০৩:৫৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪

চেক নগদায়নের পূর্বে শেয়ার ক্রয়ে নিষেধাজ্ঞা

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১০:৩৭:১৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ অক্টোবর ২০২২
  • / ৪২৯৯ বার দেখা হয়েছে

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: এখন থেকে চেক দিয়ে আন শেয়ার কেনা যাবে না। তবে চেক নগদায়ন হলে শেয়ার কিনা যাবে। এমন নির্দেশনা দিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জের (বিএসইসি)। গতকাল মঙ্গলবার ১১ অক্টোবর দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সকল সদস্যদের কাছে এই সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা দিয়েছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

বিএসইসির সহকারী পরিচালক মো. তাহাজ্জাদ হোসেন স্বাক্ষরিত চিঠি ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও চিপ রেগুলেটরি অফিসারদের বরাবর পাঠানো হয়েছে। ওই চিঠি সংযুক্ত করে করে সকল সদস্যকে পাঠিয়েছে ডিএসই।

চিঠিতে বলা হয়েছে, গত ২২ সেপ্টেম্বর বিএসইসির কমিশনার মো: আবদুল হালিম এর সভাপতিত্বে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের চিপ রেগুলেটরি অফিসার ও বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তাদের সাথে কমিশনের এসআরআই বিভাগের একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় যে সব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তা আগামী ডিসেম্বর,২০২২ এর মধ্যে পরিপালন করতে বলা হয়েছে। এর সাথে ২০১০ সালের সার্ক্যুলারটি যুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২০১০ সালের ৬ ডিসেম্বর দেওয়া সার্ক্যুলারে বলা হয়েছিলো, কোন বিনিয়োগকারী সিকিউরিটি ক্রয়ের ক্ষেত্রে স্টক ব্রোকারকে চেক প্রদান করলে তা নগদায়নের পূর্বে সিকিউরিটি ক্রয় করলে  সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স ১৯৯৬ এর ১৬ এর (এ) ধারা লংঘন হবে। এমন্ত অবস্থায় চেক নগদায়ন করার পূর্বে শেয়ার ক্রয় করা যাবে না।

জানা যায়, ২০১০ সালে এই আদেশ দিয়েছিল মূলত তৎকালীন সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মনসুর আলম। তৎকালীন চেয়ারম্যান জিয়াউল হক খন্দকার বিদেশ সফরে থাকায় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছিলেন মনসুর আলম। দায়িত্ব পালনকালে জিয়াউল হক খোন্দকারের অনুমোদন ছাড়াই কমিশন সদস্য মনসুর আলম (যিনি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্বে ছিলেন) দু’টি নির্দেশনা জারির ব্যবস্থা করেন। এই দুই আদেশের মধ্যে একটি ছিল চেক প্রদানের পর টাকা উত্তোলন ছাড়া শেয়ার ক্রয় না করা।

উল্লেখ্য, ২০১০ সালের ৭ ডিসেম্বর এই আদেশ জারির পরের দিনই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাধারণ সূচক ৫৪৬ পয়েন্ট কমে গিয়েছিল। এমতাবস্থায় আদেশটি বাতিল করেছিল বিএসইসি। আদেশ বাতিল করা হলেও সে সময় দেশের পুঁজিবাজারে ব্যাপক দরপতন চলতে থাকে।

সূত্র জানায়, গত ২২ সেপ্টেম্বর ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চিফ রেগুলেটরি অফিসার ও অন্যান্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) এসআরআই বিভাগের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় শেয়ার ক্রয়সহ বিভিন্ন বিষয়ে ব্রোকারেজ হাউজগুলোর কার্যক্রম নিয়ে বেশকিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) ডিএসই থেকে সব ব্রোকারেজ হাউজকে চিঠি দিয়ে এসব সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে।

বর্তমান সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, গ্রাহকের চেক জমার পর নগদায়ন না হওয়া পর্যন্ত কোন ব্রোকারেজ হাউজ শেয়ার ক্রয় আদেশ বাস্তবায়ন করতে পারবে না। এছাড়াও ব্রোকারেজ হাউজগুলো সমন্বিত গ্রাহক হিসাব বন্ধক রাখতে পারবে না। এমনকি সমন্বিত গ্রাহক হিসাব কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নিকট ধারও দিতে পারবে না। এক্ষেত্রে সমন্বিত গ্রাহক হিসাব পরিচালনায় সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ আইন-২০২০ এর ৬ (২) ধারা পরিপালনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, এই সিদ্ধান্তে ফিরে যাওয়া মানে ডিএসই আবারও একটি বিতর্কিত পথে যাচ্ছে। কারন এতে বিনিয়োগকারীরা হয়রানির শিকার হবে। তবে কেউ আবার ভিন্ন ভাবে দেখছে বিষয়টিকে। তারা বলছে অনেকেই চেকের মাধ্যমে শেয়ার ক্রয় করে পরবর্তীতে চেক ডিজঅনার করে ব্রোকারেজ হাউজের কর্মকর্তাদের যোগসাজসে।

আরও পড়ুন: বিকালে তিন কোম্পানির বোর্ড সভা

ঢাকা/এসএ

শেয়ার করুন

x
English Version

চেক নগদায়নের পূর্বে শেয়ার ক্রয়ে নিষেধাজ্ঞা

আপডেট: ১০:৩৭:১৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ অক্টোবর ২০২২

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: এখন থেকে চেক দিয়ে আন শেয়ার কেনা যাবে না। তবে চেক নগদায়ন হলে শেয়ার কিনা যাবে। এমন নির্দেশনা দিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জের (বিএসইসি)। গতকাল মঙ্গলবার ১১ অক্টোবর দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সকল সদস্যদের কাছে এই সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা দিয়েছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

বিএসইসির সহকারী পরিচালক মো. তাহাজ্জাদ হোসেন স্বাক্ষরিত চিঠি ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও চিপ রেগুলেটরি অফিসারদের বরাবর পাঠানো হয়েছে। ওই চিঠি সংযুক্ত করে করে সকল সদস্যকে পাঠিয়েছে ডিএসই।

চিঠিতে বলা হয়েছে, গত ২২ সেপ্টেম্বর বিএসইসির কমিশনার মো: আবদুল হালিম এর সভাপতিত্বে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের চিপ রেগুলেটরি অফিসার ও বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তাদের সাথে কমিশনের এসআরআই বিভাগের একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় যে সব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তা আগামী ডিসেম্বর,২০২২ এর মধ্যে পরিপালন করতে বলা হয়েছে। এর সাথে ২০১০ সালের সার্ক্যুলারটি যুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২০১০ সালের ৬ ডিসেম্বর দেওয়া সার্ক্যুলারে বলা হয়েছিলো, কোন বিনিয়োগকারী সিকিউরিটি ক্রয়ের ক্ষেত্রে স্টক ব্রোকারকে চেক প্রদান করলে তা নগদায়নের পূর্বে সিকিউরিটি ক্রয় করলে  সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স ১৯৯৬ এর ১৬ এর (এ) ধারা লংঘন হবে। এমন্ত অবস্থায় চেক নগদায়ন করার পূর্বে শেয়ার ক্রয় করা যাবে না।

জানা যায়, ২০১০ সালে এই আদেশ দিয়েছিল মূলত তৎকালীন সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মনসুর আলম। তৎকালীন চেয়ারম্যান জিয়াউল হক খন্দকার বিদেশ সফরে থাকায় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছিলেন মনসুর আলম। দায়িত্ব পালনকালে জিয়াউল হক খোন্দকারের অনুমোদন ছাড়াই কমিশন সদস্য মনসুর আলম (যিনি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্বে ছিলেন) দু’টি নির্দেশনা জারির ব্যবস্থা করেন। এই দুই আদেশের মধ্যে একটি ছিল চেক প্রদানের পর টাকা উত্তোলন ছাড়া শেয়ার ক্রয় না করা।

উল্লেখ্য, ২০১০ সালের ৭ ডিসেম্বর এই আদেশ জারির পরের দিনই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাধারণ সূচক ৫৪৬ পয়েন্ট কমে গিয়েছিল। এমতাবস্থায় আদেশটি বাতিল করেছিল বিএসইসি। আদেশ বাতিল করা হলেও সে সময় দেশের পুঁজিবাজারে ব্যাপক দরপতন চলতে থাকে।

সূত্র জানায়, গত ২২ সেপ্টেম্বর ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চিফ রেগুলেটরি অফিসার ও অন্যান্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) এসআরআই বিভাগের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় শেয়ার ক্রয়সহ বিভিন্ন বিষয়ে ব্রোকারেজ হাউজগুলোর কার্যক্রম নিয়ে বেশকিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) ডিএসই থেকে সব ব্রোকারেজ হাউজকে চিঠি দিয়ে এসব সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে।

বর্তমান সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, গ্রাহকের চেক জমার পর নগদায়ন না হওয়া পর্যন্ত কোন ব্রোকারেজ হাউজ শেয়ার ক্রয় আদেশ বাস্তবায়ন করতে পারবে না। এছাড়াও ব্রোকারেজ হাউজগুলো সমন্বিত গ্রাহক হিসাব বন্ধক রাখতে পারবে না। এমনকি সমন্বিত গ্রাহক হিসাব কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নিকট ধারও দিতে পারবে না। এক্ষেত্রে সমন্বিত গ্রাহক হিসাব পরিচালনায় সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ আইন-২০২০ এর ৬ (২) ধারা পরিপালনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, এই সিদ্ধান্তে ফিরে যাওয়া মানে ডিএসই আবারও একটি বিতর্কিত পথে যাচ্ছে। কারন এতে বিনিয়োগকারীরা হয়রানির শিকার হবে। তবে কেউ আবার ভিন্ন ভাবে দেখছে বিষয়টিকে। তারা বলছে অনেকেই চেকের মাধ্যমে শেয়ার ক্রয় করে পরবর্তীতে চেক ডিজঅনার করে ব্রোকারেজ হাউজের কর্মকর্তাদের যোগসাজসে।

আরও পড়ুন: বিকালে তিন কোম্পানির বোর্ড সভা

ঢাকা/এসএ