০৫:৫৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪

নাজুক অবস্থায় পড়েছে ৮ ব্যাংক

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০২:৪৮:৪৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ জুন ২০২১
  • / ৪২০৮ বার দেখা হয়েছে

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: নানা অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার মধ্যে যাচাই-বাছাই না করেই দেওয়া হয়েছে ঋণ। এখন তা আদায় করা যাচ্ছে না। এতে করে ব্যাংকে খেলাপি ঋণ বাড়ছে লাগামহীন ভাবে। নানা সংকটে মূলধনও খেয়ে ফেলছে। এতে নাজুক অবস্থায় পড়েছে সরকারি-বেসরকারি আট ব্যাংক।  তাদের মধ্যে কয়েকটির মোট বিতরণ ঋণের ৮০ থেকে ৯৭ শতাংশই আদায় অযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। এসব ঋণের বিপরীতে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা সঞ্চিতি (প্রভিশন) সংরক্ষণে ব্যর্থ হয়েছে কয়েকটি ব্যাংক। মূলধন ঘাটতিতেও রয়েছে অনেকে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, জালিয়াতি, অর্থ আত্মসাতের ঘটনা আর বিভিন্ন অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার কারণে বিতরণের এসব ঋণ আদায় হচ্ছে না। ফলে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়েছে। এছাড়া বিভিন্ন অজুহাতে দেওয়া হচ্ছে নানা সুযোগ-সুবিধা। সুদ মওকুফ, পুনঃতফসিল, পুনর্গঠন, অবলোপনসহ বেশকিছু প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে সরকারের পক্ষ থেকে। রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ, প্রভাবশালীদের চাপে অনিচ্ছা সত্ত্বেও এসব সুবিধা দিয়ে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এত সুযোগ দেওয়ার পরও মন্দ ঋণের বড় ঝুঁকিতে পড়েছে সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকগুলো।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, ২০২১ সালের মার্চ প্রান্তিক শেষে ব্যাংক খাতে ঋণ বিতরণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১১ লাখ ৭৭ হাজার ৬৫৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৯৫ হাজার ৮৫ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৮ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। গত ডিসেম্বর শেষে ব্যাংক খাতে ঋণ ছিল ১১ লাখ ৫৮ হাজার ৭৭৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৮৮ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা। সেই হিসেবে খেলাপি বেড়েছে ছয় হাজার ৩৫০ কোটি টাকার বেশি।

সাধারণত ‘নন-পারফর্মিং’ ঋণের শ্রেণিকরণ তিন ধরনের হয়। ‘সাব-স্ট্যান্ডার্ড’ (তিন মাসের বেশি অনাদায়ী), ‘ডাউটফুল’ (নয় মাসের বেশি অনাদায়ী) এবং ‘ব্যাড ডেট বা লস’ (এক বছরের বেশি সময়ের জন্য অনাদায়ী)।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি বছরের মার্চ শেষে এক বছরের বেশি সময় অনাদায়ী এমন ‘ব্যাড/লস’ বা মন্দ ঋণের পরিমাণ ৮৩ হাজার ৬৭১ কোটি টাকা, যা মোট বিতরণ করা ঋণের ৭ দশমিক ১০ শতাংশ। তবে বেশকিছু ব্যাংকের ‘ব্যাড/লস’ ২০ থেকে ৫০ শতাংশ বা তার বেশি রয়েছে। আবার কোনো ব্যাংকের মন্দ ঋণের এ হার ৯০ শতাংশের বেশি।

সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, মার্চ শেষে সরকারি-বেসরকারি আট ব্যাংকের বিতরণ করা ঋণের ২০ থেকে ৯৮ শতাংশ মন্দ বা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ব্যাংকগুলো হলো- ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান (এনবিপি), আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক, পদ্মা ব্যাংক, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, বেসিক ব্যাংক, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড (বিডিবিএল), সোনালী ব্যাংক ও জনতা ব্যাংক।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

মন্দ ঋণে সবচেয়ে খারাপ অবস্থানে রয়েছে বিদেশি খাতের ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান (এনবিপি)। ব্যাংকটি এক হাজার ৩৯১ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করেছে। এর মধ্যে ৯৭ দশমিক ৬৯ শতাংশই আদায় অযোগ্য। এরপর রয়েছে আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক। ব্যাংকটির বিতরণ করা ৮৫৬ কোটি টাকা ঋণের মধ্যে ৬৫৮ কোটি অর্থাৎ ৭৬ দশমিক ৮৭ শতাংশই ঝুঁকিপূর্ণ ঋণ।

মন্দ ঋণের বড় ঝুঁকিতে রয়েছে চতুর্থ প্রজন্মের পদ্মা ব্যাংক (সাবেক ফারমার্স ব্যাংক)। ব্যাংকটির বিতরণ করা পাঁচ হাজার ৬৫৩ কোটি টাকার ঋণের মধ্যে তিন হাজার ৫৭৭ কোটি টাকা অর্থাৎ ৬৩ দশমিক ২৭ শতাংশই খেলাপি ঋণ। এর মধ্যে তিন হাজার ৩১০ কোটি বা ৫৮ দশমিক ৫৬ শতাংশই মন্দ ঋণ। ব্যাংকটি মার্চ শেষে ৩৮২ কোটি ৪৮ লাখ টাকার মূলধন ঘাটতিতে পড়েছে।

ঋণঝুঁকির শীর্ষে থাকা অন্যতম রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংক। মার্চ পর্যন্ত ব্যাংকটি ১৪ হাজার ৬০১ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করেছে। এর মধ্যে সাত হাজার ৮৮৩ কোটি টাকা অর্থাৎ প্রায় ৫৪ শতাংশ ঋণই আদায় অযোগ্য মন্দ ঋণে পরিণত হয়েছে। এছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ ঋণের বিপরীতে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা সঞ্চিতি (প্রভিশন) সংরক্ষণে ব্যর্থ হয়েছে ব্যাংকটি। মার্চ শেষে ব্যাংকটির প্রভিশন ঘাটতি দাঁড়িয়েছে তিন হাজার ৫৬৫ কোটি টাকা। মূলধন ঘাটতিতেও পড়েছে সরকারের মালিকানাধীন ব্যাংকটি। মার্চ শেষে বেসিক ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি এক হাজার ৭১ কোটি ৮২ লাখ টাকা।

সরকারি মালিকানাধীন বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড (বিডিবিএল) মার্চ পর্যন্ত ঋণ বিতরণ করেছে এক হাজার ৮৩৫ কোটি টাকা, যার ৩৩ দশমিক ২৬ শতাংশই মন্দ ঋণ। বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের দুই হাজার ২০৫ কোটি টাকা ঋণের ৪৪ দশমিক ৯২ শতাংশ অর্থাৎ ৯৯০ কোটি টাকা ঝুঁকিপূর্ণ ঋণ। এছাড়া প্রয়োজনীয় ৫৩৮ কোটি টাকার প্রভিশন সংরক্ষণে ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক।

মন্দ ঋণের বড় ঝুঁকিতে রয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ও জনতা ব্যাংক। মার্চ পর্যন্ত জনতা ব্যাংক ঋণ বিতরণ করেছে ৫৭ হাজার ৮৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে মন্দ (ব্যাড ডেট বা লস) ঋণের পরিমাণ ১৩ হাজার ২০৮ কোটি টাকা অর্থাৎ ২৩ দশমিক ১৪ শতাংশ। মার্চ শেষে জনতা ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি পাঁচ হাজার ২৫৫ কোটি ১৭ লাখ টাকা।

সোনালী ব্যাংক মার্চ পর্যন্ত ঋণ বিতরণ করেছে ৫৩ হাজার ৯৬৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রায় ২০ শতাংশ অর্থাৎ ১০ হাজার ৬৮৮ কোটি টাকা আদায় অযোগ্য মন্দ ঋণ। মার্চ শেষে সোনালী ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি না হলেও তিন হাজার ৬৯৭ কোটি ৩৫ লাখ টাকার মূলধন ঘাটতিতে পড়েছে ব্যাংকটি। এদিকে, দীর্ঘদিন ধরে বেশকিছু ব্যাংক দুর্বল অবস্থায় পড়ে আছে। তাদের উন্নয়নে বিশেষ পদক্ষেপ প্রয়োজন বলে মনে করেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। 

তিনি আরও বলেন, যেসব ব্যাংকের অবস্থা বেশি খারাপ, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এখন উচিত তাদের ঋণ আদায়ে টার্গেট বেঁধে দেওয়া। পাশাপাশি কাজ ঠিক মতো করছে কি না, এ বিষয়ে চাপ সৃষ্টি করা। গতানুগতিক নির্দেশনা দিলে তাদের কোনো উন্নতি হবে না।

ঢাকা/এনইউ

আরও পড়ুন:

শেয়ার করুন

x

নাজুক অবস্থায় পড়েছে ৮ ব্যাংক

আপডেট: ০২:৪৮:৪৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ জুন ২০২১

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: নানা অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার মধ্যে যাচাই-বাছাই না করেই দেওয়া হয়েছে ঋণ। এখন তা আদায় করা যাচ্ছে না। এতে করে ব্যাংকে খেলাপি ঋণ বাড়ছে লাগামহীন ভাবে। নানা সংকটে মূলধনও খেয়ে ফেলছে। এতে নাজুক অবস্থায় পড়েছে সরকারি-বেসরকারি আট ব্যাংক।  তাদের মধ্যে কয়েকটির মোট বিতরণ ঋণের ৮০ থেকে ৯৭ শতাংশই আদায় অযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। এসব ঋণের বিপরীতে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা সঞ্চিতি (প্রভিশন) সংরক্ষণে ব্যর্থ হয়েছে কয়েকটি ব্যাংক। মূলধন ঘাটতিতেও রয়েছে অনেকে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, জালিয়াতি, অর্থ আত্মসাতের ঘটনা আর বিভিন্ন অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার কারণে বিতরণের এসব ঋণ আদায় হচ্ছে না। ফলে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়েছে। এছাড়া বিভিন্ন অজুহাতে দেওয়া হচ্ছে নানা সুযোগ-সুবিধা। সুদ মওকুফ, পুনঃতফসিল, পুনর্গঠন, অবলোপনসহ বেশকিছু প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে সরকারের পক্ষ থেকে। রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ, প্রভাবশালীদের চাপে অনিচ্ছা সত্ত্বেও এসব সুবিধা দিয়ে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এত সুযোগ দেওয়ার পরও মন্দ ঋণের বড় ঝুঁকিতে পড়েছে সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকগুলো।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, ২০২১ সালের মার্চ প্রান্তিক শেষে ব্যাংক খাতে ঋণ বিতরণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১১ লাখ ৭৭ হাজার ৬৫৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৯৫ হাজার ৮৫ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৮ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। গত ডিসেম্বর শেষে ব্যাংক খাতে ঋণ ছিল ১১ লাখ ৫৮ হাজার ৭৭৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৮৮ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা। সেই হিসেবে খেলাপি বেড়েছে ছয় হাজার ৩৫০ কোটি টাকার বেশি।

সাধারণত ‘নন-পারফর্মিং’ ঋণের শ্রেণিকরণ তিন ধরনের হয়। ‘সাব-স্ট্যান্ডার্ড’ (তিন মাসের বেশি অনাদায়ী), ‘ডাউটফুল’ (নয় মাসের বেশি অনাদায়ী) এবং ‘ব্যাড ডেট বা লস’ (এক বছরের বেশি সময়ের জন্য অনাদায়ী)।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি বছরের মার্চ শেষে এক বছরের বেশি সময় অনাদায়ী এমন ‘ব্যাড/লস’ বা মন্দ ঋণের পরিমাণ ৮৩ হাজার ৬৭১ কোটি টাকা, যা মোট বিতরণ করা ঋণের ৭ দশমিক ১০ শতাংশ। তবে বেশকিছু ব্যাংকের ‘ব্যাড/লস’ ২০ থেকে ৫০ শতাংশ বা তার বেশি রয়েছে। আবার কোনো ব্যাংকের মন্দ ঋণের এ হার ৯০ শতাংশের বেশি।

সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, মার্চ শেষে সরকারি-বেসরকারি আট ব্যাংকের বিতরণ করা ঋণের ২০ থেকে ৯৮ শতাংশ মন্দ বা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ব্যাংকগুলো হলো- ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান (এনবিপি), আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক, পদ্মা ব্যাংক, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, বেসিক ব্যাংক, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড (বিডিবিএল), সোনালী ব্যাংক ও জনতা ব্যাংক।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

মন্দ ঋণে সবচেয়ে খারাপ অবস্থানে রয়েছে বিদেশি খাতের ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান (এনবিপি)। ব্যাংকটি এক হাজার ৩৯১ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করেছে। এর মধ্যে ৯৭ দশমিক ৬৯ শতাংশই আদায় অযোগ্য। এরপর রয়েছে আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক। ব্যাংকটির বিতরণ করা ৮৫৬ কোটি টাকা ঋণের মধ্যে ৬৫৮ কোটি অর্থাৎ ৭৬ দশমিক ৮৭ শতাংশই ঝুঁকিপূর্ণ ঋণ।

মন্দ ঋণের বড় ঝুঁকিতে রয়েছে চতুর্থ প্রজন্মের পদ্মা ব্যাংক (সাবেক ফারমার্স ব্যাংক)। ব্যাংকটির বিতরণ করা পাঁচ হাজার ৬৫৩ কোটি টাকার ঋণের মধ্যে তিন হাজার ৫৭৭ কোটি টাকা অর্থাৎ ৬৩ দশমিক ২৭ শতাংশই খেলাপি ঋণ। এর মধ্যে তিন হাজার ৩১০ কোটি বা ৫৮ দশমিক ৫৬ শতাংশই মন্দ ঋণ। ব্যাংকটি মার্চ শেষে ৩৮২ কোটি ৪৮ লাখ টাকার মূলধন ঘাটতিতে পড়েছে।

ঋণঝুঁকির শীর্ষে থাকা অন্যতম রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংক। মার্চ পর্যন্ত ব্যাংকটি ১৪ হাজার ৬০১ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করেছে। এর মধ্যে সাত হাজার ৮৮৩ কোটি টাকা অর্থাৎ প্রায় ৫৪ শতাংশ ঋণই আদায় অযোগ্য মন্দ ঋণে পরিণত হয়েছে। এছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ ঋণের বিপরীতে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা সঞ্চিতি (প্রভিশন) সংরক্ষণে ব্যর্থ হয়েছে ব্যাংকটি। মার্চ শেষে ব্যাংকটির প্রভিশন ঘাটতি দাঁড়িয়েছে তিন হাজার ৫৬৫ কোটি টাকা। মূলধন ঘাটতিতেও পড়েছে সরকারের মালিকানাধীন ব্যাংকটি। মার্চ শেষে বেসিক ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি এক হাজার ৭১ কোটি ৮২ লাখ টাকা।

সরকারি মালিকানাধীন বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড (বিডিবিএল) মার্চ পর্যন্ত ঋণ বিতরণ করেছে এক হাজার ৮৩৫ কোটি টাকা, যার ৩৩ দশমিক ২৬ শতাংশই মন্দ ঋণ। বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের দুই হাজার ২০৫ কোটি টাকা ঋণের ৪৪ দশমিক ৯২ শতাংশ অর্থাৎ ৯৯০ কোটি টাকা ঝুঁকিপূর্ণ ঋণ। এছাড়া প্রয়োজনীয় ৫৩৮ কোটি টাকার প্রভিশন সংরক্ষণে ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক।

মন্দ ঋণের বড় ঝুঁকিতে রয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ও জনতা ব্যাংক। মার্চ পর্যন্ত জনতা ব্যাংক ঋণ বিতরণ করেছে ৫৭ হাজার ৮৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে মন্দ (ব্যাড ডেট বা লস) ঋণের পরিমাণ ১৩ হাজার ২০৮ কোটি টাকা অর্থাৎ ২৩ দশমিক ১৪ শতাংশ। মার্চ শেষে জনতা ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি পাঁচ হাজার ২৫৫ কোটি ১৭ লাখ টাকা।

সোনালী ব্যাংক মার্চ পর্যন্ত ঋণ বিতরণ করেছে ৫৩ হাজার ৯৬৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রায় ২০ শতাংশ অর্থাৎ ১০ হাজার ৬৮৮ কোটি টাকা আদায় অযোগ্য মন্দ ঋণ। মার্চ শেষে সোনালী ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি না হলেও তিন হাজার ৬৯৭ কোটি ৩৫ লাখ টাকার মূলধন ঘাটতিতে পড়েছে ব্যাংকটি। এদিকে, দীর্ঘদিন ধরে বেশকিছু ব্যাংক দুর্বল অবস্থায় পড়ে আছে। তাদের উন্নয়নে বিশেষ পদক্ষেপ প্রয়োজন বলে মনে করেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। 

তিনি আরও বলেন, যেসব ব্যাংকের অবস্থা বেশি খারাপ, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এখন উচিত তাদের ঋণ আদায়ে টার্গেট বেঁধে দেওয়া। পাশাপাশি কাজ ঠিক মতো করছে কি না, এ বিষয়ে চাপ সৃষ্টি করা। গতানুগতিক নির্দেশনা দিলে তাদের কোনো উন্নতি হবে না।

ঢাকা/এনইউ

আরও পড়ুন: