১০:০১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪

অবশেষে ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করা ৬৬ কোম্পানির লেনদেনের সীমা নির্ধারণ

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৪:০৫:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ এপ্রিল ২০২১
  • / ৪৪৫২ বার দেখা হয়েছে

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: অবশেষে ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করে নেওয়া ৬৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়া-কমার সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারণ করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। শনিবার (১০ এপ্রিল) বিএসইসি থেকে এই সংক্রাস্ত আদেশ জারি করা হয়েছে।

নতুন আদেশ অনুযায়ী, ওই ৬৬টি কোম্পানির শেয়ার এক দিনে সর্বোচ্চ কমতে পারবে ২ শতাংশ। তবে দাম বাড়ার ক্ষেত্রে আগের মতোই ১০ শতাংশ সীমা বহাল রয়েছে।

এর আগে বিএসইসির ৬৬ কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের নির্দেশনার পরই বিনিয়োগকারীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। যার স্পষ্ট প্রমাণ মিলেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুককেন্দ্রীক শেয়ারবাজার সম্পর্কিত গ্রুপগুলোতে। সেখানে অধিকাংশ বিনিয়োগকারীই বিএসইসির এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছেন এবং বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারেরও দাবি জানিয়েছেন। তাদের মতে, গত বছরে করোনা প্রাদুর্ভাব শুরুর সময়ে বাজারে ব্যাপক দরপতন হয়। এতে অধিকাংশ বিনিয়োগকারীদের লোকসানের পরিমাণ বিনিয়োগের ৫০ শতাংশের নিচে নেমে আসে। আর সে সময়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিকনির্দেশনা অনুযায়ী সাবেক কমিশন সাধারণ ও ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের শেষ পুঁজিটুকু বাচাতে ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণ করে দেন। এতে হয়তো ওইসব শেয়ারের পতন ধরে রাখা গিয়েছে, তবে সেই লোকসান গত এক বছরেও পুষিয়ে নিতে পারেননি তারা। কারণ এই এক বছরে বাজার সূচক ও লেনদেনের দৃশ্যমান বা উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়নি। এ নিয়ে বিজনেসজার্নাল২৪.কম-এ একাধিক সংবাদও প্রকাশ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবারের বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ৬৬টি কোম্পানির মধ্যে লেনদেন হওয়া ৬৩টির মধ্যে ৬১টির আজ দর পতন হয়েছে। আর নাভানা সিএনজির দর বেড়েছে ও আরএন স্পিনিংয়ের দর অপরিবর্তিত রয়েছে। বাকি ৩ কোম্পানির শেয়ার রেকর্ড ডেট ও স্থগিতাদেশের কারনে লেনদেন হয়নি। এরমধ্যে রেকর্ড ডেটের কারনে গোল্ডেন হার্ভেস্টের শেয়ার আজ লেনদেন বন্ধ ছিল। এছাড়া বিডি সার্ভিসের শেয়ার দীর্ঘদিন ধরে বিক্রেতা না থাকায় লেনদেন হয় না এবং পিপলস লিজিংয়ের শেয়ার লেনদেন দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ করে রেখেছে স্টক এক্সচেঞ্জ।

জানা গেছে, ৬৬ কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহের পরিপ্রেক্ষিতে শেয়ারবাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। এর ফলে বিনিয়োগকারীরা ফ্লোর প্রাইস পুনর্বহালের দাবি জানায়। ওই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ৬৬টি কোম্পানির শেয়ারের সর্বোচ্চ দাম বাড়া-কমার সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি।

এ বিষয়ে বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থের কথা বিবেচনা করে ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করা ৬৬টি কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা ১০ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এছাড়া দাম কমার সর্বোচ্চ সীমা ২ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

এদিকে নিয়ন্ত্রক সংস্থার এমন সিদ্ধান্তে মানবন্ধন কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছে বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদ।

এ বিষয়ে সংগঠনটির সভাপতি মিজান-উর-রশীদ চৌধুরী বলেন, ‘বিএসইসির নতুন এ সিদ্ধান্তকে আমরা সাধুবাদ জানাই। এরই ধরাবাহিকতায় আমরা মানববন্ধন কর্মসূচি প্রত্যার করে নিয়েছি। নতুন সিদ্ধান্তের ফলে লোকসান থেকে রক্ষা পাবেন বিনিয়োগকারীরা।’

প্রসঙ্গত, গত ৭ এপ্রিল বিএসইসির ৭৬৯তম কমিশন সভায় ৬৬টি কোম্পানির শেয়ারের ওপর থেকে ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আর ৮ এপ্রিল থেকে তা কার্যকর করা হয়। ফলে গত বুধবার পর্যন্ত শেয়ারবাজারে ১১০টি কোম্পানির শেয়ার ফ্লোর প্রাইসে আটকে ছিল। বৃহস্পতিবার ৬৬টি কোম্পানির শেয়ারের ওপর থেকে ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। এখনো ৪৪টি কোম্পানির শেয়ারে ফ্লোর প্রাইস বহাল রয়েছে।

ঢাকা/জেএইচ

ট্যাগঃ

শেয়ার করুন

x
English Version

অবশেষে ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করা ৬৬ কোম্পানির লেনদেনের সীমা নির্ধারণ

আপডেট: ০৪:০৫:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ এপ্রিল ২০২১

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: অবশেষে ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করে নেওয়া ৬৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়া-কমার সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারণ করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। শনিবার (১০ এপ্রিল) বিএসইসি থেকে এই সংক্রাস্ত আদেশ জারি করা হয়েছে।

নতুন আদেশ অনুযায়ী, ওই ৬৬টি কোম্পানির শেয়ার এক দিনে সর্বোচ্চ কমতে পারবে ২ শতাংশ। তবে দাম বাড়ার ক্ষেত্রে আগের মতোই ১০ শতাংশ সীমা বহাল রয়েছে।

এর আগে বিএসইসির ৬৬ কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের নির্দেশনার পরই বিনিয়োগকারীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। যার স্পষ্ট প্রমাণ মিলেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুককেন্দ্রীক শেয়ারবাজার সম্পর্কিত গ্রুপগুলোতে। সেখানে অধিকাংশ বিনিয়োগকারীই বিএসইসির এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছেন এবং বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারেরও দাবি জানিয়েছেন। তাদের মতে, গত বছরে করোনা প্রাদুর্ভাব শুরুর সময়ে বাজারে ব্যাপক দরপতন হয়। এতে অধিকাংশ বিনিয়োগকারীদের লোকসানের পরিমাণ বিনিয়োগের ৫০ শতাংশের নিচে নেমে আসে। আর সে সময়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিকনির্দেশনা অনুযায়ী সাবেক কমিশন সাধারণ ও ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের শেষ পুঁজিটুকু বাচাতে ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণ করে দেন। এতে হয়তো ওইসব শেয়ারের পতন ধরে রাখা গিয়েছে, তবে সেই লোকসান গত এক বছরেও পুষিয়ে নিতে পারেননি তারা। কারণ এই এক বছরে বাজার সূচক ও লেনদেনের দৃশ্যমান বা উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়নি। এ নিয়ে বিজনেসজার্নাল২৪.কম-এ একাধিক সংবাদও প্রকাশ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবারের বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ৬৬টি কোম্পানির মধ্যে লেনদেন হওয়া ৬৩টির মধ্যে ৬১টির আজ দর পতন হয়েছে। আর নাভানা সিএনজির দর বেড়েছে ও আরএন স্পিনিংয়ের দর অপরিবর্তিত রয়েছে। বাকি ৩ কোম্পানির শেয়ার রেকর্ড ডেট ও স্থগিতাদেশের কারনে লেনদেন হয়নি। এরমধ্যে রেকর্ড ডেটের কারনে গোল্ডেন হার্ভেস্টের শেয়ার আজ লেনদেন বন্ধ ছিল। এছাড়া বিডি সার্ভিসের শেয়ার দীর্ঘদিন ধরে বিক্রেতা না থাকায় লেনদেন হয় না এবং পিপলস লিজিংয়ের শেয়ার লেনদেন দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ করে রেখেছে স্টক এক্সচেঞ্জ।

জানা গেছে, ৬৬ কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহের পরিপ্রেক্ষিতে শেয়ারবাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। এর ফলে বিনিয়োগকারীরা ফ্লোর প্রাইস পুনর্বহালের দাবি জানায়। ওই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ৬৬টি কোম্পানির শেয়ারের সর্বোচ্চ দাম বাড়া-কমার সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি।

এ বিষয়ে বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থের কথা বিবেচনা করে ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করা ৬৬টি কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা ১০ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এছাড়া দাম কমার সর্বোচ্চ সীমা ২ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

এদিকে নিয়ন্ত্রক সংস্থার এমন সিদ্ধান্তে মানবন্ধন কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছে বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদ।

এ বিষয়ে সংগঠনটির সভাপতি মিজান-উর-রশীদ চৌধুরী বলেন, ‘বিএসইসির নতুন এ সিদ্ধান্তকে আমরা সাধুবাদ জানাই। এরই ধরাবাহিকতায় আমরা মানববন্ধন কর্মসূচি প্রত্যার করে নিয়েছি। নতুন সিদ্ধান্তের ফলে লোকসান থেকে রক্ষা পাবেন বিনিয়োগকারীরা।’

প্রসঙ্গত, গত ৭ এপ্রিল বিএসইসির ৭৬৯তম কমিশন সভায় ৬৬টি কোম্পানির শেয়ারের ওপর থেকে ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আর ৮ এপ্রিল থেকে তা কার্যকর করা হয়। ফলে গত বুধবার পর্যন্ত শেয়ারবাজারে ১১০টি কোম্পানির শেয়ার ফ্লোর প্রাইসে আটকে ছিল। বৃহস্পতিবার ৬৬টি কোম্পানির শেয়ারের ওপর থেকে ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। এখনো ৪৪টি কোম্পানির শেয়ারে ফ্লোর প্রাইস বহাল রয়েছে।

ঢাকা/জেএইচ