১২:২৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৪ মে ২০২৪

ই‌চ্ছেমতো সু‌দে আমানত সংগ্র‌হের সু‌যোগ

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৬:৫৬:৫১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৩
  • / ৪১৮৫ বার দেখা হয়েছে

ফাইল ফটো

মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ঠিক করা ব্যাংক আমানতের সুদহার নির্ধারণের নীতিমালা রোহিত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন থেকে নি‌জে‌দের ই‌চ্ছেমতো সু‌দহা‌রে আমানত সংগ্রহ করতে পারবে ব্যাংকগুলো।

আজ মঙ্গলবার (১২ ডি‌সেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করা হয়েছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

এতে বলা হয়, ২০২১ সালের ৮ আগস্টে জারি করা সার্কুলারের মাধ্যমে আমানত সংগ্রহে সুদহারের সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছিল। সেই নির্দেশনা অনুসারে মেয়াদি আমানতের সুদহার মূল্যস্ফীতির নিচে না রাখতে দেশের সব তফসিলি ব্যাংককে নির্দেশনা দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তখন ঋণ বিতরণের সর্বোচ্চ সুদের হার ছিল ৯ শতাংশ। তবে চল‌তি বছ‌রের জুলাই থেকে ঋণের বাজারভিত্তিক সুদহার ব্যবস্থা চালু হওয়ার কারণে ওই সার্কুলারে নির্দেশিত আমানতের সুদহারের নিম্ন সীমার দরকার নেই। তাই ২০২১ সা‌লের ৮ আগস্ট এর নির্দেশনা রহিত করা হলো।

গত নভেম্বর মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৪৯ শতাংশ। গত আগস্ট মাসের পর থেকে টানা চার মাস ধরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১২ শতাংশের ওপরে রয়েছে। এই সংকট সামল দিতে ব্যাংক ঋণের সুদহার বাড়া‌নোর সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। যা গত জুলাই থেকে তা বাস্তবায়নও হয়েছে। তবে এখনও তার কোনো প্রভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।

যে পদ্ধতির ওপর ভিত্তি করে এখন ঋণের সুদহার নির্ধারিত হচ্ছে, তা ‘এসএমএআরটি’ বা ‘স্মার্ট’‘এসএমএআরটি’ বা ‘স্মার্ট’ তথা– সিক্স মান্থ মুভিং এভারেজ রেট অব ট্রেজারি বিল হিসেবে পরিচিত। প্রতি মাসের শুরুতে এই হার জানিয়ে দিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। চলতি বছরের জুলাইয়ে ১৮২ দিন মেয়াদি ট্রেজারি বিলের ৬ মাসের গড় সুদহার (স্মার্ট রেট) ছিল ৭ দশমিক ১০ শতাংশ, আগস্টে ৭ দশমিক ১৪ শতাংশ এবং সেপ্টেম্বরে বেড়ে হয় ৭ দশমিক ২০ শতাংশ। এছাড়া অক্টোবরে ৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ  এবং সবশেষ নভেম্বরে স্মার্ট রেট বেড়ে দাঁড়ায় ৭ দশমিক ৭২ শতাংশে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী, অক্টোবর মাসের ‘স্মার্ট’ হারের সঙ্গে এখন সর্বোচ্চ ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ হারে মার্জিন বা সুদ যোগ করে ডিসেম্বর মাসে ঋণ দিতে পারবে ব্যাংকগুলো। অন্যদিকে ৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ হারে মার্জিন যোগ করতে পারে ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো। অবশ্য একবার সুদহার কার্যকর করা হলে পরবর্তী ছয় মাসে তা আর পরিবর্তন করা যায় না।

আরও পড়ুন: ‘ব্যাংকাস্যুরেন্স’ ব্যবস্থা চালু

ব্যাংকের সুদহার কত হবে ?

নভেম্বরে মাসের ‘স্মার্ট’ হারের সঙ্গে সর্বোচ্চ ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ হারে মার্জিন বা সুদ যোগ করে ডিসেম্বর মাসে ঋণ দিতে পারবে ব্যাংকগুলো। সেই হিসেবে, চলতি ডিসেম্বর মাসে ব্যাংক থেকে বড় অঙ্কের ঋণে সর্বোচ্চ ১১ দশমিক ৪৭ শতাংশ সুদ নিতে পারবে গ্রাহকরা। প্রি-শিপমেন্ট রপ্তানি ঋণের সুদহার হবে ১০ দশমিক ৪৭ শতাংশ। আর কৃষি ও পল্লী ঋণের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১০ দশমিক ৪৭ শতাংশ সুদ নেওয়া যাবে।

গত মাসে অর্থাৎ নভেম্বরে বড় অঙ্কের ঋণে সুদহার ছিল ১০ দশমিক ৯৩ শতাংশ, প্রি-শিপমেন্ট রপ্তানি ঋণের ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ এবং কৃষি ও পল্লী ঋণের ক্ষেত্রে ৯ দশমিক ৪৩ শতাংশ।

তবে ডিসেম্বরে ব্যক্তিগত ও গাড়ি কেনার ঋণে ব্যাংকগুলো নিতে পারবে ১২ দশমিক ৪৭ শতাংশ সুদ। কারণ সিএমএসএমই, ব্যক্তিগত ও গাড়ি কেনার ঋণে অতিরিক্ত ১ শতাংশ তদারকি বা সুপারভিশন চার্জ নেওয়া সুযোগ রয়েছে। যা আগের মাস নভেম্বরে ছিল ১১ দশমিক ৯৩ শতাংশ।

আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সুদহার

ব্যাংকের ক্ষেত্রে শুধু ঋণে সর্বোচ্চ সীমা থাকলেও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আমানত সংগ্রহেও সুদহারের একটা সর্বোচ্চ সীমা দেওয়া হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান স্মার্টের সঙ্গে সর্বোচ্চ ২ দশমিক ৭৫ শতাংশ সুদ যোগ করে আমানত সংগ্রহ করতে পারবে। ‘স্মার্ট’ রেটের সঙ্গে সর্বোচ্চ ৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ হারে মার্জিন বা সুদ যোগ করে ঋণের বিপরীতে সুদ নিতে পারবে ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান-এনবিএফআই। সেই হিসেবে ডিসেম্বর মাসে তাদের সর্বোচ্চ ঋণের সুদহার হবে ১৩ দশমিক ৪৭ শতাংশ এবং আমানতে ১০ দশমিক ৪৭ শতাংশ। ডিসেম্বরে ঠিক করা ঋণের এই সুদহার পরবর্তী ছয় মাসের মধ্যে পরিবর্তন করা যাবে না।

ঢাকা/কেএ

শেয়ার করুন

x
English Version

ই‌চ্ছেমতো সু‌দে আমানত সংগ্র‌হের সু‌যোগ

আপডেট: ০৬:৫৬:৫১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৩

মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ঠিক করা ব্যাংক আমানতের সুদহার নির্ধারণের নীতিমালা রোহিত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন থেকে নি‌জে‌দের ই‌চ্ছেমতো সু‌দহা‌রে আমানত সংগ্রহ করতে পারবে ব্যাংকগুলো।

আজ মঙ্গলবার (১২ ডি‌সেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করা হয়েছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

এতে বলা হয়, ২০২১ সালের ৮ আগস্টে জারি করা সার্কুলারের মাধ্যমে আমানত সংগ্রহে সুদহারের সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছিল। সেই নির্দেশনা অনুসারে মেয়াদি আমানতের সুদহার মূল্যস্ফীতির নিচে না রাখতে দেশের সব তফসিলি ব্যাংককে নির্দেশনা দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তখন ঋণ বিতরণের সর্বোচ্চ সুদের হার ছিল ৯ শতাংশ। তবে চল‌তি বছ‌রের জুলাই থেকে ঋণের বাজারভিত্তিক সুদহার ব্যবস্থা চালু হওয়ার কারণে ওই সার্কুলারে নির্দেশিত আমানতের সুদহারের নিম্ন সীমার দরকার নেই। তাই ২০২১ সা‌লের ৮ আগস্ট এর নির্দেশনা রহিত করা হলো।

গত নভেম্বর মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৪৯ শতাংশ। গত আগস্ট মাসের পর থেকে টানা চার মাস ধরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১২ শতাংশের ওপরে রয়েছে। এই সংকট সামল দিতে ব্যাংক ঋণের সুদহার বাড়া‌নোর সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। যা গত জুলাই থেকে তা বাস্তবায়নও হয়েছে। তবে এখনও তার কোনো প্রভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।

যে পদ্ধতির ওপর ভিত্তি করে এখন ঋণের সুদহার নির্ধারিত হচ্ছে, তা ‘এসএমএআরটি’ বা ‘স্মার্ট’‘এসএমএআরটি’ বা ‘স্মার্ট’ তথা– সিক্স মান্থ মুভিং এভারেজ রেট অব ট্রেজারি বিল হিসেবে পরিচিত। প্রতি মাসের শুরুতে এই হার জানিয়ে দিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। চলতি বছরের জুলাইয়ে ১৮২ দিন মেয়াদি ট্রেজারি বিলের ৬ মাসের গড় সুদহার (স্মার্ট রেট) ছিল ৭ দশমিক ১০ শতাংশ, আগস্টে ৭ দশমিক ১৪ শতাংশ এবং সেপ্টেম্বরে বেড়ে হয় ৭ দশমিক ২০ শতাংশ। এছাড়া অক্টোবরে ৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ  এবং সবশেষ নভেম্বরে স্মার্ট রেট বেড়ে দাঁড়ায় ৭ দশমিক ৭২ শতাংশে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী, অক্টোবর মাসের ‘স্মার্ট’ হারের সঙ্গে এখন সর্বোচ্চ ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ হারে মার্জিন বা সুদ যোগ করে ডিসেম্বর মাসে ঋণ দিতে পারবে ব্যাংকগুলো। অন্যদিকে ৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ হারে মার্জিন যোগ করতে পারে ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো। অবশ্য একবার সুদহার কার্যকর করা হলে পরবর্তী ছয় মাসে তা আর পরিবর্তন করা যায় না।

আরও পড়ুন: ‘ব্যাংকাস্যুরেন্স’ ব্যবস্থা চালু

ব্যাংকের সুদহার কত হবে ?

নভেম্বরে মাসের ‘স্মার্ট’ হারের সঙ্গে সর্বোচ্চ ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ হারে মার্জিন বা সুদ যোগ করে ডিসেম্বর মাসে ঋণ দিতে পারবে ব্যাংকগুলো। সেই হিসেবে, চলতি ডিসেম্বর মাসে ব্যাংক থেকে বড় অঙ্কের ঋণে সর্বোচ্চ ১১ দশমিক ৪৭ শতাংশ সুদ নিতে পারবে গ্রাহকরা। প্রি-শিপমেন্ট রপ্তানি ঋণের সুদহার হবে ১০ দশমিক ৪৭ শতাংশ। আর কৃষি ও পল্লী ঋণের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১০ দশমিক ৪৭ শতাংশ সুদ নেওয়া যাবে।

গত মাসে অর্থাৎ নভেম্বরে বড় অঙ্কের ঋণে সুদহার ছিল ১০ দশমিক ৯৩ শতাংশ, প্রি-শিপমেন্ট রপ্তানি ঋণের ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ এবং কৃষি ও পল্লী ঋণের ক্ষেত্রে ৯ দশমিক ৪৩ শতাংশ।

তবে ডিসেম্বরে ব্যক্তিগত ও গাড়ি কেনার ঋণে ব্যাংকগুলো নিতে পারবে ১২ দশমিক ৪৭ শতাংশ সুদ। কারণ সিএমএসএমই, ব্যক্তিগত ও গাড়ি কেনার ঋণে অতিরিক্ত ১ শতাংশ তদারকি বা সুপারভিশন চার্জ নেওয়া সুযোগ রয়েছে। যা আগের মাস নভেম্বরে ছিল ১১ দশমিক ৯৩ শতাংশ।

আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সুদহার

ব্যাংকের ক্ষেত্রে শুধু ঋণে সর্বোচ্চ সীমা থাকলেও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আমানত সংগ্রহেও সুদহারের একটা সর্বোচ্চ সীমা দেওয়া হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান স্মার্টের সঙ্গে সর্বোচ্চ ২ দশমিক ৭৫ শতাংশ সুদ যোগ করে আমানত সংগ্রহ করতে পারবে। ‘স্মার্ট’ রেটের সঙ্গে সর্বোচ্চ ৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ হারে মার্জিন বা সুদ যোগ করে ঋণের বিপরীতে সুদ নিতে পারবে ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান-এনবিএফআই। সেই হিসেবে ডিসেম্বর মাসে তাদের সর্বোচ্চ ঋণের সুদহার হবে ১৩ দশমিক ৪৭ শতাংশ এবং আমানতে ১০ দশমিক ৪৭ শতাংশ। ডিসেম্বরে ঠিক করা ঋণের এই সুদহার পরবর্তী ছয় মাসের মধ্যে পরিবর্তন করা যাবে না।

ঢাকা/কেএ