১০:৩৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

আর্থিক প্রতিবেদনে বিনিয়োগকারীদের বঞ্চিত করার সুযোগ রয়েছে

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১০:০৫:০০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৬ মার্চ ২০১৯
  • / ৪৫৮৭ বার দেখা হয়েছে

পুঁজিবাজারের একটি বড় সমস্যা হচ্ছে কোম্পানিগুলোর অনিরীক্ষিত প্রান্তিক প্রতিবেদন প্রকাশের সুযোগ করে দেওয়া। বিশ্বখ্যাত বিনিয়োগকারী ওয়ারেন বাফেট এটির পক্ষে নন, কারণ অনিরীক্ষিত ইপিএস দেখিয়ে বিনিয়োগকারীদের ঠকানোর সুযোগ রয়েছে। কিন্তু অনিরীক্ষিত ইপিএস দেখিয়ে কোম্পানিগুলোর লাভ করছে। এতে তাদের স্বার্থ রক্ষা হচ্ছে। অন্যদিকে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। সম্প্রতি এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচিত হয়।
হাসিব হাসানের গ্রন্থনা ও সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ছিলেন কোম্পানি আইন বিশেষজ্ঞ ব্যারিস্টার এমএ মাসুম এবং আইনজীবী ও পুঁজিবাজার বিশ্লেষক হাসান মাহমুদ বিপ্লব।
এমএ মাসুম বলেন, দেশের পুঁজিবাজারে আইনসংক্রান্ত যে নীতিমালাগুলো রয়েছে, তা বিনিয়োগকারীর স্বার্থেই করা হয়েছে। অর্থাৎ যে আইনগুলো বিদ্যমান রয়েছে, সেগুলো যদি বিনিয়োগকারীর টাকার নিরাপত্তা না দিতে পারে, তাহলে পুঁজিবাজার-সংক্রান্ত আইনকানুন যে কোনো সময়ে পরির্বতন করা যেতে পারে।
পুঁজিবাজারের বড় সমস্যা হচ্ছে, দেশের পুঁজিবাজার ইক্যুইটিনির্ভর। অর্থাৎ যে কোম্পানিগুলো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, সেগুলোর বেশিরভাগই স্বল্প মূলধনি কোম্পানি। মৌলভিত্তির কোম্পানির সংখ্যা খুবই কম। অর্থাৎ ভালো মানের কোম্পানির অনেক ঘাটতি রয়েছে। পুঁজিবাজার সম্প্রসারণ করতে হলে আরও ভালো মানের কোম্পানি অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। আরেকটি সমস্যা হচ্ছে, দেশের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের জ্ঞানভিত্তিক বিনিয়োগ কম। অর্থাৎ বেশিরভাগ বিনিয়োগকারী না বুঝে এবং অন্যের কথায় বিনিয়োগ করে। পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে হলে বাজার সম্পর্কে ন্যূনতম জ্ঞান থাকতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ডিসেম্বর ক্লোজিং কোম্পানির শেয়ারগুলোতে নির্বাচনের পর গতিশীল অবস্থানে দেখা গেছে, কিন্তু জুন ক্লোজিং কোম্পানির শেয়ারগুলো সেভাবে গতিশীল হতে পারেনি। কারণ অনেকেই হয়তো মুনাফা নিয়ে বের হয়ে যাচ্ছেন। আবার জুন ক্লোজিং কোম্পানিগুলোর দ্বিতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত ইপিএস প্রকাশিত হচ্ছে। ফলে কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দাম ওঠা-নামা করছে। তাই বাজারে সেভাবে গতিশীল হতে দেখা যাচ্ছে না।
হাসান মাহমুদ বিপ্লব বলেন, পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থায় আইন বিভাগ, সার্ভিলেন্স বিভাগ, আইপিও বিভাগসহ আরও অনেক বিভাগ রয়েছে, কিন্তু অনেক দিন ধরে ফাইন্যান্সিয়াল কমিশনার বিভাগের ঘাটতি রয়েছে। অর্থাৎ যেখানে আর্থিক অনিয়ম বা অপরাধ সংঘটিত হয়, সেখানে কিন্তু এফসিএ ও সিএ ছাড়া কেউ ধরতে পারবেন না। আসলে এখন পর্যন্ত বিএসইসির বিভাগ আলাদাভাবে ভাগ হয়নি। আবার আইন বিভাগটি আরও শক্তিশালী করতে হবে। আসলে এখানে প্রত্যেকটি বিষয়ে সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে।
পুঁজিবাজারের আরেকটি বড় সমস্যা হচ্ছে, দেশের পুঁজিবাজারে অন্তর্ভুক্ত কোম্পানিগুলোর অনিরীক্ষিত প্রান্তিক প্রতিবেদন প্রকাশের সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। বিশ্বখ্যাত বিনিয়োগকারী ওয়ারেন বাফেট এটির পক্ষে নন, কারণ অনিরীক্ষিত ইপিএস দেখিয়ে বিনিয়োগকারীদের ঠকানোর সুযোগ রয়েছে। আসলে এখানে কোম্পানিগুলোর লাভ হচ্ছে এবং তাদের স্বার্থ রক্ষা হচ্ছে। কিন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকারের আগের মেয়াদগুলোতে পুঁজিবাজারে দুটি কেলেঙ্কারি রয়েছে। বিশেষ করে ১৯৯৬ ও ২০১০ সালের। এখন কথা হচ্ছে, এই সরকার নিশ্চয়ই চাইবে না আবার ১৯৯৬ ও ২০১০ সালের মতো পুঁজিবাজারে ধস হোক। সরকার পুঁজিবাজারকে সম্প্রসারণ করার জন্য বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে।

শেয়ার করুন

x
English Version

আর্থিক প্রতিবেদনে বিনিয়োগকারীদের বঞ্চিত করার সুযোগ রয়েছে

আপডেট: ১০:০৫:০০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৬ মার্চ ২০১৯

পুঁজিবাজারের একটি বড় সমস্যা হচ্ছে কোম্পানিগুলোর অনিরীক্ষিত প্রান্তিক প্রতিবেদন প্রকাশের সুযোগ করে দেওয়া। বিশ্বখ্যাত বিনিয়োগকারী ওয়ারেন বাফেট এটির পক্ষে নন, কারণ অনিরীক্ষিত ইপিএস দেখিয়ে বিনিয়োগকারীদের ঠকানোর সুযোগ রয়েছে। কিন্তু অনিরীক্ষিত ইপিএস দেখিয়ে কোম্পানিগুলোর লাভ করছে। এতে তাদের স্বার্থ রক্ষা হচ্ছে। অন্যদিকে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। সম্প্রতি এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচিত হয়।
হাসিব হাসানের গ্রন্থনা ও সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ছিলেন কোম্পানি আইন বিশেষজ্ঞ ব্যারিস্টার এমএ মাসুম এবং আইনজীবী ও পুঁজিবাজার বিশ্লেষক হাসান মাহমুদ বিপ্লব।
এমএ মাসুম বলেন, দেশের পুঁজিবাজারে আইনসংক্রান্ত যে নীতিমালাগুলো রয়েছে, তা বিনিয়োগকারীর স্বার্থেই করা হয়েছে। অর্থাৎ যে আইনগুলো বিদ্যমান রয়েছে, সেগুলো যদি বিনিয়োগকারীর টাকার নিরাপত্তা না দিতে পারে, তাহলে পুঁজিবাজার-সংক্রান্ত আইনকানুন যে কোনো সময়ে পরির্বতন করা যেতে পারে।
পুঁজিবাজারের বড় সমস্যা হচ্ছে, দেশের পুঁজিবাজার ইক্যুইটিনির্ভর। অর্থাৎ যে কোম্পানিগুলো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, সেগুলোর বেশিরভাগই স্বল্প মূলধনি কোম্পানি। মৌলভিত্তির কোম্পানির সংখ্যা খুবই কম। অর্থাৎ ভালো মানের কোম্পানির অনেক ঘাটতি রয়েছে। পুঁজিবাজার সম্প্রসারণ করতে হলে আরও ভালো মানের কোম্পানি অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। আরেকটি সমস্যা হচ্ছে, দেশের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের জ্ঞানভিত্তিক বিনিয়োগ কম। অর্থাৎ বেশিরভাগ বিনিয়োগকারী না বুঝে এবং অন্যের কথায় বিনিয়োগ করে। পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে হলে বাজার সম্পর্কে ন্যূনতম জ্ঞান থাকতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ডিসেম্বর ক্লোজিং কোম্পানির শেয়ারগুলোতে নির্বাচনের পর গতিশীল অবস্থানে দেখা গেছে, কিন্তু জুন ক্লোজিং কোম্পানির শেয়ারগুলো সেভাবে গতিশীল হতে পারেনি। কারণ অনেকেই হয়তো মুনাফা নিয়ে বের হয়ে যাচ্ছেন। আবার জুন ক্লোজিং কোম্পানিগুলোর দ্বিতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত ইপিএস প্রকাশিত হচ্ছে। ফলে কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দাম ওঠা-নামা করছে। তাই বাজারে সেভাবে গতিশীল হতে দেখা যাচ্ছে না।
হাসান মাহমুদ বিপ্লব বলেন, পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থায় আইন বিভাগ, সার্ভিলেন্স বিভাগ, আইপিও বিভাগসহ আরও অনেক বিভাগ রয়েছে, কিন্তু অনেক দিন ধরে ফাইন্যান্সিয়াল কমিশনার বিভাগের ঘাটতি রয়েছে। অর্থাৎ যেখানে আর্থিক অনিয়ম বা অপরাধ সংঘটিত হয়, সেখানে কিন্তু এফসিএ ও সিএ ছাড়া কেউ ধরতে পারবেন না। আসলে এখন পর্যন্ত বিএসইসির বিভাগ আলাদাভাবে ভাগ হয়নি। আবার আইন বিভাগটি আরও শক্তিশালী করতে হবে। আসলে এখানে প্রত্যেকটি বিষয়ে সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে।
পুঁজিবাজারের আরেকটি বড় সমস্যা হচ্ছে, দেশের পুঁজিবাজারে অন্তর্ভুক্ত কোম্পানিগুলোর অনিরীক্ষিত প্রান্তিক প্রতিবেদন প্রকাশের সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। বিশ্বখ্যাত বিনিয়োগকারী ওয়ারেন বাফেট এটির পক্ষে নন, কারণ অনিরীক্ষিত ইপিএস দেখিয়ে বিনিয়োগকারীদের ঠকানোর সুযোগ রয়েছে। আসলে এখানে কোম্পানিগুলোর লাভ হচ্ছে এবং তাদের স্বার্থ রক্ষা হচ্ছে। কিন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকারের আগের মেয়াদগুলোতে পুঁজিবাজারে দুটি কেলেঙ্কারি রয়েছে। বিশেষ করে ১৯৯৬ ও ২০১০ সালের। এখন কথা হচ্ছে, এই সরকার নিশ্চয়ই চাইবে না আবার ১৯৯৬ ও ২০১০ সালের মতো পুঁজিবাজারে ধস হোক। সরকার পুঁজিবাজারকে সম্প্রসারণ করার জন্য বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে।