১০:০২ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৬ মে ২০২৪

‘আইপিওতে অতিরঞ্জিত প্রতিবেদন দেওয়ায় তালিকাভুক্তর পর মুনাফা কমে’

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৬:৪২:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ মার্চ ২০২৪
  • / ৪১২৭ বার দেখা হয়েছে

তালিকাভুক্তির পর দেখা যায় অনেক কোম্পানির আর্থিক অবস্থা ক্রমেই খারাপ হতে থাকে। তাহলে কোম্পানিটি যখন আইপিও’র কাগজপত্র জমা দিয়েছে সেগুলো অতিরঞ্জিত করে তৈরি করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএসইসি’র কমিশনার মোঃ আব্দুল হালিম। তিনি বলেন, আমরা যারা এই কাজ করি, তারা বিবেকের কাছে প্রশ্ন করি। এ দেশের নাগরিক হিসেবে, দেশের মানুষদের ঠকানোর জন্য এ কাজ করতে পারি না‌। আমরা সঠিক তথ্য দিব। সেটা আমাদের দায়িত্ব।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃক আয়োজিত ডিএসই মাল্টিপারপাস হলে “ফিনান্সিয়াল রিপোর্টিং এবং ডিসক্লোজারস: রেগুলেটরি রিকুয়ারমেন্টস” শীর্ষক সেমিনারে বিএসইসি’র কমিশনার মোঃ আব্দুল হালিম প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এসব কথা বলেন৷

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডিএসই’র পরিচালক মো. আফজাল হোসেন৷ এতে সভাপতিত্ব করেন ডিএসই’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. এটিএম তারিকুজ্জামান৷ পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত টেক্সটাইল সেক্টরের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, প্রধান আথিক কর্মকর্তা ও কোম্পানি সচিবরা এই এ সেমিনারে অংশগ্রহণ করেন।

আর্থিক প্রতিবেদনের অস্বচ্ছতা নিয়ে তিনি আরও বলেন, আমরা আপনাদের কে ভয়-ভীতি দেখাই, হেয়ারিংয়ে এ নিয়ে আসি এবং জরিমানা করি। যাতে আপনারা ঠিক হন। কিন্তু এরপরও আমরা দেখেছি অনেকের বোর্ডে সমস্যা রয়েছে, ঠিক মত আর্থিক তথ্য প্রকাশ করে না। অন্যান্য কাজ ঠিকমত করে না। আবার সেগুলো নিয়ে জালিয়াতি করে। এগুলো সাধারণ নিয়মিত কাজ। কোনো সমস্যা থাকলে আমাদের কাছে আসেন। আমরা সমাধান দেয়ার চেষ্টা করবো। বিভিন্ন বিধিবিধান সম্পর্কে অধ্যয়ন না করার কারণে অনেকে বিষয়গুলো সঠিকভাবে পরিপালন করতে পারছেন না। কিন্তু আমরা যারা কোম্পানির সচিব রয়েছি এবং সিএফও রয়েছি তাদের উচিত বিধি-বিধানগুলো সঠিকভাবে পড়া এবং সেগুলো যথাযথ পালন করা। যদি কোথাও সমস্যা মনে হয় তাহলে আপনারা ডিএসইর মাধ্যমে জানাবেন বা কমিশনের জানালে আমরা অবশ্যই সেটার ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

বিশেষ অতিথি ডিএসই’র পরিচালক মো. আফজাল হোসেন বলেন, ফিনান্সিয়াল রিপোর্ট এবং ডিসক্লোজ সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হচ্ছে মালিক, বিনিয়োগকারী এবং ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য। কারণ এটার সাথে বড় একটি অংশ শেয়ারহোল্ডারদের স্বার্থ জড়িয়ে আছে। ফিনান্সিয়াল রিপোর্ট হচ্ছে মূলত চার্টার্ড একাউন্টদের যেটা নিরীক্ষক প্রতিবেদন থাকে এবং সেটার সঙ্গে কিছু সংযুক্ত তথ্য থাকে। এটার সঙ্গে বিস্তারিত তথ্য সহ একটি ফুল ডিসক্লোজ থাকবে। যেটার মাধ্যমে একেবারে সাধারণ যে মানুষও আর্থিক প্রতিবেদনটা বুঝতে পারবে সেভাবে প্রকাশ করতে হবে। এটা হচ্ছে ফিনাসিয়াল রিপোর্টিং এর মূল কথা। তবে স্টক এক্সচেঞ্জের ক্ষেত্রে এটা আরো বিস্তারিত প্রকাশ করতে হয়। সেক্ষেত্রে ফুল ডিসক্লোজার থেকেও আরও বেশি তথ্য এবং এনালাইসিস সহকারে প্রকাশ করতে হয়। সেই সঙ্গে প্রাইস সেনসিটিভ ইনফরমেশনগুলো ডিসক্লোজারের একটি অংশ। তাই আর্থিক প্রতিবেদনগুলো সঠিক এবং বিস্তারিত তথ্য দিয়ে প্রকাশ করা দরকার।

আরও পড়ুন: পাঁচ কোম্পানির ডিভিডেন্ড ঘোষণা

তিনি আরো বলেন, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষা করার জন্য মূলত আর্থিক প্রতিবেদনে স্বচ্ছতা প্রয়োজন। আর এজন্য দুটি পক্ষের দায়িত্ব পালন করতে হবে। একটি হলো ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ ও আরেকটি হলো চাটার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট। পুঁজিবাজারের উন্নয়নের জন্য আমাদের আর্থিক প্রতিবেদনের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। আর ভবিষ্যতে আমাদের এই ধরনের সেমিনার আরও বড় পরিসরে আয়োজন করা প্র্রয়োজন। এছাড়াও অতীতের সমস্যা কাটিয়ে একটি টেকসই পুঁজিবাজার গড়ে তুলতে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট সকলের সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।

সেমিনারের সভাপতি ডিএসই’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. এটিএম তারিকুজ্জামান বলেন, আজকে যে বিষয় নিয়ে সেমিনারটিতে আলোচনা করা হয়েছে তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ পুঁজিবাজারের সাথে সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠান এবং বিনিয়োগকারীদের সচেতনতা বৃদ্ধিতে এ আয়োজন অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করবে। একটি কোম্পানির আর্থিক অবস্থা তার আর্থিক প্রতিবেদনে জানা যায়। একটি সঠিক আর্থিক প্রতিবেদন কোম্পানির অবস্থা সঠিকভাবে তুলে ধরতে পারে। কারণ আর্থিক প্রতিবেদনের মধ্যে কমপ্লায়েন্স, গভর্নেন্স, আর্থিক অবস্থার সঠিকতা সহ নিয়ন্ত্রক সংস্থার নজরদারির এবং বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট অনেক কিছুই থাকে। আর্থিক প্রতিবেদন শুধু বিনিয়োগকারি নয়, ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ, অর্থায়নকারী প্রতিষ্ঠানের জন্যও প্রয়োজন। এছাড়াও সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীদের জন্যও সঠিক আর্থিক প্রতিবেদন প্রয়োজন। একটি দক্ষ পুঁজিবাজারের অন্যতম শর্ত হলো তথ্যসমূহ পরিপূর্ণভাবে সময়মত প্রকাশ করা। দক্ষ পুঁজিবাজার করতে হলে আমাদের আর্থিক প্রতিবেদনের স্বচ্ছতা ও সময়মতো প্রদান নিশ্চিত করতে হবে। তাই পুঁজিবাজারের উন্নয়নে একটি দক্ষ ও টেকসই বাজার গঠনে সঠিক আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা খুবই জরুরী। এজন্য ডিএসই ধাপে ধাপে সকল তালিকাভুক্ত কোম্পানির জন্য এ ধরণের প্রোগ্রামের আয়োজন করবে।

বিএসইসির প্রধান হিসাবরক্ষক এবং নির্বাহী পরিচালক কামরুল আনাম খান বলেন, আজকে যে সেমিনারটি আয়োজন করা হয়েছে তা অত্যন্ত সময়োপযোগী। আজকের অনুষ্ঠানে যারা উপস্থিত আছেন তারা স্ব স্ব কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন তৈরি করেন। মূল প্রবন্ধে আর্থিক প্রতিবেদনে যে ৩৮টি ভুলের কথা বলা হয়েছে ভবিষ্যতে আপনারা এ বিষয়গুলো গুরুত্বের সাথে লক্ষ্য রাখবেন। সময়মতো আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ না করলে শুধু জরিমানাই হয় না, একইসাথে বিনিয়োগকারীগণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।  এছাড়াও পুঁজিবাজারে কোম্পানিটি সম্পর্কে বিরূপ ধারণা হয়। তাই কোম্পানির সুনাম অক্ষুন্ন রাখার জন্য সকল আইনকানুন সঠিকভাবে পালন করতে হবে। আর এক্ষেত্রে রেগুলেটরের কাছ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।

তার আগে অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য ডিএসইর প্রধান রেগুলেটরী কর্মকর্তা খায়রুল বাসার আবু তাহের মোহাম্মদ বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, টেক্সটাইল সেক্টরের তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো শুধুমাত্র তাদের শেয়ারহোল্ডারদের জন্যই নয়, তাদের কর্মচারী, গ্রাহক এবং বৃহত্তর সমাজের জন্যও একটি অনন্য দায়িত্ব বহন করে আসছে। আর্থিক প্রতিবেদনে স্বচ্ছতা ও বিশ্বাসের ভিত্তি হিসেবে কাজ করছে৷ প্রয়োজনীয় আইন মেনে চলার মাধ্যমে এই কোম্পানিগুলো জবাবদিহিতা এবং নৈতিকতা নীতিগুলোকে মেনে স্টেকহোল্ডারদের জন্য একটি সমতা নিশ্চিত করে৷ আজকের আলোচনায় আর্থিক প্রতিবেদনের প্রয়োজনীয়তা, সর্বোত্তম অনুশীলন এবং চ্যালেঞ্জগুলো ওঠে আসবে বলে আমি মনে করি।

সেমিনারের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডিএসই’র কর্পোরেট গভর্ন্যান্স এবং ফিনান্সিয়াল রিপোর্টিং কমপ্লায়েন্স ডিপার্টমেন্টের সহকারী মহাব্যবস্থাপক ও প্রধান মোঃ মাসুদ খান, এসিসিএ৷ মূল প্রবন্ধে তিনি আর্থিক প্রতিবেদনের উদ্দেশ্য, আর্থিক বিবরণী জমা দেওয়ার নিয়ম, প্রবিধান, বিজ্ঞপ্তি এবং সময়সীমা, আর্থিক বিবৃতিগুলির প্রধান অসঙ্গতি ও নন কমপ্লায়েন্স এবং প্রশমনের উপায় নিয়ে আলোকপাত করেন।

ঢাকা/এসএ

ট্যাগঃ

শেয়ার করুন

x

‘আইপিওতে অতিরঞ্জিত প্রতিবেদন দেওয়ায় তালিকাভুক্তর পর মুনাফা কমে’

আপডেট: ০৬:৪২:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ মার্চ ২০২৪

তালিকাভুক্তির পর দেখা যায় অনেক কোম্পানির আর্থিক অবস্থা ক্রমেই খারাপ হতে থাকে। তাহলে কোম্পানিটি যখন আইপিও’র কাগজপত্র জমা দিয়েছে সেগুলো অতিরঞ্জিত করে তৈরি করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএসইসি’র কমিশনার মোঃ আব্দুল হালিম। তিনি বলেন, আমরা যারা এই কাজ করি, তারা বিবেকের কাছে প্রশ্ন করি। এ দেশের নাগরিক হিসেবে, দেশের মানুষদের ঠকানোর জন্য এ কাজ করতে পারি না‌। আমরা সঠিক তথ্য দিব। সেটা আমাদের দায়িত্ব।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃক আয়োজিত ডিএসই মাল্টিপারপাস হলে “ফিনান্সিয়াল রিপোর্টিং এবং ডিসক্লোজারস: রেগুলেটরি রিকুয়ারমেন্টস” শীর্ষক সেমিনারে বিএসইসি’র কমিশনার মোঃ আব্দুল হালিম প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এসব কথা বলেন৷

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডিএসই’র পরিচালক মো. আফজাল হোসেন৷ এতে সভাপতিত্ব করেন ডিএসই’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. এটিএম তারিকুজ্জামান৷ পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত টেক্সটাইল সেক্টরের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, প্রধান আথিক কর্মকর্তা ও কোম্পানি সচিবরা এই এ সেমিনারে অংশগ্রহণ করেন।

আর্থিক প্রতিবেদনের অস্বচ্ছতা নিয়ে তিনি আরও বলেন, আমরা আপনাদের কে ভয়-ভীতি দেখাই, হেয়ারিংয়ে এ নিয়ে আসি এবং জরিমানা করি। যাতে আপনারা ঠিক হন। কিন্তু এরপরও আমরা দেখেছি অনেকের বোর্ডে সমস্যা রয়েছে, ঠিক মত আর্থিক তথ্য প্রকাশ করে না। অন্যান্য কাজ ঠিকমত করে না। আবার সেগুলো নিয়ে জালিয়াতি করে। এগুলো সাধারণ নিয়মিত কাজ। কোনো সমস্যা থাকলে আমাদের কাছে আসেন। আমরা সমাধান দেয়ার চেষ্টা করবো। বিভিন্ন বিধিবিধান সম্পর্কে অধ্যয়ন না করার কারণে অনেকে বিষয়গুলো সঠিকভাবে পরিপালন করতে পারছেন না। কিন্তু আমরা যারা কোম্পানির সচিব রয়েছি এবং সিএফও রয়েছি তাদের উচিত বিধি-বিধানগুলো সঠিকভাবে পড়া এবং সেগুলো যথাযথ পালন করা। যদি কোথাও সমস্যা মনে হয় তাহলে আপনারা ডিএসইর মাধ্যমে জানাবেন বা কমিশনের জানালে আমরা অবশ্যই সেটার ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

বিশেষ অতিথি ডিএসই’র পরিচালক মো. আফজাল হোসেন বলেন, ফিনান্সিয়াল রিপোর্ট এবং ডিসক্লোজ সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হচ্ছে মালিক, বিনিয়োগকারী এবং ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য। কারণ এটার সাথে বড় একটি অংশ শেয়ারহোল্ডারদের স্বার্থ জড়িয়ে আছে। ফিনান্সিয়াল রিপোর্ট হচ্ছে মূলত চার্টার্ড একাউন্টদের যেটা নিরীক্ষক প্রতিবেদন থাকে এবং সেটার সঙ্গে কিছু সংযুক্ত তথ্য থাকে। এটার সঙ্গে বিস্তারিত তথ্য সহ একটি ফুল ডিসক্লোজ থাকবে। যেটার মাধ্যমে একেবারে সাধারণ যে মানুষও আর্থিক প্রতিবেদনটা বুঝতে পারবে সেভাবে প্রকাশ করতে হবে। এটা হচ্ছে ফিনাসিয়াল রিপোর্টিং এর মূল কথা। তবে স্টক এক্সচেঞ্জের ক্ষেত্রে এটা আরো বিস্তারিত প্রকাশ করতে হয়। সেক্ষেত্রে ফুল ডিসক্লোজার থেকেও আরও বেশি তথ্য এবং এনালাইসিস সহকারে প্রকাশ করতে হয়। সেই সঙ্গে প্রাইস সেনসিটিভ ইনফরমেশনগুলো ডিসক্লোজারের একটি অংশ। তাই আর্থিক প্রতিবেদনগুলো সঠিক এবং বিস্তারিত তথ্য দিয়ে প্রকাশ করা দরকার।

আরও পড়ুন: পাঁচ কোম্পানির ডিভিডেন্ড ঘোষণা

তিনি আরো বলেন, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষা করার জন্য মূলত আর্থিক প্রতিবেদনে স্বচ্ছতা প্রয়োজন। আর এজন্য দুটি পক্ষের দায়িত্ব পালন করতে হবে। একটি হলো ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ ও আরেকটি হলো চাটার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট। পুঁজিবাজারের উন্নয়নের জন্য আমাদের আর্থিক প্রতিবেদনের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। আর ভবিষ্যতে আমাদের এই ধরনের সেমিনার আরও বড় পরিসরে আয়োজন করা প্র্রয়োজন। এছাড়াও অতীতের সমস্যা কাটিয়ে একটি টেকসই পুঁজিবাজার গড়ে তুলতে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট সকলের সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।

সেমিনারের সভাপতি ডিএসই’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. এটিএম তারিকুজ্জামান বলেন, আজকে যে বিষয় নিয়ে সেমিনারটিতে আলোচনা করা হয়েছে তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ পুঁজিবাজারের সাথে সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠান এবং বিনিয়োগকারীদের সচেতনতা বৃদ্ধিতে এ আয়োজন অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করবে। একটি কোম্পানির আর্থিক অবস্থা তার আর্থিক প্রতিবেদনে জানা যায়। একটি সঠিক আর্থিক প্রতিবেদন কোম্পানির অবস্থা সঠিকভাবে তুলে ধরতে পারে। কারণ আর্থিক প্রতিবেদনের মধ্যে কমপ্লায়েন্স, গভর্নেন্স, আর্থিক অবস্থার সঠিকতা সহ নিয়ন্ত্রক সংস্থার নজরদারির এবং বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট অনেক কিছুই থাকে। আর্থিক প্রতিবেদন শুধু বিনিয়োগকারি নয়, ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ, অর্থায়নকারী প্রতিষ্ঠানের জন্যও প্রয়োজন। এছাড়াও সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীদের জন্যও সঠিক আর্থিক প্রতিবেদন প্রয়োজন। একটি দক্ষ পুঁজিবাজারের অন্যতম শর্ত হলো তথ্যসমূহ পরিপূর্ণভাবে সময়মত প্রকাশ করা। দক্ষ পুঁজিবাজার করতে হলে আমাদের আর্থিক প্রতিবেদনের স্বচ্ছতা ও সময়মতো প্রদান নিশ্চিত করতে হবে। তাই পুঁজিবাজারের উন্নয়নে একটি দক্ষ ও টেকসই বাজার গঠনে সঠিক আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা খুবই জরুরী। এজন্য ডিএসই ধাপে ধাপে সকল তালিকাভুক্ত কোম্পানির জন্য এ ধরণের প্রোগ্রামের আয়োজন করবে।

বিএসইসির প্রধান হিসাবরক্ষক এবং নির্বাহী পরিচালক কামরুল আনাম খান বলেন, আজকে যে সেমিনারটি আয়োজন করা হয়েছে তা অত্যন্ত সময়োপযোগী। আজকের অনুষ্ঠানে যারা উপস্থিত আছেন তারা স্ব স্ব কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন তৈরি করেন। মূল প্রবন্ধে আর্থিক প্রতিবেদনে যে ৩৮টি ভুলের কথা বলা হয়েছে ভবিষ্যতে আপনারা এ বিষয়গুলো গুরুত্বের সাথে লক্ষ্য রাখবেন। সময়মতো আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ না করলে শুধু জরিমানাই হয় না, একইসাথে বিনিয়োগকারীগণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।  এছাড়াও পুঁজিবাজারে কোম্পানিটি সম্পর্কে বিরূপ ধারণা হয়। তাই কোম্পানির সুনাম অক্ষুন্ন রাখার জন্য সকল আইনকানুন সঠিকভাবে পালন করতে হবে। আর এক্ষেত্রে রেগুলেটরের কাছ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।

তার আগে অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য ডিএসইর প্রধান রেগুলেটরী কর্মকর্তা খায়রুল বাসার আবু তাহের মোহাম্মদ বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, টেক্সটাইল সেক্টরের তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো শুধুমাত্র তাদের শেয়ারহোল্ডারদের জন্যই নয়, তাদের কর্মচারী, গ্রাহক এবং বৃহত্তর সমাজের জন্যও একটি অনন্য দায়িত্ব বহন করে আসছে। আর্থিক প্রতিবেদনে স্বচ্ছতা ও বিশ্বাসের ভিত্তি হিসেবে কাজ করছে৷ প্রয়োজনীয় আইন মেনে চলার মাধ্যমে এই কোম্পানিগুলো জবাবদিহিতা এবং নৈতিকতা নীতিগুলোকে মেনে স্টেকহোল্ডারদের জন্য একটি সমতা নিশ্চিত করে৷ আজকের আলোচনায় আর্থিক প্রতিবেদনের প্রয়োজনীয়তা, সর্বোত্তম অনুশীলন এবং চ্যালেঞ্জগুলো ওঠে আসবে বলে আমি মনে করি।

সেমিনারের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডিএসই’র কর্পোরেট গভর্ন্যান্স এবং ফিনান্সিয়াল রিপোর্টিং কমপ্লায়েন্স ডিপার্টমেন্টের সহকারী মহাব্যবস্থাপক ও প্রধান মোঃ মাসুদ খান, এসিসিএ৷ মূল প্রবন্ধে তিনি আর্থিক প্রতিবেদনের উদ্দেশ্য, আর্থিক বিবরণী জমা দেওয়ার নিয়ম, প্রবিধান, বিজ্ঞপ্তি এবং সময়সীমা, আর্থিক বিবৃতিগুলির প্রধান অসঙ্গতি ও নন কমপ্লায়েন্স এবং প্রশমনের উপায় নিয়ে আলোকপাত করেন।

ঢাকা/এসএ