০৪:১৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪
আমদানির নামে অর্থ পাচার

এলসি খোলার আগে পণ্যের মূল্য যাচাইয়ে কড়াকড়ি

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১১:৪৪:২২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • / ৪১৯৬ বার দেখা হয়েছে

আমদানির আড়ালে টাকা পাচার বন্ধে কঠোর তদারকি আরোপ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন থেকে আন্তর্জাতিক বাজার দরের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সঠিকভাবে আমদানীয় পণ্যের দাম ও মান যাচাই করিয়ে নিতে হবে। একই সঙ্গে এলসিতে আমদানি পণ্যের সব ধরনের তথ্য উল্লেখ করতে হবে। পণ্যের সম্পূর্ণ বিবরণ, মান, ব্র্যান্ড, উৎপাদনের তারিখ, প্যাকেজিং সংক্রান্ত তথ্য ও গ্রেডসহ বেশ কিছু তথ্য দিতে বলা হয়েছে আমদানিকারক বা তার দেশীয় এজেন্টকে। পণ্য শনাক্তকরণের এইচএসকোড যথাযথভাবে স্পষ্ট করে লিখতে হবে। এসব স্পষ্টকরণ ছাড়া কোনো এলসি ব্যাংক গ্রহণ করতে পারবে না।

সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) এ বিষয়ে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে সার্কুলার দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, বিদেশ থেকে আমদানি করা পণ্য সম্পর্কে এমনভাবে তথ্য দিতে হবে যার মাধ্যমে পণ্যের গুণগত মান পৃথক করা যায় এবং ইউনিট প্রতি মূল্য ও পরিমাণ যাচাই করা সম্ভব হয়।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে একটি সার্কুলার জারি করে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে। এটি অবিলম্বে কার্যকর হবে। একই সঙ্গে সার্কুলারটি সংশ্লিষ্ট সব আমদানিকারক ও রপ্তানিকারকদের জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরেই আমদানির আড়ালে দেশ থেকে ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা পাচার হচ্ছে। এর মধ্যে আমদানি পণ্যের মূল্য বেশি দেখিয়ে, বেশি পরিমাণ পণ্যের মূল্য পরিশোধ করে কম পরিমাণ পণ্য দেশে আনা, ভালো পণ্যের দাম পরিশোধ করে নিুমানের পণ্য দেশে আনাসহ নানাভাবে দেশ থেকে আমদানির আড়ালে টাকা পাচার হচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একাধিক তদন্তে এ ধরনের ঘটনা ধরা পড়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক আমদানির এলসি খোলার সময় সংশ্লিষ্ট পণ্যের দাম, মান, ইউনিট, পরিমাণ ও এইচএসকোড সঠিকভাবে লেখার নির্দেশনা দিয়েছে। এখন থেকে এলসি খুলতে গেলে এসব নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে। এছাড়া এলসি খোলা যাবে না।

সার্কুলারে বলা হয়, রপ্তানিকারক প্রেরিত প্রেফরমা ইনভয়েসে (পিআই) অথবা তাদের এদেশীয় এজেন্ট কর্তৃক সরবরাহ করা ইন্ডেন্টে আমদানীয় পণ্য সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য উল্লেখ থাকতে হবে। এর মধ্যে পণ্যের পূর্ণাঙ্গ বিবরণ, মান, ব্র্যান্ড, উৎপাদনের তারিখ, প্যাকেজিং সংক্রান্ত তথ্য ও গ্রেড (যদি থাকে), যা দ্বারা পণ্যের গুণগত মান পৃথক করা যায় এবং ইউনিটপ্রতি মূল্য ও পরিমাণ যথাযথভাবে লিখতে হবে। একই পিআইয়ের মাধ্যমে একাধিক পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে আলাদাভাবে প্রতিটি পণ্যের বিবরণ, মান, ব্র্যান্ড, উৎপাদনের তারিখ, প্যাকেজিং সংক্রান্ত তথ্য ও গ্রেড (যদি থাকে) যা দ্বারা পণ্যের গুণগত মান পৃথক করা যায় এবং ইউনিটপ্রতি মূল্য ও পরিমাণ আলাদাভাবে লিখতে হবে।

আরও পড়ুন: রপ্তানিতে নগদ সহায়তা পাবে ৩৮ পণ্য

একই পিআইয়ের মাধ্যমে ভিন্ন ভিন্ন পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে সাধারণভাবে সব পণ্যকে একটি নির্দিষ্ট ইউনিট যেমন-কেজি, লিটার অথবা পিস ইত্যাদিতে পরিমাপ না করে তাদের প্রকৃতি অনুযায়ী প্রযোজ্য ইউনিটে উপস্থাপন করতে হবে।

সার্কুলারে আরও বলা হয়, আন্তর্জাতিক চেম্বার অব কমার্স (আইসিসি) কর্তৃক অনুমোদিত মানদণ্ড এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে পরিবহণ ভাড়া যথাযথভাবে উল্লেখ করতে হবে। আমদানীয় পণ্য সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিতকরণের জন্য এইচএসকোডের ৬ ডিজিটের পরের ২ ডিজিট (মোট ৮ ডিজিট পূর্ণরূপে) উল্লেখ করতে হবে। সূত্র জানায়, এলসিতে পণ্যের বিবরণ ও এইচএসকোড যথাযথভাবে না লিখলে পণ্যটি যেমন শনাক্ত করা যায় না তেমনি একে শুল্কায়ন করতে গেলেও জটিলতা দেখা দেয়। এর মাধ্যমে শুল্ক ফাঁকি দেওয়ার ঘটনাও ঘটছে।

ঢাকা/এসএ

শেয়ার করুন

x

আমদানির নামে অর্থ পাচার

এলসি খোলার আগে পণ্যের মূল্য যাচাইয়ে কড়াকড়ি

আপডেট: ১১:৪৪:২২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩

আমদানির আড়ালে টাকা পাচার বন্ধে কঠোর তদারকি আরোপ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন থেকে আন্তর্জাতিক বাজার দরের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সঠিকভাবে আমদানীয় পণ্যের দাম ও মান যাচাই করিয়ে নিতে হবে। একই সঙ্গে এলসিতে আমদানি পণ্যের সব ধরনের তথ্য উল্লেখ করতে হবে। পণ্যের সম্পূর্ণ বিবরণ, মান, ব্র্যান্ড, উৎপাদনের তারিখ, প্যাকেজিং সংক্রান্ত তথ্য ও গ্রেডসহ বেশ কিছু তথ্য দিতে বলা হয়েছে আমদানিকারক বা তার দেশীয় এজেন্টকে। পণ্য শনাক্তকরণের এইচএসকোড যথাযথভাবে স্পষ্ট করে লিখতে হবে। এসব স্পষ্টকরণ ছাড়া কোনো এলসি ব্যাংক গ্রহণ করতে পারবে না।

সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) এ বিষয়ে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে সার্কুলার দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, বিদেশ থেকে আমদানি করা পণ্য সম্পর্কে এমনভাবে তথ্য দিতে হবে যার মাধ্যমে পণ্যের গুণগত মান পৃথক করা যায় এবং ইউনিট প্রতি মূল্য ও পরিমাণ যাচাই করা সম্ভব হয়।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে একটি সার্কুলার জারি করে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে। এটি অবিলম্বে কার্যকর হবে। একই সঙ্গে সার্কুলারটি সংশ্লিষ্ট সব আমদানিকারক ও রপ্তানিকারকদের জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরেই আমদানির আড়ালে দেশ থেকে ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা পাচার হচ্ছে। এর মধ্যে আমদানি পণ্যের মূল্য বেশি দেখিয়ে, বেশি পরিমাণ পণ্যের মূল্য পরিশোধ করে কম পরিমাণ পণ্য দেশে আনা, ভালো পণ্যের দাম পরিশোধ করে নিুমানের পণ্য দেশে আনাসহ নানাভাবে দেশ থেকে আমদানির আড়ালে টাকা পাচার হচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একাধিক তদন্তে এ ধরনের ঘটনা ধরা পড়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক আমদানির এলসি খোলার সময় সংশ্লিষ্ট পণ্যের দাম, মান, ইউনিট, পরিমাণ ও এইচএসকোড সঠিকভাবে লেখার নির্দেশনা দিয়েছে। এখন থেকে এলসি খুলতে গেলে এসব নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে। এছাড়া এলসি খোলা যাবে না।

সার্কুলারে বলা হয়, রপ্তানিকারক প্রেরিত প্রেফরমা ইনভয়েসে (পিআই) অথবা তাদের এদেশীয় এজেন্ট কর্তৃক সরবরাহ করা ইন্ডেন্টে আমদানীয় পণ্য সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য উল্লেখ থাকতে হবে। এর মধ্যে পণ্যের পূর্ণাঙ্গ বিবরণ, মান, ব্র্যান্ড, উৎপাদনের তারিখ, প্যাকেজিং সংক্রান্ত তথ্য ও গ্রেড (যদি থাকে), যা দ্বারা পণ্যের গুণগত মান পৃথক করা যায় এবং ইউনিটপ্রতি মূল্য ও পরিমাণ যথাযথভাবে লিখতে হবে। একই পিআইয়ের মাধ্যমে একাধিক পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে আলাদাভাবে প্রতিটি পণ্যের বিবরণ, মান, ব্র্যান্ড, উৎপাদনের তারিখ, প্যাকেজিং সংক্রান্ত তথ্য ও গ্রেড (যদি থাকে) যা দ্বারা পণ্যের গুণগত মান পৃথক করা যায় এবং ইউনিটপ্রতি মূল্য ও পরিমাণ আলাদাভাবে লিখতে হবে।

আরও পড়ুন: রপ্তানিতে নগদ সহায়তা পাবে ৩৮ পণ্য

একই পিআইয়ের মাধ্যমে ভিন্ন ভিন্ন পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে সাধারণভাবে সব পণ্যকে একটি নির্দিষ্ট ইউনিট যেমন-কেজি, লিটার অথবা পিস ইত্যাদিতে পরিমাপ না করে তাদের প্রকৃতি অনুযায়ী প্রযোজ্য ইউনিটে উপস্থাপন করতে হবে।

সার্কুলারে আরও বলা হয়, আন্তর্জাতিক চেম্বার অব কমার্স (আইসিসি) কর্তৃক অনুমোদিত মানদণ্ড এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে পরিবহণ ভাড়া যথাযথভাবে উল্লেখ করতে হবে। আমদানীয় পণ্য সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিতকরণের জন্য এইচএসকোডের ৬ ডিজিটের পরের ২ ডিজিট (মোট ৮ ডিজিট পূর্ণরূপে) উল্লেখ করতে হবে। সূত্র জানায়, এলসিতে পণ্যের বিবরণ ও এইচএসকোড যথাযথভাবে না লিখলে পণ্যটি যেমন শনাক্ত করা যায় না তেমনি একে শুল্কায়ন করতে গেলেও জটিলতা দেখা দেয়। এর মাধ্যমে শুল্ক ফাঁকি দেওয়ার ঘটনাও ঘটছে।

ঢাকা/এসএ