০৯:৫৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪

ডা. বুলবুল হত্যায় গ্রেফতারকৃতরা পেশাদার ছিনতাইকারী: ডিবি

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৬:৩৪:০০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ মার্চ ২০২২
  • / ৪১৫৫ বার দেখা হয়েছে

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: রাজধানীর মিরপুরের কাজীপাড়ায় ছুরিকাঘাতে চিকিৎসক আহমেদ মাহী বুলবুল নিহতের ঘটনায় গ্রেফতার চারজনই পেশাদার ছিনতাইকারী বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

ডিবি বলছে, কাজীপাড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ডা. বুলবুলের রিকশার গতিরোধ করে ছিনতাইকারীরা। তারা মোবাইল ফোন ও টাকা-পয়সা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। তবে ডা. বুলবুলের বাধা দেওয়া তাকে ছুরিকাঘাত করে ছিনতাইকারীরা। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ দেখে ছিনতাইকারীরা শুধু মোবাইল ফোনটি নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে থেকে পালিয়ে যায়।  বুধবার (৩০ মার্চ) বিকেলে ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ডিবিপ্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার।

এর আগে মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) দিনগত রাতে মিরপুর মডেল ও পল্লবী থানা এলাকা এবং ঢাকার সাভার থানার কাউন্দিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতাররা হলো—চক্রের মূলহোতা মো. রায়হান ওরফে সোহেল আপন (২৭), সদস্য রাসেল হোসেন হাওলাদার (২৫), আরিয়ান খান হৃদয় (২৩) ও সোলায়মান (২৩)। তাদের কাছ থেকে চিকিৎসকের ব্যবহৃত মোবাইল ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধার করা হয়।

এ কে এম হাফিজ আক্তার বলে, ‘নিহত ডা. বুলবুল আহমেদ পেশায় একজন দন্ত চিকিৎসক ও প্রথম শ্রেণির ঠিকাদার। তিনি ১৫-২০ দিন আগে নোয়াখালী এলাকায় একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের কাজ পান। ২৭ মার্চ ভোর সোয়া ৫টার দিকে নোয়াখালী যাওয়ার উদ্দেশ্যে মিরপুর মডেল থানার পশ্চিম শেওড়াপাড়ার আনন্দবাজার এলাকা থেকে রিকশায় করে কাজীপাড়া বাসস্ট্যান্ডে যাচ্ছিলেন। ভোর সাড়ে ৫টার দিকে পশ্চিম কাজীপাড়ার বেগম রোকেয়া সরণির নাভানা ফার্নিচার শো-রুমের সামনে পৌঁছলে গ্রেফতার চার ছিনতাইকারীরা রিকশার গতিরোধ করে। এসময় চিকিৎসকের কাছ থেকে মোবাইল ও টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে।’

তিনি বলে, ‘ডা. বুলবুল ছিনতাইকারীদের বাধা দিলে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার ডান হাঁটুর ওপরে আঘাত। এতে তিনি গুরুতর জখম হন। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ ও চিৎকারে শুধু মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায় ছিনতাইকারীরা। পরে একজন বাসচালক ও হেলপারের সহযোগিতায় আহত চিকিৎসককে প্রথমে আল-হেলাল হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে তাকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’

হাফিজ আক্তার বলে, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতাররা জানিয়েছে, ২৭ মার্চ ভোর ৪টায় গ্রেফতার চারজনসহ মোট পাঁচজন মিরপুর পশ্চিম কাজীপাড়া এলাকায় ডাকাতির উদ্দেশ্যে জড়ো হয়। আসামিরা প্রত্যেকে পেশাদার ছিনতাইকারী। তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। গ্রেফতার রায়হানকে ডিবি মিরপুর বিভাগের জোনাল টিম ২৭ মার্চ একটি ডাকাতির প্রস্তুতি মামলায় গ্রেফতার করে।’

ডা. বুলবুল আহত অবস্থায় উল্টো দিকে পশ্চিম কাজীপাড়ার ২৭৮ নম্বর পিলারের কাছে পড়েছিলেন, সেখানে বুলবুল কীভাবে গেলেন, তার গতিবিধির কোনো সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা সম্ভব হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নে ডিবির প্রধান বলে, ‘এ বিষয়টি আমলে নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে গ্রেফতারদের জিজ্ঞাসাবাদে মনে হয়েছে, তারা পেশাদার ছিনতাইকারী। চিকিৎসক বুলবুল হত্যার ঘটনাটি আননোন মার্ডার কেস হিসেবে তদন্ত শুরু হয়েছে। এটা হত্যার পাশাপাশি ডাকাতি মামলা হিসেবে টার্ন করবে।’

হত্যাকাণ্ডের পেছনে কারও ইন্ধন ছিল কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে হাফিজ আক্তার বলে, ‘কোনো ঘটনা ঘটলে গোয়েন্দা পুলিশের কাজ ক্লু উদ্ধার করা। কারা জড়িত তাদের চিহ্নিত করা। যে কোনো ঘটনা ঘটলে আমরা এ কাজগুলো করি। ডা. বুলবুল হত্যাকাণ্ডে চারজন যে জড়িত, তার প্রমাণ মিলেছে। নিহতের মোবাইল তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের দেওয়া তথ্যে, হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। তবে মামলাটি তদন্তের সময়ে আরও বিভিন্ন দিক বিবেচনায় নিয়ে তদন্তকাজ করা হবে। প্রাথমিকভাবে এটিকে ছিনতাই বলে মনে হচ্ছে।’

ঢাকা/এসএ

শেয়ার করুন

x
English Version

ডা. বুলবুল হত্যায় গ্রেফতারকৃতরা পেশাদার ছিনতাইকারী: ডিবি

আপডেট: ০৬:৩৪:০০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ মার্চ ২০২২

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: রাজধানীর মিরপুরের কাজীপাড়ায় ছুরিকাঘাতে চিকিৎসক আহমেদ মাহী বুলবুল নিহতের ঘটনায় গ্রেফতার চারজনই পেশাদার ছিনতাইকারী বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

ডিবি বলছে, কাজীপাড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ডা. বুলবুলের রিকশার গতিরোধ করে ছিনতাইকারীরা। তারা মোবাইল ফোন ও টাকা-পয়সা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। তবে ডা. বুলবুলের বাধা দেওয়া তাকে ছুরিকাঘাত করে ছিনতাইকারীরা। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ দেখে ছিনতাইকারীরা শুধু মোবাইল ফোনটি নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে থেকে পালিয়ে যায়।  বুধবার (৩০ মার্চ) বিকেলে ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ডিবিপ্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার।

এর আগে মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) দিনগত রাতে মিরপুর মডেল ও পল্লবী থানা এলাকা এবং ঢাকার সাভার থানার কাউন্দিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতাররা হলো—চক্রের মূলহোতা মো. রায়হান ওরফে সোহেল আপন (২৭), সদস্য রাসেল হোসেন হাওলাদার (২৫), আরিয়ান খান হৃদয় (২৩) ও সোলায়মান (২৩)। তাদের কাছ থেকে চিকিৎসকের ব্যবহৃত মোবাইল ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধার করা হয়।

এ কে এম হাফিজ আক্তার বলে, ‘নিহত ডা. বুলবুল আহমেদ পেশায় একজন দন্ত চিকিৎসক ও প্রথম শ্রেণির ঠিকাদার। তিনি ১৫-২০ দিন আগে নোয়াখালী এলাকায় একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের কাজ পান। ২৭ মার্চ ভোর সোয়া ৫টার দিকে নোয়াখালী যাওয়ার উদ্দেশ্যে মিরপুর মডেল থানার পশ্চিম শেওড়াপাড়ার আনন্দবাজার এলাকা থেকে রিকশায় করে কাজীপাড়া বাসস্ট্যান্ডে যাচ্ছিলেন। ভোর সাড়ে ৫টার দিকে পশ্চিম কাজীপাড়ার বেগম রোকেয়া সরণির নাভানা ফার্নিচার শো-রুমের সামনে পৌঁছলে গ্রেফতার চার ছিনতাইকারীরা রিকশার গতিরোধ করে। এসময় চিকিৎসকের কাছ থেকে মোবাইল ও টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে।’

তিনি বলে, ‘ডা. বুলবুল ছিনতাইকারীদের বাধা দিলে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার ডান হাঁটুর ওপরে আঘাত। এতে তিনি গুরুতর জখম হন। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ ও চিৎকারে শুধু মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায় ছিনতাইকারীরা। পরে একজন বাসচালক ও হেলপারের সহযোগিতায় আহত চিকিৎসককে প্রথমে আল-হেলাল হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে তাকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’

হাফিজ আক্তার বলে, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতাররা জানিয়েছে, ২৭ মার্চ ভোর ৪টায় গ্রেফতার চারজনসহ মোট পাঁচজন মিরপুর পশ্চিম কাজীপাড়া এলাকায় ডাকাতির উদ্দেশ্যে জড়ো হয়। আসামিরা প্রত্যেকে পেশাদার ছিনতাইকারী। তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। গ্রেফতার রায়হানকে ডিবি মিরপুর বিভাগের জোনাল টিম ২৭ মার্চ একটি ডাকাতির প্রস্তুতি মামলায় গ্রেফতার করে।’

ডা. বুলবুল আহত অবস্থায় উল্টো দিকে পশ্চিম কাজীপাড়ার ২৭৮ নম্বর পিলারের কাছে পড়েছিলেন, সেখানে বুলবুল কীভাবে গেলেন, তার গতিবিধির কোনো সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা সম্ভব হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নে ডিবির প্রধান বলে, ‘এ বিষয়টি আমলে নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে গ্রেফতারদের জিজ্ঞাসাবাদে মনে হয়েছে, তারা পেশাদার ছিনতাইকারী। চিকিৎসক বুলবুল হত্যার ঘটনাটি আননোন মার্ডার কেস হিসেবে তদন্ত শুরু হয়েছে। এটা হত্যার পাশাপাশি ডাকাতি মামলা হিসেবে টার্ন করবে।’

হত্যাকাণ্ডের পেছনে কারও ইন্ধন ছিল কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে হাফিজ আক্তার বলে, ‘কোনো ঘটনা ঘটলে গোয়েন্দা পুলিশের কাজ ক্লু উদ্ধার করা। কারা জড়িত তাদের চিহ্নিত করা। যে কোনো ঘটনা ঘটলে আমরা এ কাজগুলো করি। ডা. বুলবুল হত্যাকাণ্ডে চারজন যে জড়িত, তার প্রমাণ মিলেছে। নিহতের মোবাইল তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের দেওয়া তথ্যে, হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। তবে মামলাটি তদন্তের সময়ে আরও বিভিন্ন দিক বিবেচনায় নিয়ে তদন্তকাজ করা হবে। প্রাথমিকভাবে এটিকে ছিনতাই বলে মনে হচ্ছে।’

ঢাকা/এসএ