১১:২১ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৮ মে ২০২৪

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন জনবান্ধব করার চেষ্টা চলছে: আইনমন্ত্রী

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৭:৪৪:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৩
  • / ৪১৫৭ বার দেখা হয়েছে

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এবং এই আইনের সঠিক ব্যবহার ও জনবান্ধব করার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। বিভিন্ন গণমাধ্যমের সম্পাদকদের সংগঠন এডিটরস গিল্ড বাংলাদেশের আয়োজনে ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বিতর্ক’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের দফতর বাংলাদেশের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে সরকারের কাছে যে সুপারিশমালা পাঠিয়েছে, তাতে আইনটির দুটি ধারা (২১ ও ২৮) পুরোপুরি বাতিল এবং আটটি সংশোধনের কথা বলা হয়েছে। আলোচনায় প্রসঙ্গটি নিয়ে কথা বলেন আইনমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘের টিমের সঙ্গে আমাদের দেশের একটি টিম (লেজিসলেটিভ সচিবকে প্রধান করে স্বরাষ্ট্র, পররাষ্ট্র, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং আইন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে) করে দেওয়া হয়েছে। আলোচনা করে তারা একটি টেকনিক্যাল নোট পাঠিয়েছে।’

‘টেকনিক্যাল নোট’-এর তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘তারা ২১ ধারা বাতিল করে দিতে বলছে, কিন্তু সেটি আমার পক্ষে সম্ভব না। পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, আমাদের বাস্তবতায় ২১ ধারা প্রয়োজন রয়েছে; যা আলোচনায় উঠে এসেছে। আলোচনায় ওই আইনের অধীনে বিশেষ করে সংবাদমাধ্যমের রক্ষাকবজের কথাও উঠে এসেছে, সেটি অবশ্যই আমরা হাইলাইট করবো।‘

আইনমন্ত্রী বলেন, ‘ব্যাখ্যার কথা বলছেন, এই যে ধারাগুলো এবং কিছু টেকনিক্যাল ধারাগুলো; এগুলোর একটি সুবিধা আছে… পুলিশকেও আমি বলবো। সুবিধাটা হচ্ছে, এই যে ধর্মীয় অনুভূতি, স্বাধীনতা এগুলো বিষয়ে অপরাধের বিষয়টি আগে দণ্ডবিধিতে ছিল; এমন বহু (আদালতের) রায় আছে। যেখান থেকে ব্যাখ্যাগুলো নেওয়া যায়। আমি মনে করি, প্রশিক্ষণে (আইন প্রয়োগের বিষয়ে) জোর দেওয়া উচিৎ। যেহেতু এগুলোর ব্যাখ্যা রয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার (ইত্তেফাকের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক) মামলাতে এ ধরনের ব্যাখ্যা আছে। এক্ষেত্রে যারা মামলা তদন্ত করেন এবং যারা মামলা করেন, আইনজীবীরা— তারা এই ব্যাখ্যার বিষয়ে কাজ করতে পারবেন।’

আলোচকদের উদ্দেশ করে আনিসুল হক বলেন, ‘আপনারা বলতে পারেন—যদি ব্যাখ্যাটি জানেন, তাহলে আইনের মধ্যে আনছেন না কেন? এর উত্তর হলো—যদি সেসব (ব্যাখ্যা) আইনের মধ্যে আনা হয়, তাহলে আইনটি অনেক বড় হয়ে যাবে। সেজন্যই আইনের ব্যাখ্যার বিষয়টি বিচার বিভাগের ওপর দেওয়া হয়েছে। এবং আমাদের সৌভাগ্য যে, আজকে এসব ব্যাখ্যার জন্য অন্য কোথাও যেতে হয় না, বই খুললেই পাওয়া যায়। এসবই প্রতিষ্ঠিত সিদ্ধান্ত।’

আরও পড়ুন: ৯ বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে একটি ঘটনা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আরেকটি কথা হলো— একটি অভিযোগ করা হলো যে, পরিতোষ সরকার নামে একজনকে ৮ মাস নির্জন কারাবাসে রাখা হয়েছে। এ নিয়ে ডেইলি স্টারে একটি আর্টিকেলও লিখে ফেললেন একজন। এটা জানার পর আমি খোঁজ নিলাম। জানলাম, তাকে ২০২২ সালের ২৭ এপিল মাসে হাইকোর্ট জামিন দেন এবং তিনি মুক্তি পান একই বছরের ৯ মে তারিখে। ফলে এ মামলায় যা বলা হয়েছে তা ঠিক নয়। তিনি একটি দিনও নির্জন কারাবাসে ছিলেন না। যে পোস্ট দেওয়ার কারণে তাকে কারাগারে নেওয়া হয়েছিল, তাতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়িয়েছিল। তাই কারাগারের ভেতরেও আশঙ্কা থেকে তাকে আলাদা রাখা হয়েছিল। তবে সবার সকঙ্গে কথা বলতে দেওয়া হয়েছিল। এই বিষয়টি আমি সামনে তোলার পরও কেউ ভুলটা স্বীকার করলো না।’

মন্ত্রী বলেন, ‘আমি বলতে চাচ্ছি— এই আইনটা যে উদ্দেশ্য করা হয়েছিল… সেটা যেরকম চলছে তাতে কিছু অপব্যবহার হয়েছে। এই আইনের প্রয়োজনীয়তা আছে, যা আপনারা সবাই স্বীকার করছেন। একটা গোষ্ঠী আছে, যারা এই আইনটিকে রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে প্রচার করে। আমি নিশ্চিতভাবে বলছি, তারা এই আইন নিয়ে জনগণের কাছে যায় না। তারা ওয়াশিংটন ডিসি, ব্রাসেলস এবং জেনেভাতে গিয়ে বলে এই আইনটা খারাপ। তারা এখানে বলে না। কারণ তারা জানে যে, এখানে বললে হালে পানি পাওয়া যাবে না। আমি বলবো, এই আইনটি দিয়ে সংখ্যালঘুদের আঘাত রোধের জন্য নয়, এটি সারা দেশের জনগণের জন্য।’

ঢাকা/এসএম

শেয়ার করুন

x

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন জনবান্ধব করার চেষ্টা চলছে: আইনমন্ত্রী

আপডেট: ০৭:৪৪:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৩

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এবং এই আইনের সঠিক ব্যবহার ও জনবান্ধব করার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। বিভিন্ন গণমাধ্যমের সম্পাদকদের সংগঠন এডিটরস গিল্ড বাংলাদেশের আয়োজনে ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বিতর্ক’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের দফতর বাংলাদেশের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে সরকারের কাছে যে সুপারিশমালা পাঠিয়েছে, তাতে আইনটির দুটি ধারা (২১ ও ২৮) পুরোপুরি বাতিল এবং আটটি সংশোধনের কথা বলা হয়েছে। আলোচনায় প্রসঙ্গটি নিয়ে কথা বলেন আইনমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘের টিমের সঙ্গে আমাদের দেশের একটি টিম (লেজিসলেটিভ সচিবকে প্রধান করে স্বরাষ্ট্র, পররাষ্ট্র, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং আইন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে) করে দেওয়া হয়েছে। আলোচনা করে তারা একটি টেকনিক্যাল নোট পাঠিয়েছে।’

‘টেকনিক্যাল নোট’-এর তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘তারা ২১ ধারা বাতিল করে দিতে বলছে, কিন্তু সেটি আমার পক্ষে সম্ভব না। পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, আমাদের বাস্তবতায় ২১ ধারা প্রয়োজন রয়েছে; যা আলোচনায় উঠে এসেছে। আলোচনায় ওই আইনের অধীনে বিশেষ করে সংবাদমাধ্যমের রক্ষাকবজের কথাও উঠে এসেছে, সেটি অবশ্যই আমরা হাইলাইট করবো।‘

আইনমন্ত্রী বলেন, ‘ব্যাখ্যার কথা বলছেন, এই যে ধারাগুলো এবং কিছু টেকনিক্যাল ধারাগুলো; এগুলোর একটি সুবিধা আছে… পুলিশকেও আমি বলবো। সুবিধাটা হচ্ছে, এই যে ধর্মীয় অনুভূতি, স্বাধীনতা এগুলো বিষয়ে অপরাধের বিষয়টি আগে দণ্ডবিধিতে ছিল; এমন বহু (আদালতের) রায় আছে। যেখান থেকে ব্যাখ্যাগুলো নেওয়া যায়। আমি মনে করি, প্রশিক্ষণে (আইন প্রয়োগের বিষয়ে) জোর দেওয়া উচিৎ। যেহেতু এগুলোর ব্যাখ্যা রয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার (ইত্তেফাকের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক) মামলাতে এ ধরনের ব্যাখ্যা আছে। এক্ষেত্রে যারা মামলা তদন্ত করেন এবং যারা মামলা করেন, আইনজীবীরা— তারা এই ব্যাখ্যার বিষয়ে কাজ করতে পারবেন।’

আলোচকদের উদ্দেশ করে আনিসুল হক বলেন, ‘আপনারা বলতে পারেন—যদি ব্যাখ্যাটি জানেন, তাহলে আইনের মধ্যে আনছেন না কেন? এর উত্তর হলো—যদি সেসব (ব্যাখ্যা) আইনের মধ্যে আনা হয়, তাহলে আইনটি অনেক বড় হয়ে যাবে। সেজন্যই আইনের ব্যাখ্যার বিষয়টি বিচার বিভাগের ওপর দেওয়া হয়েছে। এবং আমাদের সৌভাগ্য যে, আজকে এসব ব্যাখ্যার জন্য অন্য কোথাও যেতে হয় না, বই খুললেই পাওয়া যায়। এসবই প্রতিষ্ঠিত সিদ্ধান্ত।’

আরও পড়ুন: ৯ বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে একটি ঘটনা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আরেকটি কথা হলো— একটি অভিযোগ করা হলো যে, পরিতোষ সরকার নামে একজনকে ৮ মাস নির্জন কারাবাসে রাখা হয়েছে। এ নিয়ে ডেইলি স্টারে একটি আর্টিকেলও লিখে ফেললেন একজন। এটা জানার পর আমি খোঁজ নিলাম। জানলাম, তাকে ২০২২ সালের ২৭ এপিল মাসে হাইকোর্ট জামিন দেন এবং তিনি মুক্তি পান একই বছরের ৯ মে তারিখে। ফলে এ মামলায় যা বলা হয়েছে তা ঠিক নয়। তিনি একটি দিনও নির্জন কারাবাসে ছিলেন না। যে পোস্ট দেওয়ার কারণে তাকে কারাগারে নেওয়া হয়েছিল, তাতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়িয়েছিল। তাই কারাগারের ভেতরেও আশঙ্কা থেকে তাকে আলাদা রাখা হয়েছিল। তবে সবার সকঙ্গে কথা বলতে দেওয়া হয়েছিল। এই বিষয়টি আমি সামনে তোলার পরও কেউ ভুলটা স্বীকার করলো না।’

মন্ত্রী বলেন, ‘আমি বলতে চাচ্ছি— এই আইনটা যে উদ্দেশ্য করা হয়েছিল… সেটা যেরকম চলছে তাতে কিছু অপব্যবহার হয়েছে। এই আইনের প্রয়োজনীয়তা আছে, যা আপনারা সবাই স্বীকার করছেন। একটা গোষ্ঠী আছে, যারা এই আইনটিকে রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে প্রচার করে। আমি নিশ্চিতভাবে বলছি, তারা এই আইন নিয়ে জনগণের কাছে যায় না। তারা ওয়াশিংটন ডিসি, ব্রাসেলস এবং জেনেভাতে গিয়ে বলে এই আইনটা খারাপ। তারা এখানে বলে না। কারণ তারা জানে যে, এখানে বললে হালে পানি পাওয়া যাবে না। আমি বলবো, এই আইনটি দিয়ে সংখ্যালঘুদের আঘাত রোধের জন্য নয়, এটি সারা দেশের জনগণের জন্য।’

ঢাকা/এসএম