০২:৪৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪

টালমাটাল পুঁজিবাজার: লোকসানে দিশেহারা বিনিয়োগকারীরা

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৪:৪১:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ এপ্রিল ২০২৪
  • / ৪২৮০ বার দেখা হয়েছে

ভয়াবহ দরপতন চলছে দেশের পুঁজিবাজারে। দুই মাসের বেশি সময় ধরে চলা দরপতনের সুনির্দিষ্ট কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না কেউই। চরম আস্থার সংকটে পড়েছে বিনিয়োগকারীরা। এমতাবস্থায় দরপতন ঠেকিয়ে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে অংশীজনদের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে পুঁজিবাজারের জন্য বেশকিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

দরপতনের কারণে বাজারে যাতে ফোর্সড সেল বা জোর করে বিক্রির চাপ না বাড়ে, সে জন্য ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য নীতি ছাড়ের মেয়াদ বাড়িয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। শেয়ার বাজারে ঋণদাতা ব্রোকারেজ হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর পক্ষ থেকে বিনিয়োগকারীদের দেওয়া ঋণের অনাদায়ি অংশের জন্য নিরাপত্তা সঞ্চিতি বা প্রভিশনিংয়ের মেয়াদ বাড়িয়ে আগামী বছরের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত নির্ধারণ করেছে।

এ ছাড়া বাজারের সামগ্রিক পরিস্থিতিতে তারল্য ও নীতিসহায়তা নিয়ে সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠক করেছে ডিএসই ব্রোকারস অ্যাসোসিয়েশন (ডিবিএ) ও বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ)। বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে ডিবিএ ও বিএমবিএর নেতারা শেয়ারবাজারের বিদ্যমান পরিস্থিতি থেকে উত্তোরণে তারল্য সরবরাহ বাড়াতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিসহায়তা চেয়েছেন।  বাংলাদেশ ব্যাংকও এ ব্যাপারে ইতিবাচক বলে জানা গেছে। তবে এসব যেন কোন কাজেেই আসছেনা । অস্বাভাবিক চরিত্র ধারণ করা পুঁজিবাজারে প্রতিদিন পুঁজি হারাচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা। এসব উদ্যোগের পরও পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা আসছে না।দিন যত যাচ্ছে পুঁজিবাজার তত তলানিতে নিমজ্জিত হচ্ছে। ফলে পুঁজি হারানো বিনিয়োগকারীদের হাহাকার বেড়েই চলছে।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, বাজারে আস্থার সংকট প্রকট। ব্যাংকে সুদের হার বাড়ায় সাধারণ বিনিয়োগকারী থেকে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী অনেকেই সেখানে ছুটছেন টাকা রাখতে। গত ২১ থেকে ২৮ মার্চের মধ্যে মাত্র চার কার্যদিবসে ১০ হাজার বিনিয়োগকারী তাদের হাতে থাকা সব শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন। এ সব কারণে শেয়ার বাজার তারল্যসংকটে পড়েছে। বাজারের এ সংকটময় সময়ে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা সাপোর্ট দিলে বাজার ঘুরে দাঁড়াবে বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবস ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচকের বড় পতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিন সূচকের সাথে কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দর ও টাকার পরিমানে লেনদেন।

দিনশেষে ডিএসই ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ২২ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৭৩৮ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৬ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ২৪৫ পয়েন্টে এবং ডিএসই–৩০ সূচক ৫ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ২ হাজার ১ পয়েন্টে।

আরও পড়ুন: ব্লকে পাঁচ কোম্পানির বড় লেনদেন

দিনভর লেনদেন হওয়া ৩৯০ কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৭৯ টির, দর কমেছে ২৬৮ টির এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৪৩ টির। ডিএসইতে ৩৬৭ কোটি ৬৫ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। যা আগের কার্যদিবস থেকে ১০১ কোটি ১৭ লাখ টাকা কম। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৪৬৮ কোটি ৮২ লাখ টাকা ।

অপরদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৯৫ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ৪১৬ পয়েন্টে।

সিএসইতে ২০৫ টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫৩ টির দর বেড়েছে, কমেছে ১২৮ টির এবং ২৪ টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে ৯ কোটি ৯৬ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।

ঢাকা/এসএইচ

শেয়ার করুন

x
English Version

টালমাটাল পুঁজিবাজার: লোকসানে দিশেহারা বিনিয়োগকারীরা

আপডেট: ০৪:৪১:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ এপ্রিল ২০২৪

ভয়াবহ দরপতন চলছে দেশের পুঁজিবাজারে। দুই মাসের বেশি সময় ধরে চলা দরপতনের সুনির্দিষ্ট কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না কেউই। চরম আস্থার সংকটে পড়েছে বিনিয়োগকারীরা। এমতাবস্থায় দরপতন ঠেকিয়ে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে অংশীজনদের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে পুঁজিবাজারের জন্য বেশকিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

দরপতনের কারণে বাজারে যাতে ফোর্সড সেল বা জোর করে বিক্রির চাপ না বাড়ে, সে জন্য ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য নীতি ছাড়ের মেয়াদ বাড়িয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। শেয়ার বাজারে ঋণদাতা ব্রোকারেজ হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর পক্ষ থেকে বিনিয়োগকারীদের দেওয়া ঋণের অনাদায়ি অংশের জন্য নিরাপত্তা সঞ্চিতি বা প্রভিশনিংয়ের মেয়াদ বাড়িয়ে আগামী বছরের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত নির্ধারণ করেছে।

এ ছাড়া বাজারের সামগ্রিক পরিস্থিতিতে তারল্য ও নীতিসহায়তা নিয়ে সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠক করেছে ডিএসই ব্রোকারস অ্যাসোসিয়েশন (ডিবিএ) ও বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ)। বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে ডিবিএ ও বিএমবিএর নেতারা শেয়ারবাজারের বিদ্যমান পরিস্থিতি থেকে উত্তোরণে তারল্য সরবরাহ বাড়াতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিসহায়তা চেয়েছেন।  বাংলাদেশ ব্যাংকও এ ব্যাপারে ইতিবাচক বলে জানা গেছে। তবে এসব যেন কোন কাজেেই আসছেনা । অস্বাভাবিক চরিত্র ধারণ করা পুঁজিবাজারে প্রতিদিন পুঁজি হারাচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা। এসব উদ্যোগের পরও পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা আসছে না।দিন যত যাচ্ছে পুঁজিবাজার তত তলানিতে নিমজ্জিত হচ্ছে। ফলে পুঁজি হারানো বিনিয়োগকারীদের হাহাকার বেড়েই চলছে।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, বাজারে আস্থার সংকট প্রকট। ব্যাংকে সুদের হার বাড়ায় সাধারণ বিনিয়োগকারী থেকে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী অনেকেই সেখানে ছুটছেন টাকা রাখতে। গত ২১ থেকে ২৮ মার্চের মধ্যে মাত্র চার কার্যদিবসে ১০ হাজার বিনিয়োগকারী তাদের হাতে থাকা সব শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন। এ সব কারণে শেয়ার বাজার তারল্যসংকটে পড়েছে। বাজারের এ সংকটময় সময়ে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা সাপোর্ট দিলে বাজার ঘুরে দাঁড়াবে বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবস ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচকের বড় পতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিন সূচকের সাথে কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দর ও টাকার পরিমানে লেনদেন।

দিনশেষে ডিএসই ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ২২ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৭৩৮ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৬ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ২৪৫ পয়েন্টে এবং ডিএসই–৩০ সূচক ৫ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ২ হাজার ১ পয়েন্টে।

আরও পড়ুন: ব্লকে পাঁচ কোম্পানির বড় লেনদেন

দিনভর লেনদেন হওয়া ৩৯০ কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৭৯ টির, দর কমেছে ২৬৮ টির এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৪৩ টির। ডিএসইতে ৩৬৭ কোটি ৬৫ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। যা আগের কার্যদিবস থেকে ১০১ কোটি ১৭ লাখ টাকা কম। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৪৬৮ কোটি ৮২ লাখ টাকা ।

অপরদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৯৫ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ৪১৬ পয়েন্টে।

সিএসইতে ২০৫ টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫৩ টির দর বেড়েছে, কমেছে ১২৮ টির এবং ২৪ টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে ৯ কোটি ৯৬ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।

ঢাকা/এসএইচ