০৭:১৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৪ মে ২০২৪

অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব চায় ডিসিসিআই

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৭:৫৯:৫৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ জানুয়ারী ২০২৩
  • / ৪১৬৬ বার দেখা হয়েছে

ফাইল ফটো

ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) টেকসই অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ব্যবস্থাপনায় নতুন বছরে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব চায়।

আজ রোববার (১ জানুয়ারি) সংগঠনটির পক্ষ থেকে জয়েন্ট এক্সিকিউটিভ সেক্রেটারি (পিআর) আবুল হাসান ফজলে রাব্বি এসব তথ্য জানিয়েছেন।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

ডিসিসিআই একই সঙ্গে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে আরও বেশকিছু বিষয়ের প্রতি গুরুত্ব দিয়েছে সংগঠনটি। সেগুলো হলো- রপ্তানিমুখী উৎপাদনশীল শিল্পখাতে নিরবচ্ছিন্ন ও সহনীয় মূল্যে জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে সহজে ব্যবসায় পরিচালনার পরিবেশ উন্নয়ন, ব্যবসায় পরিচালন ব্যয় হ্রাস, স্থানীয় ও বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণে সহায়ক অবকাঠামোগত পরিবেশ উন্নয়ন, রপ্তানি বহুমুখীকরণ, সম্ভাবনাময় রপ্তানিখাত নির্ধারণ, সিএমএসএমই’র জন্য ঋণ প্রাপ্তি সহজীকরণ।

ডিসিসিআই এর মতে, বিদ্যমান বৈদেশিক মুদ্রার সংকট এবং ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন প্রভৃতি বিষয়সমূহ দেশের আর্থিক খাতকে কিছুটা চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে, যার ফলে স্থানীয় রপ্তানিমুখী শিল্পের জন্য জ্বালানি, শিল্পের কাঁচামাল আমদানি ও সাপ্লাই চেইনের ওপর কিছুটা নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধিতে প্রণোদনার ওপর আরও জোর দেওয়া প্রয়োজন। একই সঙ্গে প্রয়োজনীয় আমদানি ব্যয় মেটাতে কারেন্সি সোয়াপ-এর বিষয়টিতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিবেচনা করা যেতে পারে।

আরও পড়ুন: ডিসেম্বরে রেমিট্যান্স এসেছে ১৬৯ কোটি ৯৬ লাখ ডলার

ডিসিসিআই বলছে, কোভিড মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে বিপর্যস্ত বিশ্ব অর্থনীতির প্রভাব বাংলাদেশের ক্রমবর্ধনশীল প্রবৃদ্ধির গতিধারাকে কিছুটা স্থবির করলেও, আমাদের উদ্যোক্তাদের উদ্যোগী মনোভাব, সরকারি-বেসরকারি খাতের যৌথ প্রচেষ্টা আমাদের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়াকে অনেকাংশে আশাবাদী করে তুলেছে। সাম্প্রতিক সময়ে জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধির কারণে জ্বালানি নির্ভর উৎপাদনমুখী শিল্প পণ্য উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের প্রতিযোগী সক্ষমতায় আমরা ক্রমশ পিছিয়ে পড়ছি। তাই ডিসিসিআই মনে করে, জ্বালানির মূল্য নির্ধারণে ‘প্রেডিক্টেবল প্রাইসিং পলিসি’ অনুসরণ করে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করা উচিত।

এছাড়া আর্থিক খাতে তারল্য সংকট মেটাতে সরকারের ঋণ নির্ভরতা কমানোর পাশাপাশি চলমান বার্ষিক উন্নয়ন কার্যক্রম ও অন্যান্য সরকারি ব্যয়ে কৃচ্ছতা সাধন, প্রকল্প বাস্তবায়ন দক্ষতা বৃদ্ধি এবং সুশাসন নিশ্চিত করা গেলে এ খাতে সংকট কিছুটা হলেও প্রশমিত হবে বলে মনে করে ডিসিসিআই।

বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে ও কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় রাজস্ব আহরণ না হওয়ায় সরকারকে সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাংক থেকে লক্ষ্যমাত্রার চাইতে বেশি হারে ঋণ নিতে হচ্ছে। এর ফলে বেসরকারি স্থানীয় উৎপাদন খাতে ঋণ প্রবাহ হ্রাস পেতে পারে। রাজস্ব আহরণের উচ্চ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে রাজস্ব ব্যবস্থাপনার সম্পূর্ণ অটোমেশন, বিদ্যমান রাজস্ব আইনের প্রয়োজনীয় সংস্কার ও যুগোপযোগীকরণ এবং রাজস্ব আহরণের নতুন নতুন খাত সৃষ্টি করে করজাল বৃদ্ধির ওপর জোরারোপ করেছে, ঢাকা চেম্বার। এক্ষেত্রে বিদ্যমান করদাতারা যেন হয়রানির শিকার না হন, সে বিষয়টিতে বিশেষ নজর দেওয়া প্রয়োজন।

আরও পড়ুৃন: কৃষি ঋণ বিতরণে বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নির্দেশনা জারি

ডিসিসিআই আরও মনে করে, স্থানীয় ও বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধি করতে সংশ্লিষ্ট আইনের প্রয়োজনীয় সংস্কারসহ বিশেষ করে কোম্পানি আইন, সালিশি আইন ২০০১, দেউলিয়া এবং ইনসলভেন্সি আইনেরও সংস্কার জরুরি। স্থানীয় শিল্প ও আন্তর্জাতিক বাজারের চাহিদা অনুসারে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতা কাজে লাগিয়ে উচ্চ দক্ষতা সম্পন্ন শ্রমশক্তি রপ্তানির দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে। এক্ষেত্রে দেশের ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের যথার্থ প্রয়োগের জন্য ইন্ডাস্ট্রি ও একাডেমিয়ার সম্পর্ক জোরদারের কোনো বিকল্প নেই।

ঢাকা/টিএ

শেয়ার করুন

x
English Version

অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব চায় ডিসিসিআই

আপডেট: ০৭:৫৯:৫৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ জানুয়ারী ২০২৩

ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) টেকসই অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ব্যবস্থাপনায় নতুন বছরে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব চায়।

আজ রোববার (১ জানুয়ারি) সংগঠনটির পক্ষ থেকে জয়েন্ট এক্সিকিউটিভ সেক্রেটারি (পিআর) আবুল হাসান ফজলে রাব্বি এসব তথ্য জানিয়েছেন।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

ডিসিসিআই একই সঙ্গে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে আরও বেশকিছু বিষয়ের প্রতি গুরুত্ব দিয়েছে সংগঠনটি। সেগুলো হলো- রপ্তানিমুখী উৎপাদনশীল শিল্পখাতে নিরবচ্ছিন্ন ও সহনীয় মূল্যে জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে সহজে ব্যবসায় পরিচালনার পরিবেশ উন্নয়ন, ব্যবসায় পরিচালন ব্যয় হ্রাস, স্থানীয় ও বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণে সহায়ক অবকাঠামোগত পরিবেশ উন্নয়ন, রপ্তানি বহুমুখীকরণ, সম্ভাবনাময় রপ্তানিখাত নির্ধারণ, সিএমএসএমই’র জন্য ঋণ প্রাপ্তি সহজীকরণ।

ডিসিসিআই এর মতে, বিদ্যমান বৈদেশিক মুদ্রার সংকট এবং ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন প্রভৃতি বিষয়সমূহ দেশের আর্থিক খাতকে কিছুটা চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে, যার ফলে স্থানীয় রপ্তানিমুখী শিল্পের জন্য জ্বালানি, শিল্পের কাঁচামাল আমদানি ও সাপ্লাই চেইনের ওপর কিছুটা নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধিতে প্রণোদনার ওপর আরও জোর দেওয়া প্রয়োজন। একই সঙ্গে প্রয়োজনীয় আমদানি ব্যয় মেটাতে কারেন্সি সোয়াপ-এর বিষয়টিতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিবেচনা করা যেতে পারে।

আরও পড়ুন: ডিসেম্বরে রেমিট্যান্স এসেছে ১৬৯ কোটি ৯৬ লাখ ডলার

ডিসিসিআই বলছে, কোভিড মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে বিপর্যস্ত বিশ্ব অর্থনীতির প্রভাব বাংলাদেশের ক্রমবর্ধনশীল প্রবৃদ্ধির গতিধারাকে কিছুটা স্থবির করলেও, আমাদের উদ্যোক্তাদের উদ্যোগী মনোভাব, সরকারি-বেসরকারি খাতের যৌথ প্রচেষ্টা আমাদের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়াকে অনেকাংশে আশাবাদী করে তুলেছে। সাম্প্রতিক সময়ে জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধির কারণে জ্বালানি নির্ভর উৎপাদনমুখী শিল্প পণ্য উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের প্রতিযোগী সক্ষমতায় আমরা ক্রমশ পিছিয়ে পড়ছি। তাই ডিসিসিআই মনে করে, জ্বালানির মূল্য নির্ধারণে ‘প্রেডিক্টেবল প্রাইসিং পলিসি’ অনুসরণ করে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করা উচিত।

এছাড়া আর্থিক খাতে তারল্য সংকট মেটাতে সরকারের ঋণ নির্ভরতা কমানোর পাশাপাশি চলমান বার্ষিক উন্নয়ন কার্যক্রম ও অন্যান্য সরকারি ব্যয়ে কৃচ্ছতা সাধন, প্রকল্প বাস্তবায়ন দক্ষতা বৃদ্ধি এবং সুশাসন নিশ্চিত করা গেলে এ খাতে সংকট কিছুটা হলেও প্রশমিত হবে বলে মনে করে ডিসিসিআই।

বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে ও কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় রাজস্ব আহরণ না হওয়ায় সরকারকে সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাংক থেকে লক্ষ্যমাত্রার চাইতে বেশি হারে ঋণ নিতে হচ্ছে। এর ফলে বেসরকারি স্থানীয় উৎপাদন খাতে ঋণ প্রবাহ হ্রাস পেতে পারে। রাজস্ব আহরণের উচ্চ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে রাজস্ব ব্যবস্থাপনার সম্পূর্ণ অটোমেশন, বিদ্যমান রাজস্ব আইনের প্রয়োজনীয় সংস্কার ও যুগোপযোগীকরণ এবং রাজস্ব আহরণের নতুন নতুন খাত সৃষ্টি করে করজাল বৃদ্ধির ওপর জোরারোপ করেছে, ঢাকা চেম্বার। এক্ষেত্রে বিদ্যমান করদাতারা যেন হয়রানির শিকার না হন, সে বিষয়টিতে বিশেষ নজর দেওয়া প্রয়োজন।

আরও পড়ুৃন: কৃষি ঋণ বিতরণে বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নির্দেশনা জারি

ডিসিসিআই আরও মনে করে, স্থানীয় ও বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধি করতে সংশ্লিষ্ট আইনের প্রয়োজনীয় সংস্কারসহ বিশেষ করে কোম্পানি আইন, সালিশি আইন ২০০১, দেউলিয়া এবং ইনসলভেন্সি আইনেরও সংস্কার জরুরি। স্থানীয় শিল্প ও আন্তর্জাতিক বাজারের চাহিদা অনুসারে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতা কাজে লাগিয়ে উচ্চ দক্ষতা সম্পন্ন শ্রমশক্তি রপ্তানির দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে। এক্ষেত্রে দেশের ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের যথার্থ প্রয়োগের জন্য ইন্ডাস্ট্রি ও একাডেমিয়ার সম্পর্ক জোরদারের কোনো বিকল্প নেই।

ঢাকা/টিএ