০১:৫২ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৬ মে ২০২৪

ক্রিমিয়া সেতুতে হামলার প্রতিশোধের হুঁশিয়ারি পুতিনের

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১২:৩৮:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ জুলাই ২০২৩
  • / ৪১৫৭ বার দেখা হয়েছে

ক্রিমিয়া উপদ্বীপের সাথে রাশিয়াকে সংযুক্তকারী ইউরোপের বৃহত্তম সড়ক ও রেল সেতুতে ইউক্রেনের হামলার ঘটনায় প্রতিশোধের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি বলেছেন, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় প্রস্তাবনা তৈরি করছে।

ইউক্রেন অবশ্য আনুষ্ঠানিকভাবে এই হামলার দায় স্বীকার করেনি। বার্তাসংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্রিমিয়াকে রাশিয়ার সাথে সংযুক্তকারী সেতুতে ইউক্রেনের হামলায় দুই বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং তাদের শিশু আহত হওয়ার পর প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

সোমবার টেলিভিশনে করা মন্তব্যে তিনি বলেন, ‘গত রাতে সেতুতে আরেকটি সন্ত্রাসী হামলা করা হয়েছে। অবশ্যই, রাশিয়ার কাছ থেকে এই হামলার জবাব দেওয়া হবে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত প্রস্তাব প্রস্তুত করছে।’ প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেন, ‘সামরিক দৃষ্টিকোণ থেকে, এই ধরনের হামলা একটি অর্থহীন অপরাধ।’

তিনি বলেন, বৃহৎ এই সেতুটি ‘দীর্ঘ সময় ধরে’ সামরিক পরিবহনের জন্য ব্যবহার করা হয়নি এবং সেখানে তিনি কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার আহ্বান জানিয়েছেন। তার ভাষায়, ‘আমি এই কৌশলগত ও গুরুত্বপূর্ণ পরিবহন অবকাঠোমোর নিরাপত্তা আরও উন্নত করার জন্য নির্দিষ্ট প্রস্তাবের জন্য অপেক্ষা করছি।’

রুশ কর্মকর্তারা বলেছেন, মস্কো-নির্মিত এই সেতুতে ইউক্রেনের হামলায় এক বেসামরিক দম্পতি নিহত এবং তাদের সন্তান আহত হয়েছেন। সোমবার স্থানীয় সময় ভোররাতে দু’টি ড্রোন সেতুতে আঘাত করে এবং এর জন্য সরাসরি ‘কিয়েভ সরকারকে’ দোষারোপ করেছে মস্কো।

ইউক্রেনে আক্রমণ শুরু হওয়ার পরে মস্কো-অধিভুক্ত ক্রিমিয়ার বাণিজ্যিক ফ্লাইটগুলো স্থগিত করা হয়েছে এবং বেশিরভাগ রাশিয়ান পর্যটক সাধারণত সেতুর ওপর দিয়ে ক্রিমিয়ায় যান।

ইউক্রেনের একটি সূত্র বার্তাসংস্থা এএফপিকে জানিয়েছে, ইউক্রেনীয় নৌবাহিনী এবং এসবিইউ নিরাপত্তা পরিষেবা রাশিয়ান নির্মিত এই সেতুতে রাতের আঁধারে হামলা চালিয়েছে।

রাশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী মারাত খুসনুলিন পুতিনকে বলেছেন, হামলার পরও সেতুটির সহায়ক কাঠামো অক্ষত রয়েছে।

এদিকে মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, রাশিয়ার সাথে ক্রিমিয়ার সংযোগকারী এই সেতুটি হামলার একদিন পর আংশিকভাবে আবার খুলে দেওয়া হয়েছে বলে রাশিয়ান সরকার বলেছে।

চলাচলরত যানবাহনগুলো কের্চ প্রণালীজুড়ে নির্মিত এই সেতুর একদিকের লেন ব্যবহার করছে বলে একজন কর্মকর্তা বলেছেন। সেতুতে একক লেন ব্যবহার করে গাড়ি চলাচলের একটি ভিডিও ফুটেজও প্রকাশ করেছেন তিনি।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে সামরিক অভিযান চালিয়ে ইউক্রেনের কাছ থেকে ক্রিমিয়া দ্বীপের দখল নেয় রাশিয়া। পরে এই দ্বীপের সাথে রাশিয়ার সড়ক ও রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপনের জন্য দীর্ঘ ১৯ কিলোমিটার সেতুটি নির্মাণ করা হয়।

ক্রিমিয়া দ্বীপ দখলে নেওয়ার চার বছর পর ২০১৮ সালে সেতুটিকে রাশিয়ার পরিবহন নেটওয়ার্কের সাথে যুক্ত করে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন মহা ধুমধাম করে সেটির উদ্বোধন করেছিলেন।

আরও পড়ুন: চীন-ভিয়েতনামে টাইফুন তালিমের তাণ্ডব

ইউক্রেন যুদ্ধে এই সেতু রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এক সরবরাহ রুটে পরিণত হয়েছে। কারণ ইউক্রেনের দক্ষিণের খেরসন অঞ্চলে রুশ সৈন্যদের কাছে অস্ত্র ও সামরিক রসদ পাঠানোর অন্যতম পথ ক্রিমিয়া উপদ্বীপের দীর্ঘ এই সেতুটি।

১২ মাইল (১৯ কিলোমিটার) দীর্ঘ এই সড়ক ও রেল সেতুটি গত বছরের অক্টোবরেও একটি বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। ক্রেমলিন সেসময় বলেছিল, ইউক্রেনীয় নিরাপত্তা বাহিনী ওই হামলা চালিয়েছিল। অবশ্য কয়েক মাস পর ইউক্রেন পরোক্ষভাবে ওই হামলার কথা স্বীকার করে।

ঢাকা/এসএ

শেয়ার করুন

x

ক্রিমিয়া সেতুতে হামলার প্রতিশোধের হুঁশিয়ারি পুতিনের

আপডেট: ১২:৩৮:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ জুলাই ২০২৩

ক্রিমিয়া উপদ্বীপের সাথে রাশিয়াকে সংযুক্তকারী ইউরোপের বৃহত্তম সড়ক ও রেল সেতুতে ইউক্রেনের হামলার ঘটনায় প্রতিশোধের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি বলেছেন, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় প্রস্তাবনা তৈরি করছে।

ইউক্রেন অবশ্য আনুষ্ঠানিকভাবে এই হামলার দায় স্বীকার করেনি। বার্তাসংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্রিমিয়াকে রাশিয়ার সাথে সংযুক্তকারী সেতুতে ইউক্রেনের হামলায় দুই বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং তাদের শিশু আহত হওয়ার পর প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

সোমবার টেলিভিশনে করা মন্তব্যে তিনি বলেন, ‘গত রাতে সেতুতে আরেকটি সন্ত্রাসী হামলা করা হয়েছে। অবশ্যই, রাশিয়ার কাছ থেকে এই হামলার জবাব দেওয়া হবে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত প্রস্তাব প্রস্তুত করছে।’ প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেন, ‘সামরিক দৃষ্টিকোণ থেকে, এই ধরনের হামলা একটি অর্থহীন অপরাধ।’

তিনি বলেন, বৃহৎ এই সেতুটি ‘দীর্ঘ সময় ধরে’ সামরিক পরিবহনের জন্য ব্যবহার করা হয়নি এবং সেখানে তিনি কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার আহ্বান জানিয়েছেন। তার ভাষায়, ‘আমি এই কৌশলগত ও গুরুত্বপূর্ণ পরিবহন অবকাঠোমোর নিরাপত্তা আরও উন্নত করার জন্য নির্দিষ্ট প্রস্তাবের জন্য অপেক্ষা করছি।’

রুশ কর্মকর্তারা বলেছেন, মস্কো-নির্মিত এই সেতুতে ইউক্রেনের হামলায় এক বেসামরিক দম্পতি নিহত এবং তাদের সন্তান আহত হয়েছেন। সোমবার স্থানীয় সময় ভোররাতে দু’টি ড্রোন সেতুতে আঘাত করে এবং এর জন্য সরাসরি ‘কিয়েভ সরকারকে’ দোষারোপ করেছে মস্কো।

ইউক্রেনে আক্রমণ শুরু হওয়ার পরে মস্কো-অধিভুক্ত ক্রিমিয়ার বাণিজ্যিক ফ্লাইটগুলো স্থগিত করা হয়েছে এবং বেশিরভাগ রাশিয়ান পর্যটক সাধারণত সেতুর ওপর দিয়ে ক্রিমিয়ায় যান।

ইউক্রেনের একটি সূত্র বার্তাসংস্থা এএফপিকে জানিয়েছে, ইউক্রেনীয় নৌবাহিনী এবং এসবিইউ নিরাপত্তা পরিষেবা রাশিয়ান নির্মিত এই সেতুতে রাতের আঁধারে হামলা চালিয়েছে।

রাশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী মারাত খুসনুলিন পুতিনকে বলেছেন, হামলার পরও সেতুটির সহায়ক কাঠামো অক্ষত রয়েছে।

এদিকে মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, রাশিয়ার সাথে ক্রিমিয়ার সংযোগকারী এই সেতুটি হামলার একদিন পর আংশিকভাবে আবার খুলে দেওয়া হয়েছে বলে রাশিয়ান সরকার বলেছে।

চলাচলরত যানবাহনগুলো কের্চ প্রণালীজুড়ে নির্মিত এই সেতুর একদিকের লেন ব্যবহার করছে বলে একজন কর্মকর্তা বলেছেন। সেতুতে একক লেন ব্যবহার করে গাড়ি চলাচলের একটি ভিডিও ফুটেজও প্রকাশ করেছেন তিনি।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে সামরিক অভিযান চালিয়ে ইউক্রেনের কাছ থেকে ক্রিমিয়া দ্বীপের দখল নেয় রাশিয়া। পরে এই দ্বীপের সাথে রাশিয়ার সড়ক ও রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপনের জন্য দীর্ঘ ১৯ কিলোমিটার সেতুটি নির্মাণ করা হয়।

ক্রিমিয়া দ্বীপ দখলে নেওয়ার চার বছর পর ২০১৮ সালে সেতুটিকে রাশিয়ার পরিবহন নেটওয়ার্কের সাথে যুক্ত করে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন মহা ধুমধাম করে সেটির উদ্বোধন করেছিলেন।

আরও পড়ুন: চীন-ভিয়েতনামে টাইফুন তালিমের তাণ্ডব

ইউক্রেন যুদ্ধে এই সেতু রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এক সরবরাহ রুটে পরিণত হয়েছে। কারণ ইউক্রেনের দক্ষিণের খেরসন অঞ্চলে রুশ সৈন্যদের কাছে অস্ত্র ও সামরিক রসদ পাঠানোর অন্যতম পথ ক্রিমিয়া উপদ্বীপের দীর্ঘ এই সেতুটি।

১২ মাইল (১৯ কিলোমিটার) দীর্ঘ এই সড়ক ও রেল সেতুটি গত বছরের অক্টোবরেও একটি বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। ক্রেমলিন সেসময় বলেছিল, ইউক্রেনীয় নিরাপত্তা বাহিনী ওই হামলা চালিয়েছিল। অবশ্য কয়েক মাস পর ইউক্রেন পরোক্ষভাবে ওই হামলার কথা স্বীকার করে।

ঢাকা/এসএ