১২:৩৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৪ মে ২০২৪

গেট খোলা ছিল, ঝুঁকি নেন মাইক্রোবাসের চালক

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৫:৫৭:০৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ জুলাই ২০২২
  • / ৪১৪০ বার দেখা হয়েছে

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: টিপটিপ বৃষ্টিতে ছুটছিল মাইক্রোবাসটি। যখন চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে খৈয়াছড়া রেলক্রসিংয়ে কাছে পৌঁছায় সেখানে গেট খোলা ছিল। মাইক্রোবাসটি রেললাইন পার হতে যায়। এমন সময় ছুটে আসা ট্রেন মাইক্রোবাসটিকে ধাক্কা দেয়। এতেই ঘটে যায় ভয়াবহ প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা।

এমনটাই জানালেন স্থানীয় চা দোকানদার নাজিম উদ্দিন। তিনি বলেন, মাইক্রোবাসের চালক ট্রেন দেখেও ট্রেন আসার আগে রাস্তা পার হতে পারবে ভেবে লাইনের ওপর গাড়ি তুলে দেন। কিন্তু পার হওয়ার আগেই ট্রেনের ধাক্কায় মাইক্রোবাসটি দুমড়েমুচড়ে যায়। ট্রেনটি মাইক্রোবাসটিকে ঘটনাস্থল থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে ঠেলে নিয়ে যায়।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

দুর্ঘটনার মিনিট পাঁচেক আগেও গেটবার ফেলা ছিল বলে ধারণা হারাধন নাথ নামের এক বৃদ্ধের। তিনি বলেন, দুর্ঘটনার মিনিট পাঁচেক আগে আমার পুত্রবধূ সড়ক দিয়ে গরুর জন্য ঘাস কাটতে যায়। এ সময় সে গেটবার ফেলা ছিল দেখেছে। গেটবারের নিচ দিয়ে সে পার হয়।

তাহলে গেটবারটি কে খুলল আর গেটম্যান সাদ্দাম কোথায় ছিলো? এ প্রশ্নের উত্তরে স্থানীয় চা দোকানদার ভোলা মিস্ত্রি জানায়, গেটবার ফেলে সাদ্দাম নামাজ পড়তে যায়। দুর্ঘটনার পর আমাদের সাথে মসজিদ থেকে বের হয়ে সেও ঘটনাস্থলে যায়। গেটবার খুলে সাদ্দাম নামাজ পড়তে গেলে সম্ভবত কেউ রাস্তা পার হতে গেটবারটি উপরে তুলে ফেলেছিল।

প্রায়ই গাড়ির পর্যটকরা গেটম্যানের বাধা মানতে চায় না বলে জানায় স্থানীয়রা। এ বিষয়ে ভোলা মিস্ত্রি বলে, এ নিয়ে ঝামেলাও হয়। কয়েকদিন আগে মোটরসাইকেল আরোহীদের গেটবার তুলে রাস্তা পার হতে বাধা দিলে সাদ্দামকে তারা মারধর করে। এ সময় স্থানীয় দোকানদাররা গিয়ে তাকে উদ্ধার করে।

গতকাল (শুক্রবার) মর্মান্তিক ওই দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই নিহত হয় ১১ জন। আহত হন আরও ৬ জন। তারা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

এ ঘটনায় শুক্রবার সন্ধ্যায় গেটম্যান সাদ্দামকে আটক করা হয়। রাতে তাকে আসামি করে মামলা করে সরকারি রেলওয়ে পুলিশ (জিআরপি)। দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে তাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। ঘটনাটি তদন্তে কমিটি করা হয়েছে। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে ১১ জন নিহত হওয়ার পরও এই রেলগেট চলছে অস্থায়ী অপ্রশিক্ষিত ওয়েম্যান (রেলপথ সংস্কারের কাজে নিয়োজিত) দিয়ে। সুবাস দাশ নামের একজন ওয়েম্যান সেখানে গেটম্যানের দায়িত্ব পালন করছে। তিনি বলে, ঝরনা সড়কে রেল গেটে লাইন থেকে তিনজনকে দেওয়া হয়েছে। আমরা এখন দায়িত্ব পালন করছি। 

গেটম্যান হিসেবে যে তিনজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তারা হলো, সুবাস দাস, রিপন ও নকুল। আজ সকাল থেকে ৮ ঘণ্টা করে গেটম্যান না দেওয়া পর্যন্ত তারা দায়িত্ব পালন করবে বলে জানান সুবাস দাস।

ঢাকা/এসএ

শেয়ার করুন

x
English Version

গেট খোলা ছিল, ঝুঁকি নেন মাইক্রোবাসের চালক

আপডেট: ০৫:৫৭:০৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ জুলাই ২০২২

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: টিপটিপ বৃষ্টিতে ছুটছিল মাইক্রোবাসটি। যখন চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে খৈয়াছড়া রেলক্রসিংয়ে কাছে পৌঁছায় সেখানে গেট খোলা ছিল। মাইক্রোবাসটি রেললাইন পার হতে যায়। এমন সময় ছুটে আসা ট্রেন মাইক্রোবাসটিকে ধাক্কা দেয়। এতেই ঘটে যায় ভয়াবহ প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা।

এমনটাই জানালেন স্থানীয় চা দোকানদার নাজিম উদ্দিন। তিনি বলেন, মাইক্রোবাসের চালক ট্রেন দেখেও ট্রেন আসার আগে রাস্তা পার হতে পারবে ভেবে লাইনের ওপর গাড়ি তুলে দেন। কিন্তু পার হওয়ার আগেই ট্রেনের ধাক্কায় মাইক্রোবাসটি দুমড়েমুচড়ে যায়। ট্রেনটি মাইক্রোবাসটিকে ঘটনাস্থল থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে ঠেলে নিয়ে যায়।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

দুর্ঘটনার মিনিট পাঁচেক আগেও গেটবার ফেলা ছিল বলে ধারণা হারাধন নাথ নামের এক বৃদ্ধের। তিনি বলেন, দুর্ঘটনার মিনিট পাঁচেক আগে আমার পুত্রবধূ সড়ক দিয়ে গরুর জন্য ঘাস কাটতে যায়। এ সময় সে গেটবার ফেলা ছিল দেখেছে। গেটবারের নিচ দিয়ে সে পার হয়।

তাহলে গেটবারটি কে খুলল আর গেটম্যান সাদ্দাম কোথায় ছিলো? এ প্রশ্নের উত্তরে স্থানীয় চা দোকানদার ভোলা মিস্ত্রি জানায়, গেটবার ফেলে সাদ্দাম নামাজ পড়তে যায়। দুর্ঘটনার পর আমাদের সাথে মসজিদ থেকে বের হয়ে সেও ঘটনাস্থলে যায়। গেটবার খুলে সাদ্দাম নামাজ পড়তে গেলে সম্ভবত কেউ রাস্তা পার হতে গেটবারটি উপরে তুলে ফেলেছিল।

প্রায়ই গাড়ির পর্যটকরা গেটম্যানের বাধা মানতে চায় না বলে জানায় স্থানীয়রা। এ বিষয়ে ভোলা মিস্ত্রি বলে, এ নিয়ে ঝামেলাও হয়। কয়েকদিন আগে মোটরসাইকেল আরোহীদের গেটবার তুলে রাস্তা পার হতে বাধা দিলে সাদ্দামকে তারা মারধর করে। এ সময় স্থানীয় দোকানদাররা গিয়ে তাকে উদ্ধার করে।

গতকাল (শুক্রবার) মর্মান্তিক ওই দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই নিহত হয় ১১ জন। আহত হন আরও ৬ জন। তারা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

এ ঘটনায় শুক্রবার সন্ধ্যায় গেটম্যান সাদ্দামকে আটক করা হয়। রাতে তাকে আসামি করে মামলা করে সরকারি রেলওয়ে পুলিশ (জিআরপি)। দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে তাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। ঘটনাটি তদন্তে কমিটি করা হয়েছে। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে ১১ জন নিহত হওয়ার পরও এই রেলগেট চলছে অস্থায়ী অপ্রশিক্ষিত ওয়েম্যান (রেলপথ সংস্কারের কাজে নিয়োজিত) দিয়ে। সুবাস দাশ নামের একজন ওয়েম্যান সেখানে গেটম্যানের দায়িত্ব পালন করছে। তিনি বলে, ঝরনা সড়কে রেল গেটে লাইন থেকে তিনজনকে দেওয়া হয়েছে। আমরা এখন দায়িত্ব পালন করছি। 

গেটম্যান হিসেবে যে তিনজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তারা হলো, সুবাস দাস, রিপন ও নকুল। আজ সকাল থেকে ৮ ঘণ্টা করে গেটম্যান না দেওয়া পর্যন্ত তারা দায়িত্ব পালন করবে বলে জানান সুবাস দাস।

ঢাকা/এসএ