১১:০৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪

আড়াই কোটি শিশু প্রাণঘাতী রোগের টিকা থেকে বঞ্চিত

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৭:২৪:৩৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ জুলাই ২০২২
  • / ৪১৮১ বার দেখা হয়েছে

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: করোনাভাইরাস মহামারির কারণে বিশ্বব্যাপী ব্যাপকভাবে ব্যাহত হয়েছে স্বাস্থ্যসেবা। ফলে গত বছর অন্তত আড়াই কোটি শিশু নিয়মিত টিকাদান কর্মসূচিতে ডিপথেরিয়া, ধনুষ্টংকার, হাম ও পোলিওর মতো প্রাণঘাতী রোগের টিকা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। জাতিসংঘের এক পরিসংখ্যানে এমন তথ্য উঠে এসেছে। ১৭৭টি দেশের জাতীয় স্বাস্থ্য ব্যবস্থার তথ্য ব্যবহার করে এ পরিসংখ্যান তৈরি করেছে তারা।

জাতিসংঘের শিশু তহবিল ইউনিসেফ এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এই পরিসংখ্যান অনুযায়ী, নিয়মিত টিকাদান কর্মসূচি থেকে বাদ পড়া শিশুর সংখ্যা ২০২০ সালে মহামারির প্রথম বছরের চেয়ে প্রায় ২০ লাখ এবং ২০১৯ সালে মহামারির আগের বছরের তুলনায় ৬০ লাখ বেশি।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব 

এ অবস্থাকে গত এক প্রজন্মের মধ্যে শিশুদের টিকাদান কর্মসূচিতে সবচেয়ে বড় ধাক্কা হিসেবে বর্ণনা করেছে ইউনিসেফ। করোনা মহামারি শিশুদের এই নিয়মিত টিকাদানের হারকে পিছিয়ে দিয়েছে ২০০০ সালের আগের পর্যায়ে। মহামারির প্রথম ধাক্কা সামলে গত বছর নিয়মিত টিকাদানে উন্নতি হবে বলে অনেকে মনে করেছিলেন। তবে বাস্তবে আরও খারাপ হয়েছে পরিস্থিতি।

ইউনিসেফের জ্যেষ্ঠ ইমিউনাইজেশন বিশেষজ্ঞ নিকোলাস ডেনিয়েলসন বলেন, এটা শিশুদের জন্য অনেক বড় স্বাস্থ্য সংকট। জরুরি ভিত্তিতে এর সমাধান করা প্রয়োজন। সংস্থাটি বলেছে, গত বছর সবার মনোযোগ ছিল করোনার টিকাদান কর্মসূচি নিয়ে। একই সঙ্গে অর্থনৈতিক মন্দা থেকে উত্তরণ এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর চাপ সামাল দিতে বেকায়দায় পড়েছিল দেশগুলো। এসব কারণে শিশুদের নিয়মিত টিকাদান কাজটি বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে।

বিশ্বের প্রতিটি অঞ্চলে এর প্রভাব পড়েছে। ডিপথেরিয়া, ধনুষ্টংকার ও হুপিংকাশির (ডিপিটি ৩) জন্য দেওয়া তিন ডোজ টিকার মোট সংখ্যা, কোনো ধরনের টিকা না পাওয়া শিশুর সংখ্যা এবং একাধিক ডোজ না পাওয়া শিশুর সংখ্যা হিসাব করে দেখা যায়, সারাবিশ্বে টিকাদানের হার আগের বছরের তুলনায় ৫ শতাংশ কমে নেমেছে ৮১ শতাংশে।

এর মধ্যে এক ডোজও টিকা না পাওয়া শিশুর সংখ্যা ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২১ সালে ৩৭ শতাংশ বেড়েছে। এই শিশুদের সংখ্যা এক কোটি ৩০ লাখ থেকে বেড়ে ১ কোটি ৮০ লাখ হয়েছে, যাদের অধিকাংশই মূলত নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশের।

এসব রোগের ক্ষেত্রে মোট জনসংখ্যার ৯০ শতাংশের বেশি শিশুকে টিকার আওতায় আনতে হয়। নতুবা রোগের প্রাদুর্ভাব ঠেকানো যায় না। ইউনিসেফ জানিয়েছে, টিকাদানের হার কমে আসার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বিভিন্ন এলাকায়। এ বছর আফ্রিকায় হামে আক্রান্ত শিশু ৪০০ শতাংশ বেড়েছে।

গত বছর ২ কোটি ৪৭ লাখ শিশু হামের টিকার প্রথম ডোজ পায়নি আর দ্বিতীয় ডোজ পায়নি আরও ১ কোটি ৪৭ লাখ শিশু। মহামারির সময়ে ৮১ শতাংশ শিশুকে টিকার আওতায় আনা গেলেও এই হার ২০০৮ সালের পর সর্বনিম্ন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েসুস বলেছেন, হাম, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ার মতো প্রাণঘাতী রোগের টিকা দেওয়ার মধ্যেই করোনা মোকাবিলায় পরিকল্পনা নিতে হবে।

ঢাকা/এসএ

শেয়ার করুন

x
English Version

আড়াই কোটি শিশু প্রাণঘাতী রোগের টিকা থেকে বঞ্চিত

আপডেট: ০৭:২৪:৩৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ জুলাই ২০২২

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: করোনাভাইরাস মহামারির কারণে বিশ্বব্যাপী ব্যাপকভাবে ব্যাহত হয়েছে স্বাস্থ্যসেবা। ফলে গত বছর অন্তত আড়াই কোটি শিশু নিয়মিত টিকাদান কর্মসূচিতে ডিপথেরিয়া, ধনুষ্টংকার, হাম ও পোলিওর মতো প্রাণঘাতী রোগের টিকা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। জাতিসংঘের এক পরিসংখ্যানে এমন তথ্য উঠে এসেছে। ১৭৭টি দেশের জাতীয় স্বাস্থ্য ব্যবস্থার তথ্য ব্যবহার করে এ পরিসংখ্যান তৈরি করেছে তারা।

জাতিসংঘের শিশু তহবিল ইউনিসেফ এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এই পরিসংখ্যান অনুযায়ী, নিয়মিত টিকাদান কর্মসূচি থেকে বাদ পড়া শিশুর সংখ্যা ২০২০ সালে মহামারির প্রথম বছরের চেয়ে প্রায় ২০ লাখ এবং ২০১৯ সালে মহামারির আগের বছরের তুলনায় ৬০ লাখ বেশি।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব 

এ অবস্থাকে গত এক প্রজন্মের মধ্যে শিশুদের টিকাদান কর্মসূচিতে সবচেয়ে বড় ধাক্কা হিসেবে বর্ণনা করেছে ইউনিসেফ। করোনা মহামারি শিশুদের এই নিয়মিত টিকাদানের হারকে পিছিয়ে দিয়েছে ২০০০ সালের আগের পর্যায়ে। মহামারির প্রথম ধাক্কা সামলে গত বছর নিয়মিত টিকাদানে উন্নতি হবে বলে অনেকে মনে করেছিলেন। তবে বাস্তবে আরও খারাপ হয়েছে পরিস্থিতি।

ইউনিসেফের জ্যেষ্ঠ ইমিউনাইজেশন বিশেষজ্ঞ নিকোলাস ডেনিয়েলসন বলেন, এটা শিশুদের জন্য অনেক বড় স্বাস্থ্য সংকট। জরুরি ভিত্তিতে এর সমাধান করা প্রয়োজন। সংস্থাটি বলেছে, গত বছর সবার মনোযোগ ছিল করোনার টিকাদান কর্মসূচি নিয়ে। একই সঙ্গে অর্থনৈতিক মন্দা থেকে উত্তরণ এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর চাপ সামাল দিতে বেকায়দায় পড়েছিল দেশগুলো। এসব কারণে শিশুদের নিয়মিত টিকাদান কাজটি বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে।

বিশ্বের প্রতিটি অঞ্চলে এর প্রভাব পড়েছে। ডিপথেরিয়া, ধনুষ্টংকার ও হুপিংকাশির (ডিপিটি ৩) জন্য দেওয়া তিন ডোজ টিকার মোট সংখ্যা, কোনো ধরনের টিকা না পাওয়া শিশুর সংখ্যা এবং একাধিক ডোজ না পাওয়া শিশুর সংখ্যা হিসাব করে দেখা যায়, সারাবিশ্বে টিকাদানের হার আগের বছরের তুলনায় ৫ শতাংশ কমে নেমেছে ৮১ শতাংশে।

এর মধ্যে এক ডোজও টিকা না পাওয়া শিশুর সংখ্যা ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২১ সালে ৩৭ শতাংশ বেড়েছে। এই শিশুদের সংখ্যা এক কোটি ৩০ লাখ থেকে বেড়ে ১ কোটি ৮০ লাখ হয়েছে, যাদের অধিকাংশই মূলত নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশের।

এসব রোগের ক্ষেত্রে মোট জনসংখ্যার ৯০ শতাংশের বেশি শিশুকে টিকার আওতায় আনতে হয়। নতুবা রোগের প্রাদুর্ভাব ঠেকানো যায় না। ইউনিসেফ জানিয়েছে, টিকাদানের হার কমে আসার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বিভিন্ন এলাকায়। এ বছর আফ্রিকায় হামে আক্রান্ত শিশু ৪০০ শতাংশ বেড়েছে।

গত বছর ২ কোটি ৪৭ লাখ শিশু হামের টিকার প্রথম ডোজ পায়নি আর দ্বিতীয় ডোজ পায়নি আরও ১ কোটি ৪৭ লাখ শিশু। মহামারির সময়ে ৮১ শতাংশ শিশুকে টিকার আওতায় আনা গেলেও এই হার ২০০৮ সালের পর সর্বনিম্ন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েসুস বলেছেন, হাম, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ার মতো প্রাণঘাতী রোগের টিকা দেওয়ার মধ্যেই করোনা মোকাবিলায় পরিকল্পনা নিতে হবে।

ঢাকা/এসএ