্থ আত্মসাৎ ও পাচার: তদন্তে বিএসইসি

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১১:১৭:১৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • / ১০২৭৯ বার দেখা হয়েছে

পুঁজিবাজারের অন্যতম সম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশ অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড গুরুতর অনিয়ম ও আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে নিয়ন্ত্রক সংস্থার কঠোর নজরে পড়েছে। কোম্পানিটির বিরুদ্ধে সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগটি হলো, তারা ছয়টি মিউচুয়াল ফান্ডের অর্থ অবৈধভাবে বিনিয়োগ করে আত্মসাৎ করেছে এবং বিদেশে পাচার করেছে, যা বিনিয়োগকারীদের স্বার্থকে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।

এই গুরুতর অভিযোগের প্রেক্ষিতে, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) প্রতিষ্ঠানটির সামগ্রিক কার্যক্রমের ১৬টি সুনির্দিষ্ট বিষয় তদন্তের জন্য একটি তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে। এই কমিটিকে ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত শেষ করে বিস্তারিত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

তদন্তের মূল লক্ষ্য এবং জড়িত ব্যক্তিরা

তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন বিএসইসির অতিরিক্ত পরিচালক শেখ মো. লুৎফুল কবির, উপ-পরিচালক এস. এম. আহসানুল কবির এবং সহকারী পরিচালক মো. মতিউর রহমান। এই কমিটি এলআর গ্লোবালের অধীনে পরিচালিত ছয়টি মিউচুয়াল ফান্ডের আর্থিক লেনদেন পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে খতিয়ে দেখবে। ফান্ডগুলো হলো: ডিবিএইচ ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, গ্রিন ডেল্টা মিউচুয়াল ফান্ড, এআইবিএল ফার্স্ট ইসলামিক মিউচুয়াল ফান্ড, এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশ মিউচুয়াল ফান্ড-১, এনসিসিবিএল মিউচুয়াল ফান্ড-১ এবং এমবিএল ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড।

বিএসইসির কঠোর পদক্ষেপ

তদন্ত শুরুর আগেই, বিএসইসি এই কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে। গণমাধ্যমের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে, অবৈধভাবে বিনিয়োগ করা ৪৯ কোটি টাকা সুদসহ ফেরত আনার জন্য এলআর গ্লোবালকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই নির্দেশ অমান্য করলে ৬০ কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর মধ্যে শুধু ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান বিনিয়োগ কর্মকর্তা রিয়াজ ইসলামের ওপরই ৫০ কোটি টাকা জরিমানা আরোপ করা হয়েছে।

এছাড়াও, পরিচালক জর্জ স্টককে ৪ কোটি টাকা, সাবেক লিগ্যাল অ্যান্ড কমপ্লায়েন্স প্রধান মনোয়ার হোসেনকে ৪ কোটি টাকা এবং প্রধান অর্থ কর্মকর্তা রোনাল্ড মিকি গোমেজকে ১ কোটি টাকা জরিমানা করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে, ছয়টি মিউচুয়াল ফান্ডের ওপর মোট ১ কোটি টাকা জরিমানা ধার্য করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, এলআর গ্লোবালের অনিয়ম এই প্রথম নয়, ২০১৫ সালেও তহবিল পরিচালনায় অনিয়মের জন্য বিএসইসি এই প্রতিষ্ঠানটিকে ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করেছিল। বাজার বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বর্তমান কমিশনের এই কঠোর পদক্ষেপ বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য একটি বড় ভূমিকা রাখবে এবং ভবিষ্যতে এই ধরনের অনিয়ম প্রতিরোধে দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।

ঢাকা/এসএইচ

শেয়ার করুন

এলআর গ্লোবালের অর্থ আত্মসাৎ ও পাচার: তদন্তে বিএসইসি

আপডেট: ১১:১৭:১৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

পুঁজিবাজারের অন্যতম সম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশ অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড গুরুতর অনিয়ম ও আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে নিয়ন্ত্রক সংস্থার কঠোর নজরে পড়েছে। কোম্পানিটির বিরুদ্ধে সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগটি হলো, তারা ছয়টি মিউচুয়াল ফান্ডের অর্থ অবৈধভাবে বিনিয়োগ করে আত্মসাৎ করেছে এবং বিদেশে পাচার করেছে, যা বিনিয়োগকারীদের স্বার্থকে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।

এই গুরুতর অভিযোগের প্রেক্ষিতে, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) প্রতিষ্ঠানটির সামগ্রিক কার্যক্রমের ১৬টি সুনির্দিষ্ট বিষয় তদন্তের জন্য একটি তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে। এই কমিটিকে ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত শেষ করে বিস্তারিত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

তদন্তের মূল লক্ষ্য এবং জড়িত ব্যক্তিরা

তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন বিএসইসির অতিরিক্ত পরিচালক শেখ মো. লুৎফুল কবির, উপ-পরিচালক এস. এম. আহসানুল কবির এবং সহকারী পরিচালক মো. মতিউর রহমান। এই কমিটি এলআর গ্লোবালের অধীনে পরিচালিত ছয়টি মিউচুয়াল ফান্ডের আর্থিক লেনদেন পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে খতিয়ে দেখবে। ফান্ডগুলো হলো: ডিবিএইচ ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, গ্রিন ডেল্টা মিউচুয়াল ফান্ড, এআইবিএল ফার্স্ট ইসলামিক মিউচুয়াল ফান্ড, এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশ মিউচুয়াল ফান্ড-১, এনসিসিবিএল মিউচুয়াল ফান্ড-১ এবং এমবিএল ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড।

বিএসইসির কঠোর পদক্ষেপ

তদন্ত শুরুর আগেই, বিএসইসি এই কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে। গণমাধ্যমের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে, অবৈধভাবে বিনিয়োগ করা ৪৯ কোটি টাকা সুদসহ ফেরত আনার জন্য এলআর গ্লোবালকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই নির্দেশ অমান্য করলে ৬০ কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর মধ্যে শুধু ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান বিনিয়োগ কর্মকর্তা রিয়াজ ইসলামের ওপরই ৫০ কোটি টাকা জরিমানা আরোপ করা হয়েছে।

এছাড়াও, পরিচালক জর্জ স্টককে ৪ কোটি টাকা, সাবেক লিগ্যাল অ্যান্ড কমপ্লায়েন্স প্রধান মনোয়ার হোসেনকে ৪ কোটি টাকা এবং প্রধান অর্থ কর্মকর্তা রোনাল্ড মিকি গোমেজকে ১ কোটি টাকা জরিমানা করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে, ছয়টি মিউচুয়াল ফান্ডের ওপর মোট ১ কোটি টাকা জরিমানা ধার্য করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, এলআর গ্লোবালের অনিয়ম এই প্রথম নয়, ২০১৫ সালেও তহবিল পরিচালনায় অনিয়মের জন্য বিএসইসি এই প্রতিষ্ঠানটিকে ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করেছিল। বাজার বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বর্তমান কমিশনের এই কঠোর পদক্ষেপ বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য একটি বড় ভূমিকা রাখবে এবং ভবিষ্যতে এই ধরনের অনিয়ম প্রতিরোধে দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।

ঢাকা/এসএইচ