০৩:৩২ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৫

ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তানের সিলেট শাখা বন্ধ হচ্ছে

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৬:০২:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ মার্চ ২০২১
  • / ১০৪২৮ বার দেখা হয়েছে

ধারাবাহিক লোকসানের কারণে বাংলাদেশে একটি শাখা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান (এনবিপি)। বাংলাদেশে চারটি শাখার মধ্যে সিলেট শাখা কার্যক্রম গুটিয়ে নেবে ব্যাংকটি। ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ বিষয়ে অনুমতি দিয়েছে। এখন শাখাটি বন্ধ করার প্রক্রিয়া চলছে।

গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন এনবিপির বাংলাদেশের প্রধান ও মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ কামরুজ্জামান। তিনি বলেন, যে লক্ষ্য নিয়ে শাখাটি খোলা হয়েছিল তা অর্জন হয়নি। শুরু থেকেই লোকসানে আছে। এসব বিবেচনায় প্রধান কার্যালয়ের ব্যবসায়ীক সিদ্ধান্তে শাখাটি বন্ধ করা হচ্ছে। 

কামরুজ্জামান বলেন, সব ধরণের নিয়মকানুন মেনে শাখাটি বন্ধ করার প্রক্রিয়ার চলছে। তবে অন্য তিনটি শাখার কার্যক্রম সচল থাকবে। গ্রাহকে বিষয়টি জানিয়েছি, এখন কোনো গ্রাহক যদি আমাদের সঙ্গে থাকতে চান থাকবেন। আর যদি না চায় দেনা-পাওনা বুঝে চলে যাবে।

বাংলাদেশে এনবিপির অন্য শাখাগুলো বন্ধ করা হবে কি না জানতে চাইলে ব্যাংকটির বাংলাদেশের প্রধান বলেন, এখন পর্যন্ত এমন কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, এনবিপির সিলেট শাখা বন্ধ করতে গত ডিসেম্বরে অনুমতি চেয়ে চিঠি দেয়। ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক অনাপত্তি দিয়েছে। এখন নিয়ম অনুযায়ী বিভিন্ন প্রক্রিয়া মেনে তারা শাখাটি বন্ধ করতে পারবে। 
              
এনবিপির যাত্রা শুরু হয় ১৯৪৯ সালে পাকিস্তানের করাচিতে। বর্তমানে পাকিস্তানে ব্যাংকটির প্রায় দেড় হাজার শাখা রয়েছে। এছাড়া বিশ্বের ২১টি দেশেও তাদের শাখা রয়েছে। স্বাধীনতার আগে থেকেই বাংলাদেশে ব্যাংকটির শাখা থাকলেও ১৯৭১ সালের স্বাধীনতার পর পাকিস্তানের হাতছাড়া হয় এনবিপির শাখা। এ সময় এনবিপির সব সম্পত্তি ও বিনিয়োগ অধিগ্রহণ করে সোনালী ব্যাংক। ১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ মেয়াদে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ক্ষমতায় থাকাকালীন এনবিপিকে নতুন করে বাংলাদেশে কার্যক্রম শুরুর অনুমতি দেয়। এরপর ১৯৯৪ সালের আগস্টে ব্যাংকটি বাংলাদেশে কার্যক্রম শুরু করে। বর্তমানে বাংলাদেশে চারটি শাখা রয়েছে এনবিপির। চট্টগ্রাম, সিলেট এবং রাজধানীর গুলশান ও মতিঝিলে এসব শাখা অবস্থিত। এসব শাখায় বর্তমানে তেমন কোনো গ্রাহক নেই। ব্যাংকটিতে শতাধিক জনবল রয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকটি এক হাজার ৪০৭ কোটি ৫৯ লাখ টাকার ঋণ বিতরণ করেছে। এর মধ্যে প্রায় ৯৮ শতাংশ ঋণ খেলাপি হয়ে গেছে। ব্যাংকটিতে বর্তমানে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১ হাজার ৩৭৪ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। যার অনেক গ্রাহকদেরই খুঁজেও পাচ্ছে না ব্যাংকটি।

বাংলাদেশ ব্যাংক ২০১৩ সালে এক বিশেষ পরিদর্শন শেষে ব্যাংকটির করাচির প্রধান কার্যালয়কে জানিয়েছিল, অস্তিত্ব নেই এমন প্রতিষ্ঠানকে অর্থায়ন করছে এনবিপির বাংলাদেশ শাখা। আমদানির জন্য ঋণপত্র খোলা হলেও পণ্য আসেনি। এর মাধ্যমে অর্থপাচার করেছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।

 

আরও পড়ু্ন:

শেয়ার করুন

error: Content is protected ! Please Don't Try!

ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তানের সিলেট শাখা বন্ধ হচ্ছে

আপডেট: ০৬:০২:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ মার্চ ২০২১

ধারাবাহিক লোকসানের কারণে বাংলাদেশে একটি শাখা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান (এনবিপি)। বাংলাদেশে চারটি শাখার মধ্যে সিলেট শাখা কার্যক্রম গুটিয়ে নেবে ব্যাংকটি। ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ বিষয়ে অনুমতি দিয়েছে। এখন শাখাটি বন্ধ করার প্রক্রিয়া চলছে।

গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন এনবিপির বাংলাদেশের প্রধান ও মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ কামরুজ্জামান। তিনি বলেন, যে লক্ষ্য নিয়ে শাখাটি খোলা হয়েছিল তা অর্জন হয়নি। শুরু থেকেই লোকসানে আছে। এসব বিবেচনায় প্রধান কার্যালয়ের ব্যবসায়ীক সিদ্ধান্তে শাখাটি বন্ধ করা হচ্ছে। 

কামরুজ্জামান বলেন, সব ধরণের নিয়মকানুন মেনে শাখাটি বন্ধ করার প্রক্রিয়ার চলছে। তবে অন্য তিনটি শাখার কার্যক্রম সচল থাকবে। গ্রাহকে বিষয়টি জানিয়েছি, এখন কোনো গ্রাহক যদি আমাদের সঙ্গে থাকতে চান থাকবেন। আর যদি না চায় দেনা-পাওনা বুঝে চলে যাবে।

বাংলাদেশে এনবিপির অন্য শাখাগুলো বন্ধ করা হবে কি না জানতে চাইলে ব্যাংকটির বাংলাদেশের প্রধান বলেন, এখন পর্যন্ত এমন কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, এনবিপির সিলেট শাখা বন্ধ করতে গত ডিসেম্বরে অনুমতি চেয়ে চিঠি দেয়। ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক অনাপত্তি দিয়েছে। এখন নিয়ম অনুযায়ী বিভিন্ন প্রক্রিয়া মেনে তারা শাখাটি বন্ধ করতে পারবে। 
              
এনবিপির যাত্রা শুরু হয় ১৯৪৯ সালে পাকিস্তানের করাচিতে। বর্তমানে পাকিস্তানে ব্যাংকটির প্রায় দেড় হাজার শাখা রয়েছে। এছাড়া বিশ্বের ২১টি দেশেও তাদের শাখা রয়েছে। স্বাধীনতার আগে থেকেই বাংলাদেশে ব্যাংকটির শাখা থাকলেও ১৯৭১ সালের স্বাধীনতার পর পাকিস্তানের হাতছাড়া হয় এনবিপির শাখা। এ সময় এনবিপির সব সম্পত্তি ও বিনিয়োগ অধিগ্রহণ করে সোনালী ব্যাংক। ১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ মেয়াদে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ক্ষমতায় থাকাকালীন এনবিপিকে নতুন করে বাংলাদেশে কার্যক্রম শুরুর অনুমতি দেয়। এরপর ১৯৯৪ সালের আগস্টে ব্যাংকটি বাংলাদেশে কার্যক্রম শুরু করে। বর্তমানে বাংলাদেশে চারটি শাখা রয়েছে এনবিপির। চট্টগ্রাম, সিলেট এবং রাজধানীর গুলশান ও মতিঝিলে এসব শাখা অবস্থিত। এসব শাখায় বর্তমানে তেমন কোনো গ্রাহক নেই। ব্যাংকটিতে শতাধিক জনবল রয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকটি এক হাজার ৪০৭ কোটি ৫৯ লাখ টাকার ঋণ বিতরণ করেছে। এর মধ্যে প্রায় ৯৮ শতাংশ ঋণ খেলাপি হয়ে গেছে। ব্যাংকটিতে বর্তমানে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১ হাজার ৩৭৪ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। যার অনেক গ্রাহকদেরই খুঁজেও পাচ্ছে না ব্যাংকটি।

বাংলাদেশ ব্যাংক ২০১৩ সালে এক বিশেষ পরিদর্শন শেষে ব্যাংকটির করাচির প্রধান কার্যালয়কে জানিয়েছিল, অস্তিত্ব নেই এমন প্রতিষ্ঠানকে অর্থায়ন করছে এনবিপির বাংলাদেশ শাখা। আমদানির জন্য ঋণপত্র খোলা হলেও পণ্য আসেনি। এর মাধ্যমে অর্থপাচার করেছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।

 

আরও পড়ু্ন: